Thursday, August 25, 2022

স্বাগতম

অভিনন্দন হে কবি

সম্পাদকীয়

জগতে দুই ধরনের মানুষ নাকি থাকে। দুঃখী এবং খুব দুঃখী। আমাকেই কেন সুখি হইতে হইবে! আমি জগত কল্যাণে কি করিয়া, কি এমন অধিকার প্রাপ্ত করিয়াছি যাহা হইতে আমি সুখি হইবার দাবি করিতে পারি। আচ্ছা, জগত এমন অসুখের হইতে গেলো কেন? মানুষ এত অসুখবিরুদ্ধ হইলে জগতে নতুন করিয়া মানুষ আনিয়া ভরাইবে কেন? মন যাহা চাইলো, তাহা খুলিয়া বলিতে আর কতকাল সময় লইবে! কত সভ্যতা ডিঙ্গাইয়া গিয়া কোন সভ্যতায় গেলে আমরা জীবন বুঝিবো কবিতার মতো। প্রেম, বিরহ ও সংসার মিলিয়াই যেন জগতের ভিত্তি দাঁড় করাইলো। একুশটি কবিতা যেন ইহাই বলিয়া গেলো। ইহাই বলিলো।

Wednesday, August 24, 2022

রূপালী মান্না

খাদ 

আমিও মৃত্যু যন্ত্রনা ভোগ করি রোজ 
এই যন্ত্রনা আমায় জ্বালায় পোড়ায় কাঁদায় লেখায়।
এক একটা জন্মদিন পেরোলে
ভীষণ ভীষণ খুশি হই আমি , 
জীবন থেকে একটা বছর চলে গেল 
আয়ু ফুরিয়ে মৃত্যুর পথে এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ
কী ভীষণ সুখ দেয় বলে বোঝাতে পারবোনা। 

আমি নিন্দুক হতে পারিনা
কারণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে
মানুষের জীবন দেখি আজকাল ,
নিজেকে দাঁড় করিয়ে দিই সেইসব মানুষের    পরিস্থিতির সামনে ,
বিবেক ভাবায় এ ঘটনা আমার হলে কী করতাম ?
ফলতই আর নিন্দুক হয়ে ওঠা হয়না ।

আত্মহত্যার আগেই যারা মরে যায় রোজ
তাদের প্রতি আমার শুভকামনা
জীবনটাকে মৃত্যুর অপেক্ষায় বাঁচিয়ে রাখার জন্য ,
আসলে বেঁচে থাকাটাই সুন্দর
এর থেকে  সুন্দরতম কিছু হয়কি ?

আমিও তো মৃত্যুখাদের সামনে দাঁড়িয়ে
নিজেকে রোজ বলি
জীবন বড়ো সুন্দর ।

মিঠু মল্লিক বৈদ্য

লাশেদের স্বপ্ন

আমার চোখের সামনেই পরে থাকতে 
দেখেছি কয়েকটি নিথর দেহ
সকল স্বপ্ন উড়ে গিয়ে থমকে দাঁড়াতে দেখছি
নির্জীব দেহটির পাশে। 

কিছু ধবল বক উড়ে যায়  মাথার উপর 
আমার বুকে চিন চিন ব‍্যাথা 
এই লাশের শহরে আমিও কি তবে 
পরে রইবো পচনধরা লাশেদের পাশে?

আমার চোখের সামনেই পরে থাকতে দেখেছি
কয়েকটি  লাশ,কোন বড় রাস্তার মোড়ে
দিঘির ঘাটে,অন্ধকার বাগানে কিংবা 
বড় ফ্লেটের কোন এক নির্জন ঘরে।

এই লাশ সভ‍্যতার, সমাজের,
উন্নতির,মনুষ‍্যত্বের,সারি সারি পরে থাকা
লাশেরা স্বপ্ন দেখে একদিন - হয়তো কোনদিন 
জ্বলে উঠবে দাবানলের মতো।

জ্বালিয়ে দিতে দিতে ছুটতে থাকবে
অসীম দিগন্তে,আকাশনন্দিনীর  মতো বিকট শব্দে
উঠবে গর্জে, আতঙ্কে কাঁপতে থাকবে স্রষ্টা
বুক চিড়ে বেরিয়ে আসবে ভয়ংকর তেজোরশ্মি।

