Saturday, December 28, 2019

মনন স্রোতে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি

সম্পাদকীয় প্যানেল

বছরের শেষ সংখ্যা এটি। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই একটা সংখ্যাই এটা প্রকাশের শত প্রতিকুলতার কষ্টকে ভুলিয়ে দিলো। ম্যাগাজিন মূলত চিৎকার করার একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম। সামগ্রিক বিষয় এই ছোট্ট সংখ্যায় সব বিষয় সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এই সংখ্যা সত্যিই অন্যরকম। তবুও আমরা কোনোভাবেই আত্মসন্তুষ্টির আওতায় আসবো না। প্রকাশের সাথে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি এই সংখ্যা পাঠকমহলে দারুণভাবে সমাদৃত হবে।ভূল ত্রুটির সব দায়ভার আমারই। মার্জনাপূর্বক মনন স্রোতকে তার সামাজিক দায়িত্ব পালনে সার্বিক সহযোগীতার হাত নিশ্চিত করবেন এই আশা রাখছি। সবাই ভালো থাকুন।

                                       শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা-সহ
                                             জয় দেবনাথ
                                                 সম্পাদক 
                                                মনন স্রোত 

সুমনদের ছবি ক্যামেরায় ধরেছেন রনি

পরিতোষ সরকার

বৃষ্টির ওপারে

সন্ধ্যার কপাল বেয়ে বাইরে

আজ তুমুল বৃষ্টি, গভীর
রাতেও ব‌ইছে সমতালে। 
আর ভিতরে....
আর ভিতরে ব‌ইছে অগোছালো
শয্যার উপর যৌবনের মহাঝড়। 

তুমি যখন অর্ধ-‌অচেতন,
আমার মধ্যে তখন উৎসুকের
প্রবল জ্বালা। হাত দুটি আমার
তোমার বুকে, আর তুমি আঁধার
শয্যায় পরে থাকা কাপড়টুকু 
মুষ্টিতে গুঁজে সহ্যের সীমা 
পার করেই চলছ। 
হয়তো এই ভাবেই প্রতিটি নারী
তার যন্ত্রণা লুকায় বৃষ্টির শব্দে
আর অগোছালো শয্যার কাপড়,
প্রতি রাতে।

সংগীতা দেব

প্রিয় অসুখ

অসুখ তো আসে না বলে।
না বলে বাসা বাঁধা কিছু অসুখ, প্রিয় হয়।
তুমি সেই প্রিয় অসুখ আমার,
এই অসুখ না থাকলে মনে হয়,
সকাল আমার আলো দেয় না,
রাত আমার কাটতে চায় না,
কাজগুলো  যেন আমার ছন্দ ছাড়া লাগে।
এখন আর নিজেকে আয়নায় দেখিনা,
শাড়ির আঁচলটা ও মাটির সাথে দোল খায়।
চুলগুলো ও বাঁধা মানছে না,
ঝড় তুলছে বাতাসের সাথে।
জানালার ফাঁকে দেখা,আমার ছোট্ট আকাশটা,
গম্ভীর বিষাদে মগ্ন,কোনো কথা বলছে না।
নিঃশ্বাস আমার ভারি হয়ে আসছে,
এতো অসুখ যার জন্য,সে তো জানছে না,
তবু ও অসুখ যে আমার,গভীরে জড়াচ্ছে।

সজীব পাল

একটা একলা মানুষ

জানি তুমি একলা ভীষন,একলা এই শহরে,
একলা থাকা মানুষগুলো দুঃখ গুণে রাতপ্রহরে।
ফুল চিনে না,ফল চিনে না নিয়ন বাতির আলোয়,
গাঁদা ফুলের গন্ধ তোমার চুলের ভেতর খানিকও।
তোমার জন্য ক্লান্ত আমি,ঠোঁটের কোণে ঘা যেমন,
মৃত্যু তো বেশ সরল জানি,তবুও ঠিক ভয় করে কেমন!
নেই ঠিকানা সুখ শহরের,বাড়ছে ব্যথার দাম
ব্যস্ত কেমন মানুষগুলো,কমছে মানুষের মান।
তুমি হেসে উঠলে বলে অবাক বৃক্ষের প্রাণ,
যার ভেতরে দুঃখ নদী,এই কেমন হাসির বান?

মোঃ রুবেল

প্রেমযজ্ঞ
      
সেদিন আকাশের বুকে নেমে এসেছিল-
এক প্রেমময় সন্ধ্যা।
তারাঘেরা ঝলমল আকাশ।।
আমার বাঁ পাশে বসা এলোকেশী প্রিয় মানুষটি।
যা আমার কাছে দলিলবিহীন ঐতিহাসিক মুহূর্ত ছিল।

আর ডানপাশের পকেটে ছিল--
কলমে ব্যক্ত মনের কোণে লুকোচুরি খেলায় মত্ত অভিবাসন কথার প্রেমপত্র।

কিন্তু সেই সন্ধ্যায় দুঃসাহসিকতার অভিযানে হার মানে নিদাগ প্রেমপত্র।
প্রিয় মানুষটির নিবিড় চোখে চোখে রেখে দেওয়া হয়নি প্রেমপত্র।

