Friday, January 25, 2019

ভারতীয় গণতন্ত্রের সবচাইতে বড় দিবসে সকলকে অভিনন্দন। মনন স্রোতের লেখক, পাঠকদের প্রজাতন্ত্র দিবসের শুভেচ্ছা।

AKASH

মনন স্রোতে আপনাকে স্বাগতম

AKASH

ছবিতে - সুমন দেবনাথ (মননস্রোত) / ক্যামেরায় - অমরজিৎ দাশগুপ্ত

AKASH

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়'র মাধ্যমে একটি পত্রিকা বর্তমানে আলোচনাধীন কোন বিষয়ের উপরে পত্রিকার কি মতামত তা পাঠকের কাছে প্রকাশ করে। সেজন্যই প্রত্যেকটা লিটল ম্যাগাজিনে আলাদা একটি সম্পাদকীয় পাতা তৈরী করা হয়,  মননস্রোতের এবারের সংখ্যাটা বিশেষ সময়োপযোগী বলে মনে করি, কারণ প্রত্যেকটা লেখায় সম্প্রীতির ভাব, গঠনমূলক আলোচনা, এবং সতন্ত্র কয়েকটি ভাবনা ফুটে উঠেছে। মননস্রোত এই ধরনের লেখা প্রকাশ করতে পেরে সার্থকতা অনুভব করছে। আমরা নতুন একটি বিভাগ তৈরী করবো পাঠকের জন্য। সেখানে পাঠকদের পরামর্শ, মতামত সবকিছুই প্রকাশ করা হবে। সেজন্য প্রিয় পাঠকদের সক্রিয়তা কামনা করছি। এ বিভাগটি ওপেন এডিটোরিয়াল পাতার নীচেই পাওয়া যাবে।

পরিশেষে যাঁরা এই সংখ্যায় লিখে মননস্রোতকে সমৃদ্ধ করেছেন,সকলকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। প্রতিমাসে প্রকাশ করতে গিয়ে মননস্রোতকে বাস্তব কিছু সমস্যায় পড়তে হয়।
অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সবচাইতে বড় দিবসের পূর্ণলগ্নে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি মননস্রোতের নতুন বছরের নতুন সংখ্যাটি প্রকাশ করার জন্য। মননস্রোতে যারা শ্রম প্রদান করেন সকলেই তরুণ প্রজন্মের। ভুলত্রুটি থাকতেই পারে। সকল ভুলত্রুটির দায়ভার আমার একারই। আশা করবো মার্জনাপ্রাপ্ত হবো। সকলের সুস্থতা কামনা করছি। সবাই ভালো থাকুন।

                            জয় হিন্দ

                       শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা-সহ
                            জয় দেবনাথ
                               সম্পাদক
                               মননস্রোত

অপাংশু দেবনাথ

নির্জনকোলাহল

নির্জনকোলাহল থেকে
একটা ফড়িং
ফিরে আসে
ঘরে,
অথচ ঘরে চাহিদার
উন্মুখচিবুক।

শরীর পড়ে থাকে
কোলাহলে।
তাকে ঘিরেই জ্বলে উঠে
আগুন,
নির্জনকোলাহল।

পরিচিতি
---------------
ত্রিপুরার কাব্য সাহিত্যে এক পরিচিত মুখ কবি অপাংশু দেবনাথ। তার কবিতায় স্থানিক শব্দ, চিত্রকল্প, রূপকল্প এবং অবয়বে তাকে স্বতন্ত্রভাবে পরিচিতি দেয়।কবির জন্ম ২৫শে জানুয়ারী ১৯৭৩ সালে বিশালগড়ের জাঙ্গালিয়ায়। পেশায় সরকারী শিক্ষক।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ :
১। অপেক্ষার অম্নবালি
২। হাসনুহানার দেশে
৩। মৃত্তিকাঋণ মেঘমিতাকে

উত্তম বণিক

অমরপুর, তোমার অপেক্ষায়

তোমার হৃদয়টা যেমন
বুকের বা'দিকে, ধকধক করছে।
ঠিক তেমনি,
গোমতীর বা'দিকে অমরপুরটা।
শ্বাস নিচ্ছে,
তোমার অপেক্ষায়।

তোমার যেমন দুটো টানা চোখ,
কাজল আঁকা।
ঠিক তেমনি,
এখানেও,
অমরসাগর আর ফটিকসাগর,
দুটো বিশাল, স্বচ্ছ পাড় বাঁধানো দীঘি, শুয়ে আছে,
স্নান করাবে বলে,
তোমার অপেক্ষায়।

