Saturday, December 28, 2019
সম্পাদকীয় প্যানেল
পরিতোষ সরকার
বৃষ্টির ওপারে
সন্ধ্যার কপাল বেয়ে বাইরে
আজ তুমুল বৃষ্টি, গভীর
রাতেও বইছে সমতালে।
আর ভিতরে....
আর ভিতরে বইছে অগোছালো
শয্যার উপর যৌবনের মহাঝড়।
তুমি যখন অর্ধ-অচেতন,
আমার মধ্যে তখন উৎসুকের
প্রবল জ্বালা। হাত দুটি আমার
তোমার বুকে, আর তুমি আঁধার
শয্যায় পরে থাকা কাপড়টুকু
মুষ্টিতে গুঁজে সহ্যের সীমা
পার করেই চলছ।
হয়তো এই ভাবেই প্রতিটি নারী
তার যন্ত্রণা লুকায় বৃষ্টির শব্দে
আর অগোছালো শয্যার কাপড়,
প্রতি রাতে।
সংগীতা দেব
সজীব পাল
জানি তুমি একলা ভীষন,একলা এই শহরে,
একলা থাকা মানুষগুলো দুঃখ গুণে রাতপ্রহরে।
ফুল চিনে না,ফল চিনে না নিয়ন বাতির আলোয়,
গাঁদা ফুলের গন্ধ তোমার চুলের ভেতর খানিকও।
তোমার জন্য ক্লান্ত আমি,ঠোঁটের কোণে ঘা যেমন,
মৃত্যু তো বেশ সরল জানি,তবুও ঠিক ভয় করে কেমন!
নেই ঠিকানা সুখ শহরের,বাড়ছে ব্যথার দাম
ব্যস্ত কেমন মানুষগুলো,কমছে মানুষের মান।
তুমি হেসে উঠলে বলে অবাক বৃক্ষের প্রাণ,
যার ভেতরে দুঃখ নদী,এই কেমন হাসির বান?
মোঃ রুবেল
সুব্রত দেববর্মা
অনির্বান রায় গুপ্ত
উৎপল দেবনাথ
দিপ্সী দে
পৌলমী সাহা
পিযুষ রায়
সুজন দেবনাথ
সৈকত মজুমদার
দেবব্রত চক্রবর্তী
রাবণ সাঁজো
মাতৃজঠরে জন্ম নিয়ে ধুলোয় পুড়াই নারীর চিতা ,
আগুন জ্বলুক রাম রাজ্যে লঙ্কায় ও সুরক্ষিত সীতা।
ধর্মের থান গলায় বেঁধে কি লাভ তোর মূর্খ জনতা,
ধর্ম গুলো অন্ধ রে আজ পুড়ছে দেখ ধর্ষিতা।।
মুক্ত মনে আবেগ ছাড়ো
শক্ত হাতে অস্ত্র ধরো
নিজেকে আজ বাঁচার লড়াই
নয়তো এবার বিক্রি করো।
সাঁজতে হবে তোমায় নারী
ঢাকতে হবে বক্ষ খানা
ছাড়ো তো এসব, অনেক হয়েছে
হও তো এবার বীরাঙ্গনা।
দেখতো এবার আসবে কে
বক্ষ চুষে আগুন পোঁড়াতে
রাবন সাঁজো তোমরাই আজ
তোমাদের কে বাঁচাতে।।
গোপাল চন্দ্র দাস
প্রীতম শীল
যারা গড়ে ইমারত
আজ স্বচক্ষে দেখলাম হাজারো শ্রমিক,
বহু কষ্টে সিঁড়ি বেয়ে ইমারত গড়ে!
কিন্তু তাদের কারোই ছাদ নেই,
কলঙ্কহীন মাথার উপরে।
তবুও দিনের পর দিন তারা কষ্ট করে,
হাড় ভাঙা মটমট শব্দে।
দিন শেষে সামান্য মজুরী তবুও শ্রমিক,
সব সয়ে যায় নিঃশব্দে।
কারণ ঘাম ঝরানো টাকায় নেই গরম,
নেই কোনো অহংকার।
শান্ত মনে শ্রমিক তবুও গড়ে,
সুন্দর ইমারতের বাহার।
দেখেছি আমি ষাটোর্ধ্ব বয়সে,
ষাট কিলো ওজন তুলতে।
বছর পনেরো ছেলেটা সেও এসেছিল,
অভাবের জ্বালা ভুলতে।
দেখেছি মা জাতির মেয়েটা শাড়ি না পড়ে,
পুরুষের শার্ট গায়ে জড়িয়েছে।
আসলে টাকা কি সমাজে এতটাই,
প্রয়োজনের গন্ধ ছড়িয়েছে?
আমার তোমার শ্রম যারা কিনছে আজ,
হাটবাজারে অতি সস্তায়।
হাঁড় ভেঙে একদিন চলে যাবো আমি তুমি,
তাতে কার কি আসে যায়।
প্রণব দাস
মা আমি তোমার অভি বলছি
তোমার কথা আজ বড্ড মনে পড়ছে
তাই একখানা চিঠি না লিখে পারলাম না,
তোমরা নিশ্চয়ই খুব ভালো আছো?