আমি তার অকর্ষিত ভালোবাসার জমিনে ভালোবাসার বীজ রোপণের এক দুর্গ আশায় --
এই নিদাগ প্রেমপত্র এখন জীবন ডায়েরির শেষপাতায় জুড়ে নিয়েছি।
রোজ মধ্যরাতে বিনিদ্র নয়নে কলমে ব্যক্ত প্রেমপত্র রপ্ত করি।
আজ আমি তার নামের প্রেমপত্রের নিত্য পূজারী।

সুব্রত দেববর্মা

শূন্য রাজকোষ


একদিন সুনীল আকাশ বলতে
সুবিশাল আসমুদ্রহিমাচল কে বোঝাতো।
এখন আকাশ মানে সমঝোতা
আকাশ মানে মুক্তির চুক্তিসই,
বোঝায় কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে
আছে খুল-যা-সিমসিমের একফালি গুহা।

যেখানে বৈদিক যুগের জীবাষ্মের চরম অনিশ্চয়তা
তাতে প্রতিবেশীর মহাভোগ বিলাসিতা মাত্র,
জানিনা মানুষের কাছে শুন্য ছাড়া
আর কোনো রাজকোষ আছে কিনা।

তবুও লোকে আফিম কিনে,কিনে শিকল।

অনির্বান রায় গুপ্ত

সকালের গল্প 

সকাল এ বারান্দায় বসে পেপার টা পড়ছিলাম,  তখন বৌমা এসে গরম লিকার চা দিয়ে গেলো র বলে দিলো আমায় তার বাচ্ছাকে আজ স্কুল এ দিয়ে আসতে হবে. আমিও এটাই চেয়েছিলাম মনে মনে.  কারণ ছিল স্কুল এ গেলে অনেকদিন পর আজ মিস ব্যানার্জী এর সাথে দেখা হবে.. আমার সাথে গতকাল ই কথা বলেছিলো ফোন এ. মিস ব্যানার্জী থাকেন পাশের পাড়ার 3 নম্বর গলির 4 নম্বর ফ্লাট এর 2nd  ফ্লোর এ. 
যাই হোক আমার নাতি তাকে নিয়ে স্কুল এ পৌছালাম তখন ঘড়িতে সকাল 7:45 বাজে ওদের pre nurshery school.. প্রায় 2 ঘন্টা সময় পাবো একটু গল্প করার র সাথে গরম চা বিস্কুট তো আছেই গনেশ এর চা এর দোকান এ.  স্কুল এর পাশে মোড়ের মাথায় দোকান টা ছিল.. প্রতিদিন সকাল 8 টা থেকে বেলা 10 টা অবধি আমাদের আড্ডা বসতো.. আজ এই 65 বছর বয়সে আমাদের বুড়ো বুড়ি দের আড্ডা টা একটু আলাদা ছিল. আমাদের আড্ডা তে প্রধান বিষয় ছিল নাটক,  গল্প,  কবিতা র বিষয় নিয়ে চর্চা করা. মাঝে মাঝে আমাদের কেউ আসতে পারতো না শারীরিক কারণে, যাই হোক আজ মিস্টার সেন আর মিস্টার দাস আমি র মিস ব্যানার্জী আছি..  স্কুল শুরু হওয়ার পরে  আমি মিস ব্যানার্জী গনেশ এর চা এর দোকান এ এসে বসলাম,  একটু পুরোনো দিন এর কথা না বললে তোমাদের সবার ই বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে জানি তাই একটু খুলেই বলি এবার,  ওর ভালো নাম ছিল মাম্পি সরকার,  র আমার নাম ছিল সাহেব মজুমদার.. কলেজ এ পড়ার সময় থেকে আমাদের প্রেম ছিল.. তখন তো আর এখনকার দিন এর মতো মোবাইল ফোন ছিল না তখন চিঠি আদান প্রদান হতো.  যদি বড়োরা কেউ জেনে যেত তাই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা করতাম আমরা. বাড়িতে ছোট থেকেই শাসন এর মধ্যে বড়ো হয়েছি.  তাও যখন আমাদের একটা ভালোবাসা শুরু হলো আমরা কোনোদিন ও হাত ধরে হাঁটিনি,   যতদূর মনে পরে একদিন গঙ্গার ধরে বসে একসাথে বাদাম ভাজা খেয়েছিলাম. কলেজ জীবনে অংক এ আমার মাথা টা খুব ভালো ছিল.. স্কুল কলেজ এ সবাই আমায় ভালো ছাত্র হিসেবেই জানতো.. আর মাম্পি বাংলায় অনার্স নিয়ে পড়তো তবে হ্যা আর একটা ভালো গুন ছিল ওর,,  ও খুব ভালো ছবি আঁকতে পারতো..  কলেজ জীবন পার করে একটা চাকরি তে জয়েনও করেছিলাম কিন্তু ছোটবেলা থেকে নাটক অভিনয় এর স্বপ্নে বিভোর থেকে চাকরি তে মন বসাতে পারলাম না.  তাই মাম্পি র বাড়ী তে আমাদের সম্পর্ক টা মেনে নিতে চাইছিলো না কেউ ই.. তার একটি কারণ আমি ভালো কিছু কাজ করিনা .. যাই হোক একটা বিসনেস শুরু করলাম আমার এক বন্ধু র সাথে.. প্রথম বছর মোটামুটি কাজ করেছিলাম.. কিন্তু তাতে ছিঁড়ে ভেজেনি.. শেষ মেশ আমাদের বিয়ে টা আর হয়নি,  ক্রমে বহু বছর  কেটে গেছে.  আমিও নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি ভালো মতো নিজেও বিয়ে করে ছেলে পুলে মানুষ করলাম. তাঁদের কেও ঠিক মতো শিক্ষা  দিয়ে মানুষ করেছি..  আজ দুবছর হলো আমার বড়ো ছেলে বিয়ে করে একটা ছেলে র বাবা হয়েছে র আমার ছোট ছেলে টা সরকারি চাকরি করে ডালহৌসি তে,  আজ বাবা হিসেবে খুব গর্বিত কিন্তু কোনো একটা জায়গায় যেন আজ খুব একা হয়ে গেছি আমি.. আমার ছেলে দুটোর বয়স যখন 12-15 চলছে তখন ই আমার বৌ মারা যায়.. ওদের বড়ো করে তোলা সব কিছুই করেছি আমি একার হাতে.. 
