Saturday, February 26, 2022

স্বাগতম!

সম্পাদকীয়

জগৎ মায়াময়। মায়া ভিন্ন ঠিকে থাকা দায়। তবুও একদিন নির্মম কারণে সবকিছু ত্যাগ করতে হয়। হারাতে হয়। এটি এক শাশ্বত নিয়ম। যাঁরা চলে গেছেন খালি করে তাঁদের অন্তিম অভিবাদন। একযোগে চলে আপনাদের চলে যাওয়া আমাদের ক্ষতি হলো অপূরণীয়। সংগীত জগতেরও। আমাদের এই সংখ্যাটি আপনাদের স্মৃতিতে উৎসর্গ করা হলো। 

সংখ্যাটিকে যাঁরা লিখেছেন সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা। অনেকে লেখা পাঠিয়েছেন, যান্ত্রিক ত্রুটি ও ভুলভাবে মেইল করার জন্য আমরা লেখাগুলো নিতে পারিনি। এ আমাদের দূর্ভাগ্য। পরের সংখ্যা থেকে ঠিক হবে এসব, আশা করছি। সবাইকে ধন্যবাদ। নমস্কার!


শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা-সহ
জয় দেবনাথ
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
মনন স্রোত, ত্রিপুরা

আমাদের শ্রদ্ধা!

Wednesday, February 23, 2022

সহিদুল ইসলাম

মুক্তি চাই

ঘন পল্লবে আবৃত এক বৃক্ষ ছায়ায়, হল মোর আশ্রয়,
মৃদু কালো তার স্নিগ্ধ ছায়া, ছড়ানো বিশাল ক্ষেত্রময়।
শির তোলে, উপর তাকালে, পাতা আর পাতা আহাহা হা,
শাখাপ্রশাখা, যায় না দেখা, রোদ্র নামার ক্ষমতা কাহা?
হটাৎ হটাৎ কখনো কোনো ঝর তুফান ছাড়া,
ভেঙে পড়ে তার ডাল পালা মোর দেহের উপর খাঁড়া। 
পাতার ঝোপে যে জীর্ণ শাখা লুকানো কেইবা জানে?
আমি জানি শুধু আটকিয়ে তার শেকড়ের বন্ধনে।
কবে হতে দাঁতে কামড়িয়ে চলি শেকড় কাটার আশায়,
মুক্তি চাই  এই আশ্রয় হতে, আত্মাও আমার মুক্তি চায়।

দিপিকা রায়

ভুলে যেয়ো না

বয়স শেষে আবার এই আইসক্রিমের
ভাগটা কিন্তু আমার হবে।
হয়তো এখন ৪০ টাকাটা
তখন ১০ টাকা হবে।

দিন শেষে সূর্যাস্ত কিন্তু
আমার বুকে মাথা রেখেই দেখবে।
চায়ের চুমুকের কাপটা তখনও
আমার ঠোঁটে স্পর্শ করবে।
গল্প করা রাতগুলো কিন্তু,
আমি তোমার কোলে 
মাথা রেখেই কাটাবো।

চাইনিজ খাবার গুলো তো
তখন আর সহ্য হবে না।
না হয় তখন রাস্তার মোরে
১০ টাকার চানাচুরটাই
আমাদের প্রেমের এক শিহরণ
হবে।

প্রেম দিবসে দামি উপহারে
হয়তো তখন সাজাতে পারবো না।
কিন্তু আকাশ ভর্তি ওই
 তারাগুলোর মাঝে,
তোমার কপালে দেওয়া চুম্বনটা
উপহার হিসাবে গ্ৰহন করবে।

পঞ্চব্যঞ্জন দিয়ে তখন হয়তো
তোমার থালাটা সাজিয়ে দিতে
নাও পারবো।
কিন্তু ডাল , ভাতেই আমাদের সুখটা 
যেন পঞ্চব্যঞ্জন এর থেকেও 
অধিক হয়।

