Friday, February 21, 2020

মনন স্রোতে আপনাকে স্বাগতম

অমর একুশে

আন্তর্জাতীক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা

সম্পাদকীয়

যে বুকে প্রেম জাগে, সেই বুকেও ব্যথা হয়। কবিতা ছাড়া এই কথা সচরাচর কে বলবে!

বারুদ চাপা বুকের উপর বিমানের মতো আগুণ চলে গেলেও বারুদ জেগে না উঠাই প্রেম। হাজারো প্রেম ভাঙার গল্পের পেছনে থাকে একেকটি শক্তিশালী ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। সেই হিসেব কবিতা ছাড়া কে করে!  

প্রতিটি শব্দই ভাষা। কবিতার ভাষা। প্রতিটি ভাষাই মায়ের। আমরা আন্তর্জাতীক মাতৃভাষা দিবসের দিনে নিজেদের আরও একটি সংখ্যা প্রকাশ করতে পেরে তৃপ্ত। সংশ্লিষ্ট সকলকে কৃতজ্ঞতা। সবাই ভালো থাকুন। জয় হিন্দ।


শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা-সহ
জয় দেবনাথ
সম্পাদক
মনন স্রোত 

ছবিতে : সুমন || ক্যামেরায় : রাহুল বিশ্বাস

প্রীতম শীল

শক্তি সর্বদা সমান নয়
                   

স্বপ্নঘোর রাতে হটাৎ একটা বিকট শব্দ পেয়ে জেগে উঠলাম,বিছানার একপাশে ছিল টর্চ লাইট। হাতরে পাচ্ছিলাম না ক্ষানিক ক্ষন তার পর লাইট টা খুঁজে নিয়ে দড়জা খুলতে যাবো,হটাৎ করে বাড়ির বেড়ালটা মিয়াও মিয়াও বলে আমার সামনা দণ্ডি কাটলো।আমি কিছুটা ইতস্তত ভাবে বললাম,মেরি কী হয়েছে তোমার। বেচারা বিড়ালিনী কিছুই বলতে পারছিলনা। সে আমার সামনে থেকে ছুটে,আমার ধানের গোলার দিকে ছুটলো। আমি পিছন পিছন গেলাম।তার পর দেখলাম মা বিড়ালিনী ফুটফুটে চারটে বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। প্রথমে ভাবলাম তাই হয়তো সে এই রকম ছটফট করে আমার ঘুম ভাঙ্গালো। আমার খুব রাগ হলো,  এগুলোতো সকালেও দেখতাম। এত রাতে কাঁচা ঘুম ভাঙ্গানোর কি দরকার ছিলো। দড়জা  বন্ধ করবো এমন সময়  যা দেখলাম সত্যি খুব নির্দয়। বিড়ালিনী পাঁচটি বাচ্চা প্রসব করেছিল একটি আধা খেয়ে নিয়েছে একটা ধেঁড়ে ইদুর। তবে আপসোস হল,যে প্রানিটা বড়ো হয়ে এমন হাজারো ইঁদুর মারার কথা,তাকে কিনা একটা ইঁদুর মেরে ফেললো। আর মা ইঁদুরটা বাকি গুলোকে হারাবার ভয়ে,চরম শত্রু কে মারতে পারলোনা। তাই হয়তো বিকট শব্দটা করে আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করেছিল।

পরিতোষ সরকার

আমি চাই না

আমি চাই না তোমার সেই ভালোবাসা

যে, ভালোবাসা শুধু আফিমের গন্ধ

আর নিকোটিনের ধোয়া মেখে রাখে। 

কি হবে সেই মিথ্যে ভালোবাসায় জড়িয়ে? 

শালিকের মন তৈরী হ‌ওয়ার আগেই যদি

দেহ মারা যায়, তাহলে কে করবে

প্রেমের সঞ্চার?

গোটা বছর লাঙল করা মাঠে

শস্য রোপণ না হলে সমাজ তাকে 

বন্ধ্যা বলেই মানে। 

কি হবে আমার ভালোবাসাকে বন্ধ্যা করে।

পাবে কি কিছু তুমি? 

কিছুই পাবে না।

এক অমসৃণ স্মৃতির কড়াজালে

আটকে যাবে তুমি, শ্বাস বন্ধ হয়ে আসবে; 

তবুও ভাঙতে পারবে না মরিচার মতো

ফুলে উঠা সেই স্মৃতির কড়াজাল। 

তখন তুমি কাঁদবে,  কেঁদেই যাবে

আর অশ্রু ঝরবে আমার।


সুজন দেবনাথ

বসন্ত


বসন্তের ঐ কোকিল ডাকে

আয়রে ছুটে আয়

গাছে গাছে সবুজ জামা

ফুলে রাঙা  গা'য়

রঙ বেরঙের প্রজাপতি

উড়ছে কত আজ

সেজেছে আজ নতুন রঙে

বসন্ত ঋতু রাজ

নতুন গাছে নতুন শাখে

বাঁধছে পাখি বাসা

মুগ কলাই আর কতকিছু

চাষ করছে চাষা

চারিদিকে আজ কত ফুল

লতায় পাতায় ভরা

মনমুগ্ধকর প্রকৃতি আজ

যেন ভুবন মনোহরা। 

অনুপমা দেবনাথ

ক্ষুদিরাম

তুমি এসেছো আমাদের কাছে
আশার আলো হয়ে
কত আশা স্বপ্ন ছিল তোমার অন্তরে।

তুমি ছিলে সবার কাছে সবে নবীন
তবুও তখন তোমার বুকে বেজেছিল অগ্নির বীণ।
সে অগ্নির তেজে তুমি পুড়েছিলে ব্রিটিশের মুখ,
বিসর্জন দিয়ে তুমি নিজের সমস্ত সুখ।

দেশকে স্বাধীন করতে দিয়েছ
তুমি নিজের প্রাণ।
তাই আজও ভুলিনি আমরা তোমার সেই আত্মবলিদান। 

তোমার রক্তে আজকে এই দেশ হল স্বাধীন,
তাই ভুলবো না কখনো তোমার সেই ঋণ।
সবার বুকে অমর হয়ে থাকুক তোমার সেই মন্ত্র
সেই মন্ত্রে এই দেশ হল স্বাধীন ও স্বতন্ত্র। 
তাই আজও উচ্চস্বরে বলে যাব সেই মন্ত্র
সেই মন্ত্রের ধ্বনি ছিল একটাই—
বন্দেমাতরম,বন্দেমাতরম,বন্দেমাতরম।

