Sunday, June 16, 2019

কবি স্বপন সেনগুপ্ত স্মরণে

মনন স্রোতে আপনাকে স্বাগতম

সম্পাদকীয় প্যানেল

প্রতিটি লেখা প্রাণবন্ত। প্রতিটি কবিতাই এতেকটা দর্শন। এই সংখ্যায় বেশীরভাগ লেখকই নতুন। আমরা চেষ্টা করেছিলাম এই সংখ্যায় একেবারে নতুন লেখকদের লেখা নিয়ে হাজির হবো। তবে সেই অসাধ্যকে সাধন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। এই একটা কাজে আমরা ব্যর্থ হয়েছি এই সংখ্যায়। তবে ব্যর্থ হয়েই জিতেছি। নৈতিকতাকে টিকিয়ে রাখতে হেরে গেলে, সে হার বাস্তবে জেতার সমান। এই ব্যর্থতা আসলে জেতার আনন্দ দেয়। আমি মন খুলে এভাবেই সবকথা মন খুলে বলে ফেলি। আপনাদের কাছে লুকানোর মতো মননস্রোতের তেমন কিছু নেই। মনন স্রোত আপনাদেরই। আমাদের ডাকে যাঁরা সাড়া দিয়েছেন এবং নিজেদের লেখায় মনন স্নোতকে সমৃদ্ধ করেছেন, সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

সবাই খুব ভালো থাকুন। জয় হিন্দ।

                  শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা সহ
                        জয় দেবনাথ
                   ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
                          মনন স্রোত

ছবিতে : মনন স্রোতের মডেল শিল্পী সুমন। ক্যামেরায় : দ্বীপজ্যোতি

অমিত রুদ্র পাল

চলন

অনুভূতিগুলো খেলা করে
ইচ্ছের ছাউনি ঘরে
বৃষ্টি হলে চোখ মাখিয়ে
মিটমিট স্বরে ঝরে ।

আলতো ভিজে ঠোঁট রাঙিয়ে
ঘুমের নেশা ভরে
একটু পরে মেঘের রথে
দিগন্তের পথ ধরে ।

পাহাড় ঠুকে তারাই আবার
চুইয়ে শুষ্কে পড়ে
নীল নামটি গন্ধে রেখে
মাটির পিঠে চড়ে ।

সাদা মাটি, কালো মাটি
ক্লেদাক্ত পুষা দ্বন্দ্ব
নগ্ন হয়ে রূপ চুবিয়ে
চলন করে বন্ধ ।

রুপন মজুমদার

প্রতিবাদ হোক সম্রাটের মতো

ঘৃনার স্তব্ধ নগরীর সম্রাট
মৌন মিছিলে চাইছে মুক্তি।
হাতে বিষের শিশি সম্বল।
এ যেন মৃত্যুর সম্মিলন।
লালসায় ঘ্রাস এক জীবন্ত লাস।
উদ্বিগ্ন রবে নীরব হৃদয়ে
বাজাইয়ে বাঁচে যুক্তির রাগিনী।
বয়ে চলে যার বুকে কলকল স্বরে।
স্বরূপে রক্তিম রক্তধারা গড়িয়ে
বীর তুমি আজো সম্রাট।
অজেয় বিজয়ী তুমি।
তুমি খুঁদেছো ইতিহাস।
প্রতি প্রহর ঝরেছে রক্ত
যীশুর মত তোমার নিথর দেহে ।
অন্ধকার সরণি করবে পার
এইতো জাতির বিশ্বাস।
প্রতিবাদী হয়ে বাঁচবে সম্রাট
তুমি বাঁচবে সবার হৃদয়ে। 

Thursday, June 13, 2019

ড. রঞ্জিত দে

পিলাকের পথে
         

ভরা নদী ঢেউ খেলে -এপার ওপার ;
ভরা নৌকা ধীরে চলে -মাঝি গান গায়।
দূরে বন -ছায়া মেখে চেয়ে থাকে-
তীরে তীরে কৃষান- কামিন ফসল তোলে
দূরে কোন গাছে- কোলাহল উঠে-
সন্ধ্যার প্রদীপ জ্বেলে উলুধ্বনি দেয় ।
কোলাহল উঠে কোনো পল্লীর উৎসবে।
পাহাড়ের বুক চিরে আঁধার মাড়িয়ে,
রেলগাড়ি ছুটে যায় কু ঝিক-ঝিক রবে,
গর্জি থেকে বিশাশগড় কিংবা জিরানীয়া।
মনু থেকে ফেনী, কিংবা গোমতী।
রুদিজলার বিশাল হৃদয় জুড়ে,
বার বার স্বপ্ন গড়ে স্বপ্ন ভাঙ্গে।
চুল খোলা শকুন্তলা - মৃগ শিশু নিয়ে ,
খেলা করে তপোবনে- নদীতীরে।
মালিনীর কাছে গিয়ে মিনতি করে,
নাকি সুখ দুখ করে বিনিময়।
পিলাকের পথে পথে খুঁজে ফিরি-
দুরন্ত রাজকুমার অন্ধ পিঠে!
স্বপ্ন ভেঙে যায় - রেল অবরোধে ,
যাত্রীর লুল্লুড় - চিৎকার চেঁচামেচি।
লক্ষ্মীছাপ তিলটি , হারিয়ে গেছে, উত্তরে হাওয়ায়।