এখনের মতো রাতে ক্যান্ডল লাইট
ডিনার টা তখন হয়তো আর হবে না।
কিন্তু এক ছাউনির ঘরে,
মোমবাতির মাঝেই তখন
তোমার হাতে খাওয়া টা ,
আমাদের ক্যান্ডল লাইট ডিনার হবে।
মনে রেখো কিন্তু।

একসাথে কাটানো  প্রতিটা মুহূর্ত
ব‌ৃদ্ধ বয়সেও তোমার সঙ্গী হতে চায়।
কাটাতে চাই আমাদের ভালোবাসার প্রতিটা সেকেন্ড।
মনে রেখো সবগুলো কথা ,
ভুলে যেয়ো না কিন্তু।

শর্মিষ্ঠা ঘোষ

নাক্ষত্রিক

তোমার কাছে যত জীবনঋণ—
বলেছিলে, বৃথা এই আঁচড় কামড় বাস
ছলনার ধূ ধূ হাহাকার 
 ক্যানভাসে জলদাগ
গোপনীয়ত্বে পলাশ তিলের যত নটঘট।
দাবীত্যাগে প্রাপ্তি সারি সারি 
ছেড়ে যায় পুরনো পথ 
পুরনো লেখাজোকা, নদীর 
আবছাপ্রায় মাত্রাদাগ।
এখন চৈতন্য ঠাস 
ধ্যানের নির্জনতার কানায় কানায় 
মেঘমুক্ত নাক্ষত্রিক পরবাস।

দেবব্রত চক্রবর্তী

একুশে বাংলা

একুশে রক্ত স্নাত বদ্ধ-ভুমি
বাংলা আমার মাতৃভাষা
অধিকারে লড়তে জানি।

বাংলায় পড়তে জানি
বাংলায় লিখতে জানি
বাংলা রক্ত দিয়ে-
ব্যারিকেড ভাঙতে জানি।

ভয় নেই আর আমাদের
'রফিক, শফিউর, জব্বর-
সালাম, বরকত' নামের
বীর সন্তান বাংলা মায়ের।

বাংলা গর্ব মোদের
অধিকার ও অংকারে,
হে বীর শ্রদ্ধা জানাই
বাংলার শহীদ মিনারে।

উর্মি সাহা

আমার মাটি

আমার মাটির বর্ণে আছে বেদের সুর
আমার মাটিতে আছে কালামের নাম।
বিজ্ঞান যুগের বিষ্ণু ভক্তি
আমার দেশ ধর্মপ্রাণ।

আমার মাটির রূপে আছে সুভাষের ডাক
আমার মাটিতেই রবীন্দ্র জ্ঞান।
নদীর কোল শস্য শ্যামল 
আমার দেশ ঐক্যতান।

আমার মাটির গর্ভে আছে শহীদের দেহ
আমার মাটিতেই বাংলার গান।
স্বাধীনতার সুখে সুখ মিলিয়ে 
এই দেশের দশের আহ্বান।

আমার মাটির গন্ধে আছে রক্তের স্বাদ
আমার মাটিতেই ভাষার প্রাণ।
আমার দেশের অস্ত্র উল্লাসে
একুশে ফেব্রুয়ারী-র জয়গান।

পায়েল সাহা

মায়ের মহিমা

মা মানে প্রচুর ভালোবাসা।
মায়ের কাছেই অসংখ্য আবদার, আশা।
মা মানেই প্রকৃত ভালোবাসা।
মা মানেই মনে স্বপ্ন জাগানোর আশা।
মায়ের কাছ থেকেই শিখি অমৃত ভাষা।
যা সারা জীবন বলে বেড়ায়, তা আমাদের মাতৃভাষা।
মায়ের ভাষার নাইকো তুলনা।
মাতৃভাষা যেন মাতৃদুগ্ধ,
চিরকাল করে রাখে আমাদের মুগ্ধ।
একা হাতে মা, চারিদিক সামলায় বেশ।
মায়ের মহিমার নাইতো শেষ।