দিকে দিকে বেজে উঠবে রণদুন্দবী
ছিনিয়ে নেবে স্ব- অধিকার,
একদিন ওরা বেঁচে উঠবে অদ্ভূত ভাবে
গণতন্ত্রের নামে লিখবে কোন নূতন ইতিহাস।

দেবব্রত চক্রবর্তী

ঋণী

সব কথা বলা যায় না বিদায় বেলায়,
কিছু কথা বাকী রয়ে যায়।
জীবনের যা কিছু সঞ্চয় কুঁড়িয়ে বুকে আগলে রাখবো।
সেই বুকে আমার সন্তান মাথা রেখে ঘুমোবে।
আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দীর্ঘশ্বাস নেব।
রক্তের মতই শ্বাস-প্রশ্বাসে আমি নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবো,
আমার সন্তানের হৃদয়।
আমি, জন্মের প্রয়োজনে ঋণী হবো যত
তার সবটুকু হিসাব রাখবো আমার নামের সাথে।
আমি ঋণী হয়ে থাকবো আমার কাছে,
জীবনের কাছে।

প্রীতম শীল

আঘাতের প্রতিঘাত

রাজার রাজপথ শূন্য গুলিতে,
পুলিশের লাঠির ঘায়ে। 
তপ্ত দুপুরে আজও লড়াইটা জাড়ি,
গুলি লেগেছে পায়ে।

টেট বি.এড কত শত বড়ো ডিগ্রী, 
কাগজ খানা ফেলি ছিঁড়ে।
ইচ্ছে করে বিক্রি করি ঝালমুড়ি, 
এই সভ্য সমাজের ভিড়ে।

তাও ভালো শিক্ষিত বেকার, 
নাই বা বলবে লোকে।
নাই বা নেবো লড়াইয়ের গুলি,
ক্ষত বিক্ষত এই বুকে।

তোমার ছেলে মেয়ে বিলেত পড়ুক,
আমাদের রক্ত চুষে।
এই ব্যাথা জমা পড়ে রবে আজন্ম,
রাখবো আমরা পুষে।

সেদিও কাঁদবে তোমরা এই রাজ পথে,
যেদিন আঘাতের প্রতিঘাত হবে।
শূন্য গুলি লাঠির আঘাত হয়তো নয়,
তবুও অভিশপ্ত কঙ্কাল হয়ে রবে।

উর্মি সাহা

অবহেলা

দেওয়ালের বুকে পিঠ ঠেকিয়ে আমি তোমার
শ্বাস প্রশ্বাস শুনেছি
হিমালয়ের ঝর্নার মত তৃষ্ণা মেটায় তোমার চোখ
অরণ্যের মত ঘন কালো চুল, আমার 
দুঃখ মুছে দেয়
তোমার তারুণ্যের মত মাধুর্য আমায় বশ করে দেয়
বাকি ছিল শুধু লাল রং-এর ভালোবাসা!
যা আমি তোমার কপালের রেখায় খুঁজেছি
তোমার উষ্ঠের লালিমায় খুঁজেছি
তোমার নরম কানের দুল, চোখের পাতা সমস্তই।
সমস্তই আমার ভালোবাসার নিদর্শন।
আমি অক্ষর দিয়ে বুনেছি এক সহজসাধ্য চিঠি
যা এক আলোকবর্ষ পথ পেরিয়েও তোমার 
ঠিকানা খুঁজে
খুঁজে যায় তোমার হাত ছুঁয়ে যাবার আনন্দ
তোমার অবহেলায় আমার দুঃখ সুর শিখে যায়
তোমার অবহেলায় আমার শরীরী মাংস
সেজে উঠে
বেজে উঠে পুরোহিতের মন্ত্রের মত শুদ্ধ উচ্চারণ
চারিদিকে যখন আনন্দ-ধ্বনির বিকাশ,
সেবেলায়-
পিঁপড়ের ঝাঁকের মত, আমার-
কঙ্কাল আষ্টেপৃষ্টে রাখে শুধু অবহেলা।

                                  