হারাধন বৈরাগী

কৃষ্ণগহ্বরে

পড়ন্ত রোদে আসামআগরতলা লাইফলাইন নবীনছড়ার বুকে ডোরাকাটা অজগরের মতো  শুয়ে আছে।পাশে গ্রামসেবককেন্দ্রের কোয়ার্টারের বারান্দায় একটা চেয়ারে পাঁচের মতো বসে আছে গৌতম।বিএলডাব্লিউ সে। মোবাইলে একটি কন্ঠ বেজে উঠেছে, -- - - সব পাকা করে রেখেছি। আগামীকালই  আমাকে - - অন্যতায় মহিলাকমিশন--।গৌতমের ত্রিভুবনে সুনামী উঠেছে।সে এখন কাকে কী বলবে? স্ত্রী স্বেতা ও আত্মজ কৌস্তুবের মুখোমুখি কি করে দাড়াবে? আত্মহনন ছাড়া তার সামনে আর কোন পথ খোলা নেই।জয়পরাজয় নয়, মাথার ভেতর গুমড়ে ওঠছে কালনিশিডাক।


 হাতের মোবাইলটা ঢিল মারে জাতীয় সড়কে। আগরতলা থেকে গৌহাটিগামী  যমদুতগুলো তার বিগড়ে যাওয়া মগজে গনধোলাই দিতে দিতে ছুটে চলেছে কামরূপের দিকে। স্বেতা,কৌস্তব-ওরা যেন এই মুহূর্তে মঙ্গলের অধিবাসী।ইচ্ছে করলেও তাদের কাছে যাওয়া যাবে না।আঙুলের ডগা থেকে একটা তীব্র যন্ত্রণা মাথা অবধি - হুল ফুটাচ্ছে।


স্বেতার সাথে বিয়ের পর ফিরাযাত্রায় দেখা হয়েছিল তার  তুতোশালিকা এনার্জির সাথে।প্রথম দর্শনেই এনার্জি গৌতমকে খুব কাছে টেনে নিয়েছিলো়।রাতে সে গৌতমের সাথে শুতে গিয়ে স্বেতাকে বলেছিলো-দিদি ওখানে শুলে জামাইবাবু ডিসটার্ব করবে নাতো? স্বেতাও রহস্যময়ীর মতো বলেছিলো-একদিন না হয় ডিসটার্ব করেই ফেললো! আর কোন কথা বাড়ায়নি এনার্জি ।শুয়েই লেপের নীচে গৌতমকে জড়িয়ে ধরেছিলো।একটি পা তুলে দিয়েছিল তার প্রোস্টেটের উপর।রাতে এনার্জিকে ডিসটার্ব নয়, এনার্জির ডিসটার্বেই সারারাত ঘুমোতে পারেনি সে। তারপর দেও জুড়ি লঙ্গাই বেয়ে অনেকজল গড়িয়ে গেছে।


 নারীনেত্রী এনার্জির সাথে ঘটনাচক্রে ফের দেখা - দামছড়াতে।আর বাইকে চেপে দশরথদেব সেতু পেরিয়ে - - কানমুনের উদোমপ্রকৃতির কোলে। ।এনার্জির এনলার্জবাহু  উপেক্ষা করতে পারেনি গৌতম।তার মাঝে এমন একটা আদিম উচ্ছাস আছে যা স্বেতার মাঝে নেই।শরীরি বিভঙ্গে - - যেন আগুনের গোলা।সোনামী উঠে আসলো জঙ্গলের গভীরে।পুরোটা সময় তার মাথার ফুসেওঠা চুলগুলি টেনেহিঁচড়ে দিতে লাগল গৌতম!আর এনার্জির গলা থেকে উঠতে লাগলো শনিপুজোর কাসির আওয়াজ-তোমাকে ছাড়া আর একমুহুর্তও বাঁচতে পারবো না ---একটা বিহিত কর সোনা--একটা বিহিত - - !


 মাসছয় কেটে গেছে। এনার্জির ডাকে আর সাড়া দিতে সাহস করেনি গৌতম।অনেক কল এসেছে।কোন না কোন ছুতো‌য়  এড়িয়ে গেছে।বুঝেছে, আর দেখা করা ঠিক হবে না। স্বেতা বোন হলেও এনার্জি তাকে সহ্য করতে পারে না।স্বেতার প্রসঙ্গ তুললেই বলে,-আমাদের মাঝে কোন তৃতীয়উপস্থিতি আমার পছন্দ নয়, কথাটা--মনে থাকে যেন!           


