Saturday, July 18, 2020

অনুপম রায়

গল্প

তখন। আরে তখন।। যখন বইয়ের সাথে কাটাকুটি খেলা হত।কোনো একটা কারণে বাবা-মা দুজনেই একপক্ষে আর অন্যপক্ষে আমি। বয়স সম্ভবত সাড়ে পাঁচ। রাগ হয়েছিল।অনেক রাগ। রাগের বশে সিদ্ধান্ত নিয়েছি বনবাসে চলে যাব। কিন্তু বন নাই। কী করা যায়?অনেক ভাবার পর মাথায় আরেকটা প্ল্যান এল।

বনবাসে আর যাব না। আমার যে পাঁচ নম্বর সাইজের ফুটবল টা আছে ওটাকে বালিশ বানিয়ে খাটের নীচে লুকিয়ে থাকব।।দীর্ঘ দুই বছর আমায় কেউ খুঁজে পাবেনা। এই দুইবছর আমি এখানেই কাটাবো। মা-বাবা আমায় অনেক খুঁজবে। খুঁজে না পেয়ে খু্ব কান্না করবে। তারপর দুইবছর পরে আমি বের হব।  আমায় 
দেখলে অনেক চকলেট, চিপস কিনে দেবে। 

আর দেরি না করেই প্ল্যান মত কাজে নেমে পড়ি। এখন আমি খাটের নীচে। কোনো মানুষজন নাই। আমি একলা মানুষ একটা খাটের নীচে। খাটের নীচে অন্ধকার। অন্ধকারে আমায় কেউ খুঁজে পাবেনা। মাথার নীচে ফুটবলটাকে বালিশের মত সেট করে দিলাম একটা ঘুম।

দু'ঘন্টা শেষ হয়ে গেছে। কেউ এখনো আমায় খুঁজতে আসেনি। প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে। ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী ক্ষুধাময়। তবুও বের হওয়া যায় না। মান সম্মানের একটা ক্লাস আছেনা! লোকে দেখলে কী ভাববে !কিন্তু ক্ষুধার কী হবে?

দূর থেকে আইসক্রিমওয়ালার শব্দ। পঁত পঁত বাঁশির আওয়াজ। এ এক অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো বিরক্তি লাগেনা। বেরিয়ে দৌড় দিয়ে ছুটে গেলাম মায়ের কাছে।মা একটা আইসক্রিম কিনে দিল। দাম দশ টাকা।

আমি আইসক্রিমটা খাওয়া শুরু করলাম। আইসক্রিমটা ছিল লাল রঙের।অনেকটা কমলার ফ্লেবার। কী যে মিষ্টি আইসক্রিম। পৃথিবীতে যে কত রকমের তৃপ্তি আছে তা বোঝা দায়!

আইসক্রিম খাওয়ার পর এখন আমার ঠোঁট মুখ লাল। জিহ্বাও লাল। এখন কী আবার চলে যাব খাটের নীচে? না থাক। আর যাব না।  আমার মান সম্মানের ক্লাসে এখন আইসক্রিমের রঙ। মানুষেরও অনেক রঙ। রঙে রঙে একাকার। ঠিক কি না?

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...