Tuesday, April 28, 2020
সম্পাদকীয়
নিপু দাস
মোঃ রুবেল
সিদ্ধার্থ সাহা
Monday, April 27, 2020
পিনাকী ভৌমিক
স্নেহাশীষ রায়
ধর্ষিতা
চারিপাশের প্রভাতটা দেখে কেমন লাগছে,
কই! কেউ তো আমায় টানছেনা চারপাশে।
সেই শেষরাতেই চুলের মুঠিতে ঘাত,
আজ মুঠি তো দূর! শুনছি না কারও মাত।
সেই অত্যাচারিত শেয়ালগুলো আজ কই?
যারা ছিঁড়ে চুল, ধরতে স্বর্গের মই।
আজ আমার চুলের ডগাটি হেমন্তের সৌরভে,
স্বস্তির নিশ্বাসে দোল খায় সে ডুবে ডুবে।
জন্মানোর পর থেকেই লাঠিঘাতে জর্জরিত আমি,
ওরা চতুর ধর্ষক, সেটাও সকলেই জানি।
তবুও প্রতি প্রভাতে নিজে নিজে,
তপনের ছোঁয়ায় উঠি সেজেগুজে।
একটুখানিক আবছা আলোয় টের পাই,
মুঠি ধরে টানছে যেন কিছু নোংরা ছাই।
কেঁদে উঠে আমি নড়তে থাকি চারিপাশে,
আসে প্রতিদিনই ভিন্ন রকমের বেশে।
তবে গত দু'দিন ধরে দেখছিনা আর তাকে,
সুখনিশ্বাস ফেলছি স্বস্তির একটু ফাঁকে।
শুনলাম এই প্রজাতিটাই নাকি আজ ধর্ষিত?
পৃথিবীই তাদের করেছে বহু বঞ্চিত।
আজ আমার সৌরভে নেচে নেচে উঠি,
হলুদের ছোঁয়ায় রাঙা হয় আমার চুলের মুঠি।
কাউচার খান
মহামারী
বিশ্বজুড়ে চলছে এখন করোনা নামক এক প্রাণহানী মহানারীর সমাগম.
যা বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রকে ক্রমাগত করে চলেছে আক্রমণ.
রোগটা নাকি বড্ড ভারী,
দেশ-বিদেশে চলছে তার আমদানী.
এই মহামারীর হাত থেকে মানবজাতির রক্ষায় দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন,
চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ করছে বিভিন্ন ভাবে সচেতন.
কিন্তু আমরা কি আধেও সচেতন?
আমরা কি মানছি লকডাউন, থাকছি কি নিজ নিজ ঘরে বন্দি ?
কই নাতো আমরা তো দিব্যি চলাফেরা করছি বাজার হাটে, কলোনিতে.
তাও আবার মুখ, হাত খোলা রেখে.
তবে, আমরা কি করবোনা করোনা মুক্ত দেশ !
এইভাবে কি শেষ হবে মানবজাতি?
যদি করতে চাও করোনা মুক্ত দেশ !
তাহলে চলো সবাই একই সূত্রে আবদ্ধ হই--
"আমরা সবাই থাকব নিজ নিজ গৃহ বন্দি,
মেনে চলবো বিভিন্ন সচেতন মূলক পদ্ধতি.
সব শেষে আমরা করোনা নামক মহামারীকে হারিয়ে,
গড়ে তুলব এক নতুন মুক্ত পৃথিবী".
যমুনা মজুমদার
পূর্বালী সাহা
সঞ্চয় দত্ত
মৃত্যু
মৃত্যু নহে সাধারণ
নিয়ে আসে কত কারণ,
বিশ্বব্যাপী চলে কোরোনা
আর মৃত্যুর উন্মাদনা।
ওহে মৃত্যু,
কেন তুমি জীবের শত্রু?
মানুষকে করিলে কবল
দেশ হয়ে পড়ে দুর্বল।
ওহে মৃত্যু,
কেন তুমি জীবের শত্রু?
চিন,আমেরিকা,ইতালি
করিয়াছে কোরোনায় মৃত্যুর বলি।
ওহে মৃত্যু,
কেন তুমি জীবের শত্রু?
কত দুঃখ কষ্ট দিয়ে
নিয়ে যাও তোমার করে।
ওহে মৃত্যু,
কেন তুমি জীবের শত্রু?