 আজ রোববার।বাড়ি যাবার কথা।গৌতম কি বাড়ি যাবে? নিজেকে এই মুহূর্তে প্রেতাত্মা ছাড়া কিছুই মনে হচ্ছে না।তার শরীরটা হালকা হয়ে কাঁপতে কাঁপতে বাতাসে উড়ছে।কোথাও ভর মিলছে না।যেন গাড়ি চলছে।হেডলাইটের তীর্যকআলো একটার পর একটা অন্ধকারপর্দা ভেদ করে ঢুকে যাচ্ছে ভেতরে ।মাথাটা ভীষণ ভারী। দমবন্ধ হয়ে আসছে।পৃথিবী থেকে মেঘ উবে যাচ্ছে।বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। আশমানজমিন খাঁ খাঁ করছে। তার অন্তিমযাত্রা যেন মহাকাশের কোন কৃষ্ণগহ্বরের দিকে।যেখানে গেলে আর কিছু থাকবে না,স্থানকাল আবৃত হয়ে হারিয়ে যাবে।


চোখের সামনে ফুটে উঠেছে একটি অপুর্ব কদমবৃক্ষ।তার মতোই দুখি।তাকে নেশার মতো ডাকছে- আয় বুকে আয়,দুজনে গলাগলি করি।সে বলছে - এত উঁচুতে কী করে তোমার গলায় আসি প্রিয়।-হাতের দড়িটা গলায় বেঁধে উপরের দিকে ছুড়ে দে।আর আমি এক লহমায় তোকে - - - জড়িয়ে নেবো।


 সহসা তার সম্ভিত ফিরে আসে। একটি পাতাগোখড়ো তাকে পেছিয়ে কানের কাছে হিস হিস করে বলছে,-আত্মহনন নয়, আত্মনিবেদন ছাড়া তোর কাছে আর কোন পথ খোলা নেই।তুই এখুনি বাড়ি ফিরে যা। একমাত্র শ্বেতাই পারবে এই চরমসন্ধিক্ষণে - মহাকাশের কৃষ্ণগহ্বরপথ থেকে-- তুলে এনে নীলগ্রহের ধূলিতে বৃষ্টির আঘ্রাণ জাগাতে।

শতরূপা ভট্টাচার্য

পূজাচর্না

শব্দটির ব্যবহার রোজই আমাদের জীবনে ঘটে,, ব্যক্তিগত ভেদাভেদ থাকে। কিন্তু সকলের জীবনে ব্যবহার হয়। শব্দটি হল পূজা। স্বাভাবিকভাবে পূজা শব্দটি ঈশ্বরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্কযুক্ত। আমরা ঈশ্বরের নিকট ভক্তি নিয়ে রোজই পূজা করি। ঈশ্বরের পূজার্চনা করি। ঈশ্বরকে স্বরন করি। একএক জনের সেই পূজার্চনার পদ্ধতিটা ভিন্ন থাকে। মন্দিরের পূজারী মন্দিরে ভক্তদের নিয়ে পূজার্চনায় ব্যস্ত থাকে। দোকানদারেরা নিজের দোকান এর উন্নতির জন্য পূজার্চনা করেন। বাড়ির গৃহিনীরা বাড়ির মানুষের সুস্থতা, উন্নতি, ইত্যাদির জন্য পূজার্চনা করেন।। 


সবাই ভালো কিছু পাওয়ার আশা নিয়ে পূজার্চনা করেন। কিন্তু এই পূজার্চনা কি আমাদের জীবনের সেই সব আশা পূরণ করে ? যেই পরমাত্মা ঈশ্বরের নিকট আমাদের এই অর্চনা চলতে থাকে সেই ঈশ্বর কি আমাদের সব আশা পূরণ করে  দেন? নাদেননা। যখন পূজার্চনার হীতে বিপরীত হয়, তখন আমরা এই পূজার্চনাকে ব্যার্থ মানি। তখন আমরা কেনই বা ভুলে যাই, যেই সুখ দুঃখের বেড়াজালে ঈশ্বর স্বয়ং আবদ্ধ হয়েছেন। সেই বেড়াজাল থেকে আমরা সাধারণ মানুষ কীভাবে বেঁচে যাব? 

পাপ পূণ্য নিয়েই তো সংগ্রাম আমাদের। লড়াই ছাড়া গতি নেই আমাদের। যার লড়াইয়ে নিষ্ঠা থাকবে সেই এই লড়াইয়ে সামান্য হলেও সফল হবে। তাই সেই পূজার্চনা হোক আত্ম শক্তি বাড়ানোর। সংগ্রাম করার শক্তির আহ্বান সেই পরমাত্মার কাছে।

                                                 

