Sunday, October 30, 2022

স্বাগতম

সম্পাদকীয় পাতা


দক্ষিণের লোকসংস্কৃতির প্রাণপুরুষ ড. রঞ্জিত দে। দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুমের সম্পদ। রাজ্যের পরিচিত মুখ। অথচ, কি এক রহস্যের কারণে নিজেকে প্রচারের আলোতে আনতে চান না তিনি। দীর্ঘসময় ধরে নিরিবিলি কাজ করে ত্রিপুরা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। সমৃদ্ধ করেছেন রাজ্যের লোকজ সংস্কৃতির ধারাকে। নতুন প্রজন্ম আজ শেকড়ের টানে নতুন নতুন সৃষ্টি কর্মপন্থা তৈরি করেছে, যেটি আমাদের ভালো লাগার কথা। অথচ, এর নেপথ্যে তিনি উপাদান যুগিয়েছেন, গুরুত্ব বুঝিয়েছেন তিনি রয়েছেন অগোচরে। 

এক শেকড়প্রিয় গুপ্ত মানুষের কথা বর্তমানেরা জানুক। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী নিয়েও কোনোদিন অহঙ্কার করে বলেননি আমি গবেষক। বড় পুরানো কথা এটি। সে সময় পিএইচডি মানে ইয়া বড় বিষয়। মনন স্রোত সাক্ষাৎকার নিয়েছিলো তাঁর।  সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেকে তুচ্ছতার সাথে প্রকাশ করেন। এত বিনম্রতা ও ভাবুক কথাবার্তা প্রকৃত জ্ঞানীজনের কাছেই শুধু পাওয়া যায়। রাজ্যের প্রান্তিক শহর সাব্রুমে দীর্ঘকাল তাঁর যাপন। এখান থেকেই রাজ্যের লোকজ সংস্কৃতির গুপ্তকথা, ইতিকথা পায়ে হেঁটে তুলে এনে আমাদের পথচলা মসৃণ করেছেন তিনি। কারো সাথে তুলনা না করলেও বলা যায়, তিনি অনবদ্য। আপাদমস্তক এমন মিষ্টি ব্যক্তিত্ব যে একজন মানুষের হতে পারে, তা ড. রঞ্জিত দে কে না দেখলে বুঝা মুসকিল। তিনি সম্পাদনা করেছেন লোকসংস্কৃতি নামক একটি সাহিত্যপত্র। কঠিন থেকে কঠিনতম যুগে এটি সম্পাদনা করে প্রচার করেছেন রাজ্যের বহু সাহিত্যিকের সৃষ্টি। রাজ্যের প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনাগুলোতে ওনার প্রকাশিত বইগুলো পাওয়া যায়। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যার বই সংগ্রহ করে প্রকল্পের কাজ করে, সে মানুষটা এত'টা সাদামাটা সেটা তারা দেখলেই বিশ্বাস করবে। মনন স্রোতের এই সংখ্যাটি একটি প্রতীক্ষিত সংখ্যা। এটি তাঁকে উৎসর্গ করা হলো। সংখ্যাটিতে যারা লিখেছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। নমস্কার। 

শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা-সহ
জয় দেবনাথ
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
মনন স্রোত, ত্রিপুরা 

মনন স্রোত

সুস্মিতা দেবনাথ

শবের শহর

নক্ষত্রের আগুন ঝরা রাতে
আমার বোধগুলোকে খন্ড খন্ড করে 
ছড়িয়ে দিলে কোনো শবের শহরে।

সূর্যটাকে ঢেকে দিতে চেয়ে
ছড়িয়ে দিলে আঁধারের মেঘ,
নিস্তব্ধতায় গুমড়ে কাঁদে আমার অহমিকা
রাত জাগা নীরব শহরে।

একদিন এই শহরের ক্ষুধার্ত মিছিল
রোষানলে গর্জে উঠবে,
সেদিন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে
অসভ্যতার এ নগ্ন প্রাচীর,
সেই গর্জমান মিছিলের সামনে
ধুলিসাৎ হয়ে যাবে তোমার বিবর্তন।

এখনও সময় আছে, ভাবো
নইলে ইতিহাস হয়ে যাবে ।

মাধুরী সরকার

দিন বদলের স্বপ্ন
          

কতো কাঠফাটা রোদ,
বিপদসংকুল বজ্রবিদ্যুৎ মাড়িয়ে
ওদের বেরিয়ে পড়ে কর্মমুখী হয়ে।
দু'দন্ড আয়েশের সুযোগ বঞ্চিত ওরা,
ক্ষুধার আগুন ওদের বড্ডো তাড়া করে 
শূণ্য থালায় দুমুঠো ভাতের সন্ধানে।

