Tuesday, October 9, 2018

অমিত সরকার

বোধের কাল বোধন।

অবতার শ্রীরামচন্দ্র অহংকারী রাজা রাবণ কে বধ করার জন্য ।শরতকালের এই সময়ে মহাশক্তি,মহামায়া দেবী দূর্গা কে অকালে বোধন করে,তাই অকাল বোধন নাম।শরত্কালে হয় বলে দেবীর আরেক নাম শারদীয়া ।হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন ভাষাভাষীদের মধ্যে এই পূজার প্রচলন থাকলেও বাঙালি জাতি প্রধান উত্সব দূর্গা পূজা।রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ,জমিদার কংসনারায়ণের কাল থেকে  আজ পর্যন্ত সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সমগ্র বিশ্বে বাঙালির পরিচয় বহন করছে এই দূর্গা পূজা ।
পিছিয়ে নেই আমাদের ছোট্ট পার্বত্য রাজ্য ত্রিপুরা রা।এখানের দূর্গা পূজা জাতি-উপজাতির,হিন্দু-মুসলমানদের এক মিলন মেলা।এক সময়ের বনেদী পরিবার পূজা থেকে  স্বাধীনোত্তর আন্দোলনের সময়ে সার্বজনীন পূজার রূপ নেয় ।তখন হয়তো এত চাকচিক্য ছিলো না,কিন্তু দেবীকে আরাধনা করতেন দেশ প্রেমিকরা ভারতমাতা রূপে।
এখন এত ক্লাব,সংগঠন,বাজার কমিটি,পাড়া,নিজেদের মধ্যে এক প্রতিযোগিতার মনোবৃত্তি নিয়ে "হাম কিসিসে কম নেহি"এই ভাবনায় বড় বড় বাজেটের পূজা করতে গিয়ে কোমড়ে গামছা বেঁধে সাধারণ মানুষের উপর চাঁদার  জুলুম করতে থাকেন,এটা কিন্তু জাতি এবং মানবতার জন্য এক ভয়ানক ক্ষতি।রাবণ বধের আনন্দ উপলক্ষে উত্সব করছি,কিন্তু মনের রাবণ কে জাগিয়ে তুলে,আর এটা বছরের পর বছর হচ্ছে ।কিছু সংগঠন,ক্লাব,বা পূজা সমিতি গরিবদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও তা যত্সামান্য মাত্র ।এই পূজার পরে গ্রাম শহরের বাজার গুলিতে দেখা যায় আর্থিক মন্দা।এক মা কে পূজা করতে গিয়ে কত মা যে চোখের জল ফেলছেন তার হিসাব কেউ রাখে না। তিন দিনের নারী শক্তির আরাধনা করে কিন্তু  নারীরা চিন্তায় চেতনায়  এখনো হেয় ।
সময়ের সাথে অনেক কিছু বদলালেও অনেক কিছুই বদলায় নি,কিছু রূঢ়িবাদি চিন্তাধারা এখন প্রতিপালিত নিয়মিত ।তাই দরকার এক নতুন কিছু চিন্তনের।আলোর রোশনাই আর চাকচিক্য শুধু তিনদিনের জন্য মনের মধ্যে না এনে ,মাতৃভাব থাক সব সময়ে মনে।তিন দিনের জন্য শুধু নারীশক্তি কে শুধু বন্দনা,নারীর প্রতি শ্রদ্ধা হোক সর্বকালের ।প্রতিযোগিতার মনোভাব না নিয়ে  সাহায্যের হাত প্রসারিত হোক।চাঁদার জুলুম নয়,হোক স্বেচ্ছা দান।নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ নয়,হোক বিশ্ব নির্মানের চিন্তা ।
অকালে দেবীর বোধন তো হাজারো বছর ধরে করে আসছে বা আসছি,এবার সেই সাথে যুক্ত হোক বোধে কাল বোধন।

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...