দীনদয়াল রবি দাস

তুমি ফিরবে


তুমি ফিরবে বলে, অতন্দ্র প্রহরী জ্যোৎস্না রাতে-

অপলক ছলিত নয়ন খুঁজে তোমাই,

নীল দরিয়ার প্রান্তে ।

অভিধানহীন পতনের মত্ত ক্ষণিক আশা,

বহুদিন পর পেলাম চরম দহনে-

গিরিন্ত্র শেখরে হৃদয় তমায় ভেসে আসে ,

উদ্বেগ মেঘের দল - 

ভূলোক থেকে দ্যূলোক খুঁজি জীবনের সীমান্তে ।।

নিস্তদ্ধতার নিবিড় সন্নিধ্যর মধ্য দিয়ে- 

অদম্য ইচ্ছে গুলি মত্ত রাতের উল্মুক্ত বুকে

স্বপ্ন ছবি আঁকে-

চাঁদের অদম্য আলোর অপূর্ণ আকুতির,

বুকফাটা আর্তনাদ শোনতে পাই -

কাঁন্নার আবাহে।

ভেসে যাওয়া স্মৃতি অবাঞ্চিত মনে

ফিরে আসে উদাস গহনে-

লোহিত রব আঁকা ছিল রঙিন নয়নকোনে,

রোদন হয়ে ঝরে পরে অপূর্ণ দোহে ।।

সময়ে আভাস তম ক্ষণিক প্রণয়

অভিমানী মেঘের গর্জনে  ফিরিয়ে

দেয় দূর্বাগত স্বপ্নগুলি-

অবাক চকিত নয়নে দেখি সিক্ত ভাবনার নিষ্ঠুরতা।

মেঘ বিলাসী প্রেয়সী রাত

হাসির হিল্লোল রাঙায় চোরা সুরের জ্যোৎস্না প্রহরে -

বাতায়নে মাঝে আকাশ থেকে

ভেঙে পরে বিষাদ তম 

 ভ্রান্ত নিষ্ঠুরতা ।

Wednesday, June 12, 2019

প্রীতম শীল

অনুগল্পঃ হাড় কিপটের এক টাকা লোকসান।

নগেন বাবু পাড়ার হাড় কিপটে নামে পরিচিত। পাড়ার ছোট হতে বড় সবাই ওনাকে 'কিপটে বুড়ো' বলেই ডাকে। আর এই কিপটে বুড়োর বাড়িতেই একখানি প্রকান্ড লিচু গাছ ছিল,যখন লিচু ধরতো তখন থেকেই বুড়ো গাছটিকে আগলে রাখতেন, ও সাধ্য মতো পাহাড়া দিতো। এবং বুড়ো শরীর নিয়েও কিছু সময় গাছে চড়ে পাহাড়া দিতো বলেই, পাড়ার ছেলে ছোকরার দল ওনাকে লিচু চোরও বলে ক্ষেপাতো।বুড়ো রেগে গিয়ে তোতলানো ভাবে ছেলেদের গালি দিতো-হা- হা- রাম জাদা, বা-দর, ইতর। আর ছেলেরাও কিপটে বুড়ো কিপটে বুড়ো বলেই দৌড় দিতো। জৈষ্ঠের শেষের দিকে তো বুড়ো ভাত ও খেতেন লিচু গাছ তলায়। পাছে ছেলেরা টপা টপ করে দু- একটা থোকা নিয়ে পালায়।ইচ্ছে থাকলেও বুড়ো নিজে গাছ থেকে পেড়ে একটা লিচুও খেতেন না। গাছ তলায় ঝরে পড়লে কুঁড়িয়ে দু এক খানা মুখে দিতেন। এই কিপটে বুড়োই একদিন হাটে যাচ্ছিল, পাড়ার ছেলেরা ইচ্ছে করেই ওনাকে ক্ষেপানোর জন্য ঘিরে ধরে বলতে লাগলো, ও কিপটে দাদু ও কিপটে দাদু আজকে বাজার থেকে মাংস আনো না।  আমরা সবাই মিলে তোমার বাড়ি খাবো।বুড়ো সবার মুখের দিকে একবার করে তাকিয়ে বলতে লাগলো, আমায় কি পাগলা কুত্তা কামড়েছে, তোদের মতো দামড়াদের নিয়ে আমার বাড়িতে গান্ডে পিন্ডে গিলাই। আর শরীরে বল করে আমারেই পিছনে লাগো।ছাড় ছাড় পথ ছাড় বেলা বয়ে যাচ্ছে,,, আমাকে তাড়াতাড়ি হাটে যেতে হবে। ছোকরারা একে অপরে বলতে লাগলো আর বেশি ক্ষেপাসনে, হিতে বিপরীত হবে।ছোকরারা পথ ছেড়ে দিয়ে একটু দুরে গিয়ে আবার বলতে লাগলো, কিপটে বুড়ো ও কিপটে বুড়ো। হাটের দেড়ি হচ্ছে বলে, বুড়ো আর কিছু বললোনা ছোকরাদের।প্রায় তিন মাইল পথ অতিক্রম করে বুড়ো হাটে পৌঁছোল।অথচ অহরহ গাড়ি   চলছে পথে। হাটে পৌঁছে বুড়ো একটি বিশ্রামাগারে বসে রইলো ঘন্টা দুয়েক, পাছে শেষ বাজারে জিনিস পত্রের দাম কিছুটা কমে। দু'ঘন্টা অপেক্ষা শেষে বুড়ো সাতাশ টাকার বাজার সারলেন। বাড়ি থেকে নিয়ে আসা ত্রিশ টাকার থেকে তিন টাকাতো অবশিষ্ট রইলো। একটি দুটাকার নোট ও একটি এক টাকার আধুলি সযত্নে রেখে বুক পকেটে, বুড়ো আবারো পায়ে হেঁটেই রওনা দিল বাড়ির উদ্দেশ্যে।আড়াই মাইল পথ অতিক্রম করে বাড়ির কাছাকাছি আসতেই বুড়োর তিন টাকার কথা মনে করেই পকেটে হাত দিতেই বুড়োর মাথায় হাত। এক টাকার আধুলিটা নেই। চিকন ঘামে বুড়ো ঘেমে যাচ্ছে। অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে বুড়োর মনে। এদিকে অন্ধকারও হয়ে এসেছে,, পিছন ফিরে খুঁজতে গেলেও মাইল আড়াই। এসব প্রশ্ন মনে মনে ভাবতেই বুড়ো ভাবলো খুঁজতে গেলে তোর আলোর দরকার। সামনে আধ মাইল পথ অতিক্রম করলেই তো আমার বাড়ি। যেমন ভাবা তেমন কাজ, বাড়ি থেকে লন্ঠন এনে আবার শুরু করলো খুঁজ। আড়াই মাইল পথ খুঁজেও পাওয়া গেলনা। পরে বাজার টা একটু খুঁজবে বলে তিন বার পদক্ষিন করলো। কিন্তু আধুলি আর পাওয়া গেলনা। এখন বুড়ো ক্লান্ত শরীরে আর জোশ নেই। রাতও অনেক হয়ে গেছে। হাটেও লোক জন নেই।  ধপাস করে হাটের এক কোনায় বসে,মন না মানতে চাইলেও একপ্রকার মনকে জোড় করে মানিয়ে, মাথায় হাত দিয়ে বলতে লাগলো- " হায়রে আমার এক টাকা লোকসান"।

