Saturday, November 17, 2018

Welcome

1

1

সম্পাদকীয়

মানুষ চলে তার মনের দ্বারা। মানুষের সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা কিংবা সুখ, দুঃখ যাবতীয় অনুভূতি গড়ে উঠে তার মনের উপর ভিত্তি করে । প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যেই শুভ শক্তির বিকাশ সাধিত হলেই সামাজিক শান্তি এবং সমৃদ্ধি সম্ভব। কুসংস্কার দমন সহ শান্তি, অগ্রগতি এবং প্রগতিশীলতার প্রশ্নে সাহিত্যের ভূমিকা বিশাল। সেই উদ্দেশ্যেই মনন স্রোতের আত্মপ্রকাশ।

আজকের দিনে পুরো বিশ্ব মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে গেছে। কোনো বার্তা মানুষের কাছে খুব সহজেই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। তাই প্রযুক্তিকে বহুমুখী ব্যবহারে মধ্য দিয়ে 'মনন স্রোত'কে খুব কম সময়ের মধ্যে বেশি সংখ্যক পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। তাছাড়া আমরা চাই নতুন প্রজন্মের লেখক লেখিকাদের কাছে মনন স্রোত হয়ে উঠুক আত্মপ্রকাশের এক অন্যতম প্ল্যাটফর্ম। প্রতিমাসে প্রকাশিত হয় বলেই লেখা সংগ্রহের ক্ষেত্রে 'মনন স্রোত'কে বাস্তবিক কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই অল্প সময়ের মধ্যে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে ভুল ত্রুটি হওয়া স্বাভাবিক। যাবতীয় ভুলের দায় আমারই। অনিচ্ছাকৃত ভুল ত্রুটিগুলো পাঠকরা মার্জনা করবেন এই আশা রাখছি।

এই সংখ্যায় রাজ্যের এবং দেশ বিদেশের কয়েকজন বিশিষ্ট লেখক লিখেছেন। অনেক নতুন প্রজন্মের লেখকরাও লিখেছেন।  যারা লিখে মনন স্রোতকে সমৃদ্ধ করার কাজে সহযোগিতা করেছেন তাদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সবশেষে একটি ই-ম্যাগাজিন হিসেবে মনন স্রোত তার সামাজিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কামনা করছে।

জয় হিন্দ

                                       শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা-সহ
                                               সম্পাদক

দীপক দাস

বই এবং বইমেলা (ধারাবাহিক)

