Thursday, December 24, 2020
সম্পাদকীয়
মোহাজির হুসেইন চৌধুরী
সুমতি দেবনাথ
রুবেল হোসেন
শাহেলী নমঃ
সংগীতা দাস
অমিত রুদ্র পাল
সুমিতা স্মৃতি
স্বপ্ন আমার অনেক বড়ো, অনেক বড়ো আশা
জানি স্বপ্ন পূরণ হবে, আছে মনে ভরসা।
দুর্বল আমি নই হে স্বপ্ন, আছে বুকে বল
তাই আমার বিশ্বাস হব একদিন সফল।
স্বপ্ন আমায় ঘুমোতে দেয় না, জাগিয়ে রাখে সদা
স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাই সর্বদা।
জানি আমার স্বপ্নের রাস্তা এতটা সহজ ও নয়
তবুও আমি লক্ষ্যে পৌঁছাব আছে এই প্রত্যয়।
স্বপ্ন'ই মানুষকে জীবিত রাখে, জাগায় প্রাণে প্রাণ
স্বপ্ন ছাড়া মানুষের জীবন মৃত্যুর সমান।
জগন্নাথ বনিক
সুজন দেবনাথ
একমুঠো স্বপ্ন নিয়ে নেমেছি পথে,
বাস্তবতার ভিড়ে পূর্নতা পাওয়ার আশে।
মনে হয়,,
কুল হীন সমুদ্রের ঢেউয়ে ভেসেই চলেছি
একাকিত্ব আমি, কেউ নেই পাশে।
অসহায় অনুভব করেছি অনেক
কেটেছে জীবন একা।
চলতে পথে মিলেছে কত, ভেবেছি আপন
স্বপ্ন ভেঙে হৃদয়াতুর হলো।
আলো ভেবে আলেয়ার পিছে
ছুটেছি বহুকাল,
অবশেষে দেখি সব স্বার্থান্বেসির পাল!
নিস্বার্থে ভালোবেসেছি,
দিয়েছি মন উজার করে,
দু-হাত ভরে করেছি গ্রহণ সবাকার করুনা।
অবহেলায়, তাচ্ছিল্যতায়
একটা একটা করে কখন যে,
আমার মুঠোভরা স্বপ্নরা হারিয়ে গেলো
বাস্তবতার ভিড়ে বুঝতেই পারলাম না।
পিছন পানে তাকিয়ে সেই ভিড় থেকে
হাড়ানো স্বপ্ন কুড়িয়ে নেবার সাহস হয়নি,
মেটেনি সেই আশা দু-চোখে কুয়াশা,
আর স্বপ্ন নয় বাস্তব নিয়ে বাঁচা এবং
বাঁচানোর তাগিদেই চাই
এক নব উন্মুক্ত আলোকিত সূর্যোদয়।
জীবনের চরম শিখরে পৌঁছাবার বৃথা চেষ্টায়, শূন্যতার পথপ্রান্তে দাড়িয়ে আজও
কাজী নিনারা বেগম
গৌতম দাস
কাউচার খান
সঞ্জয় দত্ত
ঈশিতা পাল
মোঃ রুবেল
সৌরভ শীল
বর্ষা দে
মনচলি চক্রবর্তী
শান্তনু নমঃ
প্রতিকুল তুমি,গোপনে কপাটে
যেই জঠরে করেছে ধারন,
কুলে ধরেছে 'মা'।
সেই জঠরে প্রতিদানে তুমি,
মেরেছ আঘাত 'পা'।
যে কুলেতে রেখেছ মাথা,
করেছ দুগ্ধ পানl
পেল তার প্রতিদান।
যে যুগে বন্দি শিখলে নারী
পরে থাকত, শত শত।
বন্দি দ্বারের রক্তে লেখা,
হয়েছে ইতিহাস
ভাঙো নারী ঐ শিখলখানা
ধরো তুমি,নারীসাজ।
সাম্যের যুগ,
নর পরবে আজ বন্দিশালায়
কর্মের বৃক্ষে ধরিবে ফল,নির্মম পরিহাস।
পিংকী দাস
নদীর ধারে পাহাড়ের গায়ে অরণ্যের শূন্য বুকে
অবাঞ্ছিত অনাকাঙ্ক্ষিত রূপেই
দুটো সরু পাতা জুটি নামহীন আগাছা।
পথিকের চোখে আমার সৌন্দর্য মূল্যহীন,
বিধাতার চরনে নেই কোন স্থান।
প্রেমিকার হাতে প্রেমের উপহার আমি নই,
অযত্নের তিক্ততায় বেড়ে উঠা।
প্রকৃতির মাঝে আমি আগন্তুক অতিথি,
মানবের উদ্যানে আমার প্রবেশ নিষিদ্ধ
আমার সৃষ্টিই ধ্বংসহেতু , প্রানের মোহ বৃথা ।
আমার নেই কোন অধিকার ,
অবহেলিত, নিষ্পেষিত তুচ্ছ জীবদ্দশা।
প্রসেনজিৎ দে
শিখে গেছে বেঁচে থাকা কাকে বলে।
রোজ ভরসা'র পাত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকে।
দাঁড়িয়ে থাকে একই জায়গায় চাতকের মতো।
অপেক্ষার অবসান ঘটলে দুটো পোড়া রুটিতে সুখ খুঁজে নেই।
রাস্তার পাশে ড্রেনের জল গুলি হেসে বয়ে যেতে দেখা যায়।
এখন আর ব্যর্থতার অনুভূতি হয় না তার।
সেও বুঝে গেছে কারো না কারো কাছে তার মূল্য অপরিসীম।
সূর্যের আলোয় দগ্ধ হতে হতে,
রাস্তা গুলিও হঠাৎ কেঁদে উঠে,
ক্ষত হয়ে যাওয়া উলঙ্গ পা জোড়া বুকে জড়াতে।
রাস্তা প্রতিনিয়ত উদ্বাস্তুদের নিয়ে চলছে।
আজ সেও নিজেকে উদ্বাস্তু বলে দাবী করছে।
সংগীতা শীল
দিপিকা রায়
রাজীব পাল
আক্তার হোসেন
বধুয়া তোমাকে
তোর মেঘলা চোখে বন্ধু আমি
এখনো তাকিয়ে থাকি,
তোকে নিয়ে মনের গহীনে
হাজারো স্বপ্ন আঁকি।
অনেক বছর পেরিয়েও আজ
নতুন প্রেমে পড়ি,
ইচ্ছে জাগে পাখির মতো
আকাশেতে উড়ি।
বন্ধু তুই এতো মায়া
জানিস কেমন করে?