অনুপম রায়

প্রণাম

মাথার উপর ছাদ।
তার উপরে বোধহয় নেরোলেক পেইন্ট লাগানো।


কতকগুলি বাতাস লম্বা দন্ডের উপর।
ওরা যেন নর্তকী!
প্রত্যেক নর্তকীর পাশে একটা করে সূর্য। 
কিছু সূর্য তাজা আর কিছু সূর্য ফুস!
মানে বেঁহুশ।


সামনের জ্ঞানী পায়রা রবিকে বুকে নিয়ে কতগুলি বসন্ত পার করে দিল।
তাদের বসন্ত যাপন,আজ আমাদের শোনাবে।
শোনাবে তোতাকাহিনী,নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ....


মঞ্চে রবির তেজে বাতি জ্বলেছে,
বাতির আলোতে পুরো পৃথিবী আলোকিত! 
সেই আলো গ্রোগাসে খেয়ে নিল অনুপম।


আবার,সেই আলোর কথা 
কেউ শোনবে,কেউ বুঝবে।
তবে,সবাই হাততালি দেবে!


সবেতে রবি সঙ্গী ছিল।
১৫৮ নং সিঁড়িতে উঠেও রবি আজও সঙ্গ দেয়।
প্রণাম রবি, তোমায় প্রণাম।

সজীব পাল

দীর্ঘ প্রতিক্ষায়

তোমার জন্যই বেঁচে থাকা,

ভালোবাসি মানবজনম ।
তোমার জন্যই এগিয়ে যাওয়া 
আপন করে মরণ।


তুমি ছিলে না, তুমি ছিলে 
অনুভূতি আর কবিতায়,
স্বপ্নকে সমীহ করে
বসে আছি দীর্ঘ প্রতীক্ষায় ।
বিষাদিত জীবন পথ এত মলিন,
তবু ভেবেছি সুন্দর মনোহর ।
যদি বলতে দেখা দেবো
কাটিয়ে দিতাম আরো সহস্র বছর ।
সমুদ্র সৈকতে যদি চন্দ্র নামে,
যদি চন্দ্র জ্যোতি তোমার না পরে গায়,
তবে বিষন্ন ঢেউয়ে ভেসে যাবো
তোমার প্রতীক্ষায় প্রতীক্ষায়  ।