পান্থ দাস

ভাষা হল

কতইনা রয়েছে
অজানা ভাষা
এই পৃথিবীতে,
কতইনা রয়েছে
না জানা শিল্প
এই পৃথিবীতে,
                তবে বাংলার মত
                এই অলংকার
                আর নেই যে
                দ্বিতীয়
                এই গ্রহেতে ৷

আসলে যে ভাষা হল
রঙ আর তুলি,
যাই যে আঁকি
শুধু যে তাই শিখি ৷

গৌতম মজুমদার


আহ্বান

ভোর হয়েছে,উঠনা এবার
চলনা সবাই মাঠে যাই,
চাষ দিয়ে আজ লাল মাটিতে
নিজের হাতে ফসল ফলাই ।

এইতো সময়, সময় মতো
চলনা সবাই লাঙল জুড়ি,
ঘাম ঝরিয়ে রক্ত মেখে
রৌদ্র তাপে দেহ পুড়ি ।

এই ফসলটা না ফলালে
সময় যে আর নেইকো হাতে,
ঠুকলে মাথা,করলে আক্ষেপ 
লাভ হবেনা অশ্রুপাতে।

এইতো সময়,সঠিক সময়
চলনা সবাই হাল ধরি,
বীজ বুনিয়ে ফিরবো ঘরে
ক্লান্ত দেহে ভর করি।

দেখবি যেদিন সোনার মাঠে
সোনার ফসল উঠবে দুলে,
আজকের দিনের এই ক্লান্তিটা
দেখবি সেদিন যাবি ভুলে।

তাইতো বলি, না ঘুমিয়ে
চলনা মাঠে করি চাষ,
সোনার ফসল ঘরে তুলেই
থাকবো সুখে বারো মাস।

মৌসুমী গোয়ালা

সহজাত ভাষা

বাংলা আমার সহজাত ভাষা,
মায়ের বুলিতে শেখা।
অ-আ-ক-খ এর সহজ পাঠে,
পাঠশালায় পড়া লেখা।

বুৎপত্তি তার শতক আগে,
লিপিবদ্ধ আছে চর্যাপদে।
ইন্দো- ইয়োরোপীয় ভাষা বংশের,
প্রান্তিক ভাষা সভাষদে।

ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তপসিলে,
আঠারোটি ভাষার অন্যতম।
বিশ্ব জুড়ে খ্যাতির নিরিখে,
শ্রেষ্ঠ ভাষীর সর্বসম।

সাহিত্য জগত হয়েছে সমৃদ্ধ,
পদ্য-ছড়া, গল্প উপন্যাসে।
আত্ম মননে সহর্ষ, সন্তোষ্টি,
বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে।
                  

রাহুল শীল

বহুবর্ষজীবি     
              
আকাশের কোনো পা নেই দেখো
অথচ আমাদের আছে,
ওজন কমাতে পারি কিন্তু আকাশ পারে না।

সাংসারিক নদীর মতো মানুষ এপার ওপার করি
অথচ মাপতে পারিনি মেঘের ওজন!
ধনুকের মত বাঁকা চোখে এঁকে গেছি ছোট ছোট ঘর,
ঘর সাজাতে তুমি এনে দিয়েছো পারিবারিক মানচিত্র।

কখনো তাঁরা হয়ে আলো দেখায় পূর্বপুরুষ,
কখনো আগুন ধরিয়ে তাপ ছড়ায় কেউ কেউ,
এই তাপে উষ্ণ হয় আমাদের মধ্যরাতের ইতিহাস!

