কথা দিলাম মাগো
হ্যাঁ,মাগো জানি পাপী আমি পাপী;
পাপ তখনই শুরু হয় যখন জঠরে দিই লাথি। তবু তুমি হাসিমুখে কষ্ট সহ্য করে;
কাপুরুষকে আনলে ঘরে সোহাগ ও আদরে।
বায়না করতাম,খেতাম না যে
কেঁদে দিতে তুমি;
তখন মাগো জানতে কি,
একদিন খাওয়াবোনা আমি।
কত স্বপ্ন দু-নয়নে,কত আশা তোমার বুকে;
হিরের মানিক বড়ো হয়ে রাখবে তোমায় সুখে। বড়ো হলো খোকা,চাকরি পেলো আনলো সুন্দর বউ;
চাকরের পরিচয় তোমার ধীরে ধীরে তুমি আর সেই মা নও।
বউয়ের মুচকি হাসি হৃদয় কারে,মায়ের হাসি বেদনার;
মায়ের ঔষধ খরচা বিশাল ভার,
ওটাতো কিছুই না করলে বউ গয়নার আবদার।
দুদিন বাদেই নাতি এলো ঘরে,চাঁদের মতো মুখটি;
ছুঁতে দেয়না শহুরে বউ,বলে গাইয়া ময়লায় হাতভর্তি।
হঠাৎ একদিন ছেলে-বউয়ে মায়ের হাতটি ধরে ;
টেনে হিঁচড়ে বিতাড়িত করে স্নেহময়ীরে।
বৃদ্ধাশ্রম হয় শেষ ঠিকানা জনমদুখিনী মায়ের;
খোলা আকাশে তাকিয়ে ভাবে আসবে খবর মানিকের।
খবর যে আর আসেনা,হ্যাঁ একদিন আসে স্বর্গপুরী থেকে;
সেদিন মাকে সাঁজিয়ে-গুছিয়ে নিয়ে যায় পালকিতে।
পঁয়ত্রিশ বছর কেটে গেলো,মাগো তোমায় ভীষণ মনে পড়ে;
আমার আচরণ যেমন ছিল, খোকাও আজ তেমনি করে।
ধৈর্য ধরো, তোমার খোকা আসছে দ্রুত বেগে; দুদিন বাদেই যে খোকা আমার সসন্মানে বিদায় দেবে।
কথাদিলাম মাগো,আসবো তোমার গর্ভে আরও একবার;
এবার বিষাক্ত পুত্র হয়ে নয়,নতুন রূপে লক্ষ্মীশ্রী কন্যার।
No comments:
Post a Comment