দেবাশিস চৌধুরী

জননী

আমাদের পরিবার নেই
একটি ঘর আছে শুধু
ঈশান কোণে বাবা সমাধিস্থ
মা সদর দরজা, 
ন্যায় অন্যায় সব দেখেন 
সব পাপ নিজের গায়ে মেখে 
আমাদের শুদ্ধ করে তুলেন ক্রমাগত।

আমাদের রান্না ঘর সিন্ধু সভ্যতার 
নিদর্শন স্বরূপ দাড়িয়ে আছে, 
মাটির কলস, পাথরের থাল
মায়ের কোমল হৃদয় 
এগুলো খেয়েই আমরা বেচেঁ আছি।

অতনু রায় চৌধুরী

ভালো থাকা
 
জীবনের সাথে জড়িয়ে থাকা মুহূর্ত
আগলে রাখে রোজ।
সেই যে প্রিয় স্কুল মাঠ,
আর বন্ধু ছিল খুব।
ছিল অনেক স্বপ্ন চোখে
ছিল প্রেমিক হওয়ার শখ।
বয়স পনেরো ছোট ছেলেটা
আসলে চিনতো না এই বাস্তব।
পড়ার ফাঁকে ফাঁকি দিয়ে
নিজেকে ভীষন চালাক ভাবা।
সময়ের সাথে বয়স বাড়লে
পরিবর্তন হয় ভাবনা চিন্তা।
জীবন অনেক কঠিন তখন,
কঠিন বাবার ঘামে ভেজা শরীরের দৃশ্য দেখা।
মায়ের নীরব সংসার প্রতিপালনের বিনিময়ে‌
ভালো থাকা।

গৌতম মজুমদার

লড়াই

চেয়েছিলাম আমি পড়ে থাকা ঐ
পোড়া রুটি খানির অর্ধেক,
আহার করিয়া ক্ষুধা নিবারণে
করে নিতে পারি ভরপেট ।

কুড়িয়ে নিতে গিয়েছি তখন
দিয়েছি রুটিতে হাত,
অমনি একদল কুকুর আসিয়া 
বসিয়ে দিয়েছে দাঁত।

কুকুর টানছে একদিকে রুটি
আমি ধরেছি মুঠো ভরে,
ক্ষত বিক্ষত করে দেয় কুকুর
আমায় ঝাপটে ধরে।

ব্যথা যন্ত্রণায় চিৎকার করি
দূর থেকে হাসে মালিক,
বুঝতে পেরে চুপ হয়ে যাই
রক্ত বেরোয় খানিক।

ভুখা পেট নিয়ে কুকুরে মানুষে
দ্বন্দ্বটা বাধে যত,
রুটির টুকরো ছুঁড়ে দিয়ে মালিক
আনন্দটা পায় তত।

লড়াইটা মোদের বাচাঁর জন্য
হিংসার জন্য নয়,
কুকুরে মানুষে লড়াই এখন
নিত্য নৈমিত্তিকই হয় ।

মোঃ রুবেল

প্রতিদান         

বাবার বুকে মাথা রাখা হয়না-
দুই যুগ অতিক্রান্ত হলো।

হঠাৎ একদিন,
বাবার বুকে নয়, বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে ছিলাম।
নির্বিঘ্নে ঘুম হয়নি।
চতুর্দিকে শুধু দায়িত্ব ভিড় করে ছিলো।
বোধহয় বাবাকেও দায়িত্ব এমনভাবেই ঘিরে রাখে।
বাবাও ঘুমাতে পারে না নির্বিঘ্নে।
হয়তো এভাবেই,
দায়িত্বকে ঘাড়ে পুষে সব বাবা বটগাছ হয়।
জীবনরস জুগিয়ে যায় প্রতিনিয়ত।
আমরা স্বর্ণলতার মতো জীবনরস শুষে বেড়ে উঠি।
নতুন একটি বৃদ্ধাশ্রম সূচনার জন‍্য।

সংগীত শীল

শিঞ্জিনী

মুগ্ধতার ঝংকারে কলঙ্ক যেন কুসুমিত হয়েছিল নীরা'র পায়ে,
মুক্ত কেশ উড়ছিল তীব্রগতিতে মলময়মারুর মেঘ পালকের বেশে।

আধো আধো হাসিতে শোষণ করছিলাম মধুরস,
অবাঞ্চিত প্রাননাশ করেছিল তার চোখজোড়া।

মুহুর্তেই যেন ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে মন,
বেজায় চঞ্চলতায় ক্ষয়ে যাচ্ছিলো হৃদয়ের শিরা উপশিরা।

কোনো এক বর্ষারাতে ছুঁয়ে যাক,
ঝরাপাতার অসীম শূন্যতার স্পর্শকাতর দীর্ঘশ্বাস।

উজ্জ্বল ভট্টাচার্য্য

জবাব দিবা না দিবানা?

