Saturday, July 18, 2020

সৌরভ দে

সংসার-সম্পর্ক

আমরা বর্তমানে আধুনিক সমাজব্যবস্থা এবং পুরাতন সমাজব্যবস্থার ভিতর অসংখ্য অনৈক্য এবং স্বল্প পরিমান ঐক্যের সন্ধান পাই। কবি বলিয়াছেন, 'কাঁচা এবং পাকার মধ্যে সর্বদা এক সংঘর্ষ চলিতেই থাকিবে'। তবে আজকে আমি লিখিব আমার দৃষ্টিগোচর এক বিরল পারিবারিক চরিত্র প্রসঙ্গে, যাহা খুজিয়া পাইতে মুশকিল।

     নিমাইবাবু, চল্লিশ বৎসর বয়সে বৈবাহিত জীবনে আবদ্ধ হইয়াছেন। চার পুত্র-কন্যা, স্ত্রীকে লইয়া তাহার সংসার। এইখানে নিমাইবাবুর চরিত্র চলিতমান সমাজচরিত্র হইতে সম্পুর্নরুপে ভিন্ন। তাহার পরিবারের নিত্যদিনের সাথী ছিল 'কলহ'। একমাত্র এই উপসর্গ ছিল তাহার বড়ো কু-অভ্যাস, যেটার দরুন সমাজ ছিল তাহার প্রতিদ্বন্দ্বী। নিমাইবাবুর ভু-সম্পত্তি আশাতীত থাকিলেও, আয়ের কোন প্রকার উৎস থাকিল না। যাহার দরুন আর্থিক দুর্বলতা তাহার একপ্রকার নিত্যদিনের সঙ্গী। তাহার জীবনের সর্বাপেক্ষা বড়ো প্রতিবন্ধকতা হইল তাহার নিম্নমানের ব্যবহার, যাহা উনাকে গোটা জগৎ হইতে ভিন্ন করিয়া রাখিয়াছে। উনার হীন চিন্তন প্রক্রিয়া গোটা এক উদীয়মান প্রগতিশীল পারিবারিক জীবনকে চরম অন্ধকারে নিমজ্জিত করিয়া দিল। বস্তুত এই বাক্য বলিলে সঠিক হইবে যে, ওই অন্ধকারময়  জীবন গুলিতে প্রারম্ভে কখনোই অভ্যন্তরীন স্নেহ-মায়ার রশ্মি পতিত হয় নাই। যাহা হইয়াছে তাহাকে বিমুখ করিবার যথেষ্ট উপকরনও উপস্তিত ছিল। এই সন্ধিক্ষন হইতে পৃথক হওয়া সম্ভব, পরন্তু সেইটা এক জটিল বিষয়।

     এইখানে আমি বলিব, একটি পরিবার কিংবা মনুষ্যে মনুষ্যের মধ্যে দৃঢ় ঐক্য বন্ধনের এক শ্রেষ্ঠ উপায় হইল পরস্পর পরস্পরের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন। আমার মনে হয় ইহা অবলম্বন করিলে একে-অন্যের প্রতি অথবা পারিবারিক জীবনে বা সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় হিংসা-বিদ্বেষ স্বল্প মাত্রায় হইলেও লাঘব হইবে। এই বাক্য সঠিক যে মনুষ্য অর্থকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করিয়া থাকে। বস্তুত এইপ্রকার ধারনা মনুষ্যকে একপ্রকার যান্ত্রিক মনুষ্যে পরিণত করিতে পারে। মনুষ্য যদি ভাবিয়া থাকে যে, সে বৃহত্তর জীবনে অংশগ্রহন করিবে, সমাজ জীবনের এক বড় কার্য পরিচালিত করিবে তবে সেটার প্রারম্ভ তাহার ক্ষুদ্র পরিবার হইতে এবং তাহার আঙ্গীনায় ক্ষুদ্র সামাজিক পরিবেশ থেকে।

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...