সংগীতা দেব

অমর একুশ

বীর সহিদ সালাম,রফিক,জব্বার,বরকত!
কেউ আর তোলেনা আওয়াজ,
মাতৃভাষার জন্য।
হয়না আর রক্ত গরম, মাতৃভাষার অসন্মানে!
কারো বিবেকে দেয়না ধিক্কার, মাতৃভাষা নিয়ে অপমানে!
ইংরেজীটা আজ ফ্যাশন সবার মাঝে
উঠতে বসতে বলা চাই ইংরেজী,
আজ কালকার স্যোসাইটিতে।
বাংলা আজ পুরোনো,
বলতে গেলেই লজ্জায় আটকে যায় মুখে।
ইংরেজী স্কুলেই পড়তে হবে
ভালো শিক্ষা পেতে হলে।
বাংলা স্কুল গুলো পড়ে রইলো ফাঁকা,
অচল বাংলায় লেখাপড়া হয় বলে।
আমরা এখন অনুকরণের নেশায় এত মত্ত
ভুলেই যাচ্ছি আসল অহংকার,
আমার প্রথম মুখের ভাষা, মায়ের ভাষা বাংলাকে।
আমার ভাষা বাংলাকেই চাই আমি,
অফিস, আদালত, স্কুল, কলেজে।
আর কেউ প্রতিবাদ করেনা,
বাংলার বদলে অন্য ভাষা চাপানোর দুঃসাহসে।
৫২এর রক্তক্ষয় মাতৃভাষার সন্মানে।
এখন তো শুধুই আনুষ্ঠানিকতা,
সহিদ বেদীতে ফুলদানে।
সহজেই বলে ফেলি বাংলাটার  ঠিক চমক নেই,
আবারো দিন কাটে ইংরেজীর চালে।
সহিদ বীরদের আত্মা বলে,
আগুন জ্বলুক আবার প্রাণে।
প্রতিবার ভষ্ম হউক বাংলা ভাষার অসন্মান।
তখনই একুশ অমর হবে,

Thursday, February 20, 2020

অনুপম দেব

গুণই পারবে


মানুষ আজ বড্ড আমি প্রিয় 

নিমজ্জিত আপন বাহারে,,, 
রূপের মায়া আর অর্থের খেলা
ভর করেছে তাহারেl

ভুলে আজ সব সামাজিকতা,,
ধন প্রাপ্তিতে তার সব ব্যকুলতাl
দিনরাত শুধু রূপ আর ধনে বরাই 
ভুলে গিয়ে গুনের কথাl
হয়তো ভুলে যায় সবাই 
ক্ষণস্থায়ী এই রঙ্গিন বিলাসিতা,,,

জেনেও আজ চায় না তারা 
গুণের কদর করতে,,

ইতিহাস সাক্ষী আছে যে 
গুণই পেরেছে সমাজের হাল ধরতেl


কল্যাণব্রত বসাক

প্রেম  ভাঙার গল্প 


ভালোবাসা নিয়ে ফ্যান্টাসি ছিলো সবসময়ই। কিন্তু চুটিয়ে প্রেম যাকে বলে তা আসেনি কখনো। আক্ষেপ ছিল,  উপায় ছিল না। 
শুনেছি আচ্ছা প্রেমিক হতে গেলে একদিকে মেধাবী ও বেহায়াপনায় সমৃদ্ধ হতে হয়।  কারন প্রেমের বোঝাপড়ার বিষয়টা রাজনীতির মতো জটিল।  মোটেই  মেধাবী নই,  উপরন্তু স্বভাবে ভীতু ছিলাম তাই বেহায়াপনাটাও  সময় মতো কাজ করেনি... ফলে দীর্ঘশ্বাস ভরসা।

এরমধ্যে ফেসবুক এসে গেলো। ফেসবুকের হাত ধরে কতশত বন্ধু। বাঃ। 
 মধ্য চল্লিশের  ভদ্রলোক( নিজেকে ভদ্রলোক বলার অধিকারটুকু আমার আছে) সুলভ আড়ষ্ঠতা, মধ্যবিত্ত মূল্যবোধের  কচকচানি ঝেড়ে দু-চার জন  ডিজিটাল বান্ধবী কে  HI, HELLO  বলেছি... যার মধ্যে  অনেকেই  রেসপন্স করেনি...তবুও  এ'ই বা কম কিসের।

খরা কেটেছে আরও পরে..... কি! খুশি তো সবাই!!

ইউরোপের , হ্যাঁ খোদ লন্ডনের  একাধিক  বন্ধু হয়েছে  ফেসবুকে।  
না না  আমি নই , ওরাই  ফ্রেন্ডরিকুয়েস্ট পাঠিয়েছে আমাকে। কেমন আছি, কি করি,  ঠিক কোথায় থাকি....মাগো ! কি যত্ন করে সব জিজ্ঞাসা করে।  মনে হলো অনেক দিন পর শুকনো ডালে নতুনপাতা গজালো।

বিদেশিনী বন্ধু। এই সুবাদে পরীক্ষার খাতায় 'আন্ডারকন্সিডার' লেভেলের ইংরেজীটা  নতুন করে চর্চা করা যাবে। অন্তত সেদিক থেকেও আমি খুশি।

কেউ সিঙ্গেল, কেউ ডিভোর্সি  কেউ বিবাহিত, (লজ্জা করছে বলতে) বিধবাও আছেন কেউ কেউ।
আমি কিন্তু সত্যিটা জনিয়েছি।  স্ত্রী পুত্র কন্যা  নিয়ে  আমার ভরপুর সংসার। 
এর মধ্যে  Jennifer ভীষণ ভাবে আকৃষ্ট হলো আমার প্রতি। 
বড় বিনয়ের সঙ্গে জেনিফার বললো:  If You don't mind plz send your whatsapp number.
আমি তৎক্ষণাৎ  send করলাম whatsapp number। ...আহারে শুধু তো একটা নাম্বার। 

যাই হোক, শুরু হলো  whatsapp chating

Good -morning, afternoon, evening,  night নিয়ম করে প্রতিদিন প্রতিবেলা উইস করে ভরিয়ে দিতে থাকলো।... 
প্রথমে Dear, dear থেকে darling, darling থেকে Honey 
আমিও কম কিসে শুরু করলাম friend দিয়ে। friend থেকে sweetheart. Sweetheart থেকে..... কি বলা যায়...কি বলা যায়... ওঃ হ্যাঁ  পেয়েছি, বললাম:  Priyatama.
What is this 'Priyatama'? রেগে টেগে জিজ্ঞাসা করলো জেনিফার।
দেখো কি কান্ড ...আমি প্রায় হোঁচট খেয়ে পড়েই যাচ্ছিলাম...এমন অবস্থা। 
Chat এ লিখলাম: sweetheart =priyatama . And Honey=priyatama also
নিজের উপর ভীষণ রাগ হলো... শা.. বাঙাল। এই তোর ইংরেজি!! প্রিয়তমা! ধুর।

যে যাই বলুক মেয়েটা না  কাঁচা মনের।  equal মার্কা ইংরেজি শুনেই বুঝে নিল কি বলতে চাইছিলাম।  
খুশি হয়ে জেনিফার বললো:
 Would you like to see some photos of me?
ওমনি  ঠেঙ ঠেঙ  করে কয়েকটি ছবি whatsapp এ আসার সংকেত পেলাম।

জেনিফারের সঙ্গে  chating এ জড়ানোর পর থেকেই  মন উড়ো উড়ো। 
যে সব জিনিস আমার আগে কোনদিন ভালো লাগেনি আজকাল সে সব একটু আধটু ভালো লাগে। যে সব গান এতোদিন ভালো লাগত না..এখন একটু একটু ভালো লাগে। 
আর যে সব খুব ভালো লাগত,  এখন সে সব দেখলে নিজেকে বোকা বোকা মনে হয়। হাসি পায়। ভাবি কেন যে এসব ভালো লাগতো এতদিন,  এক ভগবানই  জানেন।

