অষ্টাদশের সুখটানে অষ্টাদশী
আজ দুবছর হল শ্যামলাল চাকরি থেকে অবসর।
পঞ্চাশ বছরের বিবাহিত জীবনে সংসারের ব্যস্ততায় তেমন করে কোথায় ঘুরতে যাওয়া হয়নি।
ঈশ্বরের কৃপায় ছেলে মেয়ে এখন নতুন জীবন সাজাতে ব্যস্ত!বড্ড একা মনে হল তাই শ্যামলাল ঠিক করল কোথায় ও একটা ঘুরতে যাবে। গিন্নি কে সেই কথা বলতে গিন্নি রণচন্ডীর মত ক্ষেপে গিয়ে বলল ও সব হবে না আমার গোপাল কে খাওয়া বে শুনি! শ্যামলাল তখন মুখ ভার করে বসে সিগারেট খেতে শুরু করল..... মনে পরতে লাগল সেই স্কুল ছুটি র গ্রীষ্মের দুপুরে সরমা সাথে বসে আড্ডায় ব্যস্ত। সরমা সিগারেট খাওয়া টা একদম পছন্দ করত না, বলত সামনে উচ্চমাধ্যমিক সিগারেট খেতে খেতে রোগ বাধিয়ে তবেই ছাড়াবে নাকি, দুজনে প্রায় সমবয়সী ছিল কিছু নিয়ে গেল থাকত।তবে শ্যামলালের গিন্নি সিগারেট খাওয়া নিয়ে কোন সুবিধা নেয়। সিগারেট টা শেষ হতে না হতে শ্যামলালের স্ত্রী বলে উঠল চল তবে ঘুরেই আসি।তবে কোথায় যাবে শুনি! শ্যামলাল বলল আগে বাড়ি থেকে বের হয়। তারপর দু জনে গিয়ে উঠল র্দাজিলিং সেখানে একটি ছোট্ট কটেজে। একদিন কেটে গেল নিজেদের কে ঘুছিয়ে নিতে পরদিন
সকালে শ্যামলাল বাইরের পরিবেশ একটু ঘুরে দেখার জন্য একায় বেরিয়ে পরল...... শ্যামলালের কটেজের ঠিক উল্টো দিকে এমনি এক বয়স্ক দম্পতি এসে উঠেছে। তবে সেটা শ্যামলালের অনেক দিন আগে ! ঘুরতে ঘুরতে একটা জায়গায় শ্যামলাল বসে আবার একটা সিগারেট ধরিয়ে নিল তবে আজ মুখ দিয়ে সিগারেট টান টা যেন দীর্ঘ দিনের ক্লান্তির আবসান করিয়ে যেন সুখ টানে পরিণত হল এমনি সময় উল্টো দিকের কটেজে থাকা সেই বয়স্ক ব্যাক্তি শ্যামলাল কে অনুসরণ করতে করতে তার কাছে এসে বসল, বল দেশলাই হবে শ্যামলাল দেশলাইটা পাজামার পকেট থেকে বের করে দিল। সিগারেট টা ধরিয়ে নিয়ে নিজে থেকে ওই লোক টি বলতে লাগল আমার নাম রামমাধব রিটায়ার্ড র্কনেল আর বলবেন না ভাই ঘরের গিন্নি সিগারেট খাওয়া পছন্দ করে না তাই দেশলাইর ও ঠিক থাকে না। এভাবেই দুজনের মধ্যে গল্পের শুরু নানা দেশের কথা,ঘরে কথা,ছোট বেলার নানা ঘটনা ঘরের ফেরার কথা
প্রায় ভুলে গিয়েছে ..... দুজনে। তখন র্কনেল রামমাধবের ঘর থেকে ডাক আসল দুপুরের খাওয়া জন্য তারপর গল্প শেষ টেনে দুজনেই ঘরে দিকে ফিরল.... দু-তিন দিন এমনি করে কাটলো...।
তারপর আবার রামমাধবের সাথে শ্যামলালের দেখা। সেদিন রামমাধব বল বন্ধু আজ চলুন আমার ঘরে আমার বৌ বিরিয়ানি রেঁধেছে
আজ আপনাকে সঙ্গে নিয়ে খাব শ্যামলাল বল আজ না বন্ধু আমি খাওয়া দাওয়া করে
বেড়িয়েছি আর নিতে পারবো। কিন্তু রামমাধব কিছুতেই ছাড়ার পাএ না সেটা বুঝতে পেরে শ্যামলাল আর কথা বারালো না রামমাধবের কটেজে গিয়ে উপস্থিত হল বেডরুমের মত ছোট্ট রুমে শ্যামলাল কে বসিয়ে রামমাধব রান্না ঘরে গেলেন গিন্নি নিয়ে আসতে শ্যামলালের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া জন্য। শ্যামলাল পাশে ঘরে বসে অপেক্ষায় করছে অমনি সময় রান্না ঘর থেকে বেড়িয়ে আসল রামমাধবের স্ত্রী,পড়নে ছিল সাদামাটা একটি সিল্কের শাড়ির শ্যামলাল রামমাধবের স্ত্রী মুখের দিকে তাকানো মাএই তার সুগার টা যেন চট করে বেরে গেল। সেই অষ্টাদশী 'র সরমা মুখ টা ভেসে উঠল........... কিছুইতে মন থেকে মেনে নিতে পার ছিল না,যে ও সরমা হতে পারে ...।রামমাধবের স্ত্রী যেন শ্যামলালের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা খোঁজার চেষ্টা করে চলছে........সেদিন রাতে আর ঘুম আসল না চোখে ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে সিগারেট টা ধরিয়ে নিলেন কিন্তু তার টান টা আজ আর সুখ টানে পৌছতে পারে নি..." রাতের আকাশ যখন নিস্তব্ধ হয় ' এই নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে মাঝে মাঝে ঝিঝিঁ পোকা ডাকে' বাঁকা চাঁদ উকি মারে মেঘের ভেলার ফাঁকে... তেমনি অষ্টাদশী সরমা যেন আজ আবার সমানে ও এসে সিগারেটের ধোয়ার মতো মিলিয়ে গে আঁখি পাতে।
No comments:
Post a Comment