প্রতিটা ক্ষন আমার শুধু
তোকেই মনে পড়ে।
তোর মনেতে করিস বন্ধু
কোন ফসলের চাষ?
আমার মনে শুধু বন্ধু
তোরই বসবাস।
তোর মায়াতে পড়লে আমি
জগৎ ভুলে থাকি,
সকাল সন্ধ্যা ক্যানভাসেতে
তোরই ছবি আঁকি।
বন্ধু আমি তোকে ছাড়া
কেমনে ঘুড়ি উড়াই,
সারাটাক্ষন আমি শুধু
তোকেই খুঁজে বেড়াই।
আলমগীর কবির
সোনাই সরকার
বন্ধুত্ব
বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে একত্রে মিলে কত না কথা।
একটু দেরি হলেই যে বলত তারা কালকে থেকে যাস একা,
আবার ও পর দিন আমার জন্য করত অপেক্ষা।
প্রেম করতে রয়ে থাকে বন্ধুদের বড়ো অবদান ।
বন্ধু ছাড়া প্রেম করা "নো চান্স "।
যদি বলি আজকে আমি প্রেম করতে যাব ক্লাস দিয়ে পাঁকি।
বলত তারা তুই প্রেম কর তোর আবার ক্লাস করতে হবে না কি ।
তুমি তাদেরকে না বললেও বুঝে নিভে তোমার মনের ভাব ।
তোমাকে দেবে না কখনও খুশি অভাব ।
দুষ্টুমি করতে করতে পার করে আসলাম বিদ্যালয় জীবন ।
প্রথম দিকে কলেজ জীবনের লাগত না মন।
কিছু কিছু বন্ধু রয়ে গেল কাছে
কিছু বা চলে গেল দূরে,
কিছু হয়েছে বন্ধু নতুন করে ।
কিছু বন্ধুর হয়েছে বিয়ে কিছু আবার পড়েছে প্রেমে
আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব গেল ভেঙে ।
নতুন কিছু বন্ধু পেয়েছি দিব্যি মজার বন্ধু গুলি।
বকলে ও রাগ করে না , সবাই মিলে থাকি খুশি।
তোদের ছাড়া মোর জীবনে নেই কোনো মূল্য ।
তোদের দিয়ে ই আমার জীবন নতুন করে পেয়েছে জন্ম ।
অভিজিৎ রায়
পূজা মজুমদার
জবাব দেহি
চেঁচাতেই হবে এর কোনো মানে নেই
নীরবতাও তো একধরণের ভাষা।
যে বোঝে, সে বোঝে। না বুঝলে ছেড়ে দাও।
কবিতার কাছে নতজানু হয়ে আসা।
অসুখের মতো সময়হীনের স্রোত
ছড়িয়ে গিয়েছে উদাসীন মৃদু হাসি।
প্রতিশোধহীন রক্তের স্রোত ছুঁয়ে
আমি যেন খুব শান্ত থাকতে পারি।
শাশ্বত চক্রবর্তী
সজীব পাল
রই আমি রোদের ভেতর দেখি কই আর চাঁদ?
চাঁদের আলোর ভেতর কান্দে কত মানুষ -
তাদের চোখেও একটু রোদ আসুক!
যেমন করে নারীর ভেতর মা আসে,
অথবা শিশির সকালে
শিউলি সুবাস ভাসে ।
আমাকে প্রায়ই যাযাবর পাখিরা বলেন,
'কেমন করে একলা খুশিতে মাতেন?'
