পিতা
যিনি সূর্যের মতো নিরন্তর
নিজেকে পুড়িয়ে-
সন্তানকে করে আলোকিত,
যিনি সন্তানের কল্যাণ চিন্তায়
পাহাড়ের মতো ধ্যানমগ্ন,
যার বক্ষ মোক্ষিত
রক্তের ঝর্নাধারায়
সন্তান প্রাণ সঞ্জীবিত,
তিনি পিতা।
পিতা নিজ হাতেই
নিজেকে জ্বালিয়ে
সৃষ্টি করে নেয় পুত্রের জন্য
অফুরন্ত প্রাণপ্রবাহ।
তারি-ই ছোঁয়ায়
পুত্র বিবর্ধিত।
পিতৃ স্নেহের
বিপুল প্রাণ ফোয়ারার-
অমোঘ সুর স্রোতে
মাতোয়ারা হয়ে কতো দিন
ঘুমিয়ে পড়েছি পিতার বিশাল বক্ষে।
পিতার অসীম ত্যাগের
গভীর যজ্ঞ কুণ্ড থেকে
আমার প্রকাশ।
তাঁর আত্মার অংশ আমি।
কিসে হবে আমার সুখ,
কিসে যাবে সকল দুখ্
পিতা এ চিন্তার-
জীবন্ত মূর্ত বিগ্রহ ।
হয়তো কল্প বৃক্ষের অপর নাম- পিতা।
পিতার কঠোরতা,
সে তো ঘনীভূত মধু ।
যতই কঠিন হোকনা কেন,
অলক্ষ্যে সন্তানের জন্য প্রবাহিত হয়
বিগলিত স্নেহের
চিরন্তন মধুময় ধারা ।
সন্তানের জীবন বেদীতে
নিজের সুখকে,
নীরবে নির্মমভাবে
বলি দেওয়ার
মানত করার নাম- 'পিতা'।
এই তো পিতা !
পিতৃদেব !
যিনি বিগত দেহ হওয়ার পরেও, স্বপ্ন যোগে
সন্তানকে দেখা দেয়।
অজ্ঞাত অসীম পথে মহা যাত্রার আগে
জানালার পাশে দাঁড়ায়।
মুখে গভীর বিয়োগ ব্যথার ছাপ ।
আহা, অসীমান্তিকের দিগন্তে
চির বিলীন হয়ে যাওয়ার মূহুর্তে
সন্তানকে আরেকটিবার দেখতে আসে।
নিঃশব্দে জানায়
শুভকামনা।
ছল্ ছল্ করা
জলভরা চোখে
ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
অতল বিয়োগান্তক আবহে-
শুধু সন্তানের প্রতি
নৈশব্দিক চাহনি।
তার পর হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গে, সাথে স্বপ্ন ভাঙ্গে
কোন অজান্তে পিতা মিলায় অদৃশ্যের গাঙ্গে ।।
No comments:
Post a Comment