তুমি যেমন খোলা চুলে দাঁড়াও,
মাঝে মাঝে বারান্দায়,
স্নানের শেষে।
ঠিক তেমনি,
এখানেও ছবিমুড়ার পাহাড়ে,
নদীর শীতল জলের ধারে,
খোদাই করা  "মা দূর্গা" ,
খোলা চুলে,
তুমি আসবে বলে,
সটান দাঁড়িয়ে,
তোমার অপেক্ষায়।

তুমি যেমন শীতের রোদের আমেজ নিতে,
শুয়ে পড়, বাগান বাড়ির ঘাসের ওপর, মাঝে মাঝে,
ঠিক তেমনি,
এখানেও শুয়ে আছে,
ডম্বুর হ্রদ,
খোলা বুকে,
মন্দিরঘাট থেকে নারকেল কুঞ্জ অব্দি, তোমাকে জড়িয়ে ধরে চুমো খেতে, বারবার, আরো অনেকবার
তুমি আসবে বলে,
তোমার অপেক্ষায়।

পরিচিতি
----------------
কবি উত্তম বণিকের জন্ম দক্ষিণ ত্রিপুরার ঋষ্যমুখে। তিনি ত্রিপুরা পুলিশ সার্ভিসে কর্মরত। বর্তমানে অমরপুরে মহকুমা পুলিশ আধিকারীক হিসেবে কর্মরত। কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'ডবল পেসমেকার' আগরতলা বইমেলা ২০১৮তে প্রকাশিত হয়।

অমিত সরকার

লাকড়ি কাটা শব্দটা

সেই সময়ে জ্বালানি গ্যাসের কথা ,
ভাবায় যায় না।
শহরে পিসির বাড়িতে প্রথম দেখলাম,
গ্যাসের চুল্লি ।
কেমন যেন সুইচের  সাথে কথা বলতো আগুন।

মাকে দেখেছি অনেকবার , বাঁশের চুঙ্গা দিয়ে ফু করে,
চুলাতে আগুন জ্বালাতে,
আগুন তো জ্বলতো না,ধোঁয়াতে জ্বালাতো মায়ের দুচোখ ।

বাবা,কাটারৌদে বাগান টিলায় লাকড়ি কাটতে যেতেন,
কোন সময়ে সঙ্গী হতাম আমি আর ভাই।
বাড়িতে এনে লাকড়ি চিঁড়ার সময়ে,
প্রতিটা কুঠারাঘাতে বাবার মুখ থেকে শব্দ হতো,
" হু - হু-হু-হু"

অপেক্ষা করতাম,লাকড়ির ছোট ছোট টুকরো গুলি ,
মায়ের কাছে নিয়ে যেতে।
বাবার মতো শব্দ করে ,ধপাস করে মায়ের সামনে ফেলে দিতাম -" হু,হু, মা ,দাততি আনছি" বাবার অনুকরন,
মা হয়তো হাসতেন, বা কিছু ভাবতেন।
এদিকে ঘামে বাবার পোশাক ভিজে যেতো,
আমাদের পোষনের জন্য,
যেন স্নান সেড়ে এলেন ।

এখন পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে বাবার সেই শব্দটা
আমার মুখ দিয়ে বের হয়,
বাবার  সেই শব্দটা খুব কানে বাজে,মিল খুঁজে পাই,
আমার শব্দের সাথে।
বাবার মতো সেই ঘাম বের হতে দিইনা,
পোশাক ভেজার ভয়ে।
কিন্তু লাকড়ি কাটা শব্দটা গানের মতো কানে বাজে ।

পরিচিতিঃ-
-----------------
কবি অমিত সরকারের জন্ম দক্ষিণ ত্রিপুরার পাইখলাতে। পিতা রাখাল চন্দ্র সরকার এবং মাতা কনিকা সরকার। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ। বর্তমানে কেন্দ্রীয় আরক্ষা দপ্তরের কর্মরত ।

প্রকাশিত গ্রন্থ- মিথোজীবী (2010)

মন্দিরা লস্কর

অবলুপ্ত

একটা আনকোড়া প্রেমের কবিতা লিখতে
নিজেকে কীট  ভাবতে হয়,
ঢুকে যেতে হয় পুরুষ্ঠু দেওয়ালের কোন এক সুক্ষ্ম ফাটল গলে।
যেখানে রোজ এঁদো ডোবার সাথে বেঁচে থাকারক কথা বলে উদ্বর্তীত অশ্বত্থের চারা‌।
উইপোকারা জানে জমানো অক্ষর কতটা কঠিন
ফেলে রাখা ডাইরির পাতায়।