হ্যা আমিও ভালো আছি,,
শুধুই যে ভালো বলার জন্যে
বলতে মাগো খুব কষ্ট হয়,
আজ শুধুই তোমার কথা মনে পড়ছে,
সব ঠিকই চলছে কিন্তু ঘুমাতে গেলেই তোমার গল্পের কথা মনে পড়ে;
হ্যা মা তোমার অভি এখন একাই ঘুমাতে জানে
তোমার ছোট্ট অভি এখন খুব বড় হয়ে গেছে
তুমি কোনো চিন্তা করো না মা
তোমার অভি চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ে।।
সাথে কেউ থাকুক কিংবা না থাকুক চোখের অশ্রু ঠিকই থাকে।
তোমাদের ছাড়া সেই অশ্রুই আমার ঘুমের সাথী।।
তা কে আর দেখবো!?
কেউ তো এসে আর জিগ্গেস করবে না,
অভি ঘুমিয়েছিস কিনা??
তোমার সেই ডাক সেই কন্ঠস্বর ঘুমাতে এলেই কানে বেজে উঠে;
তবুও ঘুমিয়ে পড়ি একা একা।।
মনে পড়ে,
সেই দিনগুলোর কথা
ছোটবেলায় যখন চোখে ঘুম আসতো না তোমার কন্ঠে সেই ঘুম পাড়ানি মাসি পিসির গানটা
তোমার মনে আছে কিনা জানিনা মা,,
কিন্তু সেই আওয়াজ আজও আমার কানে বেজে উঠে
হ্যা মা হ্যা তোমার অভি খুব বড় হয়ে গেছে একাই কলেজে যায়,
নিজে বানিয়ে টিফিন খায় কিন্তু তোমার হাতের স্বাদ জিহ্ব থেকে যেন যেতে চায় না,
সময়ে তাগিদে খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি,
পড়াশোনা!!পড়াশোনা!! পড়াশোনা!!
সামনেই সেমেষ্টার এক্সজাম
অনেক চাপ।
আমি এখন খুব সিরিয়াস
তা তুমি হয়তো জানবে না!?
ছেলে আগরতলায় পড়ে তুমিও হয়তো গর্ব করো।।
কাছে থেকেও দূরে তুমিও
কিন্তু অন্তরেতে অনেক কাছে যে তুমি মা,,,
তোমায় ছাড়া সত্যি ঘুম আসে না।
সকালে উঠেই কলেজ টিউশন আর ভালো লাগে না ।।
কিন্তু প্রশ্ন একটাই জাগে
ভবিষ্যত!!
তুমি একদমই চিন্তা করো না মা,,
তোমার অভি সব পারবে
দেখে নিও,,,
অনেক কথাই বলার ছিল সব তো আর বলা হয়ে উঠে না,,
তবে তা থাক
অন্য কোনোদিন নাহয় বলবো
হ্যা আরেকটি কথা বলার আছে-
বাবার খেয়াল রেখো,,
পঙ্কজকে বলো ভালো করে পড়াশোনা করতে
পড়াশোনার যা ডিমান্ড এখন
শুধুই কম্পিটিশান
অনেক বলে ফেলেছি
ফোনে বলা সম্ভব হয়নি বলে চিঠি লিখলাম
তুমি যে আমার জননী
হ্যা তবে নিজের খেয়াল রেখো
তবেই দেখবে তোমার অভি
খুব ভালো থাকবে খুশি থাকবে
হাসি মুখে থেকো
হাসি মুখ রেখো
ইতি তোমার অভি।।
গৌরাঙ্গ রক্ষিত
সৈকত সরকার
না হলাম রবীন্দ্রনাথ, না হলাম রোদ্দুর।
না হলাম রবীন্দ্রনাথ
না হলাম রোদ্দুর
ভগা জানে কদিন দৌড়াবো,দৌড়াবো আর কদ্দুর ।
না হলাম দুঁদে বুদ্ধিজীবী
না হলাম শুদ্ধ গান্ডু
আমি উলঙ্গ রাজার সেই শিশুটা নির্ভয়ে ভাঙ্গি ফান্ডু ।
না হলাম ক্লাসের ফাস্ট বয়
না হলাম ব্যাকব্যাঞ্চার পুরো
আমাতে আমি জম্পেশ ভিলেন, আমাতে আমি হিরো।
পূজা মজুমদার
শুধুই আমি
দুনিয়ার ভাগাদরিতে তুমি যখন উলঝিয়ে থাকবে.....
তখন আমায় পাশে ডেকে নিও
যেনো তোমার কাঁধে শুধুই আমি... শুধুই আমি। সময় যখন অপেক্ষার হবে কিছু এমনভাবে অপেক্ষা করবে যেখানে শুধুই আমিই আছি..... যেখানে শুধুই আমিই আছি।
যদি ভিজতে না পারি তোমার সঙ্গে বাইরের বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে আমায় তোমার মনে মিলিয়ে নিও.... দেখবে আমিও ভিজছি তোমার সাথে।
সময় যখন অপেক্ষার হবে কিছু এমন ভাবে
তখন পাশে শুধুই আমিই....