রবীন্দ্রনাথ বলেছেন "বিদুৎ কে মানুষ লোহার তারে বাঁধিয়েছে কিন্তু জানিত মানুষ শব্দকে নিঃশব্দে মধ্যে বাঁধিতে পারিবে । কে জানিত সংগীতকে,হৃদয়ের আশাতে জাগ্রত আত্মার আনন্দ ধ্বনি কে আকাশে দৈববাণীকে যে কাগজে মুড়িয়া রাখিবে।কে জানত মানুষ অতীত কে বর্তমানে বন্দী করিবে, অতল স্পর্শ কাল সমুদ্রের উপর একখানি 'বই' দিয়া যাঁকে বাঁধিবে।"
টলস্টয় বলেছেন "জীবনে মাত্র তিনটি জিনিসের প্রয়োজন বই ,বই এবং বই,
দুই আধুনিক কবি গোস্বামী ও সুবোধ সরকার -এক প্রশ্নোত্তর পূর্বে তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল ;বই যদি তাদের কোনো একটি নির্জন দ্বীপে নির্বাসন করা হয় ,তারা সঙ্গে নিয়ে যাবেন ,
জয় গোস্বামী বলেছেন -বুদুদেব বসুর প্রবন্ধ সমগ্র ,শঙ্খ ঘোষের প্রবন্ধ সমগ্র, গীতবিতান আর অতুলপ্রসাদের গীতিগুচ্ছ।
সুবোধ সরকার বলেছেন - 'আমি একটি এই বই নিয়ে যাব,গীতবিতান ।
      এই যে এতগুলো উদাহরণ ব্যবহার করলাম, কেউ কি এইসব উদাহরণ পড়ে বই পড়েন। তা তো নয়।তাহলে বই পড়া শুরু হয় কীভাবে ! কোন বয়সে কি রকম বই পড়ব বা পড়া উচিত তা কে ঠিক করে দেবে এতে বইমেলার ভূমিকা কী?  এই প্রশ্নগুলির উত্তর খোঁজা যাক।
আমরা ছোট বয়সে বই পড়া শুরু করি বাবা মায়ের অনুপ্রেরণায় বইমেলা।সে সব বই যোগানে সহায়তা করে।শৈশবে শিশুর মনের রূপকথা ,গল্প শুনতে চাই ,তাদের মন জগৎ রূপকথা তাই সেই সময় গল্প বলার পাশাপাশি তাদের হাতে তুলে দিতে হয় রূপকথার জগৎ। সে জগতে হদিশ দিতে পারে উপেন্দ্রকিশোর প্রমুখ লেখকরা।
      শিশুটি বড়ো হতে থাকে -বাবা তার হাতে তুলে দিলেন 'রামের সুমতি'।সে বড় হচ্ছে -তার হাতে এল বিভূতিভূষণের 'পথের পাঁচালি 'অপুর সংসার ' সে পড়বে আর ডাকবে আমি এই তো 'অপু'। দুর্গার জন্য তার চোখ থেকে দু-ফোঁটা জল অজান্তে  বেরিয়ে আসবে । অপরের জন্য কান্না, আনন্দের অভিজ্ঞতা তার জীবনে প্রথম ।তার হাতে আসবে ছোটদের রামায়ণ, মহাভারত । মহাভারতে 'কর্ণ' চরিত্রের জন্য তার বুক বেদনায় ভরে উঠবে। ভীমকে সে ভালবাসবে । অথচ সে কাউকে দেখো কাউকে  চেনে না । সাহিত্য পাঠে সম্ভব  অজানা অচেনা চরিত্রের জন্য -দুঃখ ,কষ্ট ও ভালোবাসার অনুভূতির সঞ্চার ।
ঝমঝম করে জীবনের ট্রেন এসে দাঁড়ায় যৌবনের প্ল্যাটফরমে। আকাশ বাতাস ফুল পাখি চারপাশে মানুষ সব অপরূপ মনে হয়, এর এই মতে তার হাতে এল 'আনন্দমঠ' সে এই বই পড়বে, সে বুঝবে দেশ কি ?কেন দেশকে ভালবাসতে হয়?জীবনের উদ্দেশ্যই যে ভালবাসা আনন্দমঠ পাঠ না করলে তা সম্পূর্ণ জানা সম্ভব নয়। এই বই পড়তে পড়তে সে ও সে ও মনে মনে বলবে -"আমার মা নাই ,বাপ নাই, ভাই নাই -আছে শুধু সুজলা সুফলা এই জন্মভূমি ।

লেখক পরিচিতিঃ-
--------------------------
লেখক দীপক দাসের জন্ম ১৯৫৩সালে বাংলাদেশের ফেনীতে। ১৯৬৩ সালে তিনি ভারতে আসেন। দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম মহকুমায় স্কুল জীবন শেষ করে তিনি ১৯৭২সালে বি কম বিভাগে এমবিবি কলেজ থেকে গ্রেজুয়েশন করেন। পরবর্তীতে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স শেষ করে ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ। দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা নিয়ে বর্তমানে তিনি অবসরে। অবসর সময়ে লেখালেখি ও সাহিত্যচর্চাই করেন। রাজ্যের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত লিখেন। তিনি কবি,  প্রাবন্ধিক এবং বাচিক শিল্পীও। চাকুরী জীবনে ছাত্রছাত্রীদের সার্বিক কল্যাণে তার বহুমুখী প্রচেষ্টা ও ভূমিকা ছাত্রছাত্রীরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।

দুলাল চক্রবর্তী

প্রাচীর

সারা দিনের কর্মক্লান্তিতে
শরীর অবসন্ন হয়ে পড়ে
দুদন্ড শান্তি পেতে
এসে বসি তোমার কবরের পাশে।

তুমি ছিলে উজ্জ্বল
ধ্রুব তারার মতো,
দূর থেকে তোমার সৌন্দর্য্য
উপলব্ধি করেছি,
কাছে আসতে পারিনি কোনদিন।

তোমার আর আমার মাঝে
আছে ধর্মের এক কঠিন
বেড়াজাল।
আমি হিন্দু আর তুমি
মুসলমান।

দুঃখ নেই দুঃখ করিনা।
তোমায় দূর থেকে দেখেছি।
মৃত্যুর পর আর
এ প্রাচীর থাকবেনা।
থাকবো শুধু দুজন
তুমি আর আমি।