স্রোতহীন স্থির জলেও বাঁচে জীবন,
ব‍্যার্থতার দীর্ঘশ্বাসে অজস্র বুদ্ বুদে।
মৃত‍্যু নেই বলে আমরা
আঁধার থেকে আঁধারে হাঁটি।
মিথেনের আলো খুঁজি কর্ণিয়ায়।

অবাক হই!
একটা প্রেমের কবিতায় আজ আমরা কোথাও নেই!
বিলুপ্ত 'আমি ই', বিলুপ্ত 'তুমি ই'
হাজারের ভিড়ে হারিয়ে,
'আমিও', 'তুমিও'।

               

পরিচিতিঃ-
-----------------
মন্দিরা লস্কর ত্রিপুরা রাজ্যের কবি। তিনি আগরতলায় থাকেন। রাজ্যের প্রথম সারির ম্যাগাজিনগুলোতে নিয়মিত লেখা প্রকাশিত হয়। নিজের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থও রয়েছে। মনন স্রোতে  মূল্যত এটাই কবির প্রথম লেখা।

Thursday, January 24, 2019

সোমেন চক্রবর্তী

নিরাময়
             

দিনের শেষে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে পুরানো কাগজ, আর
ভেঙ্গে যাওয়া উৎসবের ফিকে জেল্লা, 

এই তথ্য বুঝে নেওয়ার পর
পরম ধ্যানে বসে একটু জিরিয়ে নিই;
ঈশ্বর তো অজুহাত মাত্র... 
তখন শুধু খুঁজতে থাকি হারিয়ে যাওয়া আত্মনির্যাস

বুঝতে পারি
এটা কোনো জীবন নয়;
আসলে আমরা স্পন্দন জনিত জটিল রোগে ভুগছি 

তল্পির ভিতর তখন বয়ে বেড়াই শিরিষকাগজ;
ইতিহাসের পাতা ঘষে মুছে ফেলতে চাই রক্তবমির দাগ

কবি পরিচিতিঃ-
----------------------
কবি সোমেন চক্রবর্তীর জন্ম ১৯৮৬ সালের ৪ঠা জুন ত্রিপুরার সাব্রুম মহকুমার দৌলবাড়ি গ্রামে।
বর্তমানে কেন্দ্রীয় আরক্ষা দপ্তরে কর্মরত
কর্মস্থল - রাজস্থানের মাউন্ট আবুতে।

কবির দুটি প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - "আমাকে আর ভয় দেখিও না", "জল আয়নার আমি"

সুমন পাটারী

রিংমাস্টার

বি, এ পাশ করা প্রাইভেট টিওটর আমি
স্কুলশিক্ষকের মতো আর পারি কই!

রাত আটটায় পাশের বাড়ি থেকে
নুন লঙ্কা ধার করে আনেন মা।
খেয়াল রাখেন বাবা ও আমি যেন টের না পাই।

বাবার সাথে খেতে বসি না এখন
ঘরে ঢুকেই সিগারেট জ্বালাই
বাবা আসেনা যখন তখন
এভাবেই কেটে যাচ্ছে লুকোচুরির জীবন

মা এই খেলার দক্ষ রিংমাস্টার।

পরিচিতিঃ-
-----------------
ত্রিপুরা রাজ্যের তরুণ কবি সুমন পাটারী। তার জন্ম ১২ই জানুয়ারী ১৯৯৩ সালে। তাঁর কবিতায় সমাজের চাপা পড়া সত্যের মুখোমুখি হতে হয় পাঠককে। কত সত্য যে চাপা পড়ে থেকে যায় সেটা নিখুঁতভাবে তুলে এনে উপস্থাপনে সুমন পাটারীর তুলনা মেলা দায়! রাজ্যের বিভিন্ন প্রকৃতিগত বৈশিষ্টের সাথে জীবনকে যুক্ত করে একটা নতুনত্ব সৃষ্টি করে উপস্থাপন করেন তিনি। সাহিত্যে নতুনত্ব সৃষ্টি করাই তার লক্ষ্য। তিনি গ্রেজুয়েট (বিসিএ)। তিনি দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে 'দিনকাল' নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেন।

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থঃ-
-----------------------------
১। মাটি মানুষ,
২।  তারা দেখার পাপ