এক একটি দেশ ধরে
নিয়েছ তোমার করে।
ওহে মৃত্যু,
কেন তুমি জীবের শত্রু?
চলে যাও অনেক দুরে
দেখিতে চাই না সকলের তরে।
বিজন বোস
সমস্ত বিশ্বাস চুরমার হয়ে গেছে
বিশ্বজনীন অবিশ্বাস ।
একদিন দাবি ছিল কাঁটাতার ভেঙে দেওয়ার
বিচ্ছন্নতার প্রতীক বার্লিন প্রাচীরও ভেঙে দিতে হয়েছিল হৃদ্যতার প্রচারে
এমনকি চীনের প্রাচীর ও ভাঙার উঠেছিল জোর দাবি ।
আর আজ উল্টো বিচ্ছিন্নতারই আবাহন ।
অবিশ্বাস শুধু শত্রুকে নয়
বন্ধু স্বজন পরিবার পরিজন,
যে দুই হস্ত প্রতিনিয়ত পরিচর্যা করে চলেছে
পঞ্চ ইন্দ্রিয়কে
তার প্রতিও চূড়ান্ত অবিশ্বাস ?
প্রকৃতি যেন বিদ্রুপ করে বলছে--
তোমরা মানুষ আমার উপর ফলাও পৌরষত্ব
'খোদার উপর খোদগারি'
এখন করো একতার নয়
বরং বিচ্ছিন্নতার বাহাদুরি ।
সুব্রত দেববর্মা
উর্মি সাহা
সত্য রঞ্জন দাস
মুকিম মাহমুদ
অনুপম রায়
আহ্বান
রোদ চাই
আরো আরো রোদ চাই
পবিত্রতার আবরণে
তোমায় মুড়ে দিতে চাই।
তুমি শঙ্কনীলও নও, শালিকও নও
তুমি এসো তোমার মত করে।
আমি তোমায় সবেতেই দেখি
তুমি পৃথিবী;
তুমিই মহাপৃথিবী।
এই সঙ্কটে, এই মহাসঙ্কটে
এই যুগসন্ধিক্ষণে
তুমি এসো।
নিষ্প্রাণ হয়ে,
নিঃশেষিত হয়েও,
করছি তোমারই আহ্বান।
সমীরণ বিশ্বাস
সংগীতা শীল
উজ্বল ভট্টাচার্য্য
দিপ্সী দে
রিঙ্কু কর
উৎপল দেবনাথ
অনুপম দেব
বাঁচতে নেই মানা
সময়টা হয়তো হঠাৎ এখন
ঘূর্ণিপাকে বিপরীত মোড় নিল,
রক্তক্ষয়ী আঁধার সুযোগ বুঝে
ঐ শূন্য পথে উঠে এল।
স্বপ্নে সবার আজ শুধু
রক্ত রঙের আলপনা,
সুখ প্রদীপ বুজে প্রায়
আজ মৃত্যু শোকের কল্পনা।
আসছে প্রহর কেমন হবে
এটাই এখন শুধু জল্পনা।
চোখ বুজে ঘুমাই যখন
খুলবে কিনা জানিনা,
তা জেনেও ঘুমিয়ে পড়ি
নিদ্রা হীন তো থাকিনা।
রক্তক্ষয়ী আঁধারো পাকে পড়বে
এ আশা কেন করবো না?