ড. রঞ্জিত দে

পিলাকের পথে
               

ভরা নদী ঢেউ খেলে -এপার ওপার ;
ভরা নৌকা ধীরে চলে -মাঝি গান গায়।
দূরে বন -ছায়া মেখে চেয়ে থাকে-
তীরে তীরে কৃষান- কামিন ফসল তোলে
দূরে কোন গাছে- কোলাহল উঠে-
সন্ধ্যার প্রদীপ জ্বেলে উলুধ্বনি দেয় ।
কোলাহল উঠে কোনো পল্লীর উৎসবে।
পাহাড়ের বুক চিরে আঁধার মাড়িয়ে,
রেলগাড়ি ছুটে যায় কু ঝিক-ঝিক রবে,
গর্জি থেকে বিশাশগড় কিংবা জিরানীয়া।
মনু থেকে ফেনী, কিংবা গোমতী।
রুদিজলার বিশাল হৃদয় জুড়ে,
বার বার স্বপ্ন গড়ে স্বপ্ন ভাঙ্গে।
চুল খোলা শকুন্তলা - মৃগ শিশু নিয়ে ,
খেলা করে তপোবনে- নদীতীরে।
মালিনীর কাছে গিয়ে মিনতি করে,
নাকি সুখ দুখ করে বিনিময়।
পিলাকের পথে পথে খুঁজে ফিরি-
দুরন্ত রাজকুমার অন্ধ পিঠে!
স্বপ্ন ভেঙে যায় - রেল অবরোধে ,
যাত্রীর লুল্লুড় - চিৎকার চেঁচামেচি।
লক্ষ্মীছাপ তিলটি , হারিয়ে গেছে, উত্তরে হাওয়ায়!

কৃষ্ণধন নাথ

নাইবা পেলাম

নাইবা পেলেম ফুলের তোড়া
নাইবা দিলে মালা
নাইবা দিলে চাঁদের আলো
নাইবা মইলেম জ্বালা।

পথ খানিকে বাড়িয়ে দিয়ে
মাঠ দিলে এক মুঠো
পাখীর মতো ঘর বানালে
পুড়িয়ে খড় কুটো।

নাইবা পেলেম উত্তরীয়
নাইবা দিলে খেতাব
নাইবা দিলে অঙ্গুরীয়
নাইবা দিলে কেতাব।

মোমের বাতি জ্বালিয়ে দিয়ে ঘর
পুকুরটাকে ডুবিয়ে জলে
বানিয়ে দিলে সাগর
চোখের জলে জমিয়ে নিলে
ফুল হয়ে যায় পাখর।

Monday, June 10, 2019

সৈকত সরকার

দেখা না দেখা


আমি দেখেছি 
আমার মনের মৃত্যু 
একটু একটু করে,


আমি দেখেছি
তোমার চলে যাওয়া
অন্যের হাতধরে ।


আমি দেখেছি
কত নোনাজল বয়
চোখের রাস্তা হয়ে,


আমি দেখেছি
খরস্রোতে সুখ
গেছে সব ধুয়ে।


আমি দেখেছি
সিগারেটে
পুড়েছে শত আশ,


আমি দেখিনি
তোমার চোখে 
আমার সর্বনাশ।।

দিপ্সী দে

তৃষ্ণার্ত পথিক 
  
    
এক পাগলছেলে পাগল নাকি -তুমি!
এত কান্না কেন শুনি?
সারাদিন এই নিষ্ঠুর শহরে বলে- বেড়াও,
নিষ্ঠুর পথিক এক আমি।
এত তৃষ্ণার্ত কেন তুমি?
একি অনেকদিনের পুরাতন-
তৃষ্ণা?
তোমার সাথে কথা বললে নাকি -
ডুবে যায় চোরাবালির দেশে।
গেছিল বুঝি কেউ ডুবে?
ডুবে, সেই চোরাবালির দেশে?
তো বেশ আমি  চোরাবালিতেই- ভাসি। 
    হারিয়ে যায় যদি 
তলিয়ে যায় যদি
খুঁজবে কেমন করে?
তখন তুমি মাতাল দেশেরবাসী। 
বালিকা আমি মাতাল-
দেশেরবাসী।
পাগল পথচারী তৃষ্ণার্ত এক-
পথিক।


       


সুব্রত দেববর্মা

ফার্স্ট ডিভিশন

বাবা আমি পেতে পারিনি ফার্স্ট ডিভিশন,

সাতন্ন দশমিক দুইশতাংশেই হার মানলো তোমার শাসন।

না বাবা বিশ্বাস করো ফাঁকি আমি দেইনি,

টিউশন শেষে জিশানদের সাথে আড্ডায় অংশ আমি নেইনি।

বাবা তুমি বলেছিলে ফার্স্ট ডিভিশন না পেলে

মুখ না দেখাতে।

বাবা আমাকে যদি একবার হেরে গেলেও হাসি মুখে বরণ করা শেখাতে।

মা আমি পারিনি নাহ তোমাকে খুশি করতে ?