যৌথ সংকলন
সমকালিন  ত্রিপুরার পনের জন কবির কবিতা

সুব্রত দেববর্মা

জাগতিক মহাজাগতিক মারপ্যাচ

কিছু মানুষ প্রশান্তির খোঁজে ব্রহ্মচর্যে,
কারুর অমৃতরস বেরিয়ে পড়ে গরম বীর্যে।
কেউ বুক পকেটে হাতড়ে বেড়ায় আলু-বেগুনের ফর্দ,
হটাৎ করে নেপচুন-প্লুটো জায়গা বদল যদি করতো।
তবে জাগতিক আর মহাজাগতিক দহরম মহরমে,
রাত জেগে জেগে সব কালরাত্রির মহা সম্ভমে।
যদি শিবলিঙ্গ চূড়ায় স্মৃতিরা মেঘ করে উঠে সবল,
মহাজাগতিক বিচরনে জাগতিক ক্ষয়ের সম্ভাবনা প্রবল।
সাংসারিক দ্বন্দ্ব সমাস এবং ব্রহ্মচর্যের একাকীত্ব,
জাগতিক মহাজাগতিক মারপ্যাচে মনিব থেকে ভৃত্য।

পরিচিতিঃ-
-----------------
অধুনা আগরতলা শহরের অনতিদূরে পুরাতন আগরতলায় কবি সুব্রত দেববর্মার জন্ম।বয়েস তিন কুড়ির অর্ধেক ছুঁই ছুঁই হলেও রোমামটিসিজম এখন ও চুয়ে পরে প্রত্যেক লেখায়।জাগতিক মহাজাগতিক মারপেঁচ উনার তীব্র ভাবে স্বীকার করেন।তাই মহাজাগতিক বিচরণে জাগতিক দিকের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে লিখতে থাকেন একের পর এক শক্তি কাব্য।বৃষ্টিতে দেশলাই কাঠি ভিজে নেতিয়ে পড়লেও যেমন নুতন সূর্যের অপেক্ষা করে, কবির আশা এই পৃথিবীর সমস্ত দহরম মহরম শান্ত হয়ে উদিত হবে লাল আভা।

ড. রঞ্জিত দে

পড়ন্ত বিকেল

এখন পড়ন্ত বিকেল
ঘরে ফেরার ব্যস্ততা
চেনা অচেনার গবাক্ষ-
ক্রমে ক্রমে আলো হারিয়ে
বনফুল - জলপাতা খোঁজে জোনাকী
একটি নদী - দূরন্ত গতি
জীবনের কথা বলে চলে
এখন পড়ন্ত বিকেল
সেও ছুটে চলে কথা বলেনা -
সমুদ্র সন্ধানে ব্যস্ততা।

কোটাল নদী - শুষ্ক শূণ্যতা
সময়টা বদলে যাবে
রাতের আতঙ্ক কেটে যাবে
ভোরের কুয়াশাও।
ম্লান হয়ে যাবে - অহংকার,
যেন রোদ্রহীন দিবস।
স্তব্ধ প্রহর লাভ লোকসানের হিসেব
সন্ধ্যার মেঘ যেন অক্টোপাসের জাল
একদিন আলোর প্লাবনে প্লাবনে
ঘোড়ার ক্ষুরের মতো উত্তেজনা ছড়াবে-
বারুদের হৃদয়ের মতো শব্দ ফাটিয়ে।

পরিচিতিঃ-
-------------------
কবি ও লোকসংস্কৃতি গবেষক ড. রঞ্জিত দে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্মগ্রহন করেন। বর্তমান ঠিকানা দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুমের আনন্দ পাড়া। ১৯৬৭ সালে সর্বভারতীয় প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান ও পুরস্কার লাভ করেন। লোকসংস্কৃতি বিষয়ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুস্তক রচনা করে ত্রিপুরার সহ বাংলাদেশের পাঠক মহলের কাছে সমাদৃত হয়েছেন। তিনি মননস্রোতের অভিভাবকদের মধ্যে অন্যতম।

উমাশঙ্কর রায়

জীবন থেকে ধার নেওয়া

- ধুর, তুমি যে কী একটা ব্যাঙ !
- অ্যাই, তুমি আমারে ব্যাঙ্ কইলা ক্যান্ ?
- আরে ! অহন দেখি সত্যি কথা কইলেও ঘরের মধ্যেই ঝামেলা পাকাইয়া যায় !!

- আরে হিডা কইছি নাতো ...!
- তাইলে কিতা কইছো ? তোমারে কি বেজাতে ডাকলে খুশি হইতা ?
- আরে না, বেজাতে ডাকবা কিলিগা ? ইডা হয় নিকি ?
- তাইলে কও - তোমারে ব্যাঙ্ কমু না, তো- কী কমু ?