কাল বাঁচবো কিনা কে জানে/আজতো প্রাণ খুলে বাঁচতে নেই মানা।
গৌতম দাস
বীর সৈন্যদল
করোনার ভয়াবহ রূপে মায়াময় ভুবন আজ স্তব্ধ।
প্রাণময় মুখগুলো হচ্ছে মাটি চাপায় আবদ্ধ।
যখন দেশ সেবার ব্রত পালনে ব্যস্ত সভ্য মানুষ সকল।
সেই ক্ষণেই প্রস্তুত হল-
রক্তপিপাসু করোনাকে হাতকড়া পরাতে বীর সৈন্যদল।
ওরা সূর্যসম উজ্জ্বল নেইকো কোনো অশ্রুজল।
কখনো বজ্রসম কঠিন আবার স্রোতের মতো বিরামহীন।
মুক্ত চিত্তে দিয়ে থাকে রক্ত অন্যদিকে জনসেবার ভক্ত।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্ধকার ভয়ে পালায় ওদের দেখে।
সহস্র সমরে যায় মাতৃভূমিকে আগলে রেখে।
থাকেনা কোনো সংশয়,শতকষ্ট প্রাণেশয়।
মারণব্যাধি করোনা নামক জল্লাদকে পায় না ভয়।
তারা শত্রু বিনাশক জুয়ালামুখী,পছন্দ করে প্রাণহারা ঝুঁকি।
নিজ তন্দ্রা, সুখ ছেড়ে সবাইকে করতে চায় সুখী।
তারারই বলিদানে টিকে থাকে সুধাময় জন্মভূমি।
এই সেবাতে মাথা নত করি তাদের কোমল পদতল।
সর্বকালের দেশ সেবক,চিরঅমর,এই বীরসৈন্য দল।
নিকিতা দত্ত
কোয়ারেন্টাইন
আজ প্রায় এক সপ্তাহ হল বাড়ি থেকে বের হওয়া পুরোপুরি বন্ধ। অনেক প্ল্যান ছিল, পরীক্ষা শেষে এটা করবো,ওটা করবো। সব বন্ধুরা মিলে একসাথে ঘুরতে যাবো।
কিন্তু এরই মাঝে, গোটা বিশ্বজুড়ে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে,তার কারনে সব কেমন যেন ভেস্তে গেল।।
নোভেল করোনা ভাইরাস (COVID-19) এর সংক্রমনে গোটা মানবসভ্যতা আজ ধ্বংসের মুখে।।
আজ এই অসময়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে লেখার সুযোগ পেয়ে দেশের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কিংবা মৃত্যুর সংখ্যা জানিয়ে মনোবল দুর্বল করার পক্ষে আমি নেই।
এখন আমি বাড়িঘরেই আছি।
১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িতেই থাকবো।এর পরেও বাড়ি থেকে বের হতে পারবো কিনা তার নিয়েও অনিশ্চিত।
এই নিয়ে আমার তেমন আফশোস নেই যদিও।কারন, আগে তো বাঁচতে হবে,তারপর বাকি সব।
শুধু দুঃখ একটাই, প্রানপ্রিয় বন্ধুদের সাথে অনেকদিন হলো দেখা হচ্ছে না।
হ্যাঁ, যোগাযোগ ঠিকই হচ্ছে প্রতিদিন; কিন্তু আমাদের যে হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কথা বলার অভ্যেস।
সে যাই হোক,ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে কোয়ারেন্টাইন জিনিসটা আমার এতটাও খারাপ মনে হয় না।
কর্মব্যস্ততার যান্ত্রিক জীবনের মাঝে যে পছন্দের কাজগুলো থেকে আমরা দূরে সরে গিয়েছিলাম, সেগুলো আবার করার সুযোগ পেয়েছি।
সোস্যাল মিডিয়া ওপেন করলেই দেখতে পাচ্ছি, কেউ খুব ভালো গান করে, কেউ খুব সুন্দর ছবি আঁকতে পারে, কেউ লিখতে ভালবাসে, তো কেউ ভালো আবৃত্তি করতে পারে। এইসকল সৃজনশীল কাজগুলো থেকে আমরা একটা সময় কোথায় যেন দূরে সরে গিয়েছিলাম।
বহুদিন পর আবার আলমারিতে ধূলো খাওয়া ভালোলাগার গল্পের বইগুলো পড়তে পারছি।
পরিবারের সদস্যরা আবার সবাই মিলে একসাথে সময় কাটাতে পারছি।
সবশেষে এই কথাই বলবো,
গোটা বিশ্ব যেখানে করোনা আতঙ্কে জর্জরিত, সেই জায়গায় বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া সাইটগুলোতে অযথা কিছু গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
কখনো পাগলী মাসির গুজব,করোনার ওষুধ আবিষ্কার আরো কত কী!!