তোমার কবরের পাশে
দুহাত জায়গা
ওটা দখল করে রাখছি,
হয়তো তোমায় পাবো বলে
পরপারে।

কবি পরিচিতিঃ-
--------------------------
কবি দুলাল চক্রবর্তীর জন্ম পূর্বপাকিস্তানের চট্টগ্রামে। বর্তমানে দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুমের বাসিন্দা। তিনি প্রাবন্ধিক এবং গল্পকারও। ত্রিপুরা রাজ্যে দীর্ঘদিন শিক্ষকতার শেষে বর্তমানে অবসরে। অবসরে সাহিত্য চর্চা করেন। লেখালেখি করেন। বিভিন্ন সরকারী ম্যাগাজিনে তার লেখা প্রকাশিত হয়। শিক্ষক প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ লেখার জন্য তিনি একটি স্বতন্ত্র পরিচয় লাভ করেছেন।

উৎপল দেবনাথ

প্রাণের মাঝি

তুমি নয় গো শুধু বন্ধু 
আমার প্রাণের মাঝি
যে দেশেতে যাবে নিয়ে 
যেতে আমি রাজি।

নদী ডিঙ্গে যাও যদি
চাঁদ সদাগরের দেশে
যাবো আমি তোমার সাথে
লক্ষ্মীন্দরের বেশে।

সপ্ত ডিঙির মাঝি তুমি 
সাত জনমের বাঁধা
যদি করি অকাল মরণ
স্মরণ নিয়ো যমের চরণ।
নিবে তুমি যুদ্ধ করি
আমার প্রাণপন।

পথের মাঝে হয় যদি
মোর অঙ্গ খাড়ি
নিবে তুমি জমাট করি
বুকের পাঁজর ধরি।

তাই তো তুমি আমার প্রাণমাঝি।

পরিচিতিঃ-
-------------------
উৎপল দেবনাথের জন্ম সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়া মহকুমার মেলাঘরে। লেখালেখি শুরু মূল্যত মনন স্রোতেই। বর্তমানে এমবিবি কলেজে বাংলা অনার্সের শেষ বর্ষের ছাত্র।

শৌভিক বাগচী

আমি

এই দ্যাখো ,চিনতে পারলে না ?

সেই ,সেই যে কালিন্দীর জলে ভেসে
যাওয়া শব হয়ে
ঠেকেছিলাম অনামিকার বুকে
হাজার সূর্যের আলোয়
ধুয়ে গিয়েছিলো আমার  মুখ
ওমা ,তারপরে জেগে গেলাম , পোড়া কাঠের
ভিজে বাষ্পে ফোটা
ফুলের মতো।
জেগে দেখি ,আমি মরিনি কখনো ,ঘুমিয়ে
শুধু কাল নিয়ে খেলেছি ,কালের শব
কালান্তরে শোধ করতে হবে না ,ধূসর
সে ঋণ ?
কিন্তু আশ্চর্য ,আমায়
চিনতে পারলেন না ?

এই দ্যাখো , আমি গো আমি

কবি পরিচিতিঃ-
-----------------------
কবি শৌভিক বাগচীর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের শান্তিপুরে। তিনি প্রাবন্ধিকও। যাপিত জীবনের অনেক চাপা পড়া সত্যি উপস্থাপনের জন্য স্বতন্ত্র পরিচয় লাভ করেন তিনি। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণা শেষ করে তিনি কর্মসূত্রে ত্রিপুরায় বসবাস করেন।  বর্তমানে তিনি ত্রিপুরার মহারাজা বীর বিক্রম কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থঃ-
১। ওড়ো ঘুড়ি ওড়ো( যুগ্ম কাব্যগ্রন্থ)
২। গোপাল রাখালের বিদ্যাসাগর ও অন্যান্য

সঞ্জীব দে

শরীর-মহল
                         

জঙ্গলের ফাঁক দিয়ে আসা
এক খন্ড কিরণ নিয়ে
আজো আছি শামুকের মতো!
ঋতুবদলের নষ্ট জলে
তারা দেখে সাঁতার কাটি ।
আমার জানা ছিলনা মনের ছয় সদস্যক
শরীর-মহলে
আনাচে কানাচে এতো শ্যাওলা!

স্থির থাকতে চাইলে পিছলে যাই!
ফিরতে চাইলেই
রক্তে রক্তে রঙ্গিন হয়ে ওঠে
আমার আকাশ!

তবু আগামীর জন্য
রক্তাক্ত রঙিন তুলির
শৈল্পিক আচরনে সাজানো প্রয়োজন
ছোট্ট পাহাড়ি ক্যানভাস!

সব জাতের শরীর-মহলে
যে নদী প্রবহমান তার রং এক !