তখন পাশে শুধুই আমিই।
যদি আমি ভেঙ্গে পড়ি সময়ের সাথে লড়তে লড়তে
কিছুটা এমনভাবে সামলে নিও
যেনো তোমারই ভরসা
শুধুই আমি...শুধুই আমি।
সময় যখন অপেক্ষার হবে
কিছুটা এভাবে অপেক্ষা করবে
যেখানে শুধু তোমার জন্য
আমিই.... শুধুই আমি।
দুনিয়ার ভেজাল রং-এ যদি আমি বেরং মনে হই তোমায়.... তখন!
ভাববে না আমি নেই,
তোমার রঙিন দুনিয়া.... শুধুই আমি শুধুই আমি।
গোবিন্দ ধর
বিজন বোস
অনিচ্ছায় ঢুকে গেছি বদ্ধ ঝিনুকে
নিমেষে গলিত লাভা
গরল বিনাশী অমৃতময় তরল পানীয় ।
রাইফেল থেকে আসছে গোলাপ ,
নষ্ট ফুলের দুষ্ট কীট
শুভ্রতার প্রতীক হতে
প্রতিযোগিতায় সামিল .. .
সে তোমার প্রেম স্পর্শ ।
একদিন মনু নদীর তীরে
দেখেছি হিংসার জমকালো রিহার্সাল ,
সংঘ আগ্নেয়াস্ত্র তীব্র মতবাদ
গ্রীবা চেপে ধরেছিল
তবু বাঁচার দুরন্ত ইচ্ছে জেগেছিল মনে
যাইনি আত্মহত্যায় ,
শুনেছি দেশমাতার উদাত্ত আহ্বান ,
পরক্ষনেই বুঝেছি কেটে যাবে এই ভয়ার্ত রজনী
আগত আনন্দ নিখিল জীবনের
গাঢ় আলিঙ্গন সুবাতাস আর অমল নিঃশ্বাস ।
Saturday, November 23, 2019
সম্পাদকীয় প্যানেল
দীপক দাস
সংগীতা শীল
বিনয় শীল
অভীককুমার দে
দুলাল চক্রবর্তী
বিজন বোস
রাষ্ট্র যখন বর্গী হয়
লুটের উৎসব জমজমাট
মেধা বিক্রির মহামেলা
সমাজব্যাপী মত্সনায় ।
পূব আকাশে সোনালী সূর্য
থমকে দাঁড়ায়
মাটি ও মানুষের হৃদপিন্ড ছেঁড়া
চিত্কার শুনে ,
গন্ধশুঁকো শিকারী কুকুর সোল্লাসে
বিজয় পটকার প্রতিযোগিতা বসায়
আর লণ্ডভণ্ড করে মানুষের স্বপ্নের বাগান।
ওদিকে ক্লান্ত প্রত্ননগরীর রক্ত আর ঘামে
স্বপ্নকে বন্ধক রেখেও
এগিয়ে যেতে চায় যে কিশোর
তাকেও রেহাই দেয়না রাষ্ট্রের লান্পট্য ক্রোধ ।
বুকের রক্তে আর কত গল্প হবে
উন্মত্ত হস্তীর লুণ্ঠন আর কত সইবে দেশ ?
মাটিকে মাতৃজ্ঞানে পূজো করা
বুড়ো দুলাল তাঁতির
স্বখেদ প্রশ্ন
আমরাতো যুদ্ধপরাধী নই--
তবু কেন পচে মরছি ডিটেনশন ক্যান্পে ?
সংগীতা দেব
অনুপম দেব
বাবুইর প্রেম
পক্ষীদেশে আছিলো সুন্দরী একটা ময়না
ওই দেশেরই এক বাবুইর মনে ওই ময়নার লাইগ্গা প্রেমের আনাগুনা,
গুন্ডা কাক যে ময়নার দাদা জানতো ইডা বাবুই
এখন শুনি কি কয় এই প্রেমপাগলা মশাই,
একদিন ময়নার কাছে বাবুই পাখি কানে কানে কয়
চল নীল গগনে উইড়া বেড়াই কিয়ের এতো ভয়?
ময়না তখন কয় বাবুইরে জানস না তুই গাঁধা!