জেনিফারের অনুরোধে আমি বেশকিছু সেলফি তুলে পাঠিয়েছি। ছুঁচোমুখো নয়।  তবে আমার টিনের বেড়ার ঘর, বার্নিশ-পলিশ ছাড়া কাঠের দরজা এসবই ব্যাকগ্রাউন্ড। আমি এতো দিনে  বুঝেগেছি ও'  (মানে জেনিফারের কথা বলছি) আমাকে ভীষণ ভালোবাসে;  তাই ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড কোন ফেক্টর না।
অবশ্য জেনিফারও  কয়েক ক্ষেপে ওর  অনেক ছবি আমাকে পাঠিয়েছে। মজার ব্যাপার হলো ছবি গুলোতে পোশাকের আধিক্য ক্রমেই কমে যাচ্ছিল।

ওর ছবি দেখে মনেপরে গেল ছেলেবেলার এক কথা। 
.. ....আমাদের প্রাইমারি স্কুলের পাশেই  ছিল সিনেমাহল। একদিন: প্রতিদিনের মতোই  স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে সিনেমাহলের সামনে সাঁটানো সিনেমার পোস্টের দেখছিলাম। একটি মেয়ের ছবি, পাশে একটা ক্যাপিটেল লেটারের A।
এমন সময় পেছন থেকে হেডস্যার চুলের মুঠি ধরে একটা জালি বেত আমার পিঠে উড়িয়ে দিল....কোন ক্রমে ফসকে দৌড়ে পালালাম।
 জেনিফারের ছবিগুলো  অনেকটা সেইরকম,  A লেভেলের।...হেডস্যার...সেই জালিবেত... সেই ভয় । ও ব্বাবা, সঙ্গে সঙ্গেই  ডিলিট।

তবে হ্যাঁ, মেয়েটা ভারতবর্ষ কে খুব ভালোবাসে। ও আমার কাছে INDIA সম্পর্কে জানতে চেয়ে বললো: Would like to know about your india

পড়লাম মহা বিপদে। বাংলিশ দিয়ে "এই ভারতের মহা মানবের সাগরতীর" কি করে বোঝাই!!
Google হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। খাবলে-খুবলে এটা ওটা নিয়ে জরা খিচুড়ি 1317 ওয়ার্ডের তিন প্যেরা send করে দিলাম। 
জেনিফার বললো: Good Good
বললাম:  Can I tell you more details?
জেনিফার বললো: All right now. I'll find out later

এই সব  আলাপচারিতায়  যখন একঘেযেমি এসে যাচ্ছিল। এমন সময় একদিন দুপুরে  whatsapp calling করে বসলো জেনিফার।
বাড়িতে ছিলাম। সব্বনাসের মাথায় বারি।  স্বাভাবিক ভাবেই ফোন ধরিনি। 
chat এ লিখলাম: Sorry. I'm busy now .You will call me later. I miss you my priyatama
জেনিফার লিখলো: don't worry I will call you later my honey.
আমি জানতাম ও রাগ করবে না। ফোন আমাকে করবেই।



সেদিন সন্ধ্যায় ক্লাবে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। টেবিলে টুং টাং শব্দগুচ্ছ  পানীয় আনন্দের  আবহ তৈরি করেছিল। এমন সময়  whatsapp এ call এলো। জেনিফার on line এ।
কোথায় যাই, কি করি ভেবেই আকুল।  Basically তিনটা বিষয়।  আমার ইংরেজিতে কথা বলা শুনে যেকোন মুহূর্তে একটা হুরুস্থূল ঘটে যেতে পারে,  গোপনীয়তা রক্ষার নামে বন্ধুরা আমাকে  আর্থিক হেনস্থা করতে পারে, আবার গোপনীয়তা ভেঙে দিয়ে আমার সাংসারিক শান্তির সাড়ে তেরটা বাজাতে পারে।
"ওঁ নমঃ শিবায়" তিনবার।   "জয় জয় দেবী চরাচর সাড়ে কুচ শোভিত মুক্তা হারে"  ছয়বার  মনে মনে উচ্চারণ করে বললাম:  hello Jennifer. Who are you?
জেনিফার: what?
আমি:  oh sorry sorry. How are you my          sweetheart
জেনিফার: yeh yeh  I'm fine.  how are you and what are you doing now
আমি: I   will   go   to   take  a  little   peg  of.....
জেনিফার: Are you having drinks?
আমি: YES  MY SWEETHEART (প্যারেডের কমান্ডের মতো উচ্চারণ)
জেনিফার: oh fine....I wish I could have been with you
আমি: ok ok 
জেনিফার: what ok
আমি:  Everything your  tak is good
জেনিফার: Ok keep going. Lov u honey. Call u later
ছয়টা জিহ্বা বের করে ছয় জোড়া চোখ আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।  গর্বিত ভাবে বললাম আরে ফরেনের বন্ধু, ইংল্যান্ডের। মাঝে মাঝেই কথা হয়।

যাই হোক  সেই রাত্রে জেনিফার কে chat এ লিখলাম "কিছু মনে করো না। আমি ভালো ইংরেজি জানি না"
জেনিফার উত্তর দিল: I understand all your words. Your voice is rich. I very much wish to see you once...I'll give you a surprise tomorrow. Good night honey
 
 পরদিন জেনিফার জানালো  সে  সপিং এ যাচ্ছে। আমার ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে সে আমাকে কিছু গিফট দিতে চায়।.... আমি মনে মনে  জানতাম এমন কিছু  হতে পারে। আমার  নিজের উপর বিশ্বাস ছিল। যতটা খারাপ লোকে আমাকে বলে...ততটা খারাপ আমি নই। 
আরে বাবা  ওরা ইংরেজ।  পৃথিবীর সবচেয়ে সভ্য জাতি।  তাই তো এশিয়ার উপমহাদেশ ভারতের এক'শ ত্রিশ কোটি লোকের মধ্যে সে আমাকেই সুসভ্য ভদ্রলোক হিসেবে বেছে নিয়েছে। ভালোবাসে।
 
সেই দিন রাত্রে প্রায় দশটা নাগাদ whatsapp এ কিছু ফটো  এলো। জেনিফার পাঠিয়েছে। একটা apple  i phone,  একটা apple leptop , একটা wrist watch, হাই প্রোটেক্ট করে কিছু নগদ পাউন্ড।

হতভম্ব হয়ে গেলাম। সবিনয়ে বললাম আমি অতি সাধারণ নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষ, এসবের আমার কোন প্রয়োজন নেই :  I am a very ordinary middle class man, I don't need any of this.
রেগে টেগে জেনিফার দুঃখ করে বললো : আমি গাঁটের পয়সা খরচ করে আমার ভালোবাসার মানুষটিকে কিছু উপহার দিতে চাইছি...অথচ তুমি নিতে চাইছ না। তুমি কি আমাকে অসম্মান করতে চাও?
বড় কাতর ভাবে জানালাম: রাগ করোনা প্রিয়তমা। ভারতীয় সংস্কৃতিতে কেউ কিছু দিলেই হাত পেতে নিতে নেই...লোভি বলবে লোকে। 
যদিও আমি লোভী নই। তবুও যেহেতু তুমি একান্তই দিতে চাইছ আমি পরম আদরে গ্রহণ করবো।
জেনিফার অত্যন্ত খুশি হয়ে জানালো,  আমার Postal address এ কুরিয়ার করে দেওয়া হয়েছে।  48 ঘন্টার মধ্যে দিল্লি এসে যাবে পার্সেল।