ওরা শোসিত বঞ্চিত সর্বহারার দল
যাঁদের আর্তনাদ পৌঁছায় না রাষ্ট্রের কানে
অথচ ওরাই খাবার জোগায় রাষ্ট্রের মুখে ।

রাতের জোৎস্না মেখে ওদের চোখেও 
স্বপ্ন নামে চালের ফুটো বেয়ে,
তন্দ্রাভাবে খেয়ে ওঠে দিন বদলের গান।
রাত পোহালেই ভাঙা বেড়ায় পথ করে 
স্বপ্নগুলো উড়ে যায় অদৃশ্য পথ বেয়ে !

ওরা চির বঞ্চনা নিয়ে বাঁচে 
স্রোতে ভাসা কচুরিপানার মতো।
বুকের তীব্র দহন নিয়েও বেঁচে থাকে
দিন বদলের স্বপ্নালু চোখে।

অনামিকা লস্কর

শুধু তুমি 

এইতো সেদিন 
ক্যালেন্ডারে গোল্লা কেটে রেখেছি
পরদিন থেকেই হিসেব গোনা শুরু 
তুমি আসবে ...

পঞ্চাশ পয়সার ঠান্ডা লাল জল 
কাঠি গোঁজা আইসক্রিম 
তোমার পাশে দাঁড়িয়ে খেতে ইচ্ছে করে 
আজ পঞ্চাশ বছর পরেও ...

সঞ্জীব দে

মশাল

দেওয়ালে শিরদাঁড়া ঠেকিয়ে 
আকাশের  তারাগুণার সময় নয় এখন! 
কোল বালিশে মাথাগুজে হতাশা লুকাবার 
সময়ও নয়! 
অথবা টিভিতে করোনা করোনা খবর শুনে শুনে 
আতঙ্কিত হওয়ার সময়ও নয় এখন! বরং 

তীর্যক দৃষ্টিতে মাঝির অভিসন্ধি খোঁজো ---
বেনিয়ার অশ্রুতে আতস কাঁচ রেখে দেখো 
কতটুকু বিষের মিশ্রণে নীল করেছে নোনাজল! 

এতদূর হেঁটে এসে 
যে সাম্রাজ্যে এখনও মিট মিট কূপি জ্বলে 
যার নিচে নিশ্চিত অন্ধকার! 
প্রতিমুহূর্তে জীবন ক্রয় করতে করতে এগুতে হয় 
আত্মকেন্দ্রিক পথ ধরে ---

মেঘমালা ঢেকেছে দৃষ্টি , মায়াজাল ঢেকেছে মন 
যাঁরা বুঝে গেছে মায়া ও ছায়ার নিগূঢ়  রসায়ন,

 সময় উচ্ছিষ্ট করেনি কেউ, একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে,
 অন্ধকার তাড়াতে মশাল ধরেছে হাতে।

শর্মিষ্ঠা ঘোষ

প্রত্যর্পণ

আজ কোনো শুদ্ধস্বরে নয়
আরশিতে থিরথির গরল
ধূমোজলে অমিয় বিষাদ
রেখেছে দুঃসংবাদ 
অংস হতে অংশচ্যূত       
জবানবন্দী 
কে কবে এঁকেছে বলো
রেখার আড়ালে ঝাঁপ দেয় 
প্রশ্নরা, মুহূর্তের
অনন্ত ডোবায়
তুমি নির্দোষ 
কেউ স্বেচ্ছায় ভিখারি বন্দী 
সমুদ্র তার শঙ্খনাভিতে তরঙ্গে  বেজে ওঠে 

যদি কোনো রং থাকে 
পুড়িয়ে দাও
ফিরিয়ে দাও
যা কিছু অনুচ্চারিত ইশারার জব্দ 
আজ অরণ্য রক্তিম
জলৌকা বর্ণে...