কবি পরিচিতিঃ-
--------------------------
কবি সঞ্জীব দে দক্ষিণ ত্রিপুরার রূপাইছড়ি অঞ্চলে জন্মগ্রহন করেন। তিনি প্রাবন্ধিকও।তার কবিতায় ফুটে উঠে সমসাময়িক সামাজিক রূপ। সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ। পেশায় সরকারী শিক্ষক। কবির ধর্ম মানবতা।

কবি সঞ্জীব দে বিজয়া সাহিত্য পত্রিকাটি সম্পাদনা করেন। তিনি বর্তমানে ত্রিপুরা লিটল ম্যাগাজিন গিল্ডের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রকাশিত গ্রন্থ:-
১। ধর্ম সমাজ যুক্তিবাদ এবং
২। ফায়ার সহ অন্যান্য যৌথ কাব্য গ্রন্থ।

উমাশঙ্কর রায়

জীবন থেকে ধার নেওয়া

একটু-আধটু অহং না থাকলে কি সৃষ্টি হতে পারে কিছু ? সৃষ্টির যা কিছু বৈচিত্র্য বা গরিমা- সে তো ঐ অহং-এর পরিশীলিত রূপ !
- এ নিয়ে বিতর্কেও যে অহংবোধেরই প্রতিধ্বনি ঘটে - তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

তবে কি নিবারণ অহংকারী ? এমন কানাঘুষো শুনলেও নিবারণের আঁতে ঘা  লাগে না।
বরং সে বলে তখন - নিজে একটু অহংকারী না হলে অন্যের অহংকারটি যে চোখে পড়ে না ঠিকঠাক  !  তাই সময়ের বিচারে তা - ভালো এবং খারাপ দুটো-ই !

তার কথায়,  বিনয়ী ভক্তজনেরা এ কারণেই বোধহয় বেশিরভাগ পর্বতগামী। হিমালয়মুখী ! হিমালয়ের কাছে গেলে সব গরিমা, সব অহংকারকে তো ভুলে যেতেই  হয় ! তাই না ?

আমাদের এই সাংসারিক জীবন বা পারিপার্শ্বিকতা তো নানাহ সৃষ্টি বা অহংকারেরই সহাবস্থান ! আর তা না হলে ঠিক এর ঠিক উল্টো- ঠুকাঠুকির পাঁচালি ! দুটো-ই সত্য এবং স্বাভাবিক !  কিন্তু সব স্বাভাবিকত্বেই কি ধরা পড়ে চরম সত্য ? 

নিবারণের বিচারে, পড়ে না। কারণটা  ঐ অহংকার।

তাই সাধারণ মানুষের কথা আর কাজে অহং ততটাই মানানসই -যতটা অন্যের মর্যাদায় তা আঘাত করে না।

একটু গভীরে পৌঁছালেই দেখা যায়, অহংকারের বিরোধিতা করার মধ্যেও আছে এক শ্রেণির অহংকার ! অনমনীয়তা । অধৈর্য বা অসহনীয়তা !

সৎ মানুষের সততাও যে হতে পারে তাঁর অহংকার ! তাঁর অলংকার ! সেই অলংকার তো ভূষণ। তবে সেই আভরণে ভূষিত হবেন না কেন তিনি ?

শেষ কথাটি যে -ঐ কাজেই নিহিত !

অহংকারী নিবারণ তাই এবার চেঁচিয়ে বলে-
শোন্ প্রতাপ, এটাই সত্য যে- সৃষ্টিতেই অহং মহিমান্বিত হয়। কিন্তু জয় পরাজয়ের প্রশ্ন  যখন আসে - তখনই অহং কলুষিত হয়ে পড়ে । আর এ কারণেই প্রকৃতিতেই রয়েছে বিসর্জনের নিয়ম। একমাত্র বিসর্জনেই অহং শুদ্ধ হতে পারে। নির্মল হতে পারে !  মহিমান্বিত হয়ে উঠতে পারে।

শরতের শেষে  পাতা ঝরার হেমন্ত - দুঃখের তো নয় !  বিদায়েরও নয় !  হতাশারও নয় !  বরং প্রত্যাশার। 

ঝরে গিয়ে - অথবা  ক্ষয়ে গিয়েও - সৃষ্টির বার্তায়, নতুনের সুবাসে, আনন্দে আর প্রত্যাশায় ভরপুর, উজ্জ্বল এই বিসর্জনের রূপ ! বিসর্জনের এই রূপ কি আজকের এই আয়োজন আর এই উৎসবকে মহিমান্বিত করে তোলে না ? শুধুই কি নিঃশেষ  হয়ে যাওয়ার নাম বিসর্জন ?