বুকে হাত রাইখ্যা কৈতে পারবা
তুমি আমার প্রেমে পরো নাই?
আমার চোখের দিকে অন্যভাবে তাকাও নাই?
আমার নাম মুখে আনলে
তোমার ভিতরে কেমন একটা করে নাই?
অন্য মাইয়াগোরে আমার লগে দেইখ্যা
জ্বরে তোমার গা খান পুড়ে নাই?
আমি যে তোমার লাইগ্যা পাগল
সে কথাডা জাইন্যা রসিকতা করো নাই?
তাইলে কওতো আমারে
ক্যান ভালোবাসলা না?
ক্যান তোমারে আমার নামের পাশে
বসাইতে পারলাম না?
ক্যান তোমারে লোকে
আমার কৈয়া চিনলো না?
ক্যান তুমি আমার হৈলানা?
চুপ থাইক্যোনা। কথা কও
কথা কও কৈতাছি কথা কও

      

তারানা নাজনীন

ছড়ায় মনোবল

হলদে পাখি ডিম পেরেছে
ফুটেছে দুটি ছানা
একটা ছিলো সুস্থ সবল 
আরেকটার চোখ কানা।

দুজন মিলে উড়তে শিখে 
মা যে চিন্তায় মরে
কানা ছানা সাহস দিয়ে
ভাবতে মানা করে।

এক চোখেতে জগৎ ঘুরে 
আনবো খুঁজে সুখ
ভয় করিস না মা জননী
দূর করবো দুখ । 

কতজনের পাখা নেই যে
পা ও নেইতো কারো
আমার তো মা সবই আছে 
কেন বারন করো?

ছন্ন ছাড়া ঘরটিকে তোর 
বাধঁবো মজবুত করে
যতো ই ঝড় আসুক জোরে 
হবে না নড়বড়ে।

দোয়েল,চড়াই,শ্যামা,শালিক
দেখবে মোদের ঘর
কাকের ঘরে কোকিলের ডিম
সারা জীবন ভর।

আলসে ছানা উড়ে এসে 
ফুরুৎ করে বলে
যদি আসে ঝড় বৃষ্টি
যাবো অন্যত্র চলে।

কষ্ট করার দরকার কি
বাবুই ঘর বুনছে
ফাঁকি দিয়ে যাবো ঢুকে
বুদ্ধি খাসা গুনছে।

মা তখন ডাকে দুজনকে
মন দিয়ে শোনো
পরের ধনে লোভ না করে
জয়ের মনোবল আনো।

Tuesday, August 23, 2022

নুরুল শিপার খান

দাবানল 

শুনেছিলাম বাবার মুখে,দেশের স্বাধীনতা 
ফেরানোর গল্প!
গল্প বলছি কেন! ইতিহাস
ইতিহাস রচিত হয়েছিল সেদিন বাংলার মানচিএে
এই বুড়ো বটগাছটা সেই নৃসংস কালের সাক্ষী হয়ে আছে আজও!
আমি আজও আহত বটগাছের মাঝে যুদ্ধাহত মুক্তি
যোদ্ধাদের দেখতে পায়.....
গাছের পাতাগুলোর ফাঁক দিয়ে আকাশের
 নীলগুলো দেখি,এই ৪২ বছর পর হঠাৎ
নীলগুলো লাল আভায় নিমগ্ন
আমার ক্রন্দনের সীমা রইল না
অসীম সরলতায়  নিক্ষিপ্ত বিশ্বাস
আজ বিস্তির্ন কাটার আঘাতে জর্জরিত!