মিঠুন দেবনাথ

মা

তুমি আছো বলেই
আজ বেঁচে আছি,
তুমি আছো বলেই 
  আনন্দেতে নাচি।
তুমি আছো বলেই
আমার এতো গর্ব,
তুমি আছো বলেই
পৃথিবীটা যেন স্বর্গ।
তুমি আছো বলেই
নই আমি ভীতু,
তুমি আছো বলেই
পেরোচ্ছি জীবন সেতু ।
তুমি আছো বলেই
 নই আমি ক্ষতবিক্ষত,
তুমি আছো বলেই
রাস্তাযে আছে শতশত।
তুমি আছো বলেই
ভেঙে গড়ছি নিজেকে,
তুমি আছো বলেই
খুঁজে পাচ্ছি স্নেহকে ।
তুমি আছো বলেই
অন্ধকার যেন আলো
তুমি আছো বলেই
স্বার্থান্বেষীরা ছুটি পেলো।
তুমি আছো বলেই
দুঃখরা যে লুকালো ,
তুমি আছো বলেই
সুখে রাত্রিরা পোহালো।                                                                          

অতনু রায় চৌধুরী


জীবন দেখি

দাঁড়িয়ে থেকে জীবন দেখি,
দেখি মানুষের চলে যাওয়া।
শহর জুড়ে এত হৈচৈ,
যেন পুরনো কিছু আবার ফিরে পাওয়া।
মানুষ হাঁটে মানুষের সাথে
হাতে হাত রেখে।
জীবন সুন্দর হয়তো এখানেই
মনের মানুষ যখন পাশে থাকে।
সুখের মুহূর্ত মুখে হাসি
দেখতেও ভালো লাগে।
এই শহরে একাই দাঁড়িয়ে থাকি আমি
এসব কিছুর ভিড়ে।

লিটন শব্দকর

রোদরহস্য

পাখিঘরে জ্যোৎস্নামাখা কাকের ঠোঁটে
কথোপকথন ও ভাবের সূক্ষ্ম অন্তর্বয়ন
যে তটকথা যেমন উষ্ণতার লহরী চায়।

রাত খুবলে খেয়েই এক তপস্বীনি ভোর 
শরৎ কখনো এমনই নির্জন রোদরহস্য
উঠোনে বহেরার ছায়ায় প্রশ্নের ফরাস।

মিঠু মল্লিক বৈদ্য

আবেগী মন

মনে পরে!অবজ্ঞা ভরে সেদিন যাকে 
ছুঁড়ে ফেলে দিতে বলেছিলে 
নিতান্তই অবহেলায় , অন্ধকারের অতল গভীরে
তলিয়ে যেতে দিতে চেয়েছিলে ওর সকল সত্ত্বা ,
হতাশার চাদরে মুড়িয়ে দিতে চেয়েছিলে
প্রত‍্যাশার সকল দুয়ার ,
আজ সে দাঁড়িয়ে সমুখে ; বাড়িয়ে হাত
তোমার সকল উৎকন্ঠা উপচে ফেলে
নুতন দুয়ার উন্মোচনে।

ছলনা, অমর্যাদার পরিহারে নিতান্তই ভালোবেসে , 
আত্মপরতার কপাট খুলে সে দেখিয়েছে আবারও
মানবিক সত্ত্বা, হিংসার আগুনে পুড়ে পুড়ে
আজ সে খাঁটি সোনা। তাই ভালোবাসার আগুনে
জ্বালিয়ে দিতে চায়  বিদ্বেষের ঝুপড়ি ।
আর পুড়ে যাওয়া বিদ্বেষের ছাই লেপটে গড়তে চায়
এক নতুন প্রজন্ম, যে প্রজন্মের মাথায় ছাতা 
হয়ে থাকবে রবীন্দ্র,বঙ্কিম, নজরুল জীবনানন্দ
আরও আরও দীপ্ত নক্ষত্র আর একটা আবেগী মন।

আলমগীর কবীর

স্বপ্ন 

স্বপ্ন সবাই দেখে 
কেউ আকাশের দিকে তাকিয়ে স্বপ্ন দেখে
আবার কেউ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে।
সবার সব স্বপ্ন আর বাস্তবায়িত হয়না! 
তবে যার স্বপ্নটটা সফল হয় সে জানে,
তার জীবনে কত প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হয়েছে!

দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়

জেগে থাকি অপেক্ষায়

বিকেলটা কেমন বদলে যাচ্ছে।              
পাহাড়ের গা বেয়ে অন্ধকার নেমে আসছে।  
ধীর পদক্ষেপে।
এখন তোর্সাকে ফেলে রেখে উঠে পড়া।
সবুজ ঘরে ফেরার পালা এবার।
সত্যিই কি ফিরতে পারে মন ?
নদীর কুলুকুলু বয়ে চলা বুকে নিয়ে
আলোর প্রতীক্ষা।
আবার এক সকাল।
আবার এক দিন।
প্রতীক্ষার শেষ কবে কে জানে !
মন জানে শেষের বাস্তব।
তবু অপেক্ষা,
যদি আর একবার
শুধু একবার ফিরে আসে সে.....
গাঙচিলের মতো নদীর জলে পা ডুবিয়ে।