লেখক পরিচিতিঃ-
---------------------------

উমাশঙ্কর রায় ত্রিপুরা রাজ্যের একজন বিশিষ্ট লেখক। তিনি কবিও। গভীর উপলব্দীকে প্রকাশিত হয় তার কবিতায় এবং প্রবন্ধে। মানুষের ভাবনার জগতে নতুন দৃষ্টিকোন আনে। তিনি বর্তমানে মহারাজা বীর বিক্রম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে কর্মরত।

প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থঃ-
১। এক চিলতে সমাজ
২।  প্রশাসনের কানাগলি

Friday, November 16, 2018

অমিত রুদ্র পাল

দৃষ্টান্ত

দেখেছি তোমায় দেখেছি
ভোরের কুয়াশায়- সন্ধ্যের আশায়                            একটু করে জ্বলতে তোমায় দেখেছি।
  
শব্দের তরঙ্গে অনুভূতির সঙ্গে
ডুব খেতে তোমায়, দেখেছি
কেয়া পাতায় নাম লিখিয়ে
স্রোতের দিকে ঠেলে দিয়ে 
দূর হতে ভাসতে তোমায় দেখেছি।

ভেজা ভেজা সৃষ্টি গায়ে
ভালোবাসার নূপুর পায়ে
হেঁটে যেতে আমি দেখেছি।
আমি দেখেছি!
নয়নে তোমায় ঠোঁটের মরিচীকায়,
শীতল প্রলেপ মাঝে  লুকিয়ে থাকতে দেখেছি।আমি সত্যি দেখেছি তোমায়!
ভালোবেসে ভালোবাসতে।

কবি পরিচিতঃ-
-------------------------
অমিত রুদ্র পালের জন্ম পশ্চিম ত্রিপুরার আড়ালিয়ায়। অমিতের লেখালেখিতে প্রবেশ মূল্যত মনন স্রোতের প্ল্যাটফর্মেই শুরু। অমিত মনন স্রোতের ফেসবুক পেজের এডমিনের দায়িত্ব পালন করছে বর্তমানে। মহারাজা বীর বিক্রম কলেজ থেকে গ্রেজুয়েশন শেষ করে বর্তমানে এমএ কোর্সে পাঠরত।

কল্যাণব্রত বসাক

ফেনী ব্রিজ (শেষ পর্ব)

সরকারি নথি বলেছে সাল 2017 থেকে ফেনী ব্রিজ নিয়ে কাজ হচ্ছে ।নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকের যে গুজব তার কিছুটা যে সত্যি টের পেলাম সাল 2009 এ স্থান নির্বাচন ।জমি জরিপ। ছোট বড়ো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ির আনাগোনা । আনন্দ আশঙ্কা গুজব । সব মিলিয়ে একটা জমাটি ব্যাপার ।

শুধু কেবল ব্রিজ তৈরি হবে তা নয়। হবে LCS,ICP। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের গুরুত্ব মাথায় রেখে পূর্ণ মাত্রায় ব্যবহার করে গড়ে উঠবে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে। বাণিজ্যিক চেহারার জৌলুস বাড়বে চট্টগ্রাম বন্দরে ,সমৃদ্ধ হবে গোটা উত্তরপূর্ব ভারত । বৃহৎ পরিকল্পনা । এতো বড়ো কাজের জন্য চাই প্রচুর জমি । প্রায় 500 একর জমি চিহ্নিত হয়ে গেছে।জরিপের কাজ শেষ ।

এতো বড়ো কাজ আমারও অংশগ্রহন থাকবে না তা কি হয়!
গতগতকা12/11/2017 থেকে স্বপ্নের ফেনী ব্রিজের কাজ শুরু হয়ে গেছে। জুড়ে যাবে আমার প্রিয় রামগড় সাব্রুম ব্রিজ,  স্থল শুষ্ক বন্দর এবং ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের প্রস্তাবিত এলাকার মধ্যে আমার ভদ্রাসন টুকু।আমার পৈত্রিক ভিটে। সরকার কিছু টাকা পয়সা হাতে গুঁজে আমাকে ভিটে ছেড়ে চলে যেতে বলবে।
আমি কি সত্যিই এতটা ভালো রামগড়কে বেসেছিলাম। ভালো হয়তো এভাবেই বাসতে হয় ,ভিটে মাটির মায়া ছেরে,এক কঠিন প্রস্থানের মধ্যে দিয়ে, এক নিরুদ্দেশ যাত্রা মধ্য দিয়ে ।
আর ইতিহাস! সে যেন ফিরে এসেছে আমারই  অন্তরে কোন সুগভীর টানে। একদিন আমার বাপ ঠাকুরদা,মা ভিটে ছেড়েছে।উপাধি জুড়েছে শরণার্থী । সে দিনের প্রেক্ষাপট ছিল অবিশ্বাস,অসহিষ্ণুতা,বিচ্ছেদ।
আজ আমি ভিটে ছাড়বো । প্রেক্ষাপট ভরসা,মৈত্রী, যৌথ সমৃদ্ধি । আমি গর্বিত আমি শরণার্থী । আমার তিন পুরুষ শরণার্থী ।