বহুবর্ষজীবী দেবদারু গাছের মতো পাশে থেকে 
 যে বৈচিত্র্য তুমি ঘুমের ঘোরে মিশিয়ে দাও রোজ,
সবুজ ঘাসের গায়ে ছড়িয়ে দাও তুহিন কণা,
একথা জেনে গেছি আমি।

মোহাজির হুসেইন চৌধুরী

প্রতিবিম্বের আশকারা
     
রোজ রাতে একটা প্রতিবিম্ব
গোপন প্রেমের আবদার জানায়     
ছুঁতে গেলে সটাং সরে দাঁড়ায়
মুখে তার কামুক অবলম্ব। 

প্রতিবিম্বের বুক জুড়ে আমার হাসি কান্না স্বপ্ন
নিরন্তর ভেসে বেড়ায়
স্বপ্নঘোরে  বুক জুড়ায়
জেগে ওঠে সারাদিন তাকে নিয়ে মগ্ন। 

জানি কোন দিন দেবেনা সে ধরা
তবু হাত চলে যায় তাকে ধরতে
বুকের মাঝে আপন করে নিতে 
দু চোখের জলে ভাসে প্রতিবিম্বের আশকারা।          
 

মিঠুন দেবনাথ

মানুষের বেশে অমানুষ

পৃথিবীর শ্রষ্ঠ জীব মানুষ।
ভগবান তাদের দিয়েছে,
বিশেষ জ্ঞান আর হূষ।
ঈশ্বর ও আজ খুব চিন্তিত,
মানুষের এমন অমানুষিক কাজে 
খুবই ব‍্যাথিত।

দেখতে শুনতে যেন এরাও মানুষ।
কাজে কর্মে পরিচয় দেয়,
আসলে তারা যে অমানুষ।
মানুষত্বের ধর্ম ভূলে এরা,
হিংসায় মত্ত‍!
ধর্মের নামে করে চলে মারামারি 
খুনাখুনা,
আর.....
সর্বদা মনে থাকে ক্ষমতা লাভের আসক্ত!

ধর্মকে করিয়া আশ্রয়, 
অমানুষরা করে কত অসামাজিক কাজ।
ধর্মের পোশাক পরে ওরা, 
লুকিয়ে রাখে ওরা অধর্মের রাজ।

বেশভূষা চলাফেরা কথা বলা,
 মানুষের মত হলে ও এরা,
আসলে মানুষ তো নয়।
মনুষ্যত্ব আর মানবিকতা ই যে,
আসল মানুষের পরিচয় হয়।।  

 মানুষ হয়ে জন্মেছি মানুষের ই ঘরে,
করব মানুষের জন্য কাজ।
মরন ও যেন হয় মানুষেরই তরে।

মানব ধর্মই শ্রষ্ঠ ধর্ম,
ভূলিলে চলিবেনা ভাই।
অমানুষিকতার পশুকে বিসর্জন করে,
মানুষের সুখ দঃখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে

সজীব কুমার পাল

অবহেলা


এক
পাথরের মূর্তিকে দিয়েছি প্রেম
ভেবেছিলাম সেও একদিন পদ্ম হবে, 
অথচ প্রেম পেয়ে সে হয়েছে আরও পাষাণ! 

দুই 
তুই আমাকে দেখ মেয়ে আমার চোখে চেয়ে
এই চোখে তুই ছাড়া নেই তো কোনো মেয়ে! 
একলা যখন থাকবি ভীষণ আমার আড়ালে
তখন আরও জড়িয়ে যাবি আমার মায়া জালে। 

তিন
তোমার ভেতরে প্রবেশ করেছি গোপনে
দেখতে চেয়েছি আমার স্থান কতটুকু। 
ক্লান্ত শ্রমজীবীর  মতো এসেছি হেরে
সেখানে পুষেছ অজস্র  পুরুষ । 

লিটন শব্দকর

পাঁচিল


একটি ভোরে কাক ডাকেনি 
শামুক ভাঙাও হয়নি 
ওরা রোদ না পেয়ে 
ফিরে গেছে।

নারকীয় চোরাস্রোত বেয়ে ওঠে
ঘুম ভাঙা যাপনের পাঁচিল পর্যন্ত

আচ্ছন্ন করার মতো 
শাক ও মাছ
বরফের কুচি জমাট 
জানালার কাচ
ঘাম শুষে শুষে 
শুকনো হয়ে আছে