সমস্ত সবুজ ঘাসে রক্ত মেখে
যারা দুমুঠো ভাত খান -
ইচ্ছে করে মন্দিরে ধর্মগ্রন্থ পুড়িয়ে
ওদের জন্য কিছু সুখ রান্না করি ।
এখন সমস্ত বেলা শেষে যখন
গৃহে ফিরে আবার প্রিয়তমার শরীরে লিপ্ত হই,
বিশ্বাস করুণ পৃথিবী তখন আমার
কঠিন পাথরের মতো লজ্জা লাগে ।
বিশ্বাসঘাতকতার আগুনে
নিজেকে অদ্ভুতভাবে নিজের ভেতর পুড়িয়ে দেই।
তখন কোথাও লুকাবার মতো এতটুকু
আশ্বাস কিংবা স্থান পাই না ।
স্নেহাশীষ রায়
এলিনা সাহা
লিটন শব্দকর
সঙ্গীতা নাথ
সোমেন চক্রবর্তী
রাজীব মজুমদার
অমিত সরকার
বিনয় শীল
অভীককুমার দে
অশোকানন্দ রায়বর্ধন
Saturday, November 21, 2020
সম্পাদকীয় প্যানেল
রুবেল হোসেন
অদিতি সাহা
উর্মি সাহা
অতনু রায় চৌধুরী
সোমা চক্রবর্তী
দেবব্রত চক্রবর্তী
অনুপম দেব
পিয়াল দেবনাথ
মিছিলের মুখ
অরিন্দম চক্রবর্তী
শাহেলী নমঃ
মিঠু মল্লিক বৈদ্য
কাউচার খান
পুনম মজুমদার
উৎসবের মরসুমে
মাটির পসরায় হাট সাজে।
বিবর্ণ অভাবের চিত্রে
হাজার হাজার চোখে
শুধু মরুভূমি জাগে।
সলতে বিহীন প্রদীপ হাতে
বিক্রেতারা জোরে হাঁকে।
কেহ করে দর-দাম
কেহ বলে, হে রাম!
এসবের এখন আর
আছে নাকি রংবাহার!
এভাবে যাওয়া আসা
উষ্ণ নিঃশ্বাসে পথ চলা।
শহরের সন্ধ্যা ডিঙিয়ে
কুমোর পাড়ায় নামে
নিশুতির নীরবতা।
শত হেলা,শত পরখ সহে
জমাট বাঁধা মাটির বুকে
মাটির পসরা গুমরে কাঁদে
হাজারো কুমোরের অব্যক্ত ভাষা হয়ে।
সঞ্জয় দত্ত
রাহুল শীল
পঞ্চদীপ দেবনাথ
গোপাল বণিক
পরিতোষ সরকার
বিপাশা দেব
সাধনা দেবনাথ
মা ও মেয়ে
ও পাড়ার কমলী আজ আত্মহত্যা করেছে,
তার যে মস্ত বড় দোষ,মেয়ে জন্ম দিয়েছে।
মায়েরা ছেলের সবটাই শুনে বউয়ের একটাও না।
আরে হতভাগা তুই তোর মাকে বোঝাতে পারলি না।
তুমিও তো দাদুর মেয়েছিলে,আজকে আমার মা
সেই তুমিই আমার মেয়ে হয়েছে বলে ওর মুখটিও দেখছনা।
মেয়ে হয়েছে বলে শাশুড়ি,ননদ গায়ে দিল হাত
মেয়ে জন্ম দেওয়া কি একটা মায়ের এতই অপরাধ?
পৃথিবীতে মেয়েরাই তো অনুভব করতে পারে মায়ের যন্ত্রণা।
হতভাগা ছেলেদের তো অনুভব করা ভাগ্যেই জুটে না।
দুর্গা মাকে প্রণাম কর লক্ষ্মীকে নিত্য পূজা অর্চনা-
সব মেয়ে তো মায়েরই রূপ তোমরা সেটা মান না।
মেয়েই মা, মা ও মেয়ে পরম পিতার দান।
মেয়ে হয়েও তোমরা কেন কর মেয়েদের অপমান?
শুভশ্রী দাস
অভিজিৎ রায়
মোহাজির হুসেইন চৌধুরী
মাহমুদ মুকিত
দেখছে কি কেউ কার সাথে কার কখন আড়ি ?
হঠাৎ কেন মাঝ দুপুরে নিকষ কালো সন্ধ্যে এলো
কেন-বা ওই রাতের তারা মান করে আজ খুব ঘুমালো !
কেউ জানে না,
ভিতর কেন জ্বলছে তবু বাইরে তার বুজছে আলো!
কিসের ক্ষত কেমন করে
পঁচন ধরে,
শুরুতেই নিঃশেষ হলো।
দিবস নিশি কতই খেলা
কেউ দেখে না কারো জ্বালা
কেউ বোঝে না নিজের ছাড়া
ব্যথা কত তীব্র ভাবে দিচ্ছে নাড়া।
আধ চক্রেই ধুঁকছে গাড়ি
ফিরছে সবে নিত্য বাড়ি
মুছে গেলে মেঘের আড়ি
জোছনা গায় সুখের সারি।
সংগীতা শীল
গৌতম দাস
মুক্ত চিত্তে পথে হাঁটার সুযোগ নেই অবলার
শুধু কাঁটা আর কাঁটা।
হাটে ঘাটে মাঠে , তেল মেখে দাঁড়িয়ে থাকে।
কাঁটার মুখে বারবার পড়ে ঝাঁটা।
তবুও হয় না সাফ।
আরও ধৈর্য্য নিয়ে বসে, শক্ত করে বুকের পাটা।
অবলা মেধায় শ্রেষ্ঠ ইচ্ছা শক্তি যথেষ্ট।
দেশ দুনিয়ার নাম করবে একথা স্পষ্ট।
পথের কাঁটা বলে-তার কত সাহস?