- ক্যান, তুমি কি শোনো না - এই বাড়ির মনিবেরে আমডার মালকিনে কেমনে ডাকে ? এমন কইরা ডাকতে পারো না বুঝি - " হা-ই - হ্যান্ড সাম " শুনতেও কত্ত ভাল্লাগে, তাই না ?
- উঁহু, নাহ্ । আমি মিথ্যা কথা কইতে পারতাম না।
- আ:হা ! শুধু মিথ্যা কইবা ক্যান ? সত্য মিথ্যা মিলাইয়া কইলেই তো দোষ কাইট্টা যায়। সত্য মিথ্যার মধ্যে একটা ব্যালান্স করতে শিখো। নাইলে বাঁচতে পারতা না। আর- সত্য মিথ্যা মিলাইয়া কইলে যদি কেউ খুশি হয় - তাইলে ক্ষতি কী কও ?

- তুমি হইলা গিয়া ব্যাঙ্ । তোমার যে গলা বুক পেট সব সমান। তোমারে আমি হ্যান্ডসাম কই কেমনে কও দেখি ? পতি দেবতারে এমন কইরা মিথ্যা কওনডা কি ঠিক ?!
- আহ্ ! কী যন্ত্রণায় পড়লাম রে বাবা ! অহন বুঝছি, তোমারে এই অট্টালিকার মইধ্যে আইন্না আমার কোনো লাভই হইছে না।

- ওমা ! কও কী !! তুমি আনলা কই ? আমরা যে ভাইস্যা আইলাম ইখানে । স্রোতের ঠেলায় যে আমরা আইয়া পড়লাম ইখানে  - ইডা বিলকুল ভুইল্যা গেলা ?!
- আরে, তা তো বুঝলাম । কিন্তু আমি আইছি লিগাই তো তুমি আইছ ? না কি কও ?
- তা অবশ্য ঠিক।

- কিন্তু কথা হইল - এমন কইরা ভাইস্যা গেলে চলবো ?! বন্যার জল কও, কিন্বা স্রোতের টান - যা- ই হোক, এমন ভাবে ভাইস্যা গেলে কেমনে হইবো ? কিছু শিখন লাগত না ? শুধু এই ঘর থিকা ঐ ঘর, আর এই পাড়া থিকা ঐ পাড়া - এমন করলেই হইবো ?!
- আরে, তুমি যা-ই কও না ক্যান্ , যত্ত গল্পই শোনাও না ক্যান্, তোমারে আমি কিন্তু হ্যান্ড সাম কইয়া মিথ্যা কইতে পারতাম না। নাহ্ ... ইডা কিছুতেই হইতো না।এমন ত্রিভূজের মতো প্রাণীরে হ্যান্ড সাম কইয়া আমার এতদিনের শিক্ষা জলাঞ্জলি দিতে পারতাম না।

- হায় রে ! তুমি তো দেখতাছি সবই গুলাইয়া লাইতাছো !!
- যা কিছু হোক। তবুও মিথ্যা কইয়া পিরীত করতে পারতাম না।
- আহ্ ! কী মুশকিলে পড়লাম রে বাবা ! বুঝছি, ইলিগাই মানুষে রাইগ্যা গেলে কয় -"ব্যাঙের জাতে কিছু বোঝে না।"

- অ্যই, জাত তুইল্যা কথা কইও না কিন্তু !
- আইচ্ছা, ঠিক আছে। এইবার কান খাড়া কইরা আমি যা কই তা শোনো -

- আইচ্ছা, কও শুনি।
- তুমি চুপি চুপি ঐ সোফার কিনারে গিয়া বও। আর আমি ঐ আলমারির কিনারে দাঁড়ামু। এইবার চোখ কান খোলা রাইখ্যা - মনিবের কান্ডটা দেইখ্য।
- বুঝছি, আসলে মানুষের কথা কান পাইত্তা শুনতে শুনতে তোমার অহন নিজের বিচার বুদ্ধি সব লোপ পাইছে।

