Saturday, July 18, 2020

অদিতি সাহা

প্রদীপ-শিখা

 জন্মেছি যখন আমি কান্নায় চোখের জলে,

বাবা তখন ছুটে এল নিতে আমায় কোলে।

মায়ের তখন হুঁশ নেই,ঘুমে পরেছিল ঢুলে।
প্রতিবেশীরা সব দেখতে এল,আমায় দলে দলে।।

পেছন থেকে একজন হঠাৎ বললো আমায় চেয়ে,
ছেলে নয়তো অমুকের হায়!হয়েছে যে মেয়ে।।

মেয়ে মানেই তো অনেক ভেজাল,আস্ত হাতির বোঝা।
অমুক তোমার জীবন কঠিন, 
রইল না আর সোজা।।

ঠাকুরমা বললো নাতনি হায়রে-
আমি কি যে করি?
স্বামীর ঘরে পাঠাতে হবে দিয়ে কয়েক ভরি।।

নাতি যদি হত তবে,হতো বংশের আলো।
নাতনি মানে কপাল পুড়েছে,আর হলো না ভালো।।

ছেলে হলে বাজত শাঁখ,দিতাম উলু পাঁচ।
মেয়ে যখন তিন উলু দাও,
এটাই তো ধাঁচ।।

বাবা তখন চুপচাপ !সব কথা শুনে,
নিজ অন্তরে রাখলো ব্যাথা পুষে গুনে গুনে।

পারতাম যদি তখন বলতে কথা,দিতাম আমি জবাব।
মেয়ের জন্য কেমন করে স্নেহের এত অভাব?

আদর করো,যতন করো,ভালোবাসো আমায়।
খরতাপে আগলে রাখো স্নেহের শীতল ছায়ায়।।

একদিন আমি থাকবো না বোঝা,হব অনেক বড়।
এখন না হয় কষ্ট করে আমায় বড় কর।।

সমাদরে পালো আমায়,মায়ায় করো ঋণী,
আমিও তো একদিন হতে পারি "ডাক্তার কাদম্বিনী"।।

তোমরা যদি ভাবো এমন হয়ে নিজে নারী,
সমাজের দাড়িপাল্লায় পুরুষরা সব হয়ে যাবে ভারী।।

ছেলে মেয়েতে করিও না ভেদ,
সমান নজরে দেখো।
বাঁচতে দাও,বাঁচিয়ে রাখো,নিজে বাঁচতে শেখো।।

নিজ হাতে টেনেছে বিধি আমার কপালের রেখা।
ছেলে যদি হয় বংশের প্রদীপ,মেয়ে তাহার শিখা।।

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...