সকালে বাজারে ,বিকালে যায় খেলায়
মেয়ে মানুষ!ঘরের রান্না করাটা মানায়।
উচ্চ মাধ্যমিক বাহ্ বেশ,কলেজ?অযথা টাকা নষ্ট।
কাঁটার তালে ,পরিবার বিয়ে দিতে হল সচেষ্ট।
যদি বলি জুতা কোথায়?প্রশ্নটা পাপে পূর্ণ।
ব্যাথার ঔষধ?এখনও আবিষ্কারে শূন্য।
শক্ত এই কাঁটা অতি জঘন্য।
শোনো বোনরা যদি হও সাদাসিধে!
নানা বর্ণের কাঁটা নির্দ্বিধায় পায়ে বেঁধে।।
ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে হল চুরমার।।
বাধা হয়ে দাঁড়াল পথের কাঁটা অবলার।।
নিঃশব্দ কান্নার ব্যাথা কী প্রাণেশয়।
সর্বনাশা কাঁটা যেন কারোর কাঁটা না হয়।
ধিক্কার! কাঁটার গায়ে অশেষ বসন্ত ফুটুক।
ভোরের তেজোমূর্তি আরও তেজি হয়ে উঠুক।
প্রীতম শীল
আক্তার হোসেন
শীতের সকাল
ঘুম ভেঙেছে পাখিদের কোলাহলে,
ভ্রমরের গুঞ্জন শোনা যায় ফুলে ফুলে।
শিশিরের বিন্দু ছড়িয়ে পড়েছে ঘাসে,
দোয়েলেরা ডাকছে তাদের প্রিয় কার্তিক মাসে।
কাশ ফুলগুলো দুলছে শীতের হিমেল হাওয়ায়,
হয়ে উঠেছি মনমাতানো তাদের আলতো ছোঁয়ায়।
কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে বাংলার গ্রাম,
তাহার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে শিমূল,পলাশ, জাম।
নদীর জল বয়ে যাচ্ছে ঢেউয়ের ছন্দে ছন্দে,
হাঁস গুলো সব চলছে তাদের মনের আনন্দে।
ধানের শীষ বেয়ে পড়ছে শিশিরের কণা,
গ্রামবাংলার অপরূপ দৃশ্যে মন হয়ে উঠে আনমনা।
খেজুরের রস তুলতে গাছিয়ারা যাচ্ছে আঁকাবাকা পথ বেয়ে,
অধীর অপেক্ষায় শিশুরা আছে তাদের পথ চেয়ে।
পলাশের বনভূমির মাঝে উঁকি দিয়েছে সূর্যের সোনালী আলো,
বাংলার শীতের সকাল কে আমি বাসিয়াছি ভালো।
পূজা মজুমদার
অকুতোভয়
আমি ভয়ার্ত কোনো যোদ্ধা নই যে,
সব মাথা পেতে মেনে নেবো।
আমি হেরে যাওয়া কোনো সৈনিক নই যে,
অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবো।
আমি উদ্যম, আমি আগুয়ান,
আমি সাহসী মায়ের সন্তান।
সমাজের সব অনিয়মকে ভেঙে
দিতে পারি করে খান খান।
আমি দিতে পারি করে দুর সব যত
অন্ধকারের তিমির রাত।
গুড়িয়ে দিতে পারি আমি সব
সমাজের যত কালো হাত।
আমি উদ্যম, আমি আগুয়ান,
আমি সাহসী মায়ের সন্তান।
সমাজের যত জঞ্জাল মুছে,
মানুষকে দিতে চাই পরিত্রাণ।
অন্যায় যদি দেখি হতে তবে,
দিই না কখনও প্রশ্রয়।
আমি চাই নি নিতে কখনও কভু,
অনিয়মের কাছে আশ্রয়।
মৃত্যকে নিয়ে পথ চলি আমি,
করি না কখনও মরণের ভয়।
অবিচারের কাছে তবুও আমি কখনও,
স্বীকার করিব না পরাজয়।
আমি উদ্যম, আমি আগুয়ান,
আমি চাই হতে সমাজের সেই
শহীদ মায়ের সন্তান।
অন্যায়কে ভেঙে দিয়ে যারা,
হয়ে আছেন গরিয়ান।
বেঁচে যদি থাকি আমি তবে
করে যেতে চাই এই সংগ্রাম,
অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার আমি
করেছি মুক্তি পণ।
আলমগীর কবীর
আমি
থাকি আমি সদা নীরব
বলতে চাইনা কোনো কথা,
আমার কোনো কথায় যদি
লাগে কারোর মনে ব্যাথা।
ইচ্ছে করে দেইনা জানি
কারোর মনে ব্যাথা আমি,
ভুলে যদি হয় দুঃখ
আমার কথায় একটুখানি।
কেউ যদি চায় আমার ক্ষতি
তাঁদের নামে লিখে ইতি,
মুছে দেব তাঁদের যত
আমার কাছে আছে স্মৃতি।
আমি কারোর চাইনা ক্ষতি
পারলে পাশাপাশি থাকি,
না পারিলে শুভ কামনা
এটাই হচ্ছে আমার নীতি।
আমি যারে বাসি ভাল
যদিও সে ব্যথা দিল,
তবুও চাই, আমি তাঁর
জ্বলোক আরো প্রদীপ আলো।
সজীব পাল
যে আমাকে অগ্নিতে ঢেলে দিয়েছে,
আমি তারেই বেসেছিলাম ভালো !