পরদিন দেরিতে  ঘুম ভাঙল।  উঠেই দেখি জেনিফারের মেসেজ।  লিখেছে সে বিশেষ কাজে সারাদিন ব্যস্ত থাকবে।  হয়তো chat এ আসতে পারবে না।
কি করবো, কি পরিণতি হবে, কেন এমন হলো, কেন এই মধ্য বয়সে এই সমস্ত ঘটনায় জরালাম,  বেরুবার উপায় কি , বেরুতে না পারলে কি হবে....রাজ্যের চিন্তা।
কেমন যেন মায়া কেটে যাচ্ছে। এ ঘর -বাড়ি -সংসার- স্ত্রী-পুত্র-কন্যা-  এই পরিচিত দুনিয়া আমায় নয়। আমি শুধুই লন্ডনে থাকার কথা।  ভুলে এখানে স্বর্গ থেকে অভিশপ্ত হয়ে এখানে থিতু হয়েছে। ডাক এসে গেল ...চলে যাব এবার। 
প্রিয়তমা জেনি chat এ লিখেদিয়েছে  20হাজার পাউন্ড আমার জন্য গোপন প্যাকেটে উপহারের সঙ্গে পাঠিয়েছে।  কিছু পাউন্ড আমার পারিবারিক কাজে খরচ করলেও বেশির ভাগ যেন লন্ডন যেতে খরচ করি।  ও আমাকে দু চোখ ভরে দেখতে চায়।  ঘনিষ্ট সান্নিধ্য পেতে চায়।  এর আগে ওর 33 বছরের জীবনে কোনদিন বসন্ত আসেনি। ....আহা কি মায়া।

প্রতিদিনের মতো খাওয়ার টেবিলে খেতে বসলাম সবাইকে নিয়ে (আর বেশিদিন এক সঙ্গে খাওয়া হবেনা)। অগ্নিসাক্ষী করে  সেই কবে বিয়েকরা  বউয়ের মুখের দিকে  অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম।
নিয়ম অনুযায়ী কাল সকালে দিল্লি এসে পৌঁছবে কুরিয়ার। ....তারপর আর কি সব শেষ।  আবার নতুন করে সাজানো।
হঠাৎ একটা পদ গরম গরম রেঁধে পাতে দিলো। কোনকিছু না বলে খেয়ে নিলাম। আমাকে দেওয়া শেষ করে আমায় স্ত্রী খেতে বসে যেই না মুখে তুললো সেই তরকারিতে  ওয়াক করে উঠলো। উদাসিনের মতো তাকিয়ে দেখলাম... কিছু বললাম না। 
আমায় স্ত্রী আমাকে জিজ্ঞাসা করলো:
...তুমি খেয়ে কিছু বললে না যে। তরকারি তে বিন্দু মাত্র নুন দেওয়া হয় নি।  কি করে খেলে তুমি।
বললাম: আমি কোন তফাত বুঝিনি। একই তো মনে হলো।
সে বলল: তোমার মাথাটা গেছে।

নিদির্ষ্ট দিনে সকাল থেকেই উদ্বেগ। সকাল 9 টায় ফোন এলো দিল্লি এয়ার পোর্ট থেকে। জানালো লন্ডন থেকে একটা মাঝারি আকারের পার্সেল এসেছে। ফোন করেছে ঠিকানা কনফার্ম করার জন্য। আমি ওকে করে দিলাম।
কিন্তু আমার মন বলছে  আরো একটা ফোন আসবে।....অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। 
দুই ঘন্টা পর  প্রত্যাশ মতোই সেই ফোন, কুরিয়ার অফিস থেকে। জানালো লন্ডন থেকে আসা পার্সেলটির  কুরিয়ার ভাড়া বাবদ 25 হাজার জমা করতে হবে। সঙ্গে টেক্সট মেসেজ করে কুরিয়ার কোম্পানির  ব্যাঙ্ক একাউন্ট নাম্বার দিয়েছে।
বললাম ,ঠিক আছে।

ঘন্টা তিনেক পর কুরিয়ার অফিস থেকে আবার ফোন। বললো শীঘ্রই টাকা জমা না করলে এয়ারপোর্ট অথরিটিকে পার্সেল রাখা বাবদ ভাড়া দিতে হবে। অন্যথায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
বললাম  না না  কোন  ব্যবস্থা নিতে হবে না।আমি থানায় যাচ্ছি আপনাদের একাউন্ট নাম্বারটা সামান্য ভেরিফাই করেই টাকা জমা করে দেব।

কি জানি কি হলো, হঠাৎ লাইনটা কেটে গেল। আসলে বললে তো বলবেন বলে ফেলেছি। jio নেটওয়ার্ক খুব খারাপ। 
জেনিকে সব জানানো দরকার। এসব কি হচ্ছে।
জেনিফারের whatsapp chat এ গিয়ে দেখি জেনিফার আমাকে ব্লক করে দিয়েছে।
আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।

ঠিক এমন সময়  Richa Braun  বার্লিন থেকে whatsapp call  করেছে। একথা সেকথার পর সে বলল:  While I was shopping, I came across some beautiful Male items which I got for you, now I'm going to delivery service to send them to you and you will receive it in your country.
মুখে বললাম:  ok honey
মনে মনে ভাবলাম ....আ বা র!

দিপ্সী দে

প্রেম তুমি কার!

প্রেম তুমি কার?
 শুধু কি প্রেমিক প্রেমিকার।
মানি না
কাল কি শুধু তাদের দিন 
তবে আমি মানি না।

প্রেম কি শুধু বছর ঘুরে 
দিবস পালন করবার দিন 
    মানি না।

কালকে সেই দিন
অপেক্ষার ভালোবাসা হারানোর দিন।
 প্রিয়-র  প্রিয়া যে 
মুঁছেছিল সিঁদুর সেইদিন।
  
যাদের প্রেম ছিল সর্বজনীন 
দেশ মাতৃকার প্রতি
রক্তের বিনিময়ের দিন।
পথচলতে চলতে চলেগিয়েছিল
না ফেরার দেশে
আর ফিরবেনা প্রিয় প্রিয়ার কাছে।
কাল যে দেশমাতৃকার ভালোবাসার দিন 
প্রিয়-র প্রিয়ার রক্তঝড়ার দিন।
প্রেম না হলেও বিষাদ ঘেরা 
স্মৃতির দিন।
ছোট মেয়ের বাবা হারানোর দিন।
বোনের ভাই হারানোর দিন।
 মার পূত্র হারানোর  দিন।
দেশপ্রেমিকদের প্রেম প্রমান করার দিন।

        
     'প্রেম'  
তুমি দেশমাতার 
   ' প্রেম'
তুমি বীর সেনাদের প্রিয়ার
  তবে যন্ত্রণার

প্রেম 
তুমি অব‍্যাক্ত শিশু সন্তানের 
প্রেম তুমি বীর সেনাদের।

কবিতা টি প্রাণ ফিরে পাবে
প্রত‍্যেক ভালোবাসা দিবসে।
স্মরণ করবে 
সেইসব বীর জওয়ান দের 
যারা এদিন প্রাণ দিয়েছিল
দেশমাতৃকার প্রতি 
ভালোবাসার প্রমান দিতে।

বিপ্লব দে

দণ্ডায়মান

আমার  প্রতীক্ষায় তুমি সেই এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছো !
এত অপেক্ষার ভার কে নিতে বলেছে  তোমায় ?
আমার কথা ভেবে ভেবেই তুমি আজ ক্লান্ত ।
পৃথিবীর সবকিছুই গতিশীল-
তুমি সেটা ভুলে গেছো ?

