জীবন থেকে ধার নেওয়া
তুমিই তো বলেছিলে, "ভাবো। স্বপ্ন দেখো। স্বপ্নই যদি না দেখলে - তবে গড়বে কী করে ?"
ব্যস্ , সেই রাতেই ছেড়ে দিলাম মনখারাপি।
স্বপ্নকে পুজো করলাম।পেয়েও গেলাম দেখা। অদৃশ্য জগতের মাঝে একমাত্র স্বপ্নকেই মনে হল সহজলভ্য দেবতা।তাঁকে পুজো দিয়ে প্রসাদ পেলাম। বলতে পারো, সেই প্রসাদে আমার চৈতন্য হল।সেই চৈতন্যে ধরা দিল অব্যক্ত শক্তি ! সেই শক্তিবলে, সেই মহিমাবলে আমি পেয়ে গেলাম একটি ঘোড়া !
আহাঃ ঘোড়ার কথা শুনেই এমন ভিরমি খেলে কেন ? ঘোড়া দিয়ে কী হবে ?!
অনেক কিছুই হবে ঘোড়া দিয়ে।যুগ যুগ ধরে ঘোড়ারাই তো ছুটেছে যুদ্ধে। কত অপথ কুপথ পেরিয়ে গেছে জীবন বাজি রেখে !
দেখো, স্বাধীনতার এত বছর পর আজও গন্তব্যে পৌঁছানোর মার্গ তৈরি হয়নি ! এই ভারতের আত্মা বা প্রাণ যা-ই বলো, সে তো - ঐ গ্রাম। ঐ আত্মার সঙ্গে সংযোগ গড়বে কী করে ? যেতেই হবে গ্রামে।দেখতে হবে। ঘুরতে হবে। বুঝতে হবে।ছুটতেই হবে এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত।কী করে ছুটবে ? গাড়ি দিয়ে ? রাস্তা চাই ? আহাঃ রাস্তা কোথায় ? রাস্তাই যে তৈরি হয়নি এতদিনেও !
বুঝতে পারলে তো এখন, ঘোড়াটা কেন এনেছি ?
এবার তোমাকে শুধু একটু কসরৎ করে ঘোড়ার পিঠে চড়া শিখতে হবে। ছুটতে হবে যে দ্রুত। হ্যাঁ, ঘোড়া ছুটবে।
দ্রুত পৌঁছে যেতে হবে ঐ দেশটায়। যাকে স্বপ্নে আমি দেখেছি এতদিন।
ধরে নাও আমরা ছুটছি যুদ্ধ ক্ষেত্র দিয়েই। শুধু যুদ্ধের জন্যই তৈরি যে পথ !
এটাই যুদ্ধ। স্বপ্নও বটে। এ যুদ্ধে যে ঘোড়াই চাই। স্বপ্নেও চাই।সেই স্বপ্নঘোড়া ছুটতে ছুটতে একদিন ঠিক পৌঁছে যাবে সেই দেশটায়।
এবার তুমি উঠে বসো ঘোড়ার পিঠে।তুমি দেখতে পাবে সেই দৃশ্য ! কীভাবে ঐ স্বপ্নের দেশের স্বপ্ন দেখতে দেখতে একটি কুড়ি বছরের যুবক এই বন্ধুর পথে অর্ধ শতাব্দী কাটিয়ে দিল !
না, ভয় পেয়ো না।সেই ঘোড়ার পিঠে বসে নিশ্চয়ই তুমি দেখতে পাবে অগুনতি লাশ।রক্তস্রোত। ঐ দেশটায় পৌঁছতে গেলে সেই স্রোত তো পেরোতেই হবে !
ঘোড়ার পিঠে আজ আমি স্বদেশ, তুমি স্বাধীনতা।
No comments:
Post a Comment