নন্দিতা দাস চৌধুরী


ক্রমান্বয়ে রাত ফুরিয়ে যায়

চৈত্রের শেষ বেলায় গঙ্গার ঘাটে একটু সোরগোল হয়েই থাকে, 
পথ চলতে চলতে অজস্র পায়ের ছাপ , 
তার মধ্যে কিছু আঘাতের চিহ্নও লেগে থাকে,
মুমূর্ষু জোছনায় কতো ভালোবাসা রাত হারায়,
হেলে পড়া রাতের বুকে ঢেউয়ের  বিরহেরা একাকীত্ব খোঁজে,
জীবন তো প্রতিনিয়ত দেনা পাওনা খতিয়ে দেখে,
খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আদ্যন্ত তল্লাশি করে দিনের শেষে সিন্দুকটা শূন্যই পড়ে থাকে,
একটা সম্পর্ক ভেঙে গেলে মাধুকরী  অন্তরঙ্গতা  সব খুইয়ে হয়ে যায় সচ্চিদানন্দ ,
বাইরে থেকে যে ভাঙনটুকু দেখা যায় আসলে ভিতরে ভিতরে সেই তো রয়ে যাওয়া,
মেঘে ঢাকা আকাশের অঙ্গীকার  ছুঁয়ে স্খলনের গভীর  তত্ত্বের ইঙ্গিতকেই  বেঁধে রাখি,
ক্রমান্বয়ে রাত ফুরিয়ে যায়।

অনুপম রায়

পরিকল্পনা

আমার ঘরে কোনো ধান নেই
তবুও ইঁদুর দৌড়ে ছাদে ছাদে।
যদি ঘরে ধান থাকত,তবে একটি বিড়াল পালতাম।
সে সামনে থেকে ধান পাহারা না দিলেও
ইঁদুর খেয়ে আমার ধান বাঁচাত।
নিজের পেটের খোরাকও হত।

মূলত এটি একটি অনুপমীয় পরিকল্পনা।
এই পরিকল্পনায় একটি রাষ্ট্রের সরকার চলতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলো মানুষের নজরে আসতে পারে;
নির্বাচন হতে পারে গরমাগরম। 
তাতে অবশ্য আমার কিছুই না।
আমি কমদামী কিছু চাল পেলেই হয়। 
পরিবার নিয়ে খেয়ে বেঁচে থাকলেই হয়।

Saturday, October 29, 2022

শ্রীমান দাস

জলতান্ডব

গভীরতা মাপবো বলে
জলের যতটা কাছে যাই
সে তার চেয়ে বেশী আগ্রাসী হয়ে ওঠে।

উত্তাল জোয়ারে সে যখন চঞ্চল
আমি তার বাঁধনহারা উচ্ছ্বাস দেখি,
দেখি তার পার ভাসানো গতিময়তা।

এ পারেই কতো দো-ফসলী বুনন
কত সুদূরপ্রসারী স্বপ্ন
তবু জলতান্ডব বারে বারে।

সে গভীর হলে নৌ ভাসাতাম
বোঝাই করে দিতাম যত চাওয়া পাওয়া,
অবগাহনে কুড়িয়ে নিতাম তৃপ্তির স্বাদ

কিন্তু গভীরতায় নয়,
স্বেচ্ছাচারী জল আগ্রাসী হতেই ভালোবাসে।

সৈকত মজুমদার

পরজীবী

হুইল চেয়ার,  
এমন জীবন আমি ছাড়াও পৃথিবীতে
অগণিত মানুষের! তবে কী তাদের
সবার জীবন আমার মতন বিষাদময়!

রোজ ভাবায়, যখনই 
কারো কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয় আমার। 
একান্ত কাছের মানুষও তখন কত কথা শোনায়। 
রাত নিশুতি হলে একলা বিছানায় ছটফটে মরি
আর ইচ্ছামৃত্যুর বৃথা চেষ্টার পরিকল্পনা করি!

