Sunday, October 6, 2019

শৌভিক বাগচী

হীরামনি মাহাতো

হীরামনি রাত্রি দিয়ে গা ঘষে , জ্যোৎস্না দিয়ে ধোয় |তার তৈলচিক্কন চুলে অমানিশার পূজা হয় | গায়ে বিদ্যুৎ চমকে ওঠে | চোখে জল আসলে ঘোর  শ্রাবণে বৈষ্ণব মহাজন পদাবলী আঁকে|  হাসলে রতি   হিংসে করে|

হীরামনি এর মরদ দাঁতাল  | রোজ নিজের বিবমিষার মধ্যে নগ্নতাকে সহ্য করে হীরামনি শুধু কোল  ভরার আশায় | আবশ্যিক কর্ম শেষে মরদ ঘুমায় আর হীরামনি নদীর ধারে আসে | রাত্রি তার প্রসাধন , জ্যোৎস্না  তার রূপটান | হীরামনি নদীতে নামে  | বোঝে সে নামলেই নদীটা মরদ হয়ে যায় | নদীর জল তার স্তন ছোঁয় | হীরামনি শীৎকার করে |  তার নগ্নতার প্রতিটা বিন্দু তে জলকণার ফেনায়িত আবেগে সে শোনে মায়ি মায়ি ডাক | হীরামতি বলে , তুর মতো  বেটা হোক বটেক |

দিন যায় , মাস যায় | হীরামনি  গর্ভবতী হয় |  উদর স্ফীত হয় , স্বপ্নও স্ফীত হতে থাকে , ঠিক যেমন করে অনাগত কাল নিয়ে স্ফীত আশায় মানুষের মন স্বাস্থ্যবতী হয় | কিন্তু সব আশাই কি আর অমৃত দেয় ? অমৃতের পশ্চাতে থাকে দুরন্ত হলাহল |  কখন যে কাকে সে নীলে নীল করে দেবে সে বুড়ো বাবা র ও অজানা |  বুড়ো বাবার থানে মানত করেও শেষ রক্ষা হলো না | হীরামনি মৃত সন্তান প্রসব করলো |

অমন পাহাড়ি ঝর্ণা হীরামনি , কবির কাব্য যেন শুকিয়ে নিরস গদ্য হয়ে গেলো | হীরামনির সব রাগ গিয়ে পড়লো নদীটার ওপর | সেদিন রাতে চোখে শ্রাবণ নিয়ে সে দাঁড়ালো নদীর ধারে | সব খুলে নিরাভরণ সে ঝাঁপিয়ে পড়লো নদীর বুকে | তীব্র আক্রোশে জল এ আঘাত করতে করতে বললো , কেনে নাই দিলি , বল তুই , নে নে  আমার সব নে   তু  | নদী খল খল করে উঠলো | পূর্ণিমায় জলের টান ছিল বেশি | পাড়ে ওঠার চেষ্টাই করলো না হীরামনি | ভেসে যেতে লাগলো কোনো এক অনির্দেশ্য ভবিষ্যতের দিকে | আর কেবলি জলস্রোতে শুনতে লাগলো ডাক , মায়ি মায়ি

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...