Saturday, July 18, 2020

মন্দিরা শর্মা

দাগ

আমি ক্লাস সেভেনে পড়তাম।আমি তখন স্কুলে , যখন ঘটনাটি ঘটলো ! স্কুল ছুটির পর বান্ধবীর সাথে গল্প করতে করতে বাড়িতে আসলাম , দেখি সবাই কাঁদছে ! বাড়িতে সবাই ছিল , শুধু জ্যেঠু আর ভাই অনুপস্থিত ছিল। 

আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম , কি হল মা ? মা বলে উঠলো ,,, তোর জ্যেঠু আর তোর ভাই গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছে ,তর অমুক কাকু এসে বলে গেলেন। আমি তখন কি করব, কি  বলবো বুঝতে পারছিলাম না !  বাড়িতে তখন ফোন ছিল না , সবাই শুধু কাঁদছি ।
একটু পর পাড়ার একজন এসে বললো , তারা  (বাপ-ছেলে )  দুজনেই মারা গেছেন ! আর একটু পর আরেকজন এসে বললো না না বাবা ঠিক আছে , ছেলে মারা গেছে । কোনটি সঠিক কোনটি ব্যঠিক তখনো জানি নি ,,,   

আমার পাশের  বাড়িতে একজনের মোবাইল ফোন ছিল , হঠাৎ জ্যেঠু অন্য আরেক জনের মোবাইল ফোন দিয়ে কল করে ওনাকে এবং বলে  আমি সুমন  (  আমার ভাই)কে নিয়ে   কুলাই হাসপাতাল থেকে এখন আগরতলা জিবি হাসপাতালে যাচ্ছি । ওদের কে বলো চিন্তা নি করতে । 

আর কোনো খবর নেই । জ্যেঠু ২ দিন পর বাড়িতে আসে , এবং কিছু জায়গা বন্দক দেয় । 
কারন ,,, ডাক্তার বলেছেন ,,,,, ভাই আমার কে বাঁচাতে গেলে অনেক রক্তের প্রয়োজন । অনেক টাকার দরকার ।  পাশাপাশি ঐ এক্সিডেন্ট র প্রভাব ভাইয়ের ডান হাতে পড়েছিল । ঐ হাত কে বাঁচাতে গেলে ও রক্তের প্রয়োজন। 

জ্যেঠু টাকা নিয়ে গেছে ,,,, সব কিছু করার পর ও ডাক্তার বলে ,,, দুঃখিত ।   বাঁচবে কিনা সন্দেহ আছে! 
 তার সব টা হাত কাটতে হবে । তবে যদি কিছু ভালো হয় । 

কিন্তু জ্যেঠু সম্মতি দেয় নি। 
ঐ দিন ই কলকাতা  আপেলো  হাসপাতালের উদ্দেশ্যে  রওনা দেওয়ার জন্য টিকিট কাটে । 
পরের দিন ভাইকে নিয়ে সেখানে যায় । কিছুদিন পর খবর পাই ,,, ভাই ভালো আছে , শুধু ডান হাতের অর্ধেক অংশ নেই ।  আজ ভাইয়ের অর্ধেক হাত নেই , তাতে কি জীবন টা তো আছে । 

এই ছিল আমার জীবনের একটা স্মরনীয় ঘটনা , একটা দুঃখময় কাহিনী , যা আমি কোনোদিন ভূলবো না । 

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...