- কী কইল্যা ?!
- ঠিকই তো কইছি। এই যে তুমি কইল্যা - আমি গিয়া বইতাম সোফার কিনারে, আর তুমি দাঁড়াইবা ঐ আলমারির কিনারে - ইডা আবার কেমন কথা ?! .... তুমি কি ব্যাঙের চলন গমনের  জ্ঞানও হারাইয়া লাইলা না কি ?!
- মানে ?!
- তুমি কি জানো না - ব্যাঙেরার দাঁড়াইলেও যা, না দাঁড়াইলেও তা। খুব কিছু পার্থক্য হয় না। কিন্তু মানুষের লিগ্যা অবশ্য বিষয়টা অন্যরকম। আমি ইডা ঠিক জানি, স্বামীজি কেন মানুষেরে কইছিলেন, - "ওঠো, জাগো, পাওনাটা বুইজ্জ্যা লও।"
- খাইছে ! এত্ত কিছু জানো তুমি ?!
- হুঁ, পড়াশোনা ইট্টু হইলেও তো করছি ।
- আইচ্ছা, অহনে রাখো ইসব কথা। ঐ দ্যাখো, মনিব অহনে মোবাইল লইয়া বাইরে যাইতাছে।এতক্ষণ ধইরা ঘরে যা যা কইছে তার কয়ডা সত্য, অহন ঠিক টের পাইবা। আসলে কী জানো, চেনাজানা গন্ডির বাইরে গেলেই আসল রূপটা অনেক সময় ধরা পড়ে।
- অ, অন্য পাড়ায় গিয়া গান গাওন সোজা, তাইতো ?
- আরে ধুর্ । অহন চুপ মাইরা মনিবের কথা শোনো। গান গাইও পরে।
- তুমিও দেইখ্য কিন্তু - বর্ষা আইতে অহনো অনেক দেরি....! তুমি আবার দেখাদেখি গলা ফাটাইয়া গান গাইতে শুরু কইরা দিও না।

পরিচিতিঃ-
-------------------
উমাশঙ্কর রায় ত্রিপুরা রাজ্যের একজন বিশিষ্ট লেখক। তিনি কবিও। গভীর উপলব্দী প্রকাশিত হয় তার কবিতায় এবং প্রবন্ধে। মানুষের ভাবনার জগতে নতুন দৃষ্টিকোন আনে। তিনি বর্তমানে মহারাজা বীর বিক্রম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে কর্মরত।

প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থঃ-
১। এক চিলতে সমাজ
২।  প্রশাসনের কানাগলি

প্রীতম শীল

অনুগল্প : লক্ষ বেকারের কথা

- হ্যালো! দাদা আমি প্রীতম বলছি। আমি গতকাল একটি প্রত্রিকায় কর্মখালি বিজ্ঞাপনে আপনার নাম্বার টি পেলাম।
- হ্যাঁ বলুন আমরাই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম।  আমাদের একজন কর্মচারী প্রয়োজন ছিল।  একটি প্রতিষ্ঠিত কাপড় দোকানে কাপড় বিক্রির জন্য।

- হ্যাঁ দাদা আমিও আপনাদের বিজ্ঞাপনের অংশটা পড়েছি, আমি রাজি আপনার দোকানে কাজ করতে।
- তা আপনার পড়াশুনা কতদূর?
- আজ্ঞে দাদা আমি বি.এ পাশ।
- আপনার কী পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে?
- আজ্ঞে না দাদা,  এর আগে আমি কোথাও কাজ করিনি। এই তো এবছর পাশ করে বেরিয়েছি। বাবা কৃষক, সংসারের হাল টানতে পারছেনা বলেই কাজটা আমি চাইছি।  তবে আমার অভিজ্ঞতা না থাকলেও আমি আপনার কাজটা যে কোন ভাবেই করে দেব।
- আরে ভাই তা তো বুঝলাম, তবে তুমি যে একটু দেরি করে ফেললে।
- তার মানে বুঝলাম না দাদা। মানে কাল বিজ্ঞাপন দেওয়ার দু'ঘন্টায় আমি ত্রিশ টা উপরে ফোন রিসিভ করি, আবার কেউ কেউ তো এখানেও এসেছিল। আর আমি একজনকে নির্বাচিত করেও ফেলেছি। কাজ টা তোমার থেকে ছেলেটির প্রয়োজন মনে হয় বেশিই ছিল। ছেলেটির নাম রঞ্জিত,  বাবা নেই, বিধবা মা ও বোন আছে বাড়িতে। তুমি কি জান ছেলেটি এম.এ পাশ।
- তবে ঠিক আছে দাদা রাখছি।
- তবে শোনো প্রীতম আমার যদি ক্ষমতা ও অ্যাবিলিটি থাকতো তোমাকেও একটা কাজ দিতে, দিতাম তবে। তবে একটা বিজ্ঞাপন আজ আমার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, কতনা অজানা প্রীতম ও কতনা অজানা রঞ্জিত এর বেকারত্বের জ্বালায় নীরবে চোখের জল ফেলে বলছে "আমিও কাজ চাই! "

পরিচিতিঃ-
-----------------
প্রীতম শীলের জন্ম সোনামুড়া মহকুমার কাঁঠালিয়াতে। বিএ স্নাতক। পেশায় প্রাইভেট টিউটর। এই সংখ্যায় মননস্রোতেই তার লেখা প্রথম প্রকাশিত হয়।