বসন্তের হাওয়ায় গাছেরাও পুরোনো স্মৃতি ভুলে যায় ।
অনাদরে পাতাগুলি আপনা আপনি খসে পড়ে ।
সে স্থান-ও দখল করে নেয় নতুন পল্লবেরা ।
নব যৌবনা নদীগুলি -ও আজ -
অসময়ে শুকিয়ে খানখান ,
তাকে -ও নতুন রূপ দেয় বর্ষার বারিধারা ।

আর তুমি সেই মজে আছো আমাতেই !
তুমি যাকে স্থির মনে করো-
সে-ও যে অস্থির ।
তুমি কি সেকথা ভুলে গেছো ?

অভ্রজিৎ দেবনাথ

ইতিকথা
         

তুমি গন্তব্য খোঁজে পাওয়ার পর থেকে
ইতিবৃত্ত স্মৃতি হয়ে হাসে দিনরাত;
আলাদা কিছুর সন্ধান মানেই বোকামি।
এখন শুধু গতি চাই
স্তুতিমন্ত্র বৃথা সব শিশুদের জন্য,
স্বপ্ন ফুরিয়েছে তাই বিব্রত করো না।
তোমার বয়সীদের স্বপ্ন দেখিয়ে
মুনাফাখোর ডাকাতিয়া রাতে
হেমন্তও একসময় রাজ করত।

প্রণব দাস

তোমার প্রতীক্ষায়
             

আজ ক্লান্ত শরীরে 
শুধু তোমায় মনে পড়ে।
তোমার নিয়ে দেখা স্বপ্ন
আজ বুঝি সবই ছিল রত্ন।।

একদিন আকাশ ছোঁবো ভেবেছিলাম,
যাবো আকাশের সীমানায়।
তা আজ  নিরাশায় খাতায়,
বজ্রাঘাতে সব ভেঙে চুরমার।।

ঘাত প্রতিঘাতে
আমি আজ খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।

তবুও প্রতীক্ষায় আছি
তুমি আসবে।
যৌবনের উত্তাল ঢেউয়ে
তুমি আসবে।

নতুন এর মাঝে নতুন রূপে
তুমি দেখা দেবে,
আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখি
উল্টো পথে হেটে।

স্বপ্ন দেখি তবুও
তুমি আসবে,তুমি আসবে।

অভিজিৎ রায়

বিনম্র মেয়ে

মিষ্টি হাঁসি মুখে লাল শাড়ী পরে গেলে মাতা  বাড়ী।
শত কষ্টের মাঝে তুমিই যে সংসারের মূল কান্ডারী।

যেখানে যাও সেখানে তুমি নিয়ে যাও পুজা দিদিকে।
পুজা দিদিও যে তোমাকে সময় দেয় কাজের ফাঁকে ফাঁকে।।

ছোট থেকে কত কষ্ট করেছ নিজেকে একটা জায়গাতে আনতে।

তাইতো অন্যায় কে সহ্য করতে পারো না কোনো জায়গাতে।

কষ্ট হলেও মেনে নাও এটাই হলো জীবন।

তাইতো এখনো ওর জন্য কাঁদে তোমার মন সারাক্ষণ।


কি বলে বুঝাব তোমায় ছেলেরা অনেকটা এমন।
সে হয়তো বুঝলো না আদও তুমি কেমন।।

বুঝবে ও সেইদিন যেদিন থাকবেনা ওর জীবনে তুমি।
তোমার জন্য ভালো কাউকে দেখে রাখলো হয়তো অন্তর্যামী।

ভুল হলে মাপ করো পারিনা লিখতে।
তোমাদের দেখে বাঁচতে শিখি পারিনা স্মৃতি ভুলতে।

সুধীর দাস

পতিতা 


শুভ্র দেহ , নম্র বাক্য, সুনয়নী চোখের ভঙ্গী;
নিশিরাতে নতশিরে দেহ জলাঞ্জলি ।
অগোছালো সংসারের হালের বোঝা,
প্রখর রোদে পুড়ে ছাই পোড়া।
বছর তিনেক পতিহীনা,  ধূলায় লুটায় সুবর্ণ দেহখানা;
সভ্য সমাজের অসভ্য চক্ষু লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায় তার বক্ষখানা।
খানিক কালের ব্যবধানে বিশ্বজোড়া আর্তনাদে ;
হস্তমুষ্টিবদ্ধ সূক্ষ অর্থের উপার্জনে ।
বেঁচে থাকো স্বসন্মানে, নয়কো দেহ বিক্রিত উপার্জনে।
বিশ্বজোড়া মানবজাতি,দেব,রাজা কিংবা রাষ্ট্রকূটনীতিবিদ,
 নতশিরিত পদতলে তোমারি।
তাদের শতপুণ্যের ভাগীদার, কর্মশেষে পুণ্য লাভ; 
সৃষ্টির উল্লাসে শূন্যতায় শুরু শেষ  তুমিই কলঙ্কিত ।

প্রীতম ভৌমিক

তুমি নেই 

অকাল বর্ষনের ভিজে হাওয়ায় 
বেশ নেতিয়ে পড়েছে কাশফুল,
সন্ধ্যামালতীর ম্লান দীপ্তিতে 
বিশীর্ণ কামিনী- দল,
কুহেলী ঢাকা শিউলি তল,
এলোমেলো ছড়ানো ছিটানো 
সম্পর্কহীন বিষন্ন 
শালুক- শাপলার দীঘির কোল,
পদ্মহীন পুষ্করিণী কূল,
শুধু তুমি নেই বলে তাই ।

হাজার তারা ব্যস্ত ছিল 
একটু পরশ পেতে 
তোমার নীলাম্বরীতে,
এই তো সেদিন ।
ব্যস্ত ছিল 
তুলোটে রাঙা মেঘ গুলো সব 
উর্বশী নৃত্যে 
তোমার নীলাঞ্জন পথে 
তোমার আসার দিন ।

আজ শিউলি ঝরা বীথী,
বড়ো বিষাদময়!
রাত্রি শেষে অরুণোদয় 
তবু নেই সেই অরুণিমা 
তুমি নেই বলে তাই ।

দেবব্রত চক্রবর্তী

১৪ই ফেব্রুয়ারী ২০১৯


গোলাপ দেবো
অপেক্ষার এপ্রান্তে আমি!
'ছ'বছর পর বলবো আজ
'ভালোবাসি তোমায়'।
১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯
আমার ভ্যালেন্টাইনস ডে;
এক প্রান্তে ভালোবাসার উষ্ণ বাতাস 
অন্য প্রান্তে তোমার ভালোবাসা।

যতক্ষণ গোলাপের কাঁটায় ;
রক্তিম আমার মুষ্টি বদ্ধ হাত ,
ততক্ষণেই দুর সীমান্তে, 
আমার নিথর দেহ ছিন্নভিন্ন।
আমার ভালোবাসা অপ্রকাশিত রইলো 
শহীদ পুলওয়ামা'য়।

ধন্যবাদ

যমুনা মজুমদার

সুখ দুঃখ
 

সুখ যে আমরা ব‍ড্ড ভালোবাসি,
তাই বলে কি আমরা সুখ‍ই পাবো? 
দু‍ঃখ গুলোকে কে নেবে ভাই? 
সে যে একা পরেই রইলো।

আমরা যে ভাই বড় অসহায় 
কিভাবে শুধু সুখ নেবো! 
দুঃখ যে ভাই পিছু ছাড়েনা,
সুখ কে কিভাবে আগলে রাখবো! 