আমি বলি কি, এইসব গুজবে কান না দিয়ে আগে নিজেরা সচেতন হোন।।
নিজেরা সুস্থ থাকুন, অপরকে সুস্থ রাখুন।
আজ দেশে যে লকডাউন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, করোনা সংক্রমন প্রতিরোধ করার জন্য এর চেয়ে ভালো প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে আর হতে পারে না। কারন, একমাত্র সামাজিক দূরত্বই পারে এই ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে।।
তাই সবার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, যথাসম্ভব ঘরে থাকুন।
বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া, বাড়ির বাইরে একদম বের হবেন না।
যথাসম্ভব প্রশাসন কে সহযোগিতা করার চেষ্টা করুন এবং দেশের প্রকৃত নাগরিক হওয়ার দায়িত্ব পালন করুন।।
তবেই আমরা আবার সেই করোনা মুক্ত ভোরের আলো দেখতে পাবো।
জয় হিন্দ।।
সুধীর দাস
রাত্রি অনেক হল । প্রায় দশটা। সময় বয়ে যায় । ঘড়ির কাঁটা টিকটিক শব্দে এগিয়ে চলল কিন্তু রহিম এখনো আসছে না এতে করে যেন রিনার বুকটা ভয়ে ধড়ফড় করছে । বাইরে রাস্তাঘাট , দোকানপাট সবকিছুই বন্ধ । কি যেন একটা মারনব্যাধী কোরোনা ভাইরাসের আবির্ভাব হল হাজার হাজার মানুষ ভয়ে ভয়ে জীবন কাটাচ্ছে, সরকার এই নিয়ে কারফিউ জারি করেছে 21 দিনের জন্য।
রিনা সোফায় বসে রহিমের কথা ভাবছে আর অনুপের মাথায় হাত বুলাচ্ছে । অনুপের বয়স ৭ বছর । অনুপও তার বাবার অপেক্ষায় ভাত না খেয়ে বসে আছে । রহিম একজন সাধারন রিক্সাচালক । ঘরের অন্ন শেষ হয়ে যাওয়ায় সে কিছু অর্থ উপার্জনের আশায় বেড়িয়েছে । কিন্তু আসতে দেরী হচ্ছে দেখে মা ও ছেলে দুজনেই খুব চিন্তিত। রাত যেন শেষ হয় না । মা ছেলের চিন্তার ও শেষ নেই।
রাস্তামুখো বাড়ি ।রাস্তা দিয়ে যখনই কেউ সাইকেল দিয়ে বেল বাজিয়ে যায় তখনি অনুপের দরজা খুলে দেখে তার বাবা এসেছে কিনা। ঘড়ির কাটা এগিয়ে চলছে রাত্রিও গভীর হতে লাগল । ঘড়িতে তখন এগারটা । রহিমকে আসতে না দেখে অচেনা গভীর রাতে রিনা অনুপকে ঘরে রেখে বেড়িয়ে পড়ল রহিমের খুজে।
রিনা যতই এগিয়ে যাচ্ছে ততই তার টেনশনে মুখ ভার হয়ে যাচ্ছে । কিছু দূরে যেতেই তার নজরে পড়ল রাস্তার পাশে যেন কি একটা পড়ে আছে কর্দমাক্ত রক্তাক্ত অবস্থায় । দূর থেকে দেখে রিনা ভয়ে ভয়ে এগোতে থাকে ।কর্দমাক্ত ব্যক্তিটির কাছে গিয়ে ব্যক্তিটির মুখ দেখে যেন রিনা হতবিম্বিত হয়ে রইল । এ যে আর কেউ নয় তার স্বামী রহিম । সে রক্তাক্ত কর্দমাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকে সাহায্যের জন্য । কিন্তু কারফিউ এর সময় গভীর রাতে শূন্য জনবিহীন রাস্তা তার উপর ঘন অন্ধকার যেন অমাবস্যার রাত তার ও তার পরিবারের জীবনকে ধ্বংস করতে নেমেছে এই ধরনীতে। রিনা কিছুই ভাবতে পারছে না যে সে কি করবে। সে রাস্তার এদিক ওদিক তাকাতে লাগল আর অশ্রুসজল চোখে রহিমের দেহটাকে কোলে নিয়ে আর্তনাদ করে চিৎকার করতে শুরু করল । তার এই আর্তনাদে আমাবস্যার অন্ধকারও তার সঙ্গে একাকার হয়ে রইল। সে চোখে জল বুক ফাটা কান্না নিয়ে আর্তনাদে চিৎকার বলতে লাগল তার "তুমি যে বলেছিলে রহিম আমাকে ছেড়ে যাবেনা কোনোদিন । যতই ঝড় আসুক তুফান আসুক থাকবে পাশে চিরটাকাল । " আজ তার কি হল? সব কি তাহলে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছিল ?