তরুণ কান্তি পাল

ভারত ভ্রমণ

২৫ জুলাই, ২০১৬। জীবনে প্রথম ইন্ডিয়া ভ্রমণের এই দিনে ব্যাঙ্গালুরু থেকে ৪৯ ঘন্টার ট্রেন যাত্রার শুরু। উদ্দেশ্য নিউ-জলপাইগুড়ি। আমার জীবন কাহিনীতে বৈচিত্র্য আনয়নকারী সেই ট্রেনের নাম ‘নিউ তিনসুকিয়া এক্সপ্রেস’। ট্রেনের গন্তব্য তিনসুকিয়া, আসাম। ভ্রমনসঙ্গী বন্ধুসুলভ ছোটভাই, প্রকাশ। রাত ১১:৩০। চেপে বসি আমাদের জন্য পূর্বনির্ধারিত ৩-টায়ার এসি বি-৩ বগীর ৫৬ ও ৫৭ নম্বর সিটে। ট্রেনের সম্মুখদিক বিবেচনায় বগীর প্রথম কামরায় অবস্থান আমাদের। ট্রেন ছাড়ার সময় ১১:৫৫। তথাকথিত লাভ এ্যাট ফার্স্ট সাইটে অবিশ্বাসী আমি তখন আমাদের ব্যাগপত্র গুছিয়ে রাখতে ব্যস্ত। আমার পূর্ববিশ্বাস গুড়িয়ে দিয়ে আলোক ঝলকানি হয়ে দৃশ্যপটে কারও আগমন। বিগত ৭ দিনের ক্লান্তি ধুয়ে সে আরো প্রাণবন্ত করে দিলো আমায়। খাঁটি বাঙালী আমি। মনোভাব অনেকাংশেই রক্ষণশীল। নিজেকে সামলে নেই। যথাসময়ে চলতে শুরু করে ট্রেন। সকল আধুনিকতা সম্বলিত ট্রেনটিতে যথারীতি ডিনার ও অন্যান্য কাজ শেষে ঘুমিয়ে পরি। ২৬ জুলাই, ২০১৬। ‘চায়ে.... চায়ে......’ চা বিক্রেতার ডাকে ঘুম ভাঙে। ঘড়িতে তখন ৮:৩০। ৩-টায়ারের আপারে সিট হওয়ায় সিড়ি বেয়ে নিচে নামি। ফ্রেশ হয়ে কামরায় ফিরে দেখলাম সবাই উঠে পরেছে। কিছু অপরিচিত মুখ। কাল বেশি রাত হয়ে যাওয়ায় কারো সাথেই পরিচিতি হয়নি। কাজটি সেরে নিলাম আজ। কামরায় আমরা দুজন ব্যতীত ২জন আসাম নিবাসী, বাকি ২জন পশ্চিম-বঙ্গীয়। মজার বিষয় এই যে ২জন আসাম নিবাসী সহ সবাই বাংলায় পারদর্শী। একসাথে সকালের নাস্তা ও অনেক গল্পগুজব হলো দুদেশ নিয়ে। মুঠোফোনে লো-ব্যাটারী সিগনাল সত্ত্বেও আমার কামরায় চার্জিং পয়েন্ট না পেয়ে উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল আমাকে। একজন ভারতীয় সঙ্গীর প্রশ্ন, 'কিছু খুঁজছেন দাদা?'. আমরা দুজন ব্যতীত বাকি সবাই প্রায়শই এই ধরণের ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। তাই আমি বলতেই আসাম নিবাসী একজন বলে দিলেন, 'পাশাপাশি দু-কামরার জন্য যেকোনো এক কামরায় চার্জিং পয়েন্ট থাকে। একটিবার পাশের কামরায় গিয়ে দেখুন দাদা।' ভাগ্যদেবতা অশেষ কৃপাময়। মাত্র একটি দরজা পার হলেই পাশের কামরা। আমি পা বাড়াই। আমার দৃষ্টিসীমায় আরো একবার আলোক ঝলকানি। সেই অপরূপা, এক ঝলক দেখেছি কাল যাকে। আমার অবস্থান সেখানেই, যেখানে ওর অবস্থান। নিজেকে সংবরণ করলাম পুনরায়। চার্জিং পয়েন্টও দেখতে পেলাম। কিন্তু সে অবধি পৌছতে অতিক্রম করতে হবে মেয়েটি সহ ওর ৪ সদস্যবিশিষ্ট পরিবারটিকে। বুঝে নিতে কষ্ট হলোনা, সাথে ওর বাবা, মা আর ছোটভাই। কাউকে নির্দিষ্ট না করেই অনুমিত চাইলাম, 'Can I use this charging point please?' অন্য কেউ শুনলোনা বোধহয়। মেয়েটি মুচকি হেসে বললো, 'Sure'. ফোনটি চার্জে লাগিয়ে ফিরে এলাম নিজ কামরায়। মনে উৎফুল্লতার লুটোপুটি। ১.