দেখতা পারলে মাইরা লাইবো কাক আমার দাদা,
বাবুল তাতে কি, আমি ইতা ডরাই না
তুমি আমার সঙ্গে থাকলে এইসবে কিছু যায় আয়ে না,
ময়না বলে দাদা আমার বড় গুন্ডা, লম্বা তার ঠোট,
একটা তর ঘাড়ে দিলে হইবি প্রেম ছাইড়া ফুড়ুৎI
সুজন দেবনাথ
যদি পারো তো বড় ব্যথা দাও
যদি পারো তো বড় ব্যথা দাও
যদি ব্যথার মতো ব্যথা দিতেই না পারো
তবে ব্যথা দিও না
ছোট খাটো ব্যথা না চাইতেই মেলে
পথে ঘাটে হাটে মাঠে
যদি পারো তো বড় ব্যথা দাও
যে ব্যথায় আমি অভ্যস্ত নই
আমায় এমন ব্যথা দাও
যে ব্যথায় আমি চূর্ণ বিচূর্ণ হবো
ক্ষত বিক্ষত হবো
হতে হতে একদিন মিশে যাবো
কৃষ্ণ মেঘে,
মিশে যাবো কালের অতলে
মিশে যাবো মহাকালের অসীম শূন্যতায়
আমি হারিয়ে যেতে চাই পৃথিবীর বুক থেকে
ভালোবাসা আর চাইব না
কোনোদিনও না
ভালোবাসায় এখন বদ হজম হয়
আসলে ভালবাসার চাইতে এখন
ব্যথায় ভালো লাগে
মৌ মন্ডল (গাঙ্গুলী)
দিপ্সী দে
অনুপম রায়
চব্বিশ ঘন্টার পাঁচ তারা
যদি আলো ভাঙা ভোরে, কেউ ডাকে বারেবারে
আসবো আমি তারই খোঁজে বিশ্ব হৃদয় জুড়ে;
যদি সূর্য্যিমামা ঠিক দুপুরে চোখ রাঙিয়ে দেখে,
বটের ছায়া নিয়ে যাব পথের আঁকেবাঁকে ;
যদি বিকেলগুলো সময় করে আড্ডা দিতে আসে,
পাখির ঝাঁকে আসবো আমি জমবে অবশেষে;
যদি তুলসীতলে প্রদীপ জ্বলে সন্ধ্যা নামার পরে,
পাখি,পথিক,রাখাল,আমি ফিরব ঘরে ঘরে;
যদি বিভোর নেশার স্বপ্নগুলো রাতের দেশে যায়,
আমি অবুঝ মশাল হাতে আলোর হাত বাড়ায়।
উৎপল দেবনাথ
সজীব পাল
নারীর ভিতর থেকে শকুনের মতো খাদ্য খুঁজেছি,
এই পৃথিবীর একটা সমুদ্র ডিঙাবো বলে।
কেউ শব্দে কেউ নিঃশব্দে
অথবা কেউ আঙুল দেখিয়ে বলেছে,
"একে নির্বাসন দাও এই নারীভোগী।"
জানি কখনো কখনো মহামানব
নীরবে উচ্ছন্নে যায় ।
এইটা তো তার দোষ নয়!
তার ভীতরে গড়ে ওঠা পাথরের সংঘর্ষ ।
এই যে স্ফীত যৌবনের কঠিন জ্বালা ।
একমাত্র পুরুষের ভিতর সৃষ্টি হওয়া
কবিই জানে 'নারী পুরুষের 'মধুর সম্পর্ক ।
কত নারী হেঁটে গেছে-
কত যুগ যুগ ধরে পুরুষের হৃদয় ছুঁয়ে,
তবুও একবিন্দু স্পর্শের ক্ষুধা মিটে না।
তাই নারীর ভিতর খুঁজে যাই সুখ, সুখ এবং সুখ।
মুকিম মাহমুদ মুকিত
সেই শিশির ভেজা ঘাসে,
ভিজে যাক পা ;
জমে থাকুক মাথার এলোকেশে
কুয়াশার বিচ্ছিন্ন শুভ্র কণা।
আবার প্রতিক্ষায় চেয়ে থাকা হোক পথ
যেমতি থাকে শীতার্ত ভোরে
শিডিউল হারানো সূর্যের আকাঙ্খা ;
অপূর্ণতায় লেগে যাক পূর্ণতার ঘুম।
অথবা আকুতি থাকুক নওল ঊষার কাছে
একটু ধীরে চলবার।
গোধূলি লগ্নে নীলাম্বুধির পারে
আরও একবার হয়ে যাক,
শীতনিদ্রার অব্যর্থ আয়োজন।
চোখের পাতা ঝাপসা হয়ে ভিজুক
ঘন কুয়াশায় মিলিয়ে যাক পথ,
হীম শীতে বাধ্য হয়ে বন্ধ হোক
প্রকৃতি বিমুখ রথ।
সৈকত সরকার
স্বাধীনতার সূর্য লাল।
সময় নেই
এখন চাঁদ দেখার!
ভাতের বড্ড আকাল!!
ক্ষুদার্ত শিশু আধমরা হয়ে আছে,
কিন্তু
ওরা ব্যাস্ত ভন্ডামি তে,
ওরা ব্যাস্ত গদি দখলে।
ওদের কান নেই, হৃদয় নেই,ঈমান নেই,
বিবেক রঙ কাগজে বিকিয়ে গেছে।
ওরা সন্ধ্যায় চাঁদ খুজে
আমি খুঁজি রাস্তার বুকে একটুকরো পাথর,
আকাশের চাঁদ অপেক্ষা
রাস্তার পাথর আমার অধিক প্রিয়,
কারণ-
শোষণের বিরুদ্ধে শোষিত যখন তা তুলে নেয়,
বিপ্লবের আগুন অমাবস্যা জ্বালায়,
একরাশ ছাইয়ের পাহাড় ভেদ করে
জন্ম নেয় এক নতুন সকাল,
পুর্ব দিগন্তে সালাম দেয়
স্বাধীনতার সূর্য লাল।
সুস্মিতা সিংহ
সুব্রত দেববর্মা
পূজা মুজমদার
ঋতুর অ'সুখ
আমি যে শয্যাশায়ী ঋতুর ব্যথায়,
চোখের বর্ন হলো ফ্যাকাসে হায়!