পারিনি আমি তোমাদের স্বপ্নকে ধরতে ।

আমাকে শহরে টিউশন পরাতে তোমাদের খুব কষ্ট হতো,

স্কুলের ফিস,মাস্টারদের মাইনে,হাত খরচ আরও কতো।

একদিন বর্ষায়  রেনকোট না থাকায় আমার কি কান্নাকাটি তখন।

তুমি বলেছিলে আজ ছাতা নিয়ে যা, সামনের বছর নাহয় কিনে দেবখন।

তারপর যখন বাবাকে অফিস থেকে ভিজে শরীরে অটো থেকে নামতে দেখেছি তখন স্কুলে পালিয়ে বেঁচেছিলাম।

আজ বুঝতে পারছি পালিয়ে যেতে আমি পারিনি তখন।

মধ্যবিত্ত সেন্টিমেন্ট মনে মনে পুষে রেখেছিলাম,

আজ মনে পড়ছে আমাকে নিয়ে তোমাদের দেখা সেসব রঙিন স্বপন।

কিন্তু আমি যে শুধুই সবুজ ভালোবাসি মা, 

তোমরা সেদিকে কোনদিন তাকালেই না।

তাই সেই সবুজ রেলের ধারেই যাচ্ছি

কাটা অঙ্ক থেকে কাটা শরীর কি ভালো মা ???


সুমন দেবনাথ

আমি কেন দামি

হে অপূর্ব মহীয়সী !

তোমার ভালোবাসায় আজ আমি দিশেহারা ...

যদি পারো দিও একটু ভালোবাসা

নয়তো করোনা আমায় সবকিছু হারা।

তোমার যৌবন আজ নতুন বলে,

ভুলোনা আমার যৌবনের স্মৃতি ...

একদা আমার বুকের মাঝে ঘুমিয়ে ছিলে তুমি ।

আজ সবকিছুই কি বিস্তৃতি ?

তুমি যৌবনের উচছাসে 

আমার যৌবনকে করেছিলে নামী ...

তোমার যৌবনের সহানুভূতিতেই আমি

পৃথিবীতে আজ এতোটা দামি ।


অভ্রজিৎ দেবনাথ

ভালোবাসার নিকোটিন

সেই অন্তহীন প্রেম এখন ইতিহাসে সমর্পিত তাই হাতে হাত ধরে দিগন্তের দুয়েক প্রান্ত চলার আগেই মানসিক এক্সিডেন্টে ট্রেন্ডিং স্টাইল না জানা ছেলেটা বড়ো বেকায়দায় পড়ে শপিং মল থেকে বেরিয়ে দুই নম্বরি সড়ক বরাবর ছুটতে ছুটতে সন্ধ্যা বেলায় ভাঙ্গা ব্রিজের উপর দাড়িয়ে ভূত- ভবিষ্যতের কল্পনা জল্পনা ছুঁড়ে ফেলার ধান্দায় সামান্য নিকোটিনের তলব করছিল এবং কার্যকরী আত্মনিয়ন্ত্রক জিন পরিস্থিতি বেসামালের বুঝে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থায় সংযোগ স্থাপনের লাগাতর চেষ্টা করেও অসমর্থ হওয়ায় নিরাশায় চক্রব্যুহে কাতর অভিমন্যুর সাইকোলোজি বোঝার চেষ্টা চালিয়ে দুর্গম পথে এতদিন চালবাজি মেরে উতরে যাওয়ার কেচ্ছাকাহিনী রিমাইন্ড মারতে থাকে আর তখন কমবখত কোনো গোপন শক্তির আকর্ষণে দুই নম্বরি সড়কের দিকে নেত্রপাত করায় প্রত্যাশী রহস্যময় বা রহস্যময়ী কিছু দেখতে পাওয়ায় প্রতিদিন রহস্যের সন্ধানে বিকেলে বাবুমশাই ভাঙ্গা ব্রিজে এসে দাঁড়ায়।


সোমেন চক্রবর্তী

বোধিবৃক্ষ 
               

সারাদিন ঝরে যাওয়া  ঘামের কাছে 
নত হওয়াই আমার আগামী ভোরের পুঁজি 

সেই ঘামের পুঁজি নিয়ে 
একটা বিশাল মরুভূমি পার করে যে দীঘির পাড়ে এসেছি
সে মনে করিয়ে দেয় আরও আরও ভোরের কথা 

সেই দীঘিটির কাছেও আমি কৃতজ্ঞ
তার স্থির জলে নিজের অস্থির প্রতিবিম্ব দেখি,
গভীরতায় ডুবে গিয়ে বিসর্জন দিই উপার্জিত গ্রীষ্ম   

তার চুলেই নিরঞ্জনা নদীর স্রোত 
বুকে আছে উষ্ণ চরাচরের ছায়া 

তার কুঁজো জলে ঠোঁট ভেজা পাখি আমি
আর কোন মরুভূমিতে নির্বাণ খুঁজি বলো

সুব্রত সূত্রধর

বর্ণিত আবেগ


মেয়েটি ভালোবেসেছি তারে
যদিও অসুস্থ ছিল সমাজ ।
টুকটুকে গালে হাত দিয়ে ,
ছেলেটিও প্রেম জমাতো -
নির্বাক চলচ্চিত্রের কোণে ।
শুধু এই আধুনিক সমাজ 
মেয়েটির শালিনতা প্রেম বুঝেনি । 
ধনাঢ্য হয়ে ভালোবাসাও 
খেলা করতে পিছপা হয়নি  । 
অবশেষে , জানা গেল 
মেয়েটির ভালোবাসা -
রক্ত মাংস জড়িয়ে নেই 
ছিল আধুনিক যুগের এক টুকরো
ব্যাটারি চালিত রোবট । 
নিজেদের আধিপত্য বিস্তার 
আজ নিছকই একটি দূর্ঘটনা । 
রঙিন ফানুস আজ 
প্রেম হয়ে উড়তে পারেনি ।
প্রেম আজ যেন বিজ্ঞানের 
আশীর্বাদ স্বরূপ অভিশাপ । 