তবুও আশা --------
শিঁরদাড়া উচু করে দাড়াবার,
প্রবল ইচ্ছে খুড়ে খুড়ে খেতে লাগলো আমায়
বললো:হে নবতুর জোয়ান----
সোজা হও!
হাতে তুলে নাও তরবারী!
কেটে টুকরো টুকরো করো ঐ
 অস্থীশীল অপশক্তিকে!

ভাবলাম আর যুদ্ধ করবো না!
স্থফা  দিব এবার সকল আন্দোলনের
ওরা মনের মর্ম বুঝেনা,
ওরা ভালবাসার শত্রু, ওরা বিক্ষুব্দ এক অস্থির
কালো শক্তি......
তরবারি ছেড়ে এবার কলম ধরলাম হাতে
সাথে সাথে হয়ে উঠলাম বিদ্রহি,লিখে ফেললাম
মুক্তির জয়োগান...কবিতার প্রতিটি অক্ষরে অক্ষরে
ঝন ঝনিয়ে বেজে উঠতে থাকলো ঢাল তলোয়ারের ন্যায় যুদ্ধের নাকারা!

পুরোনো শকুনদের নতুন করে অপশক্তির
 রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা!

আমার চোখে মুখে তখন বিদ্রহের দাবানল জ্বলছে!

ভবানী বিশ্বাস

আত্মশুদ্ধি

চুপ কর, শান্ত হও, 
যতটুকু পার মৌন থাক। 
গুল্মরুপ ছেড়ে এখন বৃক্ষ রুপ ধারন করছ। 

ডালপালা বাড়ছে, 
মূলের গভীরতা আগের মতো নেই, 
ভাবি বনস্পতি তুমি। 
মনে রেখো, 
পূর্বপুরুষদের প্রতি তোমার ঋণ বেড়েছে। 

আরও বড় হও, 
পাখিদের উপযুক্ত বাসস্থান হয়ে ওঠো। 
জল ধর, ছায়া দাও, 
পথিককে আশ্রয় দাও। 
সবার ঋণ স্বীকার করে মাথা নত রাখ। 
মনে রেখো, মাথা নত করলে কেউ ছোট হয়ে যায় না। 

কর্তব্য পালনের শ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠো।

Saturday, August 13, 2022

বিনয় শীল

কানমন্ত্র

সুখের হাটে দুখের মেলা
নিত্য নূতন বাঁক।
সুখের নীড়ের স্বপ্ন গুলো
জ্বলে পুড়ে খাক্ ।।১।।

কী হল!
কি যে  হল,
কেন হল এমন?
দিকে দিকে
ভগ্ন দশা 
প্রলয় কাণ্ড যেমন ।।২।।

দেশ ভাঙছে রাজ্য ভাঙছে
ভাঙছে পরিবার,
কোন অশুভ বাঁধা দিচ্ছে
জোড়া লাগিবার ।।৩।।

জন্মদাতা
পিতা-মাতা
যে দিকে যায় যাক্।
তোমার আমার
মধ্যিখানে
সুখের ঢেউটি থাক্ ।।৪।।

ধর্ম ভজা উড়ায় ধ্বজা
পাছে কুমতলব্।
পোড়ায় বাড়ি কাড়াকাড়ি
হায় হায় শুধু রব ।। ৫।।

কানকথা
দেয় ব্যাথা
'সত্য' একা কাঁদে।
নির্দোষ ব্যাক্তি
পা গলে দেয়
পাতা জালের ফাঁদে ।।৬।।

ফিসফিসিয়ে দেয় ফুসলিয়ে
মুখটা কানে গুঁজে।
সর্বনাশা উল্লাসেতে
চোখটা আসে বুঝে ।।৭।।

কানমন্ত্রে 
শান্ দিয়ে
বিবেক কেটে ছুটছে।
তাইতো এখন 
ঘরে ঘরে
বিলাপ্ কান্না উঠছে ।।৮।।