হ্যা এখন একটু মাম্পি র কথা বলি তোমাদের. 
আমার সাথে বিয়ে টা ভেঙে যাওয়ার দু বছরের মধ্যে ও বিয়ে করে একজন সরকারি চাকরি ওয়ালা ছেলে কে.. মাম্পি র বাবা মা এর ও এরাম ইচ্ছে ছিল.. তাঁদের ইচ্ছে তাই পূরণ হয়েছিল  মাম্পি র বিয়ে হলো বেলেঘাটা নিবাসী অরূপ রায় এর সাথে. ছেলে টি ও ডালহৌসি তে চাকরি করতো..  কিন্তু ভাগ্য এর  কি নিদারুন পরিহাস.. আজ মাম্পি র একজন দিদা র ভাগ্য বলে ও আজ নিজের পৃত্তিভূমি তেই নিজের বাড়িতেই থাকে.. বাড়িতে গেলে ওর বর এর ছবি টাঙানো আছে মাম্পি র ছেলে বৌ দুজন এই সরকারি চাকরি করে.. তাই নাতনি কে সারাদিন দেখাশোনা ওই করে.. আজ এই বুড়ো বয়স এ চা এর দোকান এ বসে ছোটবেলা র সেই কথা গুলো মনে পড়ছে  র আমরা দুজন এই মাথায় পাকা চুল র দু একটা দাঁত পরে যাওয়া তোবড়ানো গাল এ হেসে উঠছিলাম ..  হটাৎ আমার মোবাইল ফোন টা বেজে উঠলো,,,,  """" এখন অনেক রাত,  তোমার কাঁধে আমার নিঃস্বাস """"" অনুপম রায় এর এই গান টা আমার খুব প্রিয় ছিল র মাম্পি কে এই গান টা আমি গেয়ে শোনাতাম..  ও আমার মোবাইল এ এই গান টা শুনে আমার দিকে একটু তাকালো.. আমি ফোন এ বলে দিলাম যে হ্যা দাদু ভাই ক্লাস এ  আছে..  আমি নিয়ে আসব ঠিক মতো তুমি চিন্তা করোনা বৌমা.. মাম্পি আমার এই কথা টা শুনে হাসলো আমি কারণ জিজ্ঞাসা করাতে বললো মনে পরে সন্তু ( আমায় ও এই নাম এ ডাকতো ) তুমি আমায় বলেছিলে যে আমায় তোমার কাছে নিয়ে যাবে র তোমার বুক এ মাথা রেখে আমি ঘুমাবো তোমার ভালোবাসায়..  আমি বললাম হ্যা আমার মনে আছে কিন্তু মাম্পি তোমায় আমি এটাও বলেছিলাম যে আমার ভালোবাসা মিথ্যে হওয়ার নয় হয়তো তোমার সাথে বিয়ে হয়নি কিন্তু ভগবানের কি লীলা দেখো আজও আমি আর তুমি পাশাপাশি বসে আছি র নিজেদের দায়িত্ব্য পালন করে যাচ্ছি নিজেদের মতো করে.. 
সত্যি দুনিয়া টা বড়োই অদ্ভুত গো মাম্পি. আজও তোমায় ভালোবাসি,  আজও তোমার হাসি টা আমার কান্না গুলো ভুলিয়ে দেয়..  জানি না আর কিছু.. মাম্পি শুধু আমার হাত এ ওর হাত টা রাখলো.. জীবনে দ্বিতীয়বার তোমার হাত এর ছোঁয়া পেলাম  
বলতে বলতে আমাদের দুজনের চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে এসেছিলো..  কিন্তু হটাৎ ই স্কুল এর ঘন্টা বেজে গেলো..  তখন আমরা দুজন এই দুজনের নাতি নাতনি কে নিয়ে বাড়ীর পথ এ প বাড়ালাম..  কিন্তু মাম্পি বাড়ী যাওয়ার আগে একটা চিঠি আমার হাত এ গুঁজে দিলো.. আমি ইতস্তত করে চিঠি খুলে দেখলাম তাতে লেখা আছে তোর নাতি র সাথে আমার নাতনি র বিয়ে টা ফাইনাল করে রাখিস.. আমি চিঠি টা পরে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি ও অটো তে উঠে গেছে.. আমি একটু ওপরে তাকিয়ে আকাশ এর দিকে তাকালাম.. র নিজের মনে মনেই হাসলাম.. জানি না কপাল এ কি আছে ভবিষ্য্যত এ..  শুধু এইটুকুই বললাম ভালো রেখো ভগবান সবাই কে.. 
নাহলে এই বুড়ো বয়স এ এসে আর কি চাইতে পারি নিজের জন্যে.. যাইহোক নাতি কে নিয়ে বাড়ী এসে ক্লান্তি তে  ঘুমিয়ে পড়েছি কারণ আমার খুব জর ছিল.. 
সবাই কে ধন্যবাদ  জানাই  শুভ রাত্রি।