৫ ঘন্টা কেটে গেলো। ওকে পুনরায় দেখার অভিপ্রায় অন্তরে আমার। তাই মুঠোফোনটি ফেরত আনতে গেলাম। এবার ওই কামরায় যেতেই কেন জানিনা মনে হলো মেয়েটিও আমার অপেক্ষায়। আমি মুচকি হাসতেই ও নিজের হাতে ফোনটি চার্জ হতে খুলে দিলো আমায়। ছুঁয়ে গেলো ওর হাত আলতোভাবে আমার হাতটিকে। চলে এলাম আমি। আমার কামরার নির্দিষ্ট একটি জায়গা থেকে কিছুটা দেখা যেতো ওকে। কামরার সবার সাথে সুসম্পর্ক হওয়ায় মাঝে মধ্যে ওকে দেখতে ওখানে গিয়ে বসতে থাকি আমি। আমাদের দুই কামরার জন্য নির্ধারিত ওয়াশরুম ও বেসিন ব্যবহারের জন্য প্রতিনিয়ত ওকে পার হতে হতো আমার কামরা। ওর দুহাত ভর্তি প্রসাধনী বা অন্য কিছু নিয়ে ওয়াশরুমে যাওয়ার সময় বহির্গমন দরজা খুলে দিয়ে সাহায্য করতে সদা প্রস্তুত থাকতাম আমি। আমার প্রাপ্তি ওর পরিতৃপ্তির হাসি। ২৭ জুলাই, ২০১৬। আমার ভাইটি ওকে জিজ্ঞাসা করে,'Excuse me, where are you from?.' ও বলে, 'Guwahati, Assam. You?' প্রকাশের উত্তর, 'Bangladesh. Have you ever visited Bangladesh?' মেয়েটির উত্তর, 'No.' রাত ১২:৫৫। আমাদের ট্রেন থেকে নামার মুহূর্ত আসন্ন। কম্বলে মুখ অবধি ঢেকে নিদ্রাচ্ছন্ন ও তখন। ওকে আর একটিবার দেখার আকুতি পায়ে পিশে ওর কামরায় গিয়ে টেবিলে রাখা গ্লাসের নিচে আমার একটি ভিজিটিং কার্ড রেখে বিদায় বলি ট্রেনটিকে। কার্ডের পিছন পার্শ্বে নিজ হাতে লিখি, ‘Please search on FB & stay connected.’ দার্জিলিং ও কলকাতা ঘুরে দেশে ফিরি ০৩ আগষ্ট। ০৭ আগষ্ট পুনরায় আমার কর্মস্থলে। মনে এক অস্পষ্ট আশা ওকে ঘিরে। ১০ আগষ্ট রাত পেরিয়ে তখন ১১ তারিখে পা দিয়েছে। রাত ১:৩০। মোবাইল ডাটা অন করতেই ফেসবুক মেসেঞ্জারে রিকুয়েস্ট মেসেজ, 'I thought you would recognize me after I liked your pics. But probably you didn't.' বিস্ফোরিত চক্ষে তৎক্ষণাৎ আমার উত্তর, 'Really sorry. My fault that was. Can I get excuse for that?' পরের সকালে ওর মেসেজ, ' it's ok. Have you recognized me or not?' আমি, 'Why not? Is it hard to recognize you? ' কিছুক্ষণ কুশল বিনিময়ের পর মুঠোফোন নম্বর দিয়ে হোয়াটসএ্যাপে আসতে বলে ও আমায়। পরের দিন সন্ধ্যায় ওর মেসেজ, 'Can we talk for 30

পরিচিতিঃ-
------------------
প্রতিবেশী দেশের তরুণ লেখক তরুণ কান্তি পাল।
বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে কর্মরত। তিনি পেশাগত দায়িত্বশীলতার প্রতি যেমন আন্তরিক, তেমনি সাহিত্য চর্চা এবং লেখালেখির বিষয়েও। মননস্রোতের এই সংখ্যায় তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশিত হলো। তিনি মূল্যত বাংলাদেশের বিভিন্ন দৈনিক এবং মাসিক লিটল ম্যাগাজিনে লেখালেখি করেন। 

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...