আমি চুপ করে সয়ে যাই সব...
সাতটা দিন........
সে কি কম যন্ত্রনার??
আমার মুখ দিয়ে যে আজ আওয়াজ থেমে থেমে
আসে বারবার...
কারন ঋতু চলছে আমার।
ব্যথায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েছি কয়েরবার।
তবে এসকলের ভিরে না আমায় সুন্দর দেখাচ্ছে...
কচি শিশুর চেহারাটা যেমন
ঠিক তেমনই দেখাচ্ছে....
ঋতুকালীন সময়ে কাছাকাছি যদি কখনও হও
তবে মন ভরে আমার ওই মুখমন্ডলখানা তোমার চোখের পলকে চুমিও।
প্রীতম শীল
কাঁদো মাগো কাঁদো
বড়ই কৌতূহল জাগে মা,
কোথায় পাও এত সহিষ্ণুতা।
মৌন ভাবে কিভাবে থাকো মা,
কি শক্তি দিলো তোমায় বিধাতা।
আমরা যখন জ্বালিয়ে মারি তোমায়,
কেমনে হাসি মুখে থাক তুমি?
কেন তোমার কান্না পায় মাগো,
যখন খাবার খাইনা আমি?
তুমি যখন অনাহারী মাগো,
কান্না আমার কেন পায়না?
আড়ালে যখন কাঁদো মাগো,
কষ্ট কি তোমার হয়না?
যে সন্তান লালন করো তুমি,
আমরা কি যোগ্য তার।
হাসি মুখে সব সয়ে যাও মাগো,
একি তোমার মহান বিচার।
কাঁদো মাগো কাঁদো তুমি,
প্রসব ব্যাথার কালে।
জীবন ভর কাঁদো তুমি মাগো,
লোকের চোখের আড়ালে।
চৈতন্য ফকির
সামিন শুভ
Sunday, October 6, 2019
সম্পাদকীয় পাতা
এর আগে মনন স্রোত এত কম সংখ্যক লেখা নিয়ে প্রকাশিত হয়নি! ধারাবাহিকতার একটা বিড়ম্বনার দিক হলো এর থেকে বেরিয়ে আসা যায় না। বিজ্ঞপ্তিতে আমরা শারদীয়ার জন্য লেখা চেয়েছিলাম। অজানা কারণে প্রচুর ধারাবাহিক লেখা আমাদের কাছে এসেছে। এই সংখ্যায় পুজোর লেখা বাছাই করা খুবই কষ্টকর ছিলো। একটা ধারাবাহিক সংখ্যাকে শারদীয়ার সংখ্যায় পরিণত করার মতো কাজ আসলে খুব একটা সহজ নয়। যাইহোক যারা এই সংখ্যায় লিখেছেন এবং যাদের লেখা আমরা এই সংখ্যায় প্রকাশ করতে পারিনি সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
ছোট হলেও এই সংখ্যায় যতটা সম্ভব গুণগতমান ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। বিচার করার দায়িত্ব পাঠকের। সবশেষে মনন স্রোতকে তার সামাজিক দায়িত্ব পালনে আপনার এভাবেই সহযোগীতা করবেন এই আশা ব্যক্ত করে কথা বলার ইতি টানছি।
শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা-সহ
অষ্টমী বৈষ্ণব
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদিকা
শারদীয়া || মনন স্রোত
শর্মিষ্ঠা চৌধুরী
সূর্যমুখী
বামুনের মেয়ে, রোজ নাইতে যাবেই যাবে বড় দীঘির ঘাটে।
অন্ধকারে পথ ঠাওরে, সূর্য উঠার আগে।
সূর্যের প্রথম কিরণ চাই তার ভিজে কাপড়ে ভিজে শরীরে ।
পাল্টাতে পারেনি কেউ আজ অবধি সেই আর্য কন্যার ব্রত।
শীত গ্রীষ্ম বারোমাস।
তারপর সূর্য মন্ত্র জপ-- ওম জবাকুসুমং--
কে যেন কানে ঢেলে দিয়েছিলো সূর্য প্রনামের নিয়ম।
ক্রমে সেই পুজা, প্রেমে পরিনত।
সুর্য স্তবে সূর্য তুষ্ট।
হতে তো হবেই --
একদিন রথে করে নেমে এলো সূর্য।
আধা ভিজে শরীরে চোখ বন্ধ একমনে সূর্য মন্ত্র জপ --
হঠাত জলদগম্ভীর সেই আওয়াজ।
কি চাও মেয়ে!
কেন আমারে কর বিচলিত!
সূর্য কনার মতো ঠিকরে পড়া রঙ নিয়ে ক্ষণিক বিস্মিত ক্ষণিক বিহ্বল মেয়ে ।
উঠলো বলে- তোমাকে চাই--
পতি হও, প্রেমিক হও--
আঁতকে সূর্য উঠলো বলে-
ওকি কথা!!