চলে যাবো অন্য কোথাও । যেখানে থাকবে একটি নদী ।থাকবেনা সীমান্ত ।এপাড় ওপাড় দুপাড় এই আমার । আবার ঘর হবে ,সংসার হবে।ফেনীর সীমান্তে পরে থাকবে ঘর ভাঙা ভিট। পরিচ্ছন্ন উঠোন। আমার বউয়ের সাধের তুলসীতলা, একটা শিউলি গাছ।
পরে থাকবে প্রিয় নদী ফেনীর মায়াবী স্রোত ।
ওকে তো আর ছুঁতে পারবনা । কাঁটাতার পরে গেছে নদীর কিনারায়ে। নদীতে নানা অঘোষিত নিষেধ ।

ব্রিজ হওয়ার পর রামগড় যেতে গেলেও নদী ছুঁতে হবে না ।টপকে যেতে হবে ।
    ভাই আজ শেষবারের মতো নদীতে গেলাম ওর সাথে দেখা করতে । স্থান করলাম ।আদর করলাম   হাত বুলিয়ে দিলাম স্রোতকে । চোখের ক-ফোটা দিয়ে আমি ওকে ভিজিয়ে দিলাম।দুপা হেঁটে ওকে স্রোতের অনুকূলে ওকে এগিয়ে দিলাম। কানে কানে বললাম ... যা নদী যা আমার 'দেশ বাড়ি 'কে ভিজিয়ে উর্বর করে দে। আমার চোখের যে ক' ফোটা তোকে দিলাম ভাসিয়ে আমার মামা মামী যারা এখানে ভিটে আঁকড়ে পাহাড়া দিচ্ছে তাদের পা ধুইয়ে দে।.....

লেখক পরিচিতিঃ-
------------------------------

কল্যাণব্রত বসাক মূল্যত ছোটগল্পকার। প্রাবন্ধিক,  তিনি কবিও। লেখকের জন্ম ৪টা অক্টোবর ১৯৭৫ইং দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুমে। ১৯৯৩ সাল থেকেই লেখালেখির জগতে প্রবেশ। তারপর থেকেই বিভিন্ন ম্যাগাজিনের সাথে যুক্ত হন। শিক্ষাবিজ্ঞানে অনার্স নিয়ে গ্রেজুয়েশন শেষ করে কখনো কোনো চাকুরীর সাক্ষাৎকারমুখী হননি। নিজে কিছু করার প্রচেষ্টা লেখকের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট। ছোটগল্প ও প্রবন্ধে লেখকের চিত্রকল্পের জন্য লেখক এক স্বতন্ত্র পরিচিতি লাভ করেছেন। মনন স্রোতে লেখকের 'ফেনী ব্রিজ' ধারাবাহিক গল্পটি পাঠক মহলে দারুণ সমাদৃত হয়েছে।

অপাংশু দেবনাথ

অন্ধের অসুখ

আলোকে আড়াল করে জাগছো এবেলা
সবেতো রাত্রির বার্তা আসে ঝড়ের তান্ডবে
মানুষটি হাঁটে সীমান্তে ক্লান্তি রেখে পথে।

ফসলে ঝুঁকে আছে বৃক্ষের বিরহ বিকেল
তার মুখ দেখে চিনে নিতে পারো যদি
জেনে যাবে বেগবান নদীটির গান
সমস্ত সুর বেতাল হলে ফিকে হয় আলো।

সময়ের ব্যর্থলিপি তুলে রাখো বুঝি
অবুঝ খেলালে মেলি চোখ, লিখে রাখো তুমি
আমাকে আড়াল করে অন্ধের অসুখ।