যত চাই আমি দূরে যেতে 
জড়িয়ে পড়ি আরো মায়াতে,
পৃথিবীটা ছিলো আমার সুখে ভরা
আজ হয়ে গেল সুখ ছাড়া। 

কষ্টে আজ ভরা পৃথিবী
নেই যে কোনো আলোর দিশা ,
তবুও আজো আছি এক দীর্ঘ অপেক্ষায় ,
জানিনা কবে আশা পূণ‍্য হবে। 
দুঃখ গুলো যাবে জীবন ছেড়ে 
সুখ যে পাবে তাদের জায়গা ফিরে। 

দুঃখ হীনা জীবন আমাদের কাম্য নয় 
সুখের ছোয়া পেলেই জীবন আমাদের ধন‍্য হয় ,
দুঃখ ছাড়া সুখের মূল‍্য, বুঝবো আমরা কি করে? 
সেই মূল‍্য বুঝাতেই দুঃখ আমাদের জীবনে,
বার বার করে ছুটে আসে!

সুচিত্রা দেবনাথ

ভালোবাসি

তোকে ঠিক ক্যামেরা বন্ধি না করে 
চোখে বন্ধী করতে চাই! 
রাস্তার অলি গলি 
ঠিক তোর হাত ধরেই চিনতে চাই। 

ফুচকার দোকানটা যেন
আমাদের জন্যই খোলা,
অকারণে কিছু না বলে রাগ করা
আর সে অভিমানে আমার চুপ করে থাকা! 

তোর থেকে আদর পাওয়ার একটু চাওয়া
জড়িয়ে ধরে ভালোবাসি বলার ইচ্ছাটা 
এই ব্যস্ত শহরে শূন্য কোথাও 
গাড়ি করে বাড়ি ফেরা! 

হাতে হাত রেখে চোখে কথাবলা, 
যখন তোর ক্লান্ত মন আমার বুকে মাথা রাখতে চায়
তখন না খুব ইচ্ছে করে বলতে 
ভালোবাসি!

চৈতী দে

শীতের বরণ

শিশির ভেজা ভোরের আকাশ 
সূর্যের হাসির মিস্টি আভাস। 
মিস্টি রোদের নীল আকাশ 
দিচ্ছে ডাক অজানা উচ্ছ্বাস।

শিশির ভেজা ভোরের আলো
মন করেছে এলোমেলো।
শীতের বুড়ির স্নিগ্ধতায়
মন কেড়েছে মুগ্ধতায়।

সময় যে হলো এবার
জেগে ওঠো গৃহী আবার। 
লাঙল গরু হাল ধরে
কৃষক যাবে মাঠের ঘরে।

ঋতু রানি হেমন্তে 
বিদায় জানাই আনন্দে।
শীতের প্রভাত এমন রুপ 
দেখতে লাগে বড় সুখ।

পিঠে, পায়েস, নারকেল, গুড়
খাবার হবে রং-মধুর।
মিস্টি খাবার মিষ্টি আলো 
লাগছে মনে বেশ ভালো।

জমকালো রঙিন পোশাক 
পৌষ আমায় দিচ্ছে ডাক। 
আগমনীর গানের সুরে
তোমায় নিলাম বরণ করে।

নতুন শাকের গন্ধ ছুঁয়ে 
সবজি বলে আমার বিয়ে,
কৃষক এবার যাবে নিয়ে। 
বিদায় মোরে  দিও হায় 
আমি ফের আসব ঠাঁই,
সবাই থেকো অপেক্ষায়।

অজয় মিত্র

ছাত্র 

আমরা ছাত্র 
আমরা নতুন ভোর 
আমরা আনবো নতুন ভোর 
করবো জগতের ভালো 
আমরা ছাত্র।

আমরা ছাত্র 
আমরা হলাম প্রবীন গানে 
নবীনের সুর 
করবো সমাজ পরির্বতন 
তা নয়কো বহু দূর 
আমরা ছাত্র।

আমরা ছাত্র 
ঝরাবো রক্ত 
হবো শক্ত 
করবো যুদ্ধ জয় 
আমরা ছাত্র।


কৃষ্ণ শীল

  মৃত্যু

হে অতিথি আছো তুমি নীরবে,
জানি  তুমি থাকবেই নীরবে।
জানি না আসবে তুমি কোন সরবে।
যাবে চলে করে চুরি এই পাখি,
রেখে যাবে শুধু এই বাসা
আর থাকবে পড়ে শূন্য শূন্য আশা,
যাব চলে তিথির সাথে,
দিয়ে যাব এক ফটোফ্রেম রেখে যাব শেষ স্মৃতি,
কালে অকালে যাবে চলে ওই স্মৃতি।
হবে ওই দিন আশা হীন নিরআশা যুক্ত চিরতরে                                                                   মৃত্যু।

সজীব পাল

ভালোবাসার অসুখ


ঘরে কোনো আরশি না থাকলে বোধহয় ভালো হত।মানুষ ওই আরশিতে তাকিয়ে নিজেকে কত সহজেই আরশিনগরের মানুষ করে তোলে । মুখে ভেংচিকাটে,হাসে, ও শরীরটারে কত যত্ন করে দেখে। যেন আয়নার ভেতরের ওই মানুষটা অন্য কেউ,যাকে ছুঁয়া যায় না অথচ ভেতরের সবটা দিয়ে অনুভব করা যায় ।

নয়ন সারাটা দিন নিজের ঘরেই বসে থাকে । খাওয়ার সময় খায়,আর বাকি সময় বই ,কখনো কখনো বাঁশিতে বেসুরের সুর, ইচ্ছে হলে গল্পে হাতপাকায় । এইটাই তার জীবন । এর বাইরে সে কখনো ভাবতে পারে না। যেন একাকিত্ব তাকে গ্রাস করতে আরম্ভ করেছে।
সেদিন ছিল কুয়াশার আকাশ ।এবং হার স্পর্শ শীত। নয়ন কলেজ ক্যান্টিনে সিগারেট ধরিয়ে আঙুলের ফাঁকে রেখে দিয়েছে । তন্ময় ভাবনায় সে মশগুল ।ক্যান্টিনের উত্তরের জানালার লোহার গ্রিলের ফাঁক দিয়ে কলেজটিকে দেখছে । 
দেখতে দেখতে ছয় মাস হয়ে গেল।এর মধ্যে কত মায়া তাকে নিবিড়ভাবে বেঁধে ফেলেছে । মাঠের সেই কৃষ্ণচূড়া গাছটাকেও আজ বড্ড আপন মনে হয় ।যেন তার সাথে কতকালের আত্মার সম্পর্ক । 
মানুষ এই একটা কাজ খুব সচেতনভাবে করে ,মায়ায় জড়িয়ে ফেলা। আর যেটা পারে না সেটা হল মেনে নেওয়া। 