আমি যে দেবতারে!!
দেবতা আর মানুষের মিলন কি সম্ভব কখোনো! অন্য বর চাও--
কাঁদলো মেয়ে কাটলো মেয়ে।
তবুও অনড় নিজ কথা খানিতে।
--পায়ে পড়ি ,কথা শোন বাড়াও হাত প্রভু। আমি যে তোমার প্রেয়সী প্রেমের পিয়াসি।
নইলে-- নইলে করবো এ দেহ ত্যাগ তোমার সামনে। অভিশাপ আর অভিযোগে ছিন্ন ভিন্ন হবে। পৃথিবী হবে আলোক বঞ্চিত।
ধ্বংস হবে সৃষ্টি।
--না না মেয়ে ওকি কথা!!
সৃষ্টির মূল্য বোঝ। নইলে তুমি যে পাপিষ্ঠা হবে।
তবুও নাছোড় মেয়ে।
শেষে সূর্য বলল--
তাহলে দাঁড়াও এখানে,-- যাবেনা কোথাও। আমি গিয়ে আসি পৃথিবীর চারিদিকে। যাবার সময়ে নিয়ে যাবো সাথে করে।
বলে সূর্য চলে গেলো আর এলোনা।
মেয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে একমনে, সূর্য স্তবে, সূর্যের আশায়।
দিন যায় রাত যায়।
কেউ তাকে নাড়াতে পারেনা।
ক্রমে মৃত্যু আসে নিয়ে যেতে তাকে।
তার ও চোখে আসে জল।
নিরুপায় তবু মরন সাথি হয়।
কিছু দিন পরে সেই স্থানে দুটি পাতা দিয়ে একটি কুঁড়ি দেখা দেয়।
বড় হয় সেই গাছ।
কলি দেখা যায় গায়ে-
ফুল ফোটে অপরূপ হলদে বরন যেনো মেয়েটার রঙ।
চেয়ে থাকে সে ফুল সূর্যের দিকে ।
হেলে পড়ে সূর্য, ফুল ও পড়ে হেলে।
দিন কাটে দিন ঢলে সূর্যের পানে চেয়ে।
যেনো আজও আছে বামুনের মেয়ে সূর্যের আশে।
সে ফুল দেখে লোকে ,দেখে সবাই, দেখে সূর্য নিঠুর।
ক্রমে তার নাম পড়ে' সূর্যমুখী'।
আজও যে ফোঁটে সূর্যের আশে তার পানে চেয়ে--
শর্মিষ্ঠা চৌধুরী
সূর্যমুখী
বামুনের মেয়ে, রোজ নাইতে যাবেই যাবে বড় দীঘির ঘাটে।
অন্ধকারে পথ ঠাওরে, সূর্য উঠার আগে।
সূর্যের প্রথম কিরণ চাই তার ভিজে কাপড়ে ভিজে শরীরে ।
পাল্টাতে পারেনি কেউ আজ অবধি সেই আর্য কন্যার ব্রত।
শীত গ্রীষ্ম বারোমাস।
তারপর সূর্য মন্ত্র জপ-- ওম জবাকুসুমং--
কে যেন কানে ঢেলে দিয়েছিলো সূর্য প্রনামের নিয়ম।
ক্রমে সেই পুজা, প্রেমে পরিনত।
সুর্য স্তবে সূর্য তুষ্ট।
হতে তো হবেই --
একদিন রথে করে নেমে এলো সূর্য।
আধা ভিজে শরীরে চোখ বন্ধ একমনে সূর্য মন্ত্র জপ --
হঠাত জলদগম্ভীর সেই আওয়াজ।
কি চাও মেয়ে!
কেন আমারে কর বিচলিত!
সূর্য কনার মতো ঠিকরে পড়া রঙ নিয়ে ক্ষণিক বিস্মিত ক্ষণিক বিহ্বল মেয়ে ।
উঠলো বলে- তোমাকে চাই--
পতি হও, প্রেমিক হও--
আঁতকে সূর্য উঠলো বলে-
ওকি কথা!!
আমি যে দেবতারে!!
দেবতা আর মানুষের মিলন কি সম্ভব কখোনো! অন্য বর চাও--
কাঁদলো মেয়ে কাটলো মেয়ে।
তবুও অনড় নিজ কথা খানিতে।
--পায়ে পড়ি ,কথা শোন বাড়াও হাত প্রভু। আমি যে তোমার প্রেয়সী প্রেমের পিয়াসি।
নইলে-- নইলে করবো এ দেহ ত্যাগ তোমার সামনে। অভিশাপ আর অভিযোগে ছিন্ন ভিন্ন হবে। পৃথিবী হবে আলোক বঞ্চিত।
ধ্বংস হবে সৃষ্টি।
--না না মেয়ে ওকি কথা!!