অথচ বাইরে সবাই দেখে-
আমি ভাল আছি, কিন্তু কেউই জানে না
নিজের ভিতর কতটা কষ্ট চেপে বেঁচে আছি। 

সংগীতা দাস

আগমনী

শরতের আকাশ, ভোরের শিউলি
কাশবনে কাশ।
তোমার অপেক্ষায় বসে থাকি
বারো মাস।

সময়টা এখন যাচ্ছে কঠিন,
তাও করছেন আশীর্বাদ মা;
শিউলি ফুলেরা গাছে গাছে ফুটে
জানাচ্ছে এসো এসো উমা
গগনে গগনে বাজিল শঙ্খ ধ্বনি,
মা আসছেন শুরু হল মায়ের আগমনী
নীল আকাশ,কাশের রঙে মাতল উঠে মন
ঢাকের কাঠি বলছে ডেকে মায়ের আগমন
ঢাকের আওয়াজ ঢ্যাংকু-রাকুর
শোনা যাচ্ছে মায়ের আগমনীর সুর।

শান্তনু ভট্রাচার্য

ট‍্যাটু

তোমার ছেড়ে যাওয়া দুঃখ গুলো
আমাকে অক্ষে রেখে চক্রাকারে ঘোরে।

বাতাসের জন্য জানলার ছবি এঁকেছি কতবার
লাল লাল গোলাপে ভরে গেছে ইজেল
সেতো এক খাদহীন ভালোবাসার‌ই জন্য।

তবুও কেন শীতের মিঠেরোদ
একবারও দাঁড়ায়নি জীর্ণ এ চৌকাঠে,
মাখোমাখো জোছনায় দুচোখে রুমাল বেঁধে
কেউতো নিয়ে যায়নি দুর বসন্ত অরণ্যে।

এখন অক্ষরেখায় সূর্যাস্তের রঙ
পাখিরা ফিরে যায় ক্লান্ত পাখসাটে
রঙহীন তুলি হাতে আজও অপেক্ষা করি-

তাঁর গায়ে প্রেমের ট‍্যাটু এঁকে দেবো বলে।

রুপন সুত্রধর

প্রেমের অবেলা       

তোমার এখন খেলার বয়স 
মন গুলো বুঝে না, এ খেলা
নয়ন হরিণী ডাঙর চাওনি
হারিয়ে যায় এ হৃদয় অবেলা।

লম্বা কালো কেশ,উড়ে সারাবেলা
এলোমেলো রুপকথার গল্পের
পরী বুঝি  উঁকি দিয়ে যায়, 
জীবন প্রেম খুঁজে, তোমাতে  এবেলা।

 আমার গল্প শুরু, হাসিতে হাসিতে
মাঠের সিঁড়িতে, বলা অন্তরের সুপ্ত প্রেম
নিবেদন খোলা আকাশের নীচে,
প্রকৃতি সেজেছে বসন্ত বাতাসে। 

হঠাৎ করে বয়স যেন বয়স সন্ধির আঠারো 
যৌবনের রঙ লেগেছে মনে
আমি কর্মী আজীবন ভালো বেসে যাওয়ার,
তোমার অন্তরে রঙিন ভালোবাসার উদ্যানে।

গভীর এই নিবিড় রাতে মনেতে বাসা
দিনেকের দেখা, সময়ে অসময়ে অল্প কথা
শাহজাহান মমতাজ প্রেম গাঁথা 
তাজমহল সমাধি, আমাদের হবে।

তোমার হাসির সব রং গুলো 
 আছে আমার হৃদয় জুড়ে, সারাবেলা
সুখের বসত,দুঃখ গুলো কথা বলে,
শুধু তোমাতে হারিয়ে যায়, উদাস দুপুরে। 

প্রেম বুঝে না বয়স আট থেকে আশি
দাদু স্বপ্ন দেখে, রাজকুমারীর প্রেমে পড়ার,
আমিও চিরনতুন তোমার প্রেমে
হৃদয়ের খিদে মিঠে না, সারাবেলার ভাবনাতে।

অভীককুমার দে

পুনরুত্থান 


পরাজিত মানুষ দেখেছ কখনো ? 

যারা হেঁটে যায় অকারণ!

শুধু ক্লান্তি জড়িয়ে ঝিমিয়ে পড়ে সব,
ছত্রভঙ্গ মানুষ বলেই হয়তো
মাথা তুলতে পারে না।

পুনরুত্থান শিখে যায় যদি
পায়ের শব্দে জোয়ার উঠতে পারে নিশ্চিত। 

দীপ্তনু চৌধুরী

প্রহসন 

নিঙড়ে নাও , তবুও পাবে না যাচিত তুষ্টি ...
ভরে উঠবে সে আবার , ছোবল দেবে বাহুল্যের বিষদাঁতে ,
যে কামশোষণে আহরণ করে চলেছো কলি - অমৃত , সে তোমায় একদিন মারবেই ...
লাশঘরের জীবাশ্ম থেকে আবার জন্ম নেবে তুমি ,
শতাব্দী পেরিয়ে যেতে যেতে ভক্ষণলোভের গতিপথ পাল্টায় মানবসমাজ , কচিমস্তিষ্ক যুবসমাজকে হাতিয়ার করে ।

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...