যার পাশে দাঁড়িয়েও কোনদিন মনে হয় নাই তারে একদিন এই মনের ভালো লাগবে ,কিংবা ভালোও বাসবে।
মহাকাশ জুড়ে অনন্তকোটি ব্রহ্মাণ্ডের ভেতরে এই যে ক্ষুদ্র একটি পৃথিবী এবং তার ভেতরে আরো কয়েকশো কোটি মানুষের অস্তিত্ব।এই সবের মধ্যে দিয়েই কেন জয়াকেই তার ভালো লাগে ও হৃদয়ের গহীন তার স্মরণে এক অসম্ভব মোচর দেয় ? সে এই প্রশ্নের উত্তর জানে না।জয়া কি কোনোদিন নয়নের চোখে চেয়ে বুঝেছিল ভালোবাসার না বলা কথা? নাকি সেও নিঃশব্দ তাকে ভালোবাসে! যে ভালোবাসার শব্দ নেই,অথচ গল্প আছে।শ্বাস নেই অথচ প্রাণ আছে,! 
মানুষ বুঝি এমন কইরাই জীবনের সবটা জমিন দিয়া গোপনে ভালোবসতে পারে!অথচ নয়ন ত এমন প্রেমেই দিবানিশি ডুবে আছে! 

ভালোবাসা শব্দটা নয়নকে আজকাল দারুন বিস্মিত করে।শুইতে গেলে খাইতে গেলে তারে যেন বলে দেয়,ভালোবাসা বুঝি কবির কল্পনার "চাতক"পাখির মতো?

সে স্বপ্নের ভেতর দিব্যি শুনতে পায়, " ভালোবাসলে মনের সাথে এই দেহও কান্দে,যারে নারীবিহীন থামানো যায় না ।সে চরিত্রহীন হতে চায় দিনের শেষে রাতে ।

পুকুর খনন করলে যেমন জল লাগে,তেমন প্রেম করলে দেহের ক্ষুধার জন্য ভালোবাসার মানুষটাকেও কখনো কখনো লাগে ।"


ক্যান্টিনের জানলা দিয়ে দেখছে জয়া এখানে আসছে । তাকেই দেখলেই সে নিজেকে হারায় ।অসম্ভব জঘন্য অপরাধ বোধ করে । তার অজান্তেই তাকে ভালোবাসছে এই সত্য বাক্যটা সহ্য করতে পারে না । 
জয়া ভেতরে এসে নয়নকে জিজ্ঞেস করল," তুই এখানে !ক্লাস করবি না?

"না ভালো লাগছে না ।"

"কেন কি হয়েছে ?"

নয়ন বলতে পারছে না যে "তোকে দেখার অসুখে আমি অসুখী ।তুই কি বুঝিস না জয়া তোকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি ।খুব ভালোবাসিরে । "

"এই বুদ্ধু কি চিন্তা করছিস!কবিতা মাথায় ঘুরছে নাকি ?"

"হুম ।আমার অসুখ ।"

"দাঁড়া এখন শুনবো ,একটা কেক কিনে নিই ।"
নয়ন কবিতা বলতে শুরু করলো ,

"আমার অসুখ গাঢ় হয় 
তোকে না দেখার অনলে ,
তুই ত বুঝিস আমি অসুখী 
তুই কি পারবি ওষুধ হতে,,,?"

খানিকক্ষণ পরে জয়া চলে গেল ।নয়ন আবার একা ।আবার লুকানো সিগারেটে আগুন দিলো । 

নয়ন খুব বুঝেছে,পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় অসুখ ভালোবাসার মানুষটিকে ভালো বাসি কথাটা না বলতে পারা ।

সে আবার আয়নার দিকে তাকিয়ে রয়েছে । একলা ঘরে কখন যে চাঁদ আসে সূর্য যায় ,সে এতটুকুও টের পায় না ।

জয়ন্ত শীল

ল্যাটেক্স সংগ্রহ 


আর দেরি না করে 
ছুরি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো ছেলেটি ;
থরে অভিনয় করা গাছগুলি দাঁড়িয়ে থাকে, 
ছেলেটি তাদের সামনে সেচ্ছাসেবকের মতো ছুটে যায়। 

জমাটবাধা মরা রক্তের দলাগুলো টেনেহিঁচড়ে 
হাতের আঙুলে পেঁচিয়ে নেয়, 
ঝরাপাতা গুলো বলে উঠে 
চলো, আজ আমরা বেদুইন হই। 

নানা কৌশল করে গা থেকে ছাড়িয়ে নেয় 
একটু একটু করে চামড়া। 
এই দৃশ্যের কোনো দহন যন্ত্রণা নেই! 
বিচিত্র প্রদর্শনীর মতো সাদাটে রক্ত সংগ্রহ করে নেয় 
একটি বাটিতে। 

আমরা সামাজিক জীব, স্থবির চলচিত্র দেখি। 
আমাদের কোনো গোপন দুঃখ নেই, 
সভ্যসমাজ এর নাম দেয় 
ল্যাটেক্স সংগ্রহ। 

সুব্রত দেববর্মা

রাজগন্ধা 

আজ শহরের খুব জ্বর,
সারাদিন বিছানায় শুয়ে শুয়ে
সুনীলের কবিতায় মুখ লুকিয়েছে শহর।

লোহার গ্রিলটা পেরিয়ে উঠোনের 
বড়ো আমগাছটার হালকা দুলন্ত পাতা
জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনী;
তবুও হাল্কা শীত শীত করছে।
আজ শহরের খুব জ্বর।

সদর দরজার বা-দিকের গন্ধরাজ গাছটা,
তুমি বলতে আমাকে,"বাবা সেটা তো রাজগন্ধা"।

মনে পড়ে এক আগমনীর সন্ধ্যায়
তোমার জন্য দুটো ফুল ছিঁড়ে এনে গেঁথেছিলাম
ডাইনিংয়ের ছোট্ট ফুলদানিতে।

পড়ন্ত বিকেলে বিছানায় শুয়ে শুয়ে
এই শহর-এই ঘর জ্বরের উত্তাপ পোহাচ্ছে,
এখন তোমার স্নিগ্ধ জলপট্টিই শেষ ভরসা
এই শহর-এই ঘর এবং এই রাজগন্ধার।

সৈকত সরকার

কপাল পোঁড়া

শখ ছিলো পেলেইন চড়ুম কিন্তু লাগতো ডর, 
মইরা গেলে কিতা হইবো কেমনে চলবো ঘর। 

নাইতো আরো জীবনবিমা 
নাইতো জমি জাগা, 
পোলার দুধের জোগান দিতে ছাগল পালি বাগা।। 

পেয়াইজ পথ্য কিনতে গিয়া লাগছে গলাত চিপা, 
ফ্যানে ভাতে মরিচ মাখি পেটেত দিছি ঢিপা। 

ওভার এইজের বোঝা লইয়া
বউয়ে মারে খোডা, 
আপনা টাইম আয়েগা জরুর রুক যাও মন থোডা।। 

আশায় আশায় থাকছি বহুত খাইছি শুধু ছ্যাঁকা, 
এই জনমে পাইতামনা আর সুদিন কালের দেখা। 

আমি কপাল পোড়া গরীব মানুষ 
অঙ্কে করছি ফেইল, 
বিন চৈত্রে দেইখ্যা লাইলাম চৈত্র মাসের সেইল ।

দুলাল চক্রবর্তী

অহেতুক

জীবনে চলার পথে
সাথী তো পেয়েছি অনেক।
কিন্তু বন্ধু পেলাম কই!