সুস্মিতা নুনিয়া
শান্তনু মজুমদার
করোনা মহামারি
মানবজাতি আজ বিপন্ন, বিধ্বস্ত মহামারীর ভয়ে।
কাঁপছে রাজ্য, কাঁপছে দেশ, কাঁপছে গোটা বিশ্ব আজ মহামারীর তান্ডবে। মহামারি রুখতে হয়েছে লকডাউন, কার্পূজারি হয়েছে সারা ভারতবর্ষ
লকডাউন শেষে জাতি জানবে করোনার আসল রহস্য।
ইতালি, ফ্রান্স, চিন, আমেরিকা হয়েছে আজ মৃত্যুপুরী।
ধনী, দরিদ্র, টাকপয়সা, বিষয়সম্পত্তি সব ই আজ তুচ্ছ, লাশ পড়ছে ভুরি ভুরি।
বন্ধ দোকানপাঠ, রাস্তাঘাট, সকলেই আজ ঘরবন্ধী
একটি করোনামুক্ত ভোরের অপেক্ষায় আজ আমরা সকলেই আশাবাদী।
সংগীতা দেব
সোমা মজুমদার
সুজন দেবনাথ
মহামারীর লড়াই
পৃথিবীর আজ বড় অসুখ
ভুগছে সকল মানুষ
এখন হিংসা বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে
জাগাও 'মান' আর হুশ।
এই অসুখ তোমার আমার
নয়তো ব্যক্তিগত
পৃথিবীর হয়ে লড়তে হবে
মানুষ মানুষের জন্য।
এই বিশ্ব তোমার আমার
আমরা সবাই বিশ্ববাসী
যতই আসুক ঝড় তুফান
আমরা বিশ্ব ভালোবাসি।
আসুক যতই মহামারী
করবো না আজ ভয়
সঠিক পথে চলবো মোরা
আজ করবো বিশ্বজয়।
পুলিশ ডক্টর নার্সের কথা
আজ মানব নিষ্ঠা ভরে
দেশ বাঁচাতে থাকতে হবে
আজ নিজ নিজ ঘরে।
রাতের ঘুম এক করে আজ
লড়ছে দেখো যাঁরা
দোয়া করব আজ সবাই মিলে
সুস্থ থাকুক তাঁরা।
যে শিক্ষা দিয়ে গেছে আজ
এই করোনা মহামারী
নিয়ম মতো না চললে দেখো
যেতে হবে যমের বাড়ী।
অবহেলার বসে আজ
মৃত্যুর মিছিল কত।
চিন ইতালি যুক্তরাষ্ট্রে
মৃত্যু সহস্র শত শত।
আক্রান্ত আজ বিশ্বজুড়ে
বাতাস হয়েছে ভারি
ঘরে বসেই আজ রুখতে হবে
এই করোনা মহামারী
তাই চলো এখন শপথ করি
মানুষ হব সবার আগে
পৃথিবীর মানুষ স্বজন আমার
সকল রাগে অনুরাগে।
যুদ্ধও নয় আজ অস্ত্রও নয়
কেবল ঘরে বসে লড়বো
"করোনা" মহামারী দূর করে
এক নতুন বিশ্ব গড়বো।
প্রীতম শীল
সজীব পাল
দুইজন যুবক একদিন বিকেলে গভীর নির্জন বনে যায়;অদ্ভুত অ্যাডভ্যঞ্চারের জন্য ।অনেকটা সখের অথবা নেশার ।সাথে জলের বোতল,টিফিন বক্সে কয়টা রুটি ও আলু সিদ্ধ এবং নিরাপত্তার জন্য লাইসেন্স করা রিভলভার ।
তারা চণ্ডীরবান জঙ্গলের গভীরে প্রবেশ করতে থাকল ।এইদিকে সূর্য ক্রমশ নিস্তেজ আলো বিচ্ছুরিত করছে ।দুইজন যুবক গভীরে প্রবেশ করে প্রথমেই শিয়ালের হাঁক শুনে কিছুটা বিচলিত হলেও ক্রমেই নিজেদের ভেতর উদ্দাম ও বিশ্বাসে শক্তির জোগান দিতে শুরু করে ।
" অলক তুই কি ভয় পাচ্ছিস?"