Thursday, August 11, 2022

রুপন সূত্রধর

পতাকা
                
পিঙ্গালি ভেঙ্কইয়া তেরঙ্গা 
পতাকার আজও যুদ্ধ 
তোকে ভাগাভাগির।

ভুলে গেছি পরাধীন
মায়ের অশ্রুজলে,পতাকা
স্বাধীনতার সর্ব সুখ। 

শক্তি সাহস তোর রঙতে
শান্তি ছায়া জগত জুড়ে
ধর্ম চক্র কথা বলে।

ক্ষমলোভী দুষ্ট দালাল 
পতাকা রঙ নিয়ে 
 বাটায়োরা করে।

পতাকা বেঁচে নকল করে 
মুনাফা লোভের খেলায় 
স্বাধীনতার জয়গান করে।

স্বাধীননতার অসুখ 
পরাধীনতার সুখ 
পতাকা মুচকি হাসে।

বীর শহীদের
কার্গিল তেরঙ্গা 
দেশভক্তি জাগে।

তিরাঙ্গা আর ধর্ম চক্র,
জানতে হবে সবার
মাতৃভূমির প্রেমে 
নতুন পাঠে আবার।

বিজন বোস

সত্য ও সুন্দর

এবার বুক জুড়ে গোলাপের চাষ করো ।
সকালবেলা শিশিরের   উপর 
সোনালী সূর্য আর তেরঙ্গা  আভা দেখে
এগিয়ে যাওয়া শিশুটির হাসিতে স্বর্গীয় দ্যুতি ,
 মনুষ্যত্বহীন বর্বরের হাত থেকে 
সমাজকে বাঁচানোর অঙ্গীকার নিয়ে
এগিয়ে চলা যৌবন স্বদেশপ্রেমের মন্ত্রে দিক্ষীত বলেই
লক্ষ্যে অবিচল ... অতন্দ্র প্রহরী ।
সকল গুঞ্জন , ডাক , সুরের মাঝে
সর্বোত্তম " মা " ডাক ।
তুমি বুদ্ধির নখে শান দাও 
স্থিতধী হও ---
ক্ষুদিরাম সুভাষ আদর্শ যে জাতির
শত্রুর তার নাই পরোয়া ।
পরান্নভোজী , কৃপাপ্রার্থী , উমেদার -  প্রবঞ্চকের
কাছ থেকে সতর্ক  থেকে
সৎ ও সুন্দরের পূজায় নিয়োজিত থেকে
তেরঙ্গাকে উর্দ্ধে ধরো---
তেরঙ্গা ভারতের প্রাণ
তেরঙ্গা মানে 
শৌর্যবীর্য ও সত্য- সুন্দরের জয়গান ।

           

সৈকত মজুমদার

চোলাই

পনের বছর আগে চোলাই বেচে 
সংসার চালাত যে উপজাতি রমণী 
সে এখন আশাকর্মী, আর এখনও
হুইল চেয়ার আমার জীবনসঙ্গী!

আজ থেকে বছর পনের আগে
পাশের বাড়িতে রোজ বিকেলে
চোলাই দিয়ে নীচু মাথায় খাড়াং পিঠে 
হেঁটে যেত সংকোচে এক উপজাতি রমণী; 
আর আমি ওর হেঁটে যাওয়া বাতাসে 
একটা মাতাল গন্ধ অনুভব করতাম, তবে
এই গন্ধ মদের নয়, ওর ঘামের! 
ঐ উপজাতি রমণীর দীর্ঘ পথের ক্লান্তি 
ওর ফর্সা গাল বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা 
গড়িয়ে পড়ত ঘাম হয়ে ;

উঠোনের এক প্রান্তে বসে আমি
ওর উন্মুক্ত পায়ের গোড়ালি দেখতাম
আর মনে মনে ভাবতাম- 
যদি ওর সাথে চলে যেতে পারতাম! 

অভীককুমার দে

বর্ণমালা

ভাবছি-
তুমিও এই মাটির, আমিও তোমার,  
মাটিতে জীবনের বর্ণ ঢেলে 
বানাতে এসেছি মালা;

বুকের জ্বালা নেভানোর জন্য, না কি-
উল্লাসে ! ঝুঁকে সেই মাটির দিকে,

তবুও কেন জানি আহ্নিক গতির
দোলন বাড়ে বুকের ভেতর 
যতই শব্দ শুনি ঝুলে পড়ছে সময়...