চেরাই চলছে 
বিবস্ত্র তারে মেলে দেওয়া রোদ

অনেক বাড়ি গুটিয়ে নিয়েছে ডহর
সহনশীলতার পরীক্ষা দেওয়ার পর।

আলমগীর কবীর

একুশে ফেব্রুয়ারি

 একুশ মানে মাতৃভাষা, বাংলাভাষার প্রাণ
একুশ মানে ভাষা আন্দোলন, বাংলার জয়গান। 

একুশ মানে মোদের ভাষা, শহীদ ভাইদের স্মরণ 
একুশ মানে শহীদ বিদ্রোহীদের, হয়না কভু মরণ।

একুশ মানে রক্তে রাঙ্গা, তাজা জবা ফুল 
একুশ মানে রক্তনদীর , নেইকো যাহার কূল। 

একুশ মানে বীর শহীদদের,  শ্রদ্ধা জানাই শত
তাদের জন্য চলবে কলম লিখবো অবিরত। 

একুশ তারিখ ভুলবনা ভাই, শহীদের বলিদান।
শহীদ সকল অমর রহে, জয় হোক মাতৃভাষার   মান।

দীপাঞ্জয় দেবরায়

যাচ্ছি কোথায়

আজ আমরা যাচ্ছি কোথায়, বিবেকের মাথা খেয়ে,
যতই খুঁজি সুখের স্বর্গ, বিপদই আসে ধেয়ে।
বিনোদন নামে বেলাল্লাপনা, ছেড়েছি নীতির হাল,
আঁধার পথে দিচ্ছি ঠেলে, অগ্রবতী কাল।
আধুনিকতার নামে করছি লালন, যত অপসংস্কৃতি,
মিথ্যে মায়ার মিথ্যে মোহে, পিষ্ট আদর্শ নীতি।
নেট নিষিদ্ধ ওয়েবসাইট গুলু বাড়ছে দিন দিন,
তার কুফল যুবক যুবতী চরম চরিত্রহীন।
ডিস কালচার উপহার দিচ্ছে অসভ্য এক জাতি,
পরক্রিয়ার মহামারী ধ্বংসের কাল রাতি।
এ অভিশাপ থেকে, পায়না রেহাই, সদ্য নব জাতক,
শত হত্যা-গুম-কলহের, পিতা-মাতাই ঘাতক।
এ ভাবে আর চলবে কত, কত দিন আর বাকি,
শুদ্ধ হওয়ার আগেই যদি, নিভে যায় এই আঁখি।।

অতনু রায় চৌধুরী

অভ্যাস

অভ্যাস বদলে যায়,
বদলে যায় নিত্যদিনের আসা যাওয়া।
অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে কেউ
তবুও বদলে যাওয়ার কারন বুঝে না।
মিশে যায় সব স্রোতের সাথে,
এই শহরের বুকে একা একা হাঁটা।
সন্ধ্যা নামে নিয়ম করেই,
শুধু নিয়ম করে হয় না বাড়ি ফেরা।
হয় না পোশাকের পরিবর্তন,
ছেঁড়া শার্ট আর সেফটিপিনে জড়িয়ে থাকে জীবন।

সুস্মিতা নুনিয়া

সাহসী মন    

দুঃখ যখন আঁকড়ে ধরে
ছিন্ন করে বুকের পাঁজর, 
এই মনই বলে রাখ রে তবু সাহস।

কার কাছে বলবো মনের কথা       
শুনে করবে তাই নিয়ে তামাশা। 
                                                                চারিদিকে যখন গভীর অন্ধকার                           পথ নেই খোলা একটিও,          
এই মনই বলে রাস্তা পাবি তুইও। 

নিজের কথা বলে যায় সবাই                                  যখন সুযোগ আসে অন্যের,     
হয় না সময় তখন আর। 
এই পৃথিবীতে সবাই ব্যস্ত   
নিজেদের  জীবন নিয়ে               
নেই কেউ পাশে বসার,                    
নেই সান্ত্বনা দেওয়ার মানুষ। 
জানো তবে মন কি বলে?           
মন বলে, আমিই তোর বন্ধু,            
আমিই তোর সব                       
আমি থাকতে দুঃখ তবে কেন আর!  

