Monday, July 23, 2018

দীপক দাস

মাতৃভাষা বনাম ইংরেজী ভাষা (ধারাবাহিক)

হ্যাঁ যেটা বলছিলাম -

ত্রিপুরার প্রতি মহকুমায় প্রতি ব্লকে একটি করে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল গড়ে উঠেছে। আগামী দিনে ৭০-৮০টি বাংলা মাধ্যম স্কুলকে ইংরেজী মাধ্যম স্কুলে রূপান্তরিত করা হচ্ছে।  আমার নাতিও আজ ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ছে।  এই অবস্থায় মাতৃভাষা দিবসে মাতৃভাষার প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা কি? এআ বাস্তব সত্যকে স্বীকার করে নিয়ে আমরা কি করতে পারি?  আমাদের মাতৃভাষার জন্য এবং কেন তা করবো তা আলোচনা হওয়া দরকার।

বঙ্কিমচন্দ্র একজন আদর্শ মানুষ হতে গেলে তার চারটি বৃত্তির পূর্ণতা দরকার বলেছেন।  তার মধ্যে একটি চিত্তরঞ্জিনী বৃত্তি।  এর অংশ হলো সাহিত্য,গান,চিত্র,নৃত্য ভাস্কর্য প্রভৃতি। আর সাহিত্যের সত্যিকারের রস পেতে হলে মাতৃভাষায় তা রচিত হওয়া চাই।  রাশিয়ায় এক সময় সাহিত্য রচিত হতো ফরাসী ভাষায়।  সেদিন রুশ ভাষা সাহিত্যের ভাষা হলো সেদিন থেকে রুশ উপন্যাস এবং ছোটগল্প বিশ্ব সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠল।

বাংলায় এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো মাইকেল,রবীন্দ্রনাথের অমরসৃষ্টি। এটা বাংলায় না হলে তার রস পরিপূর্ণভাবে কিছুতেই গ্রহন করা যেত না।  ঈশ্বরের কাছে তাঁর যে আত্মনিবেদন যা 'গীতাঞ্জলী'র প্রথম কবিতায় - 'আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণ ধূলার তলে' মাতৃভাষা ছাড়া কিছুতেই একে হৃদয়ে পরিপূর্ণভাবে গ্রহন করতে পারতাম না।

পৃথিবীর একদিকে যাবতীয় ঐশ্বর্য,রামায়ন,মহাভারত অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি। আমাকে যদি একটিকে বাছাই করতে বলা হয় তবে আমি মুহুর্তেই বেছে নেব রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকে।  তাঁর সৃষ্টি বাংলায় রচিত, আমি একজন বাঙালি।

তাই আজ একথা বলার সময় এসেছে আমরা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়লেও একটি ভাষা হিসেবে যার যার মাতৃভাষা শিখবো ভালো করে যাতে সাহিত্য রচনা করা যায়। সাহিত্যই মানুষকে মানুষে রূপান্তরিত করে - মানব জমিনকে আবাদ করে।

(ধারাবাহিকের পাতায়)

No comments:

Post a Comment

অনুপম রায়

সতেরো বছর পর সতেরো বছর পর কি অবসাদ সেটা ধারণা না থাকাই ভালো। যাদের তুমি রেখে গেছ আমাদের হয়ে, তারা এখন উন্মাদ শহরের এক কোণে বসে শ্বাস নেয়। জ...