উৎপল দেবনাথ

ভ্রমর কথা 

তোমার বুকে রঙ মাখি চলো
মাঝরাত বাতাসের সুরে
ভ্রমর আর ফুলের বুকে।
শিহরিত মন ভীত শ্রাবণ 
তৃষ্ণার্ত ব্যাকুল দেহ
গাঢ় অন্ধকারের বুকে দূর্বল স্বপ্ন 
ভোরের শান্ত স্নিগ্ধ শীতল বাতাসে ক্লান্ত।
আমি জানি নে 
এক মুহূর্তে মনটা ভারী।

দিপ্সী দে

অবাক পৃথিবী

ভালো মন্দের জলসাঘরে আমরা বুঝি পুতুল
তাকিয়ে থাকি কোনো একদিন আসবে সে সময়
সকল মন্দ ভুলে আপন করবে আপন।
থামবে ঝড় উঠবে চাঁদ 
প্রয়োজন শুধুমাত্র অবকাশ।
যদি হতে চাও ভালো 
ভুলে যাও সব লেন দেন
যদি তুমি কবি হও
নীরবে লিখে যাও
ভালোমন্দের জলসাঘরে আপন মানে কালো
কবি হয়ে সে আছে ভালো।
পৃথিবী জুড়ে অসুখ সবার
আমি আছি ভালো।
অবাক পৃথিবী সব শূন্য।

পৌলমী সাহা

এ হলুদ বিকেলবেলায়

এ হলুদ বিকেল বেলায় 
ব্যস্ত শহর ক্লান্ত ভীষণ দিনের শেষে!
চোখ বুজে স্বপ্ন দেখে না আর,
 নীল আকাশে চোখ মেলে!
 সময়ের তাড়ণায় বন্দী সবাই,
 যান্ত্রিক চালকে  পরিণত হয়ে!
শব্দ দূষণের মাঝে অনেক কথাই,
 স্তব্ধতায় গুমড়ে মরে!
অনেক ইচ্ছেগুলোকে অনিচ্ছাক্রমে ,
দগ্ধ করে ফেলে!
দিশাহীন ভাবে যেন চলতে থাকে,
এ দিগন্তের বুকে!
নিজেকে হারিয়ে ফেললেও ,
অজানার ভিড়ে! 
তবুও বেঁচে থাকে অসীম লড়াইয়ে!
অগ্রগতির যুগে এটাই বোধহয়,
মোদের বাস্তবতা হয়ে চলে।।

পিযুষ রায়

আগুয়ান 

প্রতিবাদ,তুমি কোথায় ?
কোথায় তোমার ভাষা?
প্রিয়ঙ্কা থেকে মুন্নেসা,
প্রয়োজন যে তোমাকে ।
চারিদিকে শুধুই 
হানাহানি-রাহাজানি,
তবুও তুমি থাকবে নীরব?
ওঠো,জাগো,গর্জে ওঠো।
গর্জে ওঠো কলমের ধারায়,
গর্জে ওঠো সম্প্রতির সুরে ।
দিকে দিকে দেখা দেয়
এ সমজের কঙ্কালসার চেহারা।
তোমার নীরবতায় 
আজ তারা উদ্ভুদ্ধ-উত্তেজিত ।
ওঠো, জাগো
মেলে ধরো তোমার ভাষা 
ওরা জানে না, তোমার ক্ষমতা ।
ভাবে ওরা তাই, তুমি নগণ্য।
তুমি কৃষকের সম্পদ,
তুমি শ্রমজীবী-মেহানতী মানুষের সম্পদ ।
অশুভ, পুঁজিবাদ -সাম্রাজ্যবাদ 
এ দেশের বুক থেকে নিপাত যাক ।

সুজন দেবনাথ

চলো বদলে যাই

চলো বদলে যাই
আমার মতো অলস যারা
যাদের নিয়ে বাপ মায়ের চিন্তার শেষ নেই
চলো বদলে যাই
আমি মানুষ হয়ে জন্মেছি
এই বোধ নিয়ে চলো মানুষ হই
চলো আজ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেই-
সকল অলসতা,
চলো বিপদের পাশে দাঁড়ায়
চলো আমার সুপ্ত আমিকে জাগিয়ে দেই
বাপ মা যেন চিন্তার বদলে গর্ব করে-
তুমি মানুষ, আমি মানুষ।
চলো নতুন পরিচয় নিয়ে বাঁচি
যে পথে ভালোবাসা আছে
যে পথ সত্য
হোক না সে যতই কঠিন
চলো সত্যের পথেই হাঁটি
চলো নতুন ভারত গড়ি। 
জানো আমার যুগে-
স্বার্থপরতার মাত্রা সীমাহীন
হিংসা ঘৃণা অবিশ্বাস গ্রাস করছে ক্রমশ আমার দেশকে
তাই মানুষ হওয়াটা খুব জরুরি
এসো একতার হাত ধরি
চলো হৃদয়ের গান গায়
চলো বদলে যায়
চলো মানুষের মত মানুষ হই। 