অশ্বত্থ বটের মতো,
হয় তো বা-
সমুদ্রে ডুবে থাকা পাহাড়ের মতো।
জীবনের গতিপথে যত ধূসর ছাই
তোমার নামে মারিয়েছি;তাতে ব্যথা নাই ,
অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড জানে আর জ্লন্ত অগ্নি
পোড়া পাখির ডানা পোড়ানো কত কঠিন!
অনামিকা তুমি নক্ষত্রের মূল
তাই কি এত তোমার অহমিকা?
তাই কি জীবনের সব জ্যোস্না
নিমেষেই শোষন করে তুমি উজ্জ্বল তারা?
মনে পড়ে অনামিকা -
বিদীর্ণ আকাশে মেঘের মেলায়
কালো পর্দায় যে ফুটে ছিল জীবন্ত ছবিরা!
সৈকত সরকার
কবিতা সাহা
সংঘমিত্রা নিয়োগী
পৌষালী ভৌমিক
কণিকা দত্ত চৌধুরী
লিটন শব্দকর
প্রীতম ভট্টাচার্য্য
কথা রাখতে পারিনি
যারা একটু নেতা টাইপের লোক, রাজনৈতিক দলের ক্ষমতা পরিবর্তনে তাদের কোন অসুবিধা হয় না। তারাও সময় মত বদলে যায়। অসুবিধা হল আমার মতো সাধারণ মানুষের। হঠাৎ করে বদলির কাগজ হাতে এলো। ধারণা ছিল না। তবে সরকারী চাকরি, যেখানে পাঠায়, যেতে তো হবেই।কিছুই করার নেই।আগরতলা থেকে ধূপতলি। দূরত্বটা নেহাৎ মন্দ নয় । তার আগেও আমি বেশ কয়েকবার বদলি হয়েছি বটে, তবে শহরের বাইরে কখনো যাই নি।
তুলামুড়াতে আমার এক বন্ধু থাকে,বিপ্লব। সেই আমার জন্য বাড়িটা ঠিক করেছে। বাড়ির মালিক নেপাল মুড়াসিং বয়স্ক মানুষ। গাল ভর্তি হাল্কা হাল্কা পাকাপাকা দাঁড়ি। চোখগুলো ছোট ছোট। চোখের চাহনিটাওকেমন যেন এলোমেলো। কোথাও যেন স্থির হয়েতাকিয়ে থাকতে পারে না। দেখেই মনে হয় যেন লোকটিপুরো পৃথিবীর উপর বিরক্ত। যদি পুরো পৃথিবী ধংসহয়ে যায় তাহলে তিনি আরাম পাবেন। আমি উনার সামনে গিয়ে তাকাতেই তিনি চোখ সরু করে আমারদিকে তাকিয়ে রইলেন । চোখে মুখে সন্দেহ। যেন আমিকোনো জেল পলাতক আসামী। বাড়িতে প্রবেশ করতেই নেপাল বাবু বলল-
- কি দরকার আপনের ?
- আপনিই কি নেপাল মুড়াসিং?
- হ। কেরে?
- আমার এক বন্ধু বোধ হয় আপনার সাথে কথা বলেছে। ভাড়া থাকার ব্যাপারে ।
- হও। কইছে তো। নাম কি?
- আমার নাম আদিত্য কর্মকার ।
- এই নেন চাবি। আর একটু সাবধানে থাইকেন।
খেয়াল করলাম চাবি দেয়ার সময় লোকটার হাতকাঁপছে। আমি বেশ অবাক হলাম।
- আপনি কি একাই থাকেন?
- হও। ছেলে বউ নিয়া উদয়পুরে থাকে। মাঝে মাঝে আসে। নাতিটা ইংলিশ স্কুলে পড়ে।
- ও। ঠিক আছে।
আমি চাবিটা হাতে নিয়ে এগিয়ে এলাম ঘরের দিকে।
উদয়পুর শহর থেকে একটু দূরে হলেও ঘর ভাড়ার জন্য,যে বাসাটা ঠিক করা হল সেটা নেহাৎ মন্দ হবে বলে মনে না। ঘর গুলো কেমন হবে জানিনা, তবে চারদিকের পরিবেশ,দৃশ্যাবলী খুবই সুন্দর।একদিকে ক্ষেত, আরেকদিকে রাবার বাগান। ও এত কম দামেএখানে ঘর পাবো ভাবিনি। তাও আবার বিল্ডিং ঘর। যাই হোক ভালোই হয়েছে।
দরজাটায় চাবি ঢুকাতেই কেমন যেন অস্বস্থি হচ্ছে ।হটাৎ কেন জানি ঘরটায় ঢুকতে ইচ্ছে করছে না। যেনআমার অবচেতন মন আমাকে সাবধান করছে। অনেকবার চাবি ঘুরানোর পরও দরজাটা খুলছে না।অনেকদিন ধরে দরজা না খুলার কারণে মনে হয় মরিচাপড়ে গেছে। এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ দরজাটা খুলেগেল। দরজাটা খুলে ভেতরে ঢোকার সাথে সাথেই একতীব্র পোড়া গন্ধ নাকে এসে বিঁধল। আমি দাঁড়িয়েপড়লাম। পরক্ষণেই গন্ধটা কেমন যেন কর্পুরের মতোউবে গেল। এটা কি মনের ভুল ছিল? নিশ্চয় মনেরভুল। এরকম বন্ধ একটা ঘর, যে ঘরে অনেকদিন কারোআসা যাওয়া নেই সেই ঘরে নিশ্চয় পোড়া গন্ধ থাকবেনা? আমি ঘরে ঢুকলাম । ঘরময় ধুলো বালিতে।বাড়িতে নতুন ভাড়াটিয়া আসবে, ঘরটা পরিস্কার করে রাখলেই পাড়ত; মনে মনে বাড়িওয়ালার চৌদ্দ গোষ্ঠীনিয়ে বেশ কয়েকটা গালি হাঁকলাম। অফিস সেরেই এখানে এসেছি। সন্ধ্যা হয়ে আসছে।
