লাকড়ি কাটা শব্দটা
সেই সময়ে জ্বালানি গ্যাসের কথা ,
ভাবায় যায় না।
শহরে পিসির বাড়িতে প্রথম দেখলাম,
গ্যাসের চুল্লি ।
কেমন যেন সুইচের সাথে কথা বলতো আগুন।
মাকে দেখেছি অনেকবার , বাঁশের চুঙ্গা দিয়ে ফু করে,
চুলাতে আগুন জ্বালাতে,
আগুন তো জ্বলতো না,ধোঁয়াতে জ্বালাতো মায়ের দুচোখ ।
বাবা,কাটারৌদে বাগান টিলায় লাকড়ি কাটতে যেতেন,
কোন সময়ে সঙ্গী হতাম আমি আর ভাই।
বাড়িতে এনে লাকড়ি চিঁড়ার সময়ে,
প্রতিটা কুঠারাঘাতে বাবার মুখ থেকে শব্দ হতো,
" হু - হু-হু-হু"
অপেক্ষা করতাম,লাকড়ির ছোট ছোট টুকরো গুলি ,
মায়ের কাছে নিয়ে যেতে।
বাবার মতো শব্দ করে ,ধপাস করে মায়ের সামনে ফেলে দিতাম -" হু,হু, মা ,দাততি আনছি" বাবার অনুকরন,
মা হয়তো হাসতেন, বা কিছু ভাবতেন।
এদিকে ঘামে বাবার পোশাক ভিজে যেতো,
আমাদের পোষনের জন্য,
যেন স্নান সেড়ে এলেন ।
এখন পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে বাবার সেই শব্দটা
আমার মুখ দিয়ে বের হয়,
বাবার সেই শব্দটা খুব কানে বাজে,মিল খুঁজে পাই,
আমার শব্দের সাথে।
বাবার মতো সেই ঘাম বের হতে দিইনা,
পোশাক ভেজার ভয়ে।
কিন্তু লাকড়ি কাটা শব্দটা গানের মতো কানে বাজে ।
পরিচিতিঃ-
-----------------
কবি অমিত সরকারের জন্ম দক্ষিণ ত্রিপুরার পাইখলাতে। পিতা রাখাল চন্দ্র সরকার এবং মাতা কনিকা সরকার। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ। বর্তমানে কেন্দ্রীয় আরক্ষা দপ্তরের কর্মরত ।
প্রকাশিত গ্রন্থ- মিথোজীবী (2010)
No comments:
Post a Comment