সৈকত মজুমদার

অভিপ্রায় 

ভাবনার আকাশে এখন 
কালো মেঘের ভীড়,
নিকোটিনের বিষাক্ত ধোঁয়ায় 
বেঁচে থাকা দায়; তবুও 
সিগারেট হাতে এখনও দেখি 
অন্যায়ের বিরুদ্ধে নচিকেতা গায় !

ধূমপান ছেড়ে দিলে 
কি আসে যায় (? ) হয়তো 
এরই মধ্যে সুখ পাওয়া যায় !
ব্যর্থ প্রেমিক যেমন-
হুইস্কি ঢেলে পায়

দেবব্রত চক্রবর্তী

রাবণ সাঁজো

মাতৃজঠরে জন্ম নিয়ে ধুলোয় পুড়াই নারীর চিতা ,
আগুন জ্বলুক রাম রাজ্যে লঙ্কায় ও সুরক্ষিত সীতা। 
ধর্মের থান গলায় বেঁধে কি লাভ তোর মূর্খ জনতা, 
ধর্ম গুলো অন্ধ রে আজ পুড়ছে দেখ ধর্ষিতা।।

মুক্ত  মনে আবেগ ছাড়ো 
শক্ত হাতে অস্ত্র ধরো 
নিজেকে আজ বাঁচার লড়াই 
নয়তো এবার বিক্রি করো।

সাঁজতে হবে তোমায় নারী 
ঢাকতে হবে বক্ষ খানা 
ছাড়ো তো এসব, অনেক হয়েছে 
হও তো এবার বীরাঙ্গনা।

দেখতো এবার আসবে কে 
বক্ষ চুষে আগুন পোঁড়াতে 
রাবন সাঁজো তোমরাই আজ 
তোমাদের কে বাঁচাতে।।

গোপাল চন্দ্র দাস

হুড়াঘর

পিতামহ ভীষ্ম ছয় মাস শরশয্যায় থেকে ইচ্ছামৃত্যুর পর শবদেহ দাহ করার শোক পালন করার নাম হুড়াঘর বা মেড়ামেড়ীর অথবা বুড়িরঘর। বারো মাস বারো রাশি বারো সংক্রান্তি। নিজ কক্ষপথ থেকে সূর্যের মকর রাশিতে প্রবেশের দিন-ক্ষণকে বাঙালী হিন্দুরা বলেন,মকরসংক্রান্তি।সংক্রান্তি অশুভের শান্তি,কখনো আবার অশান্তিও হয়ে যায়।
এমনি এক মকর সংক্রান্তিতে ঊনকোটি ত্রিপুরার কুমারঘাটে মনু নদীর চরে পবিত্র,সুবোধ,ভূবন,পরিমল,সুমন পনেরো বিশজন যুবক মিলে আমন ধানের ডাটা ও খরখুটো দিয়ে হুড়াঘর বা মেড়ামেড়ীর ঘর তৈরী করে। সাউন্ড বক্সের ধ্রিম ধ্রিম মিউজিক,মাংস ও বিলাতি মদের নেশায় নেচে গেয়ে বুঁদ হয়ে আছে সবাই।গভীর রাতে সবাই চলে যাওয়ার আগে হুড়াঘরের ভিতর খরখুটো দিয়ে ঠেসে দিয়ে যায়। আজ পবিত্র ও ভূবনের তেমন নেশা হয়নি। তারা স্থানীয় রবিদাস পাড়া থেকে দেশী মদ এনে হুড়াঘরে ঢুকে আকণ্ঠ পান করে খরবেত্তা উপরে চড়িয়ে এখানেই চাদড়মুড়ি দিয়ে  শুয়ে পড়ে।
          ভোরে যুবকরা কনকনে শীতে ঠান্ডা জলে স্নান করে আধো অন্ধকারে  হুড়াঘরের প্রবেশ পথে কাঁচা বাঁশের টুকরো কটা দিয়ে খরে আগুন ধরিয়ে দিল। বাঁশ বমের মত যতবার ফুটে ততবার ,সবাই মুখে আঙ্গুল বুলিয়ে আদিবাসিদের মত আনন্দে হর্ষধ্বনী করছে।
কিছুক্ষণ পর সুবোধ বলল,পবিত্র আর ভূবনকে দেখছি না যে? ওদের বাড়ির লোক‌ও ওদের খুঁজছে। নব্ব‌ই বছরের ভূবনের দাদামশাই লাঠিভর দিয়ে এসে নাক উঁচিয়ে গন্ধ শূঁকে বুক চাপড়িয়ে বলছেন,আমার নাকে নব্ব‌ই বছরের গন্ধ জমা করা আছেরে।এ গন্ধ সেই গন্ধ,যে বছর কলেরায় পুরা গ্রাম খালি করেছিল আর নদীর পারে জ্বলছিল কাতারে কাতারে শ্মশান।