পূর্ণিমা চাঁদের কলঙ্ককে দেখিনা
দেখি তার উজ্জ্বল রূপ।
রাপালী থালায়
সাজিয়ে রেখেছে বরণডালা।
যেটুকু তোমার চাই
নিয়ে নাও অকাতরে।

সমুদ্র তৃষায় যদি
এক গন্ডুস জলে
গলা ভিজে
তাতে ক্ষতি কী?
হিসাবের খাতাখানি পড়ে থাক,
পূর্ণ হবেনা কোনদিন।
ব্যাকুল মনকে সংযত করে রাখি,
দুঃখে দেবোনা ধরা।
সুখপাখিটাকে খুঁজবোনা আর
দিক-দিগন্তে ফিরি।
আমার জন্য নয় যে এপথ
নিজেরে হারায়ে খুঁজি।

সংগীতা শীল

স্বপ্নমোহ

আমিও স্বপ্ন বুনতাম
রাত জেগে মিথ্যে মায়ার মিহিন সুতায়
একটু আশ্রয়ের খোঁজে
অপেক্ষায় কাতর হয়ে,
নি:স্তব্ধতায় বেঁধে রেখেছিলাম
তেজোদৃপ্ত বিস্তৃত প্রান্তরে।

চলার পথে স্রোতের টানে
চাতকের সুরেলা কন্ঠে
অজানা বিদঘুট গন্তব্যে
পুন:জীবন দিলে রক্তসিক্ত আধমরাকে!
পুষ্পিত কষ্টের ঝাঁঝালো ঘ্রাণে
স্বচ্ছ কাচের দেয়াল ভেঙে;
ঝাঁপিয়ে পড়ি আবার কল্পিত মেঘে
মিথ্যা মোহের প্রলাপের বুকে।
                  

বিনয় শীল

মহাকাশ অভিযান


ও পৃথিবী তোমার সাথে
আজকে আমার আড়ি,
মাসেক লাগি দিলাম ওই
মহাকাশে পাড়ি ।

ছুটছি আমি মহাবেগে
নাসার গগন যানে,
দেখবো ওরা গ্রহ তারা
রয়েছে কোনখানে ।

আন্তর্জাতিক স্পেস্ স্টেশনে
বিশ্রাম করে নেবো,
সেথায় বসে সেল্ফি তুলে
ফেইসবুকেতে দেবো ।

একে একে জমবে পাড়ি
নিহারিকার ঝোঁপে,
পৃথিবীকে দেখবো তখন
স্পেস্ টেলিস্কোপে ।

গেলাক্সিতে ঘুরে ঘুরে
ভরবে যখন মন,
আকাশ গঙ্গার বুকের পরে
ভাসবো কিছুক্ষণ ।

স্টার ফোরমিং জোনে যাবো
নাইকো কোনও ভয়,
মহাকাশের যে অঞ্চলে
তারা তৈরি হয় ।

যেতে যেতে যদি না পাই
গ্রহাণু আর ধূলা,
দেখা হবে স্পাইডার, হেলিক্স,
ক্র্যাব্ নেবুলা ।

এসব দেখে আসবো যখন
পৃথিবীতে ফিরে,
সবার সাথে গল্প বলবো
মহাকাশকে ঘিরে ।

অনির্বান রায় গুপ্ত

আশা  

অপরাধী র বিলাসিতা আর পকেট ভর্তি টাকার থলি, 
নিরপরাধী র বন্দি জীবন আমরা শুধু দেখেই চলি. 
কেউ বা কাঁদে মুখ লুকিয়ে অবিশ্বাস্য হাসির আড়ালে, 
কেউ বা চলে বুক বাজিয়ে নানা রং এর ঝান্ডা র তলে. 
ওই দেখা যায় শিশু র কান্না হাউ মাউ করে কাঁদছে সে, 
মা র কাছে নাকি মার খেয়েছে এক মুঠো ভাত চেয়ে. 
শাড়ি র আঁচল টা আজ ভিজে গেছে মনের কান্না মুছতে মুছতে. 
আর যে কত রঙ্গ দেখবো বিচিত্র এই দুনিয়াতে. 
কোল হারা পথের শিশু একটু খাবার খেতে চায়, 
আর ধনী ঘরের বড়ো ছেলে খাবো না বলে খাবার ছুড়ে দেয়. 
অন্ন্যের কি নাম এর  বাহার বাসমতি রাইস  দেরাদুন রাইস, 
নিরপরাধ মানুষ গুলোর এটাই হয়তো বেস্ট প্রাইজ. 
দ্রব্যমূল্য উর্ধমুখী মধ্যবিত্ত  এর পকেট ফাঁকা, 
আশা  রইলো কোনো একদিন ঘুরবে এই রথ এর চাকা.. 

দীনদয়াল রবিদাস

কালের যাত্রী 

প্রত্যহ আমার  ঘুম ভেঙে যায় 
ঘুমের জন্য ঘাট নেই,নেই কোন কুঁটির 
নিরীহ দেহটা ক্লান্ত অবসন্ন হয়ে  লুঠিয়ে পরে 
মাটির অন্তরে।

কুয়াশা রাতে  কালের যাত্রী  ঘুরে বেড়ায় বেদুয়িনের মতো, 
নিশি পেঁচা গান শোনার  ভয়ে শিউরে ওঠে দেহ
কটাক্ষ ইক্ষিতে -
জীবনের রঙ তুলি টানতে টানতে আপন চেনা মুখ গুলো পুতুল হয়ে যায়;
কথা না বলার ছলে।

জীবন -মরণ হিসাবে দাঁড়িপাল্লা মরীচিকা  হয়  বুঁজে যায়  ফুলের  মতন-
কী অদ্ভুত !
আমার  মরণ খেলা করে  বেঁচে আছি ঘরের দুয়ারে
কখনও কখনও রাতের চাঁদ  না ফেরার  পথে 
দু বাহূ বাড়িয়ে  দেয় বেঁচে থাকার আলিঙ্গনে।

বিজন বোস

অভিমন্যু

ভাবনার জগৎ ভিন্ন ছিল বলেই
আমার জমিতে শস্য জন্মায়নি
বাগানটা নিজ হাতে সাজিয়েছিলাম বলেই
তছনছ করেছে আক্রোশে ।
গলার শেকলকে স্বর্ণালঙ্কার ভেবে
গলাটা এগিয়ে দিইনি বলেই 
হাত পায়ে পরিয়েছে বেড়ি ।
চোখের সামনে প্রেমিকাকে ছিনিয়ে নিয়ে
বানিয়েছে ওদের সেবাদাসী ।
জং ধরা স্বপ্নের সহচরী হইনি বলে
লেপ্টে দিল কাপুরুষ তকমা ,
গৌরবান্বিত হতে নতজানু হইনি --
হয়েছি অভিমন্যু ।

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...