কবি পরিচিতঃ-
------------------------
ত্রিপুরার কাব্য সাহিত্যে এক পরিচিত মুখ কবি অপাংশু দেবনাথ। তার কবিতায় স্থানিক শব্দ, চিত্রকল্প, রূপকল্প এবং অবয়বে তাকে স্বতন্ত্রভাবে পরিচিতি দেয়।কবির জন্ম ২৫শে জানুয়ারী ১৯৭৩ সালে বিশালগড়ের জাঙ্গালিয়ায়। পেশায় সরকারী শিক্ষক।

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ :
১। অপেক্ষার অম্নবালি
২। হাসনুহানার দেশে
৩। মৃত্তিকাঋণ মেঘমিতাকে

অন্যান্য গ্রন্থ :
১।বাঁশের সাঁকো
২। পাঁচজনের কবিতা
৩। এবং পাঁচ কবি
৪। জলীয় আরশিতে ভাসে ছায়াকথা
৫। ছুটির কথা
৬। জল ডুব ডুব শাপলা শালুক

Thursday, November 15, 2018

রীনা তালুকদার

ছবির সনেট-১৮

আজো বুকের ভেতর কেমন কেমন দুমড়ানো ব্যথা বাজে
সময় বয়ে যায় কিশোর কষ্টে হামাগুড়ি খেলা বাড়ে
চেয়েছি দিতে মুছে কালো কালি পোছে আরো উজ্জ্বলা ছাড়ে
বন্য মন ঘূর্ণনে বাঁশ বন কাঁশবন খড়ের গাদা
দীপ্ত তেজে শরতের ছাঁই মেঘ ঘোলাটে ঘোলাটে সাদা
কত স্মৃতির আড়ালে কথারা কাঁদায় গোপন বাগানে
থেকে থেকে উছলে চমকি স্মৃতিঝাঁক হৃদয় জাগানে

সোনালী দিন মোবাইলহীন টেলিপ্যাথির যোগাযোগ
চিরদিন কড়া নাড়ে বুকের সুগভীরে কাতর রোগ
এসির শীতল বাতাসেও হাই প্রেসারের থাকে চাপ
ছোট ব্যথা গলিত আবেগ নি:শ্বাসে নি:শ্বাসে দীর্ঘ ধাপ
শত শত প্রশ্নের সুক্ষ্ন চোখ ভিড় করে হাসির খামে
দেখে দেখে নীরব ভাবনা কথা অব্যক্ত হৃদয়ে নামে
সবার জানা তবু আকণ্ঠ পাবার কোলাহল ডানে বামে।

কবি পরিচিতঃ-
----------------------
বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি রীনা তালুকদার।
পিতা মো: আবদুল করিম। মাতা- আনোয়ারা বেগম। পড়াশুনা- এম.এ। জন্ম -২১ আগস্ট, ১৯৭৩, জেলা- লক্ষ্মীপুর, বাংলাদেশ। তিনি নব্বই দশকের কবি, প্রাবন্ধিক । মহাসচিব- অনুপ্রাস জাতীয় কবি সংগঠন। বিভাগীয় সম্পাদক: অনুপ্রাস সাহিত্য পাতা - দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা, সাপ্তাহিক কালধারা ও দৈনিক নব অভিযান। বিশেষ প্রতিনিধি: শিরদাঁড়া। বাংলাদেশ প্রতিনিধি: মননস্রোত (ত্রিপুরা, ভারত)।

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ- ১৩টি, গবেষণা প্রবন্ধ-২টি (বিজ্ঞান কবিতার ভাবনা ও কাব্য কথায় ইলিশ), সম্পাদনা কাব্যগ্রন্থ-১টি, সহযোগী সম্পাদনা (বিষয়ভিত্তিক)- ১১টি। জাগ্রত ছোট কাগজের সম্পাদক। উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ- সাত মার্চ শব্দের ডিনামাইট (বঙ্গবন্ধু সিরিজ), বিজ্ঞান কবিতা, প্রেমের বিজ্ঞান কবিতা, স্বাধীনতা মঙ্গলে, বিজ্ঞান সনেট। বর্তমান সময়ে তিনি বিজ্ঞান সমন্বয়ে কবিতাকে নতুনত্ব দিয়েছেন। প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ হয় নব্বই দশকে।
লেখালেখির জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল স্মৃতি ফাউন্ডেশন-এর মহান বিজয় দিবস-২০১১ সম্মাননা ও সাপ্তাহিক শারদীয়া কাব্যলোক বিশেষ সম্মাননা-২০১৩ পেয়েছেন।