প্রীতম শীল

যারা গড়ে ইমারত
           

আজ স্বচক্ষে দেখলাম হাজারো শ্রমিক, 
বহু কষ্টে সিঁড়ি বেয়ে ইমারত গড়ে! 
কিন্তু তাদের কারোই ছাদ নেই,
কলঙ্কহীন মাথার উপরে। 
তবুও দিনের পর দিন তারা কষ্ট করে,
হাড় ভাঙা মটমট শব্দে। 
দিন শেষে সামান্য মজুরী তবুও শ্রমিক, 
সব সয়ে যায় নিঃশব্দে। 
কারণ ঘাম ঝরানো টাকায় নেই গরম,
নেই কোনো অহংকার।
শান্ত মনে শ্রমিক তবুও গড়ে,
সুন্দর ইমারতের বাহার।
দেখেছি আমি ষাটোর্ধ্ব বয়সে, 
ষাট কিলো ওজন তুলতে।
বছর পনেরো ছেলেটা সেও এসেছিল, 
অভাবের জ্বালা ভুলতে।
দেখেছি মা জাতির মেয়েটা শাড়ি না পড়ে,
পুরুষের শার্ট গায়ে জড়িয়েছে।
আসলে টাকা কি সমাজে এতটাই,
প্রয়োজনের গন্ধ ছড়িয়েছে?
আমার তোমার শ্রম যারা কিনছে আজ,
হাটবাজারে অতি সস্তায়। 
হাঁড় ভেঙে একদিন চলে যাবো আমি তুমি,
তাতে কার কি আসে যায়।

প্রণব দাস

চিঠি
        
মা আমি তোমার অভি বলছি
তোমার কথা আজ বড্ড মনে পড়ছে
তাই একখানা চিঠি না লিখে পারলাম না,
তোমরা নিশ্চয়ই খুব ভালো আছো?
হ্যা আমিও ভালো আছি,,
শুধুই যে ভালো বলার জন্যে
বলতে মাগো খুব কষ্ট হয়,
আজ শুধুই তোমার কথা মনে পড়ছে,
সব ঠিকই চলছে কিন্তু ঘুমাতে গেলেই তোমার গল্পের কথা মনে পড়ে;
হ্যা মা তোমার অভি এখন একাই ঘুমাতে জানে 
তোমার ছোট্ট অভি এখন খুব বড় হয়ে গেছে 
তুমি কোনো চিন্তা করো না মা 
তোমার অভি চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ে।।
সাথে কেউ থাকুক কিংবা না থাকুক চোখের অশ্রু ঠিকই থাকে।
তোমাদের ছাড়া সেই অশ্রুই আমার ঘুমের সাথী।। 
তা কে আর দেখবো!?
কেউ তো এসে আর জিগ্গেস করবে না,
অভি ঘুমিয়েছিস কিনা??
তোমার সেই ডাক সেই কন্ঠস্বর ঘুমাতে এলেই কানে বেজে উঠে;
তবুও ঘুমিয়ে পড়ি একা একা।।
মনে পড়ে,
সেই দিনগুলোর কথা 
ছোটবেলায় যখন চোখে ঘুম আসতো না তোমার কন্ঠে সেই ঘুম পাড়ানি মাসি পিসির গানটা
তোমার মনে আছে কিনা জানিনা মা,,
কিন্তু সেই আওয়াজ আজও আমার কানে বেজে উঠে
হ্যা মা হ্যা তোমার অভি খুব বড় হয়ে গেছে একাই কলেজে যায়, 
নিজে বানিয়ে টিফিন খায় কিন্তু তোমার হাতের স্বাদ জিহ্ব থেকে যেন যেতে চায় না,
সময়ে তাগিদে খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি,
পড়াশোনা!!পড়াশোনা!! পড়াশোনা!! 
সামনেই সেমেষ্টার এক্সজাম
অনেক চাপ।
আমি এখন খুব সিরিয়াস 
তা তুমি হয়তো জানবে না!?
ছেলে আগরতলায় পড়ে তুমিও হয়তো গর্ব করো।।
কাছে থেকেও দূরে তুমিও 
কিন্তু অন্তরেতে অনেক কাছে যে তুমি মা,,,
তোমায় ছাড়া সত্যি ঘুম আসে না।
সকালে উঠেই কলেজ টিউশন আর ভালো লাগে না ।।
কিন্তু প্রশ্ন একটাই জাগে 
ভবিষ্যত!!
তুমি একদমই চিন্তা করো না মা,,
তোমার অভি সব পারবে 
দেখে নিও,,,
অনেক কথাই বলার ছিল সব তো আর বলা হয়ে উঠে না,,
তবে তা থাক
অন্য কোনোদিন নাহয় বলবো
হ্যা আরেকটি কথা বলার আছে-
বাবার খেয়াল রেখো,,
পঙ্কজকে বলো ভালো করে পড়াশোনা করতে 
পড়াশোনার যা ডিমান্ড এখন 
শুধুই কম্পিটিশান
অনেক বলে ফেলেছি 
ফোনে বলা সম্ভব হয়নি বলে চিঠি লিখলাম 
তুমি যে আমার জননী 
হ্যা তবে নিজের খেয়াল রেখো
তবেই দেখবে তোমার অভি
খুব ভালো থাকবে খুশি থাকবে 
হাসি মুখে থেকো
হাসি মুখ রেখো
ইতি তোমার অভি।।