ঘরে ইলেক্ট্রিসিটি আছে কিন্তু বাল্ব গুলো জ্বলছে না।মনে হয় সস্তার তিন বস্তা আর কি। গ্রামের কম দামেরভাড়া ঘরে এতো কিছু আশা করাও নিশ্চয় ভুল। এইসময় আবার বাল্ব কোথায় পাবো। কি যে এক যন্ত্রণারমাঝে পড়লাম না। প্রচণ্ড রাগ উঠছে। এখন আরবাইরে যেতে ইচ্ছে করছে না। আবার অন্ধকারে বসেথাকাও সম্ভব হবেনা। অগত্যা যেতেই হল ।
বাজার বেশী দূরে নয় তবুও বাল্ব কিনে বাসায় ফিরতেফিরতে ৭ টা বেজে গেল। প্রচণ্ড খিদে পেয়েছে।বাল্বগুলো লাগিয়ে রান্না ঘরের দিকে এগুলাম। খাবারবাড়ি থেকেই নিয়ে এসেছি। রুটি আর আলু ভাজা। আবার নাকে পোড়া গন্ধ আসছে! কোথাও তো কিছুইপোড়ছে না তাহলে গন্ধটা আসছে কোথা থেকে? বাইরেথেকেও আসার উপায় নেই। জানালা গুলোতো সববন্ধ।আস্তে আস্তে গন্ধটা কেমন যেন অসহ্য লাগছে।আমি আর থাকতে পারলাম না। এতো তীব্র গন্ধ? যেনহাজারটা টায়ার একসাথে পোড়ানো হচ্ছে।আমি গিয়েজানালা গুলো খুলে দিলাম যাতে গন্ধটা বাইরে চলেযেতে পারে। তাতেও বেশ সুবিধা করতে পারলাম না। আমি দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলাম কি করা যায়। তারপরযেমন হঠাৎ করে গন্ধটা এসেছিল ঠিক তেমনি হঠাৎকরেই গন্ধটা চলে গেল। আমি যেন হাঁফ ছেড়েবাঁচলাম।
খেতে বসলাম । কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছে। মনে হচ্ছেকেও যেন ঠিক আমার পিছনে নিশব্দে দাঁড়িয়ে আছে।তার নিশ্বাসের শব্দ যেন পাচ্ছি। কেও যেন আমার ঘাড়েতার গরম নিশ্বাস ফেলছে। আমি পিছনে তাকালাম।না,পিছনে কেউ নেই। সবকিছুকেও আমি নিজের মনেরভ্রান্তি হিসেবে ধরে নিলাম। সারাদিন অনেক ধকলগেছে। যার ফলে মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এই ক্লান্তমস্তিষ্কেরই হয়তো হেলুসিনেশন হচ্ছে। যে কারণেআমার এরকম অনুভুতি হচ্ছে। এসব নিয়ে মাথাঘামানোর কোনো কারণ নেই। আমি খাবার খেয়েল্যাপটপ টা নিয়ে বসলাম। অনেক কাজ পরে আছে।আজ যা যা হয়েছে সব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললাম।এখানে একা আসা ঠিক হয়নি। জয়াকে নিয়ে আসাউচিত ছিল। একা আছি বলেই কি এরকম অনুভুতিহচ্ছে। হয়তো তাই হবে। ভেবেছিলাম এখানটায়সবকিছু ঠিক করে তারপর জয়াকে নিয়ে আসবো।নতুন জায়গা । আগে সবকিছু গুছিয়ে নিই। এখন কিজয়াকে একটা কল করবো? কি জানি কি করছেআমার একটা মাত্র বউ।
- হ্যালো জয়া ?
- হুম। আমিই এখন তোমাকে ফোন করতাম হলে । যাইহোক ভালোই করেছো কল করে। কি করছো?
- কিছুনা অফিসের কাজ করছি।
- এক্ষণ আবার অফিসের কি কাজ?
- কাজ আছে জয়া। অনেক কাজ আছে।
- খেয়েছো?
- হুম কিছুক্ষণ আগেই খেয়েছি। তুমি খেয়েছো?
- মাত্র আটটা বাজে। আরও পরে খাবো।
হঠাৎ করে রান্না ঘর থেকে কিছু একটা শব্দ কানেআসছে।
- জয়া একটু পড়ে কথা বলি?
- কেন? কি হয়েছে?