উৎপল দেবনাথ

মরা মনের কবর


মরা মনের কবরে

নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।

স্বপ্নের ঢেউ জমবে

বেলা শেষে বিপন্ন আঁধারে।

ছিন্ন সেতার 

আজ নিজের সুরে অভিমান।

চোখের নুনা জলের স্বাদটা আর নেই

মরুভূমি পথে শুকিয়ে গেছে।

কবরের পাশে দূর্বাঘাসেরাও আজ কথা বলে না,

তারাও যেন মরা মন নিয়ে বসে আছে।

মরা মন তাকি আর রজনীগন্ধার গন্ধ পায়?

নিকষ কালো হয়ে গেছে এই মনের রঙ।

তপ্ত রোদে ডোমরাও মরা পোড়তে বিরক্তি পায়

তারাও যে কোনো না কোনো ভাবে

স্বার্থে বা নিঃস্বার্থে মরা মন নিয়ে বসে আছে।

কত প্রেমিক পাখি আসে যায়

এই মরা মনের কবরে

দুটু ঠোঁট ভেঙ্গে পাখির স্বরে

কত প্রেমের আলাপন 

কত বৌ-পাখির কত অভিমান।

এই কবর তো শুধু যেন কবর নয়

কত প্রেম কত ভালোবাসা স্বাক্ষী।

তবুও  এই মরা মনের কবরে

কেউ একটি ফুলও দিতে এলো না।

পরিতোষ সরকার

এক পলা বৃষ্টি

মুক্ত ধারায় চলছিল আমার নিজস্ব মরুভূমি,/
সামান্য বৃষ্টিরও কোনো চাহিদা ছিল না।
নীল আকাশে কালো কালো মেঘের
মিলনে, তুমি এসেছিলে-
উত্তপ্ত বালিকণা শীতলায়নে।
ভিজেছি আপ্লুত মন নিয়ে তোমার মোহনায়,
কিন্তু সিক্ত হয়নি আজও এই মন।
পক্ষান্তরে চলেছ অহংকারি মন নিয়ে,
সহস্র আবেগ হত্যা করে-
তুমি, এক পশলা বৃষ্টি হয়ে।

মুকিম মাহমুদ মুকিত

একটি সুনয়না 


অদ্ভুত চোখে তোর দিকে তাকিয়ে

আমি রঙিন এঁকেছি স্বপ্ন, 
চোখ দুখানি যতবার দেখেছি
রোজ হয়েছি তোর প্রেমে মগ্ন। 
নির্ঝর হাসি, চুল রাশি রাশি
তুলে দেয় প্রেম ঢেউ
ভুলে থাকা দায়, চোখ ফিরে যায়
ইশারায় ডাকে কেউ। 
মনে সংশয়, যদি ভুল হয়
হতে পারে সব শেষ,
রইলে এমন ভালো কি হবে ! 
না, লাগছে না তো বেশ। 
সুনয়না ওরে, ভালোবাসি তোরে
ফিরায়ে দিস না আজ,
বুকে ব্যথা বাড়ে মনের ঘরে
রোজ বাজছে প্রেমের বাজ। 

সামিন শুভ

উন্মাদ-যৌবন


বৃষ্টি ভিজে চাঁদনি রাত ভিজে ভিজে ছাদ

যৌবন ছোয়াতে আজ মন উন্মাদ,

চাই প্রেয়সী তোমায় ভূল বোঝনা আমায়

ভাসবো দু'জন মিলে প্রেম যমুনায়।

ঝিরঝির মুক্ত ঝড়ে খোলা চুলে পিঠের পরে

উলঙ্গ পা মেঝে শরির'টায় শিরশির ধরে,

কুয়াশার ধোয়া ঠোঁটে নোনা স্বাধের ছোয়া

আঙ্গুলগুলো খেলে যায় আবিস্কারের জোয়া।

চোখে তোমার লজ্জা মনে জমে ভয়

বাহিরের সাথে ঝড় ভীতর'টায়ও বয়,

হাতে হাত চেপে,  পায়ে পা চেপে

বুকে বুক চেপে শরির'টাকে যায় মেপে।

শুধু ভালোবাসি ভালোবাসি কানের কোনে মৃদু হাসি

সারা দেহে প্রিয়া তোমার লাঙ্গল চালায় নিষ্ঠুর চাষি,

গমগম সেই ভালোবাসি বুঝলেনা তার মিছরি হাসি

ভুলিয়ে বালিয়ে  প্রিয় তোমার

দেহ'কে আজ করলো বাসি ||


উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...