Saturday, September 21, 2019

উজ্বল ভট্টাচার্য

কথা দিলাম মাগো 

হ্যাঁ,মাগো জানি পাপী আমি পাপী;  

পাপ তখনই শুরু হয় যখন জঠরে দিই লাথি।      তবু তুমি হাসিমুখে কষ্ট সহ্য করে;                    

কাপুরুষকে আনলে ঘরে সোহাগ ও আদরে।    

বায়না করতাম,খেতাম না যে

কেঁদে দিতে তুমি;       

তখন মাগো জানতে কি,

একদিন খাওয়াবোনা আমি।    

কত স্বপ্ন দু-নয়নে,কত আশা তোমার বুকে;   

হিরের মানিক বড়ো হয়ে রাখবে তোমায় সুখে।    বড়ো হলো খোকা,চাকরি পেলো আনলো সুন্দর বউ;

চাকরের পরিচয় তোমার ধীরে ধীরে তুমি আর সেই মা নও।                           

বউয়ের মুচকি হাসি হৃদয় কারে,মায়ের হাসি বেদনার;   

মায়ের ঔষধ খরচা বিশাল ভার,

ওটাতো কিছুই না করলে বউ গয়নার আবদার।   

দুদিন বাদেই নাতি এলো ঘরে,চাঁদের মতো মুখটি; 
ছুঁতে দেয়না শহুরে বউ,বলে গাইয়া ময়লায় হাতভর্তি।      

হঠাৎ একদিন ছেলে-বউয়ে মায়ের হাতটি ধরে ;  

টেনে হিঁচড়ে বিতাড়িত করে স্নেহময়ীরে।         

বৃদ্ধাশ্রম হয় শেষ ঠিকানা জনমদুখিনী মায়ের;     

খোলা আকাশে তাকিয়ে ভাবে আসবে খবর মানিকের।          

খবর যে আর আসেনা,হ্যাঁ একদিন আসে স্বর্গপুরী থেকে;

সেদিন মাকে সাঁজিয়ে-গুছিয়ে নিয়ে যায় পালকিতে।                 

পঁয়ত্রিশ বছর কেটে গেলো,মাগো তোমায় ভীষণ মনে পড়ে;         

আমার আচরণ যেমন ছিল, খোকাও আজ তেমনি করে।   

ধৈর্য ধরো, তোমার খোকা আসছে দ্রুত বেগে;    দুদিন বাদেই যে খোকা আমার সসন্মানে বিদায় দেবে।               

কথাদিলাম মাগো,আসবো তোমার গর্ভে আরও একবার;   

এবার বিষাক্ত পুত্র হয়ে নয়,নতুন রূপে লক্ষ্মীশ্রী কন্যার।  


No comments:

Post a Comment

অনুপম রায়

সতেরো বছর পর সতেরো বছর পর কি অবসাদ সেটা ধারণা না থাকাই ভালো। যাদের তুমি রেখে গেছ আমাদের হয়ে, তারা এখন উন্মাদ শহরের এক কোণে বসে শ্বাস নেয়। জ...