সৃষ্টির মূল্য বোঝ। নইলে তুমি যে পাপিষ্ঠা হবে।
তবুও নাছোড় মেয়ে।
শেষে সূর্য বলল--
তাহলে দাঁড়াও এখানে,-- যাবেনা কোথাও। আমি গিয়ে আসি পৃথিবীর চারিদিকে। যাবার সময়ে নিয়ে যাবো সাথে করে।
বলে সূর্য চলে গেলো আর এলোনা।
মেয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে একমনে, সূর্য স্তবে, সূর্যের আশায়।
দিন যায় রাত যায়।
কেউ তাকে নাড়াতে পারেনা।
ক্রমে মৃত্যু আসে নিয়ে যেতে তাকে।
তার ও চোখে আসে জল।
নিরুপায় তবু মরন সাথি হয়।
কিছু দিন পরে সেই স্থানে দুটি পাতা দিয়ে একটি কুঁড়ি দেখা দেয়।
বড় হয় সেই গাছ।
কলি দেখা যায় গায়ে-
ফুল ফোটে অপরূপ হলদে বরন যেনো মেয়েটার রঙ।
চেয়ে থাকে সে ফুল সূর্যের দিকে ।
হেলে পড়ে সূর্য, ফুল ও পড়ে হেলে।
দিন কাটে দিন ঢলে সূর্যের পানে চেয়ে।
যেনো আজও আছে বামুনের মেয়ে সূর্যের আশে।
সে ফুল দেখে লোকে ,দেখে সবাই, দেখে সূর্য নিঠুর।
ক্রমে তার নাম পড়ে' সূর্যমুখী'।
আজও যে ফোঁটে সূর্যের আশে তার পানে চেয়ে--
অর্পিতা আচার্য
আগমনী
অনেক দূরের গন্ধ লেগে থাকে
তোমার আকাশ বার্তায়
সাদা মেঘের ফেনায়িত ধূম্রজালে ভর দিয়ে
ভোরের ভৈরবী পাঠিয়ে দাও মুঠো ভরে
রাত্রির প্রসব বেদনাক্লান্ত ঝিনুক-গহ্বরে
তারা কিছু মুক্তো বোনে
এই যে আজ রাত ভর জানালায় জাগবে
একটি ম্লান গাছের ডাল ,
সেই ডালে একটি চুপ পাখি , ভীতু পাখি
অন্ধকারের বুনোটে তিরতির কাঁপছে তার
ধূসর ছোট্ট বুক
তারও তো মননে শরৎ ভোর , ডানায় সমুদ্রস্বন
পাঠিয়ে দিয়েছ গুচ্ছ শিউলি সকাল
ইথার তরঙ্গে
পাঠিয়ে দিয়েছ মেঘ ছেঁড়া ছেঁড়া , ঝুলবারান্দায়
বিমগ্ন রাত্রি জুড়ে কালো ক্যানভাসে
বুলিয়ে শুভ্র তুলি আঁকবো তাকে
আমার এই দ্রবীভূত হৃদয় আকাশে
শৌভিক বাগচী
হীরামনি মাহাতো
হীরামনি রাত্রি দিয়ে গা ঘষে , জ্যোৎস্না দিয়ে ধোয় |তার তৈলচিক্কন চুলে অমানিশার পূজা হয় | গায়ে বিদ্যুৎ চমকে ওঠে | চোখে জল আসলে ঘোর শ্রাবণে বৈষ্ণব মহাজন পদাবলী আঁকে| হাসলে রতি হিংসে করে|
হীরামনি এর মরদ দাঁতাল | রোজ নিজের বিবমিষার মধ্যে নগ্নতাকে সহ্য করে হীরামনি শুধু কোল ভরার আশায় | আবশ্যিক কর্ম শেষে মরদ ঘুমায় আর হীরামনি নদীর ধারে আসে | রাত্রি তার প্রসাধন , জ্যোৎস্না তার রূপটান | হীরামনি নদীতে নামে | বোঝে সে নামলেই নদীটা মরদ হয়ে যায় | নদীর জল তার স্তন ছোঁয় | হীরামনি শীৎকার করে | তার নগ্নতার প্রতিটা বিন্দু তে জলকণার ফেনায়িত আবেগে সে শোনে মায়ি মায়ি ডাক | হীরামতি বলে , তুর মতো বেটা হোক বটেক |
দিন যায় , মাস যায় | হীরামনি গর্ভবতী হয় | উদর স্ফীত হয় , স্বপ্নও স্ফীত হতে থাকে , ঠিক যেমন করে অনাগত কাল নিয়ে স্ফীত আশায় মানুষের মন স্বাস্থ্যবতী হয় | কিন্তু সব আশাই কি আর অমৃত দেয় ? অমৃতের পশ্চাতে থাকে দুরন্ত হলাহল | কখন যে কাকে সে নীলে নীল করে দেবে সে বুড়ো বাবা র ও অজানা | বুড়ো বাবার থানে মানত করেও শেষ রক্ষা হলো না | হীরামনি মৃত সন্তান প্রসব করলো |
অমন পাহাড়ি ঝর্ণা হীরামনি , কবির কাব্য যেন শুকিয়ে নিরস গদ্য হয়ে গেলো | হীরামনির সব রাগ গিয়ে পড়লো নদীটার ওপর | সেদিন রাতে চোখে শ্রাবণ নিয়ে সে দাঁড়ালো নদীর ধারে | সব খুলে নিরাভরণ সে ঝাঁপিয়ে পড়লো নদীর বুকে | তীব্র আক্রোশে জল এ আঘাত করতে করতে বললো , কেনে নাই দিলি , বল তুই , নে নে আমার সব নে তু | নদী খল খল করে উঠলো | পূর্ণিমায় জলের টান ছিল বেশি | পাড়ে ওঠার চেষ্টাই করলো না হীরামনি | ভেসে যেতে লাগলো কোনো এক অনির্দেশ্য ভবিষ্যতের দিকে | আর কেবলি জলস্রোতে শুনতে লাগলো ডাক , মায়ি মায়ি
মিঠুন দেবনাথ
মা , তুই কার !