তাই মনকেই করলাম বন্ধু   
হলাম আমি একান্তই নিজের,  
বাইরের কোনো বন্ধু নেই কো   দরকার আর।

অনুপম রায়

একটি দীর্ঘশ্বাস

চঞ্চলতা ছেড়ে তিনটে রাত আমি নীরবে ভেবেছি শুধু। ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, কুকুরের চিৎকার, আগুনের ধোঁয়া আমায় দেশভাগের কথা মনে করিয়ে দেয় বারংবার। প্রচন্ড মনখারাপির রাতে অন্ধকারকে জড়িয়ে ধরে না দেখেও কেঁদে গেছি, শুধুমাত্র শান্তির জন্য । আমার মনে হয় প্রেমিক মানুষের মনখারাপির একমাত্র ঔষধ কান্না। কান্নার কোনো বিকল্প নাই। আমার প্রস্তাবে মনের জন্য কেঁদে ফেলাই উত্তম।

আমার এত কান্না, তবুও আমার প্রেমিকা আমায় বুঝবে না;আমি জানি। আমার প্রেমিকা কবে যে কঠোর ছিল ভুলে গেছি। আজকাল তিনি ভীষণ ক্ষেপে গেছেন। ক্ষেপে যাবেন না কেন? এই সময় অবশ্যই ক্ষেপে যাওয়ার। বাতাসে শান্তি নেই, শ্বাসে রাজনীতি নেই, জলে জীবন নেই, মাটির বুকে পায়ের পদচিহ্ন ছাড়া কিচ্ছু নেই। এসব চিন্তায় আমার ঘুম নেই, স্বভাবতই প্রেমিকার জন্য সময় নেই।

আপাতত এখন শীতকাল। বাইরে ঘরে চারিদিকে ঠান্ডা। ঠান্ডার দিনে কাশি আমায় পছন্দ করে। আমি তবুও ঠান্ডা জল খাই। বাবা প্রতিদিন বলেন গরমজল করে খা। আমি শুধু মাথাটা নিয়েই হ্যাঁ বলি । বাবার কথা শুনলাম কই! আমার মনে হয় আমি একটা অবাধ্য ছেলে। অবাধ্যতার কথা আমার প্রেমিকাও জানে। তবুও এতদিন আমি তাকে এত কঠোর হয়ে যেতে দেখিনি।আমার বুকের ভেতর পাথর থাকলেও কঠোরতা নেই। আমার প্রেমিকার বুকে আপাতত কঠোরতা আছে। সম্ভবত আমায় সে আর ভালোবাসবে না।

প্রিয় কবিতা,
আমায় তুমি ক্ষমা করে দিও। আমি তোমার জন্য কিচ্ছু লিখে যেতে পারলাম না।

রঞ্জিত দে

আশ্রয়
               
এখন ফাগুন মাস
পলাশের বনে আগুনের ফুলকি,
বসন্ত বাতাসে হিমেশ ছোঁয়া নেই।
পাহাড়ি উপত্যকায় রাবার বাগান
সবুজ অরন্য,ঝর্নার জল খলখল হাসে,
কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে লাল আধারের খেলা
ভ্রমর গান গেয়ে চলে
আমের বনে অফুরান পুষ্প মুঞ্জরী 
গাছে গাছে পাখী ডাকে
নির্জন দুপুরে ঝিঁ ঝিঁ পোকার গান।
রাতের আঁধারে জোনাকি আলো,
পথ চলার সাথী,
আকাশে তারারা উঁকি মেরে দেখে,
বনের হরিণ শাবক ঘুমে কাতর।
আকাশে ঘোমটে আলোয়
পেঁচা উড়ে চলে
মুষিকেয়া ভীত হয়ে আশ্রয় খোঁজে,
শুধু মানুষ অসহায় যেন আশ্রয়হীন।

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...