গৌরাঙ্গ রক্ষিত

কি চেয়েছি আর কি যে পেলাম

প্রতিটা মুহূর্ত চেয়েছি তুমি ভালো থাকো , 
রোদ , বৃষ্টি কে উপেক্ষা করেই , 
ছুটে গেছি তোমার কাছে । 
পেয়েছি অনেক ভালোবাসা তোমার কাছে , 
হয়তো পারিনি আমি তোমার মতো করে ভালোবাসতে , 
কিন্তু আমি বেসেছি ভালো আমার মতো করেই ।
তোমার মতো, শক্ত ব্যাখ্যা ছিলনা ভালোবাসার
আমার কাছে।
সহজ ভাবে নিজের অনুভূতিতে, মিশিয়েছিলাম তোমায়।
তুমি উপর থেকেই জানলে, আমায় ভালোবেসে।
অনুভবে, আমার ভালোবাসার রঙে মিশে যেতে পারোনি।

সৈকত সরকার

না হলাম রবীন্দ্রনাথ, না হলাম রোদ্দুর। 

না হলাম রবীন্দ্রনাথ                 
না হলাম রোদ্দুর

ভগা জানে কদিন দৌড়াবো,দৌড়াবো আর কদ্দুর ।

না হলাম দুঁদে বুদ্ধিজীবী          
না হলাম শুদ্ধ গান্ডু

আমি উলঙ্গ রাজার সেই শিশুটা নির্ভয়ে ভাঙ্গি ফান্ডু ।

না হলাম ক্লাসের ফাস্ট বয়
না হলাম ব্যাকব্যাঞ্চার পুরো

আমাতে আমি জম্পেশ ভিলেন, আমাতে আমি হিরো।

পূজা মজুমদার

শুধুই আমি


দুনিয়ার ভাগাদরিতে তুমি যখন উলঝিয়ে থাকবে.....

তখন আমায় পাশে ডেকে নিও

যেনো তোমার কাঁধে শুধুই আমি... শুধুই আমি। সময় যখন অপেক্ষার হবে কিছু এমনভাবে অপেক্ষা করবে যেখানে শুধুই আমিই আছি..... যেখানে শুধুই আমিই আছি।

যদি ভিজতে না পারি তোমার সঙ্গে  বাইরের বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে আমায় তোমার মনে মিলিয়ে নিও....  দেখবে আমিও ভিজছি তোমার সাথে।

সময় যখন অপেক্ষার হবে কিছু এমন ভাবে 
তখন পাশে শুধুই আমিই....
তখন পাশে শুধুই আমিই।

যদি আমি ভেঙ্গে  পড়ি সময়ের সাথে লড়তে লড়তে 
কিছুটা এমনভাবে সামলে নিও
যেনো তোমারই ভরসা
শুধুই আমি...শুধুই আমি।