গল্পের এক চরিত্রে কেউ কবিতায় , কেউ গানে , কেউ ছন্দে , কেউ নৃত্যে বা কেউ আড়ম্ভর স্বাচ্ছ্যন্দে যে যেভাবে পারছে তোকে বরণ করছে | আবার অন্যচরিত্রে কেউ চোখের জলে , কেউ ভ্রুন হত্যা করে , কেউ জীবন বলি দিয়ে , কেউ শরীর বিক্রি করে , কেউ লালসার শিকার হয়ে যে যেভাবে পারছে তোকে বরণ করছে |
—আসলে দূর্গা তুই কেমন ? কী তোর চাহিদা ? কেন আসিস বছর বছর ? পাপের ধ্বংস করে অধর্ম বিনাশে পালক-সংহারক হিসাবে আসিস নাকি দুঃখ জর্জরিত মানব সমাজকে হিংস্রতার চরমতম পর্যায়ে নিয়ে যেতে আসিস !
শুনলাম তুই নাকি মা শক্তিমাতা ? তবে কোথায় তোর শক্তি ? ও , তুই বুঝি মহিষাসুর মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে গেছিস , তাই আজ মানবাসুরের এত বাড়বাড়ন্ত ? কেন , তোর ত্রিশুল কি ভোঁতা হয়ে গেছে ? নাকি তোর তৃতীয় চোখ অন্ধ হয়ে গেছে ? যদি অন্ধ না ই হয়ে থাকে তবে যারা দিনে দুপুরে কিংবা রাতের অন্ধকারে তোকে কামড়ে হিঁচড়ে খায় , রক্তাক্ত করে তোর আঁচল , তারা কেন তোর অঞ্জলি দেয় ? কেন নিস্ তাদের অঞ্জলি ? তাদের কে কি চিনতে পারিস না তুই ? তোর ত্রিঁশুলে এক খোঁচায় কেন এইসব মানবাসুরদের হৃদপিন্ডটা ছিন্নভিন্ন করে দিতে পারিস না ?
তবে কোথায় ভয় তোর ! কেন দ্বিচারিচতা ? নাকি আজকাল আমাদের অফিসের বাবুদের মতো তুইও ঘুষ খাওয়া শিখে গেছিস ! আকাশ ছোঁয়া উঁচু উঁচু প্যন্ডেল , বড় বড় সোনার গয়না এসব দেখে তুইও বুঝি লোভ সামলাতে পারিস না ! শত পাপ করেও মোটা টাকা চাঁদা দিয়ে দিলে আজ বুঝি তুইও খুব খুশি হয়ে যাস ... তাই না মা !
আসলে জানিস মা , যখন দেখি টাকার অভাবে উপযুক্ত চাঁদা দিতে পারিনি বলে প্যান্ডেলের বাবুরা ভর্ৎসনা করেন তখন একটু একটু কষ্ট হয় | কিন্তু কাউকে বলি না ! কেন বলি না জানিস মা , মাত্র তিনদিনের জন্য তুই আসিস , তাই তোর যখন তৃতীয় নয়ন অন্ধ সেখানে আমার দুঃখের কথা তোকে কী আর বলব , তুই তো অতিথি ! তোর এখন আর আমায় দেখার বা কষ্ট অনুভব করার হৃদয় বা চোখ কোনোটাই নেই | যদি থাকত , তাহলে আমার লক্ষীটাও একটা জামা কিনতে পারত , আমার গনেশ-কার্তিকরাও একটা প্যান্ট কিনতে পারত ! তাই আমার নিষ্ঠুর হৃদয়ে আক্ষেপের সহিত একটা কথাই বার বার উঁকি মারে..
'মা , তুই কার !'
—তবে , জবাব চাইনি , ইচ্ছে হলে বলে যাস্...
উর্মি সাহা
মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...
-
আজ আশ্বিনের শেষ কার্তিকের শুরু এই দিনটা বিশেষ ভাবে বিশেষ, বাংলার এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে। জানি না বাংলার বাইরেও এইভাবে বিশেষ হয়ে উঠেছে কিন...
-
মূক ফেনীর মুখর পাঁচালি একটি বহুল প্রচারিত বাংলা প্রবাদ ‘ভাগের মা গঙ্গা পায়না’ ৷ প্রবাদটির মধ্য দিয়ে মায়ের অসহায়ত্বের যন্ত্রণাটিই ব্যক্ত হয়ে...