রীনা তালুকদার -এর
একগুচ্ছ রুবাই
১।
ও চোখে তো জল রাখবার পাত্র ছিলো
সুখ নগরে গোলাপ রাঙানো হাসি ছিলো
আঁধার ঠেলে বাতিঘর জুড়ে আলোর ঝলকানি
বৃষ্টি নাচে চোখে মুখে; সে ছবিটা কোথায় হারিয়েছিলো ?
২।
তুমিতো আছোই পাশাপাশি হৃদয়ের বাঁকে
নীতি নিয়মের ফাঁকে ফাঁকে
খুঁজি তবু অমোঘ তৃষ্ণায়
তুমি ? নাকি প্রেম ? খুঁজি কাকে ?
৩।
বিশ্বাসের গাড়ী যাবে কতদূর
সামনে পিছনে মিথ্যে করে তাড়া
দেখা শূন্য শূন্য দূরবীণ দূর
নেই কেউ একা তুমি মনপুর।
৪।
উদাস আকাশ এক পশলা বৃষ্টির ছোট্
মিথ্যের মায়াজালে খেঁকশিয়ালি রোদ
ফাঁদ পেতে শূন্য মাঠে রংধনু দেখায়
বরাহনগরগামী ট্রেন ভুলে ভালে হারিয়েছে বোধ!
৫।
এই হাতটা ষোল’র বাতাসেও দেখেছি
হাতে হাতে জোড়া তালিও দেখেছি
এক আয়নায় এক মুখে বার বার দেখা সুখ, দুঃখ, রাগ
সেই হাতে কার লিপস্টিকের দাগ দেখেছি !
৬।
না আর বলো না ; বিশ্বাস করো
নাও শব্দকে যত পারো টুকরো করো
আমিও শব্দ নির্মাণ কৌশল জানি
বিশ্বাস ভাঙ্গলেও নেই কানাকানি , তুমি কেনো করো !
৭।
যে গল্প শুনি সে তৃতীয় পক্ষের অমাবশ্যা
মনে মনে ভাবছি হয়ত পেলাম রক্ষা
একদিন নির্লজ্জ্য বিশ্বাস ভ্রুকুটি কেটে বলছে
নাটকের শেষ দৃশ্য মঞ্চায়ণ করছো তুমি নিজেই খামোকা।
৮।
অহেতুক বলে যাই অনেক কথা
শুনে যাও চুপ চাপ সয়ে যাও ব্যথা
আইবলের আড়ালে গেলে দূর
জানো কী হয় ? কাঁদে মন বেদনা বিধূরতা।
৯।
এতো কেন পোড়ে হৃদয় মন
রাত বিরাতে অকারণ
তুমি কী ছড়িয়েছো আগ্নেয় কণা ?
ধুমল বৃষ্টিতে ভিজছে বৃন্দাবন।
১০।
হরেক রকম কাজের ভিড়ে
ভুলে থাকা জীবন ঘিরে
পাজর জুড়ে একটি ছবি কার ?
হাতড়ে খুঁজে ভালোবাসা হৃদয় তীরে।
১১।
সোনালী পরশ দুই চোখ
ঘুম নেই বিনীত রাতের মুখ
আইবলে ফটোগ্রাফ মৌমাছি
অনুনয় ; সরিয়ে নাও রংধনু আকাশের বুক।
১২।
কী যেনো নেই শূন্যতার ঘাসফড়িং নেচে বেড়ায় চৌকাঠে
বার বার দরজায় ইয়েল লক নড়ে ওঠে কড়িকাঠে
চমকে যাই বেভুল ভুল থমকে যাই
শুনো কানে কানে ; এত কাছে এসো না নামতা পাঠে।
১৩।
যাই করি না কেন সারাক্ষণ
কেবলই তোমার হবার প্রশিক্ষণ
জোঁকে জোঁকে জড়িয়ে থাকা
বলতো সত্যিই তোমার হতে পেরেছে কি মন ?
১৪।
ঝরো ঝর বৃষ্টির ঝরানি বহুমুত্ররোগ
না দেখা দু:খ করে যায় শোক
জানো তো কে বুকে জড়িয়ে থাকে ?
শ্রাবণের তোমাকে প্লাবনে ভিজিয়ে রাখুক।
No comments:
Post a Comment