বর্ণ সব আমাদের, এই বিশ্বাসে
আগলে রেখেছি তোমাকেও,

প্রতিদিন জেগে ওঠো, আলো দাও
তবুও ডুবে যাই অন্ধকারে !

শ্রীমান দাস

আগুণ
             
যতটুকু আঁচ পেলে ছাঁই হয়ে যায় হৃদয়
ধীরে ধীরে গোটা শরীর
একটি জীবন ,
তার চেয়েও আগ্রাসী এ আগুন।

কতোবার আধপোড়া হয়েছি 
অন্তরদহনে হয়েছি ছাড়খার
কেউ কখনও পায়নি সে উত্তাপ।

অভিযোগ আছে,
কিন্তু,জানাবার সে দরবার কই?
তবুও আমার কোনো বিদ্রোহ নেই।

জানি,
এক পশলা বিবেকের বৃষ্টি যদি আসে
নিভে যাবে সব অবিবেচনার আগুন।

তিমির বরণ চাকমা

একটি বটবৃক্ষের নাম কাহিনী বৃত্তান্ত

কালের গতি কালের প্রবাহ
কোন সূত্রে বাঁধা
যা আজও হয়নি সমাধা
সে রহস্য জাল।

এ যাবৎ পৃথিবীতে
এল গেল কত প্রাণ
কে রাখে তার পরিসংখ্যান
অথবা কি সম্ভব?
যদি বা র'ল এরই মাঝে
আরও সুকঠিন গনন।

অকাল অসময় বিয়োজন
এই কাল অকালের
আছে কি নির্দিষ্ট তত্ত্ব
কিংবা কোন শর্ত।

প্রায়শঃ শোনা যায়
অকালে অসময়ে বিদায়
এ রহস্য আজও অজানা অচেনায়

বলছিলাম যাওয়া
বৃক্ষ সেএ তেমন
কত এল, কত গেল
জানা নেই কারণ
যতই এগিয়ে নগরায়ন
ততই দেখা মিলে খান্ডব দাহন
বারে বারে।

বলছিলাম আমার প্রিয় সাব্রুম চৌমাথার
বটগাছটির লড়াই কাহিনী।
যখন প্রথম চারা
তখন উলঙ্গ উদ্দাম
বড় হওয়ার সাথে
মাঝে মাঝে ডাল পালা
ছেটিয়ে শুরু শাসন
পরে পাকা সিমেন্ট দিয়ে
হলো বাঁধা কটি বন্ধন
কিছুদির পর গুরুত্ব সহকারে
নেতাজীর আবক্ষ স্থাপন।

সাথে লোহার ঘেরাও
ভাবা গেলো এবার হয়তো রক্ষা পাবে
সেই থেকে চৌমাথা হয়ে গেল
নেতাজি চৌমুহনী।

কিন্তু ভাগ্যমন্দ
দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা হল না।
না বৃক্ষের, না নেতাজির
ছেদন সমুৎপাটন হলো আবক্ষমূর্তি
আর সেই বটবৃক্ষের।

আধুনিক মানব শহরোন্নয়নের নামে
বলি দিলো।
২০২২ এর এপ্রিলের মাঝামাঝি
টুকরো টুকরো বটবৃক্ষ পরে আছে পরিত্যাক্ত স্থানে।
আর আবক্ষ নেতাজী হয়তো নিয়েছেন
অন্ধকার কুঠুরের কোন। 
এভাবেই চলছে বারে বারে যুগে যুগে
আগ্রাসন নির্ধন।
বৃক্ষের বয়স সেই অকালে অবেলায়
অনুমান মাত্র সাতদশ
যিনি রোপন করেছিলেন উনি ওপাড়
বাংলায় স্থানান্তরিত
শুনেছি হয়েছেন গত।

ছোটবেলায় উনাকে দেখা যেত
বাজার চত্বরে
সে সময় নাম ছিলো করিম চৌমুহনী
কালপ্রবাহে হয়েছে নেতাজি চৌমুহনী
সেও এবার গত।
কি নামে হবে আখ্যায়িত

এত পরিচিত নাম
পরিবর্তনের ধারা অব্যাহত হতে হতে
হয়তো হবে চৌমুহনী শ্রীরাম
হয়তো বসবে বীর হনুমান।

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...