" ধুর এই কিরকম কথা ! আমরা ত ইচ্ছে করেই এসেছি ভয়ের ভেতর ।একটা কথা কি জানিস পিন্টু,জীবনের প্রকৃত সত্তাকে উপলব্ধি করার জন্য প্রত্যেকটা মানুষকে মৃত্যুর সঙ্গে ঘেঁষে যাওয়া উচিত জীবনে একবার হলেও ।"
" যা বলেছিস।মনে হচ্ছে "full moon " চারিদিক কেমন স্পষ্ট ।"
" সামনের দিকে চল ।ওই ঝোপটার কাছে বসি ।"
পাশেই বিরাট এক জলের লেক।অনেকে বলে এই জলের মাছ নাকি অসম্ভব বড় ।এই জঙ্গলের রহস্য হল ,গভীর রাতে নাকি ওই লেকটার মধ্যে নৌকা ভাসে এবং অদ্ভুত অলৌকিক সুরে গান শোনা যায় ।এবং জঙ্গলে তীব্র বাতাস বয়। আজ থেকে প্রায় এক দেড়শো বছর আগে নাকি এক দুঃসাহসী বৃদ্ধ একা একা এই জঙ্গলে আসে রাতে মাছ ধরার জন্য,তারপর বৃদ্ধই নাকি প্রথম এই নৌকা দেখে ।এবং একটা বইও লেখে "The mystery of the jungle waters"।গতবছর একটা মেলাতে পিন্টু এই বইটি দেখে ঠিক করে ওরাও এই রহস্য ভেদ করবেই ।তাই এখানে আসা ।
ওরা ঝোপের পাশে ক্ষানিক বিশ্রাম করে আবার এগোতে লাগলো ।অসংখ্য কাঁটাঝোপ ।বিরাট বিরাট শাল গাছ ।অলক চারিদিকে টর্চ জ্বেলে এগোচ্ছে ।হঠাৎ অলক পিন্টুকে বলল," ওই দেখ কি গাছ !"
" ছাতিম গাছ "
"হুম,বলত এর বৈজ্ঞানিক নাম কি ?"
"Gelidium amansii, এর ফুলগুলি আমার কাছে অসম্ভব ভালো লাগে ।"
পকেট থেকে মোবাইল বের দেখল অলক ,রাত বেশি হয়নি ,সবে নয়টা দশ ।ওরা লেকটা দেখতে পেলে ।অনেক নিচে। ওরা আছে একটা পাহাড়ে ।চাঁদের আলোয় লেকের জল কেমন চকচক করছে ।তাদের হঠাৎ মনে হল এইরকম একটা স্বচ্ছ জলের এত রহস্য! সুন্দরের যে কলঙ্ক থাকে তা আজ বুঝতে পারছি ।
পিন্টু বলল ," দেখ মনে হয় ওই লেকটা চাঁদকে গিলে ফেলছে ।"
" ভাই তুই যে কবি তা জানি ।এখানে অত্যন্ত বন্ধ রাখ তোর কল্পনা ।"
"আচ্ছা আমি না হয় বন্ধ রাখলাম ,একটা বাজতে এখনো ঢের বাকি ,কি করবি এতক্ষণ?"
"চল খাওয়া দাওয়া সেরে নিই।"
ওরা খাওয়া-দাওয়া সেরে আবার বিশ্রাম করতে একটা পরিস্কার জায়গা দেখে বসল।জ্যোস্নাভরা রাত ! এই রাতে কেউ ঘুমানো যায় না ।শুধু জেগে থেকে উপভোগ করা যায় ।ঘন বসতি বা শহরের রাত আর গভীর নিস্তব্ধ জঙ্গলের মধ্যে কত ফারাক ।যে মানুষ এইরকম রাত না দেখে মরে যায় সে প্রকৃতির সৌন্দর্য কিছুই দেখেনি ।প্রতিটা ভয়ের মাঝে একটা করে সুন্দর ও শিক্ষা লুকিয়ে থাকে ।ভয় ভয় শরীরে যখন পরম সুন্দরকে উপলব্ধি করে তখন যে অনুভূতি তা ভাষায় ব্যক্ত করা যায় না ।
" অলক ঘুমিয়ে গেলি ?"
কোনো সারা শব্দ না পেয়ে পিন্টু তাকে ধাক্কা দিলো ।সে কটমট করে চোখ মেলে বলল," কি হয়েছে ? চোখ লেগে গেছে একটু ।"
" কয়টা বাজে ?"