সময় যখন অপেক্ষার হবে 
কিছুটা এভাবে অপেক্ষা করবে

যেখানে শুধু তোমার জন্য
আমিই.... শুধুই আমি।

দুনিয়ার ভেজাল রং-এ যদি আমি বেরং মনে হই তোমায়....  তখন!
ভাববে না আমি নেই,

তোমার রঙিন দুনিয়া.... শুধুই আমি শুধুই আমি।

গোবিন্দ ধর

ত্রিপুরার সাহিত্যে আড্ডা একটি আত্ম সমীক্ষা


ত্রিপুরায় আড্ডার ইতিহাস আছে।গল্পকার প্রয়াত বিমল চৌধুরীর মহাশক্তি ঔষধালয়ের আড্ডাও ছিল স্মরণীয় ৷ আরও অনেক আছে ৷ সাব্রুমের এবিসিডি এবং নুনুর দোকানের আড্ডা অনেককে সমৃদ্ধ করেছে ৷
বিশেষ করে সাহিত্য আড্ডা ।আড্ডা মিলনের মননের উর্বরতা যোগায়।কামান চৌমুহনীর আড্ডা,ত্রিপুরা দর্পনের শারদ আড্ডা হয়ে আড্ডার বিস্তার সারা রাজ্যে।ধর্মনগর থেকে সাব্রুম,মহুরীতট থেকে দেওভ্যালী আড্ডার ছুঁয়ায় জেগেছেন হরিভূষণ পাল থেকে সেলিম মুস্তফা। কৃষ্ণকুসুম পাল থেকে চারুকৃষ কর।সুব্রত দেব থেকে সন্তোষ রায়।পীযুষ রাউত থেকে হরিহর দেবনাথ। কম বেশ আড্ডারু সকল সাহিত্যিকই।আড্ডা মানে প্রাণের জোয়ার।
সাহিত্য আড্ডায় জোনাকির আড্ডা স্মরণযোগ্য।তারপর আগরতলায় নানান গোষ্ঠীর সাহিত্য আড্ডার পাশাপাশি ধলাই প্রবাহের সাহিত্য আড্ডা,রাতাছড়ায় স্রোত সাহিত্য আড্ডা শুরু হয় নয়ের দশকের এক শারদ সন্ধ্যায়।তারপর ২৬শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৫ সাল থেকে সাহিত্য আড্ডা করে আসছে স্রোত। ২০০৩ সালে কুমারঘাট এই পক্ষ সাহিত্য আড্ডা বসে।সে সময়ও দীর্ঘ দিন কুমারঘাটকে জাগিয়ে রাখে এই পক্ষ।
জলজ সাহিত্য আড্ডা দীর্ঘ দিন থেকে ধর্মনগরের সাহিত্যের সলতে পাকিয়ে টিকে আছে জলজ।তা থেকে সাতদিন প্রকাশনা।তাও সফল বই প্রকাশসহ ধর্মনগর লিটল ম্যাগাজিন মেলা,সাহিত্য উৎসব, সাহিত্য পিকনিক করে আড্ডাকে সজীব রাখার মূল কারিঘর সন্তোষ রায় আমাদের নিকট মহীরুহ। 
কৈলাসহরেও অঙ্গীকার সাহিত্য আড্ডা থেকে বেশ কজন কবি সাহিত্যিক উঠে আসেন।সোমবার পত্রিকাকে কেন্দ্র করে কৈলাসহর মোটরস্ট্যান্ডে দীর্ঘ দিন সত্যজিৎ দত্ত, বিশ্বজিৎ দেব, নির্মল দত্ত, মলয় দে,মৃদুল বণিকসহ আড্ডায় আমিও বার দুয়েক উপস্থিত হয়েছি।হয়েছি সাতদিনের আড্ডা,অঙ্গীকারের আড্ডায়ও।সন্দীপন সাংস্কৃতিক সংস্থাও সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করতেন।তাতেও আমার উপস্থিতি কমবেশ ছিলো।
কুমারঘাটের আড্ডায় নীলিমেশ পাল, গোবিন্দ ধর, পদ্মশ্রী মজুমদার, মোয়াজ্জেম আলী, অরূপরতন শর্মাদের উপস্থিতি  আড্ডাকে বেগবান করে।এই পক্ষ বলে একটি পাক্ষিক লিটল ম্যাগাজিনও তার ফসল।
কুমারঘাটে সর্বশেষ সমবেত আড্ডার আয়োজন করে দেও-মনু সাহিত্য মঞ্চ।কাঞ্চনপুরও কম নয়।সেই মন্বন্তর থেকে সত্যেন্দ্র দেবনাথের এই বনভূমি হয়ে আড্ডার হাত বদল হয়ে বর্তমানে রসমালাই,বনতট,দোপাতা"র কাণ্ডারী হারাধন বৈরাগী, অমলকান্তি চন্দ, দিব্যেন্দু নাথদের হাতে এসে পৌঁছে দেও নদীর স্রোতের মতো কলকল প্রবাহিত।
এই রকম এক উর্বরতার সাক্ষী স্রোত।স্রোত ক্রমাগত আড্ডার সলতে প্রজ্জ্বলিত করে কখনো কুমারঘাট তো কখনো রাতাছড়া,কাঞ্চনবাড়ি হয়ে পানিসাগর,কৈলাসহর।স্রোত সাহিত্য আড্ডা থেকেই এক সময়ে স্রোত লিটল ম্যাগাজিন।তারপর কোন এক সময় তা প্রকাশনা।আগামীদিন ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় তিরিশে নভেম্বর :২০১৯ বসবে আমন্ত্রিত সাহিত্যজনদের নিয়ে সীমিত জায়গায় সারস্বত সাহিত্য আড্ডা। দীপক বিশ্বাস বাবুর ভাড়া ঘরে সল্প জায়গা।সুতরাং আমাদের স্বপ্ন থাকলেও এক সাথে সকলের স্বর ও আড্ডার উষ্ণতা আমরা গ্রহণ করতে না পারার দায় নিয়েই এই আয়োজন।আশা করি প্রতিমাসে আমন্ত্রিত এই আড্ডায় আমরা গুণীজনদের সহযোগিতা পেয়ে সাহিত্যের সেবা করতে পারবো।সকলের সহযোগিতা আমাদের এগিয়ে চলার আলোকবর্তিকা হোক কামনা করি।

বিজন বোস

সময়

অনিচ্ছায় ঢুকে গেছি বদ্ধ ঝিনুকে
বেড়ে ওঠা মুক্তোর মতো আয়াসী যাপন ,
নিমেষে গলিত লাভা
গরল বিনাশী অমৃতময় তরল পানীয় ।
রাইফেল থেকে আসছে গোলাপ ,
নষ্ট ফুলের দুষ্ট কীট 
শুভ্রতার প্রতীক হতে 
প্রতিযোগিতায় সামিল .. .
সে তোমার প্রেম স্পর্শ ।
একদিন মনু নদীর তীরে
দেখেছি হিংসার জমকালো রিহার্সাল ,
সংঘ আগ্নেয়াস্ত্র তীব্র মতবাদ
গ্রীবা চেপে ধরেছিল 
তবু বাঁচার দুরন্ত ইচ্ছে জেগেছিল মনে 
যাইনি আত্মহত্যায় ,
শুনেছি দেশমাতার উদাত্ত আহ্বান ,
পরক্ষনেই বুঝেছি কেটে যাবে এই ভয়ার্ত রজনী 
আগত আনন্দ নিখিল জীবনের
গাঢ় আলিঙ্গন সুবাতাস আর অমল নিঃশ্বাস ।

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...