- না এমনি আরেকটু পর কল করছি
- আচ্ছা সাবধানে থেকো।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
আমি ফোনটা রেখে পিছন ফিরে তাকালাম। আবারশব্দটা হলো। খুব ক্ষীণ কিন্তু স্পষ্ট যেন কেও আমারমাথার ভেতর চাপা স্বরে বলছে "চলে যা! চলে যা এখানথেকে! একটা শব্দই বারবার। শব্দটা কি শীতল! শেষ্মাজড়ানো। একেবারে বুকে গিয়ে বিঁধে যাচ্ছে শব্দটা।এসবি কি আমার উত্তপ্ত মস্তিষ্কের কল্পনা না সত্যি সত্যিএসব কিছু ঘটছে আমার সাথে? না এসব কি ভাবছি? নিশ্চয় আমার মনের ভুল! আমি আবার কাজে মনদিলাম। হঠাৎ বাল্বগুলো কেমন যেন কাঁপতে লাগলো।আমি বাল্বগুলোর দিকে তাকালাম। বাল্বগুলো কাঁপছে।যেন ভূমিকম্প হচ্ছে। তারপর হঠাৎ শব্দ করেবাল্বগুলো ফেটে গেল। ঘরময় অন্ধকার হয়ে গেল।নিকষ কালো। বাল্বের কাচগুলো আমার শরীরে এসেপড়েছে। হাত জ্বালা করছে। হাতে কি বিঁধেছে? আমিফোনের লাইটটা অন করলাম। হাতে কিছু কিছু জায়গাকেটে গেছে। আমি অবাক হয়ে বাল্বগুলো দেখছি। এরআগে কখনো বাল্ব এমনভাবে ফেটে যেতে দেখেনি। এইবাড়িতে আসার পর থেকেই কি সব অদ্ভুত অদ্ভুত ঘটনাঘটছে। এগুলোর কোনো মানে খুজে পাচ্ছি না আমি।হঠাৎ কি যেন ঝনঝন করে উঠলো। কে? কে ওখানে? খুব জোড়ে যেন কিছু একটা পড়ে গেছে। শব্দটা রান্নাঘর থেকে আসলো মনে হয়। আমি ধীরে ধীরে রান্নাঘরের দিকে এগুলাম। কিসের যেন গন্ধ পাচ্ছি। আবারপোড়া গন্ধ? আমি ঘাড় ঘুরিয়ে বসার ঘরে চলেআসছিলাম। আমি থমকে দাঁড়ালাম। মনে হলো কেওযেন খুব দ্রুত আমার সামনে দিয়ে চলে গেল। এতঅন্ধকারের মাঝেও যেন আমি স্পষ্ট দেখলাম। লাললাল চোখগুলো যেন এখনো আমার চোখে ভেসেআছে। কি ছিল এটা? এটাও কি চোখের ভুল? আমিকিছুই বুঝতে পারছি না। আমার মস্তিষ্ক কি আমাকেনিয়ে কোনো মজার খেলা খেলছে? আমি বিষয়টাকেমন থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইলাম। নিজেকে বুঝাতেলাগলাম আমি যা দেখেছি সবই ভুল। আমার চোখেরভুল। আমি আবার বসার রুমে চলে আসলাম।ল্যাপটপটা এখনো অন করা। কাজগুলো করে ফেলাউচিত। কিন্তু কাজে কেন জানি মন বসছে না। কেমনজানি অস্বস্তি হচ্ছে। কেও যখন আপনার দিকেসারাক্ষণ কঠিন চোখে তাকিয়ে থাকে তখন যেরকমঅস্বস্তি হয় ঠিক সেরকম। কেও যেন আমার দিকেসবসময় তাকিয়ে আছে। খুব কাছ থেকে যেন আমারউপর নজর রাখছে। আমার পাশে দাঁড়িয়ে যেন আমারদিকে তাকিয়ে আছি। আমি যেন তার উপস্থিতি টেরপাচ্ছি। মাঝে মাঝে যেন সে আমার শরীরের উপর তারগরম নিশ্বাস ছাড়ছে। মেঝেতে কি যেন ধপাস করেপড়ে গেল। আমি বসা থেকে উঠে পড়লাম। কিসেরশব্দ ছিল এটা? আমি খুজতে লাগলাম। অন্ধকারেবিশেষ সুবিধা করতে পারছি না। ফোনের লাইটটা দিয়েখুজছি। হঠাৎ দেখতে পেলাম মেঝেতে ফুলদানিটাভেঙে পড়ে আছে। ফুলদানিটা ভাঙলো কি করে? ফুলদানিটার ভাঙা টুকরো এদিক সেদিক ছড়িয়েছিটিয়ে আছে।এ ঘরে আবার ফুলদানিই বা আসলো কথা থেকে। " চলে যা!" কেও যেন কানের কাছে এসেবলে গেল। আমি চেচিয়ে উঠলাম কে? আবার বলেউঠলো, " চলে যা! বাঁচতে চাইলে চলে যা! কি হাড়কাপানো হিমশীতল গলার স্বর! হঠাৎ খেয়াল করলাম,ঘরের কোনায় কেও একজন ঘুটি শুটি মেড়ে বসেআছে। কালো একটা অবয়ব। আমি কে? বলে আতকেউঠলাম। আমার চিৎকার শুনে অবয়বটি একটু নড়েউঠলো। আমি আমার ফোনের লাইটি অবয়বটির দিকেতাক করলাম। একজন মহিলা উলঙ্গ হয়ে বসে আছে।