Saturday, July 21, 2018

অমিত সরকার

সুকান্তরা বার বার ফিরে আসুক ,কিন্তু যেতে যাতে না হয়  এভাবে

এক সুকান্ত-"ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্য ময় "ভেবেছিলেন।
অন্য সুকান্ত -ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে গিয়ে,নিজেই গদ্য হয়ে গেলেন।

সুকান্ত নাম টা মনে আসতেই,গালে হাত দেওয়া চির ভাবুক,এক কিশোর কবির ছবি স্পষ্ট হয়ে আসে।অত্যাচার,অনাহার,অমানবিকতার বিরুদ্ধে যার ক্ষুরধার লেখনী এখনও বুকে চাবুক মারে।একুশ বছর পার না হতেই দুরারোগ্য ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।সেইদিন এই চলে যাওয়া টা অনেকে হয়তো সহজে মেনে নিতে পারেন নি।তবু ও মানতে হয়েছিল।

এখন এমন এক সুকান্তের কথা বলবো,যাকে আমি চিনতাম না,আপনিও বোধহয়। যার কথা ভাবলে শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যায়। রাজ্যের প্রান্তিক শহর সাব্রুমের তবলাবাদক এই সুকান্ত চক্রবর্তী। প্রতিভাবান এই শিল্পী সমাজ সেবা কে জীবন ব্রত করে নিয়েছিলেন।নিরীহ,গরীব,এই সুকান্তের পত্নী আর পাঁচ মাসের কন্যা সন্তান নিয়ে এই জীবন। সর্বনাশা ছেলেধরা গুজবে রাজ্য তখন থমথমে।সরকারের পক্ষ থেকেই এর বিরুদ্ধে,জাগ্রত হবার জন্য মাইকিং  করতে করতে কলাছড়া বাজারে পৌঁছানোর পর কি হল আপনার বোধগম্য।

তালিবান কায়দায় মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়ে,যে নিজেকে জন্য নয়,পাঁচ মাসের শিশুটি জন্য জীবন ভিক্ষা চেয়েও,পেল লাঠির আঘাত।
শেষে নিশ্চিত মৃত্যুর ভিডিও সোশাল নেটওয়ার্কে ভাইরাল হতে থাকে।
প্রশ্ন চিহ্ন টা এখানেই।কোথায় মানবিকতা?কোথায় রক্ষাকর্তা?মনুষ্যত্ব বোধের কি এতই লোপ দিনদুপুরে হাজারো জনতার সামনে নিরীহ এক মানুষ কে জীবন দিতে হলো।
তথাকথিত সমাজ ব্যবস্থা যতই উন্নতির দিকে যাচ্ছে,ততই কি মধ্যযুগীয় বর্বরতা গ্রাস করে নিচ্ছে আমাদের?

এই সুকান্তের যেকোনো লোক হতে পারতো।সেইদিন এই সুকান্ত,নিজের শহর,মহকুমা,রাজ্য,দেশ,মানবিকতার জন্য জীবন কে উত্সর্গ করে দিলেন,এর পরেও যদি আমাদের  ওর কাছে থেকে কোনো শিক্ষা না হয়,তাহলে একটা অন্ধকার জগত কে স্বাগত জানাতে হবে,তা সহজেই অনুমেয়।প্রতিদিন এই রকম নারকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকবে। সোশাল নেটওয়ার্কের উপর ভর করা এই সমাজ ব্যবস্থা পঙ্গু হয়ে যাবে।মানুষকে বাঁচাতে ,মানবিকতা রক্ষার জন্য সুকন্তরা বার বার ফিরে আসুক,যেতে যাতে না হয় এভাবে।

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...