Saturday, December 28, 2019

গোবিন্দ ধর

ত্রিপুরার সাহিত্যে আড্ডা একটি আত্ম সমীক্ষা


ত্রিপুরায় আড্ডার ইতিহাস আছে।গল্পকার প্রয়াত বিমল চৌধুরীর মহাশক্তি ঔষধালয়ের আড্ডাও ছিল স্মরণীয় ৷ আরও অনেক আছে ৷ সাব্রুমের এবিসিডি এবং নুনুর দোকানের আড্ডা অনেককে সমৃদ্ধ করেছে ৷
বিশেষ করে সাহিত্য আড্ডা ।আড্ডা মিলনের মননের উর্বরতা যোগায়।কামান চৌমুহনীর আড্ডা,ত্রিপুরা দর্পনের শারদ আড্ডা হয়ে আড্ডার বিস্তার সারা রাজ্যে।ধর্মনগর থেকে সাব্রুম,মহুরীতট থেকে দেওভ্যালী আড্ডার ছুঁয়ায় জেগেছেন হরিভূষণ পাল থেকে সেলিম মুস্তফা। কৃষ্ণকুসুম পাল থেকে চারুকৃষ কর।সুব্রত দেব থেকে সন্তোষ রায়।পীযুষ রাউত থেকে হরিহর দেবনাথ। কম বেশ আড্ডারু সকল সাহিত্যিকই।আড্ডা মানে প্রাণের জোয়ার।
সাহিত্য আড্ডায় জোনাকির আড্ডা স্মরণযোগ্য।তারপর আগরতলায় নানান গোষ্ঠীর সাহিত্য আড্ডার পাশাপাশি ধলাই প্রবাহের সাহিত্য আড্ডা,রাতাছড়ায় স্রোত সাহিত্য আড্ডা শুরু হয় নয়ের দশকের এক শারদ সন্ধ্যায়।তারপর ২৬শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৫ সাল থেকে সাহিত্য আড্ডা করে আসছে স্রোত। ২০০৩ সালে কুমারঘাট এই পক্ষ সাহিত্য আড্ডা বসে।সে সময়ও দীর্ঘ দিন কুমারঘাটকে জাগিয়ে রাখে এই পক্ষ।
জলজ সাহিত্য আড্ডা দীর্ঘ দিন থেকে ধর্মনগরের সাহিত্যের সলতে পাকিয়ে টিকে আছে জলজ।তা থেকে সাতদিন প্রকাশনা।তাও সফল বই প্রকাশসহ ধর্মনগর লিটল ম্যাগাজিন মেলা,সাহিত্য উৎসব, সাহিত্য পিকনিক করে আড্ডাকে সজীব রাখার মূল কারিঘর সন্তোষ রায় আমাদের নিকট মহীরুহ। 
কৈলাসহরেও অঙ্গীকার সাহিত্য আড্ডা থেকে বেশ কজন কবি সাহিত্যিক উঠে আসেন।সোমবার পত্রিকাকে কেন্দ্র করে কৈলাসহর মোটরস্ট্যান্ডে দীর্ঘ দিন সত্যজিৎ দত্ত, বিশ্বজিৎ দেব, নির্মল দত্ত, মলয় দে,মৃদুল বণিকসহ আড্ডায় আমিও বার দুয়েক উপস্থিত হয়েছি।হয়েছি সাতদিনের আড্ডা,অঙ্গীকারের আড্ডায়ও।সন্দীপন সাংস্কৃতিক সংস্থাও সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করতেন।তাতেও আমার উপস্থিতি কমবেশ ছিলো।
কুমারঘাটের আড্ডায় নীলিমেশ পাল, গোবিন্দ ধর, পদ্মশ্রী মজুমদার, মোয়াজ্জেম আলী, অরূপরতন শর্মাদের উপস্থিতি  আড্ডাকে বেগবান করে।এই পক্ষ বলে একটি পাক্ষিক লিটল ম্যাগাজিনও তার ফসল।
কুমারঘাটে সর্বশেষ সমবেত আড্ডার আয়োজন করে দেও-মনু সাহিত্য মঞ্চ।কাঞ্চনপুরও কম নয়।সেই মন্বন্তর থেকে সত্যেন্দ্র দেবনাথের এই বনভূমি হয়ে আড্ডার হাত বদল হয়ে বর্তমানে রসমালাই,বনতট,দোপাতা"র কাণ্ডারী হারাধন বৈরাগী, অমলকান্তি চন্দ, দিব্যেন্দু নাথদের হাতে এসে পৌঁছে দেও নদীর স্রোতের মতো কলকল প্রবাহিত।
এই রকম এক উর্বরতার সাক্ষী স্রোত।স্রোত ক্রমাগত আড্ডার সলতে প্রজ্জ্বলিত করে কখনো কুমারঘাট তো কখনো রাতাছড়া,কাঞ্চনবাড়ি হয়ে পানিসাগর,কৈলাসহর।স্রোত সাহিত্য আড্ডা থেকেই এক সময়ে স্রোত লিটল ম্যাগাজিন।তারপর কোন এক সময় তা প্রকাশনা।আগামীদিন ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় তিরিশে নভেম্বর :২০১৯ বসবে আমন্ত্রিত সাহিত্যজনদের নিয়ে সীমিত জায়গায় সারস্বত সাহিত্য আড্ডা। দীপক বিশ্বাস বাবুর ভাড়া ঘরে সল্প জায়গা।সুতরাং আমাদের স্বপ্ন থাকলেও এক সাথে সকলের স্বর ও আড্ডার উষ্ণতা আমরা গ্রহণ করতে না পারার দায় নিয়েই এই আয়োজন।আশা করি প্রতিমাসে আমন্ত্রিত এই আড্ডায় আমরা গুণীজনদের সহযোগিতা পেয়ে সাহিত্যের সেবা করতে পারবো।সকলের সহযোগিতা আমাদের এগিয়ে চলার আলোকবর্তিকা হোক কামনা করি।

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...