মিঠুন দেবনাথ

ব্রাত্যের প্রলাপ

ছিবড়ে পকেটে জীবন রকেটে কাটবে নিঠুর নিশি ,
বিশ্বাস আমার না হয় নিলাম কটূ বিষ এক শিশি।
গ্রহণের পর গ্রহণ লেগেছে পাইনি চাঁদের দেখা ,
আমি উন্মাদ মাতালের বাপ শিখেও হয়নি শেখা।
হয়ত ভাবছো এ কেমন আমি চ্যপ্টা নাকি বাঁকা,
নারী নক্ষত্রের চ্যাপ্টা বৃত্তে আজও উত্তাল তটরেখা।

মনে মনে ভাবি ফেলে যাব সব নিয়ে যাব হিংসা দ্বেষ ,
ওপারের গঙ্গাজলে এপারের অহংকার সবকিছু হয়ে যাবে শেষ।
ঝাপটায় তোতাপাখি উঁচুতে ঈগল তবুও স্বপ্ন বাঁচা ,
ভালোবাসার দরজায় নেংটে ইঁদুর তবুও আষাঢ়ে চাষা। 
গুনে গুনে দেখি তিন দুই এক বাড়ছে নাকি কম ,
হিসাবের অঙ্ক মার প্যঁচে ঘুরপাক হাসছে হয়ত যম।

ফেরে না কেউ রেখে যায় সব লাঠি লোটা কম্বল ,
ছিবড়ে চাবিয়ে চেপেছে বহুমূত্র তবুও ছিবরেই শেষ সম্বল।

কবি পরিচিতিঃ-
------------------------
রাজ্যের তরুণ কবিদের অন্যতম মিঠুন দেবনাথ।
পিতা স্বর্গীয় স্বপন কুমার দেবনাথ। দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুমের গরিফায় জন্ম। পরিবারের সদস্য দুইজন কবি এবং মা। ছোট বেলা কাটিয়ে উঠতে বাবা মারা যান , তারপর থেকেই জীবন সংগ্রামে নেমে পড়েন মিঠুন। তার কাছে মা'ই ভগবান। তিনি দর্শনে এমএ। বর্তমানে বহিঃরাজ্যে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সে পাঠরত। তিনি নাটক লেখা এবং পরিচালনায় অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। তার লেখা ধারাবাহিক গল্প 'অনুরাধা' মনন স্রোতের পাঠকমহলে দারুণ সমাদৃত হয়েছে।

মোঃ রুবেল

শৈত্য সকাল

ঋতুকন্যার উদর হতে আর্বিভূত সূর্য গবাক্ষ পেরিয়ে প্রকোষ্ঠে প্রবেশ;
হিমেল হাওয়ায় বয়ে আসা ধবল শিউলির বিহ্বল ঘ্রাণ।

এইসবের কাছে নকশী কাঁথার উষ্ণ ভালোবাসা যেন তুচ্ছ ।
কুয়াশাচ্ছন্ন মেঠো পথে অকৃত্রিম পৃথিবীর খুঁজে ছুটে যায় সেই শিউলি তলায় ।

ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা পলকবিহীন চোখে খেলা করে বসুন্ধরার অপরূপ দৃষ্টিনন্দন মাহাত্ম্য ।
স্বর্ণালী রোদে মাখা শিশিরকণা ঘুমিয়ে আছে চিরসবুজ তৃণের বুকে।

এই শিশির আয়নায় আমি নিজের হর্ষ মুখখানা দেখি;
কখনো শীতল ছোঁয়ায় ক্ষুধায় অস্থির থাকি।
ভেজা কুয়াশার গন্ধ জড়ানো  শীতের রিক্ত মাঠে চাষি চাষাবাদে ব্যস্ত আপন ধারায়;

কেউবা কাষ্ঠবহ্নি জ্বেলে তাপ সেবন করছে।
কোথাও আবার পল্লবরাশি কুয়াশার চাদরে মোড়েছে নিজেকে।
অজ্ঞাত আগন্তক পাখির কলরবে সরব চারিদিক।

এহেন চিত্ততাড়া প্রকৃতির আয়োজনে  পারিজাত পাখির মতো ডানা ঝাঁপটে উড়ে যেতে চায় উৎপলা রোদে।

কবি পরিচিতিঃ-
---------------------------
মোঃ রুবেল ত্রিপুরার তরুণ প্রজন্মের লেখক। পিতা মোঃ দুলাল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অনার্সে গ্রেজুয়েশন শেষ করে বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সে পাঠরত। রুবেলের লেখা মূল্যত মনন স্রোতের পাতায়ই প্রথম প্রকাশিত হয়। পূর্ববর্তী সংখ্যায়ও রুবেলের লেখা প্রকাশিত হয়েছে।

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...