ঘরির দিকে চেয়ে দেখল বারোটা কুড়ি । হঠাৎ কেমন চাঁদের আলো ক্ষীণ হয়ে গেছে ।চারিদিকে গভীর নিস্তব্ধতা ।নিচে জলের উপর যেন একটা মাছের লাফ দেওআর শব্দ শুনল ।অলকের একটু ভয় লাগতে শুরু করল।এখন আর সে নিজেকে সাহস দিতে পারছে না ।তাদের মনে হল কেউ একজন পেছন থেকে ওদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে ।উত্তর আকাশের ধ্রুব তারা স্পষ্ট ।ওই তাঁরাটাও যেন কিছু বলতে চাইছে ।কিন্তু নিজের আইন ভেঙে বলতে পারছে না ।মোবাইলের ঘড়িতে একটা বেজেছে ।ওরা নিজেদের চেষ্টা করছে শক্ত রাখার ।লেকের ঠিক শেষ প্রান্ত থেকে উজ্জ্বল একটা নৌকা আসছে ।কোনো মানুষ নেই ।অথচ ওই নৌকার উপর শূন্যে ঝুলছে লন্ঠন ।বইয়ের বর্ণনা মতো সমস্ত জঙ্গলে শিহরিত সেই গান ।সত্যি এই গান এই পৃথিবীর না ।এই জগতের হতে পারে না ।অদ্ভুত সুর ! মেয়েলি কণ্ঠ ।হালকা বাতাস বইছে ।অল্প সময়ের মধ্যে যেন সব তালগোল পাকিয়ে গেল ।
অলক ও পিন্টুর চোখ জুড়িয়ে আসছে ।আহা কি মধুর ভয়ংকর সুর ।ওরা এতক্ষণ বিপদের আশঙ্কায় ভীত ছিল ,কিন্তু এখন কোনো ভয় নেই ।এখন বেঁচে থাকার লড়াই ।ভীষন লড়াই ।আসছে নৌকা খুব নিকটে আসছে ।সুর আরো তীক্ষ্ণ ও গভীর ।কোথা হতে মিষ্টি গন্ধ আসছে ।কেন এই জীবন ! ওরা কতকাল এই হয়েছে পৃথিবীতে এসেছে ।কোনোদিন এমন ক্লান্ত অথচ সুখের ঘুম আসেনি ।
ওদের কোনো কথা নেই ।শুধু ভাবছে : কোথায় থেকে এলো এমন মাঝিহীন নৌকা ।কে গাইছে এমন গান ।আচমকা পিন্টু চিৎকার করে বলছে," বন্ধু করো এই গান !"
গান আরো বাড়ছে ।নৌকা এখন ওদের স্থির ! অদ্ভুত এই রাত ।গভীর ঘুমে ওরা ডুবে যাচ্ছে ।ওদের দেহ ক্রমশ বিবশ হয়ে আসছে ।ওদের এখন কোনো চৈতন্য নেই আর ।
ওই দুই যুবকও বৃদ্ধের মতো এক পৃথিবী রহস্য নিয়ে চলে গেল ।প্রকৃতির এমন অনেক রহস্য যা মৃত্যুর চেয়ে ভয়ঙ্কর সুন্দর ।ওরা ভয়ে অনড় থেকে প্রত্যক্ষ করেছে এই ভয়ভীতি রাত।না পৃথিবীতে ভয় বলে কিছু নেই যা আছে তা হল শিক্ষা ।ওরা শিখে গেছে ।
সৌম্যদ্বীপ দেব
জয়ন্ত শীল
প্রণব দাস
অভ্রজিৎ দেবনাথ
পার্থ ঘোষ
ড. শৌভিক বাগচী
মিঠুন দেবনাথ
অমিত রুদ্র পাল
সুস্মিতা রায়
সুশান্ত নন্দী
চন্দন পাল
শুভ্রশংকর দাশ
সঞ্জীব দে
দীপক দাস
দেবাশিস চৌধুরী
অভীককুমার দে
উর্মি সাহা
মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...
-
আজ আশ্বিনের শেষ কার্তিকের শুরু এই দিনটা বিশেষ ভাবে বিশেষ, বাংলার এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে। জানি না বাংলার বাইরেও এইভাবে বিশেষ হয়ে উঠেছে কিন...
-
মূক ফেনীর মুখর পাঁচালি একটি বহুল প্রচারিত বাংলা প্রবাদ ‘ভাগের মা গঙ্গা পায়না’ ৷ প্রবাদটির মধ্য দিয়ে মায়ের অসহায়ত্বের যন্ত্রণাটিই ব্যক্ত হয়ে...