সারা শরীর দগ্ধ। আগুনে পুড়ে গেলে যেরকম হয় ঠিকসেরকম। সারা শরীরে লাল বর্ণের দগদগে ঘা। কি বিশ্রীদেখাচ্ছে। অবয়বটি যেন আমার দিকে হামাগুড়ি দিয়েএগুচ্ছে। আমার হৃদস্পন্দন থেমে যাবার উপক্রমহলো। আমি নিজেকে বুঝাতে লাগলাম যা কিছু দেখছিসব কিছুই আমার মস্তিষ্কের কল্পনা । আমার মস্তিষ্কউত্তেজিত। এর বেশি কিছু না। আমার হ্যালুসিনেশনহচ্ছে। আমি বিজ্ঞানের ছাত্র। ভূতে বিশ্বাস করি না। করা উচিত ও না। আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। নিজেকেবুঝাতে লাগলাম তুমি কিছুই দেখনি। যা দেখেছ সবচোখের ভুল। চোখ খুললেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়েযাবে। চোখ খুলতে কেন জানি সাহস হচ্ছে না। মনেমনে প্রার্থনা করছিলাম যেন চোখ খোলার পর সবকিছুঠিক আগের মত হয়ে যায়।মনে মনে গুরুদেবকে ডাকলাম, চোখ খোলার পর যেন আমার চোখেরসামনে কোন খারাপ কিছু না থাকে। আমি ধীরে ধীরেচোখ খুললাম-
মনে এই আশা নিয়ে যে চোখের সামনে কিছু থাকবেনা। সত্যিই চোখের সামনে কিছু ছিল না। আমি একটাদীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম। তার মানে যা কিছু আমি দেখেছিতার সবকিছুই চোখের ভুল। কেমন জানি একটাপ্রশান্তি ছেয়ে গেল সারা মন জুড়ে। নিজের চোখকেভুল প্রমাণিত করে যেন আনন্দ হচ্ছিল। এখন পর্যন্তআমার সাথে যা কিছু ঘটেছিল তার সবকিছু মাথাথেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইলাম। আমি চাইছিলামসবকিছু ভুলে যেতে কিন্তু কেন জানি সেই বিশ্রী কুৎসিতচেহারাটা বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল।নিজেকে কিছুতেই বুঝাতে পারছিলাম না যে আমিএতক্ষণ যা কিছু দেখেছি সব কিছুই আমার মনের ভুল।আমি ঘরের বাইরে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার এখনপ্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন। আমি জোরেজোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকলাম। বারান্দায় প্রচুর বাতাসবইছে। শরীরটা মুহূর্তেই জুড়িয়ে গেল। হটাৎ দেখি ঘরের আলো জ্বলে উঠেছে। এই যে কিছুক্ষণ আগে ভূমিকম্পের মতো হল, বাল্ব ভেঙ্গে গেলো,সেটা কি? আমিতো হাতেও ব্যাথা পেয়েছিলাম। বা হাতটা ধরে দেখি, কই না তো, রক্তের কোন দাগ নেইতো।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। আজ আকাশটা সত্যি খুবসুন্দর লাগছে।বেশ বড় একটা চাঁদ উঠেছে।
এই পর্যন্ত এই বাড়িতে আসার পর থেকে আমার সাথেযা কিছু ঘটেছে সবকিছু ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করলাম।এখন আমার প্রয়োজন একটা দীর্ঘ ঘুম। সকালে উঠেআবার সবকিছু নতুনভাবে শুরু করব। নতুন বাড়িঅনেক কাজকর্ম পড়ে আছে। সবকিছু পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন করতে হবে। ঘরটাকে থাকার মতো করে গড়েতুলতে হবে। কাজটা সহজ নয়। কালকে প্রচুর পরিশ্রমকরতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণেবিশ্রাম। তাই ঠিক করলাম তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বো।
আমি বিছানায় শুয়ে পরলাম। ঘুমাতে চেষ্টা করছি কিন্তুকেন জানি ঘুমাতে পারছিনা। বার বার সবকিছু মনেপড়ে যাচ্ছে। সেই পোড়া দুর্গন্ধময় কুৎসিত অবয়ব টাচোখের সামনে ভেসে উঠছে। কিছুতেই ভুলতে পারছিনা। নিজেকে বারবার বুঝাচ্ছি সেটা ছিল উত্তপ্তমস্তিষ্কের নিছক কল্পনা। কিন্তু ভুলতে পারছি না।
কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম টেরই পেলাম না। ঘুম ভাঙলোপ্রচন্ড কোন
উর্মি সাহা
মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...
-
আজ আশ্বিনের শেষ কার্তিকের শুরু এই দিনটা বিশেষ ভাবে বিশেষ, বাংলার এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে। জানি না বাংলার বাইরেও এইভাবে বিশেষ হয়ে উঠেছে কিন...
-
মূক ফেনীর মুখর পাঁচালি একটি বহুল প্রচারিত বাংলা প্রবাদ ‘ভাগের মা গঙ্গা পায়না’ ৷ প্রবাদটির মধ্য দিয়ে মায়ের অসহায়ত্বের যন্ত্রণাটিই ব্যক্ত হয়ে...