১. আক্ষেপ
তুমি বিহীন জীবন আমার নির্ঝর শুষ্ক পাতা।
মধুর স্মৃতিগাছায় আজ ভরাব না ডায়েরির খাতা।।
আগমনে এনেছিলে সূর্যসম দৃপ্ত।
ইচ্ছেগুলো আজ কেমন, হয়েছে অতৃপ্ত।।
তোমায় নিয়ে স্বপ্ন হাজার, বুনেছিলাম মনে।
কোয়েল বুঝি ডাকল আবার, আমার মনের বনে।।
তোমার ওই গহীন মনে, ছিল আমার বাস।
নিঃস্বার্থে ভালোবেসেও, হয়েছি নিরাশ।।
একাকীত্ব আজ আমার চৌদিকেতে ঘিরে।
আশাগুলো আজ যেন, বাধা ছোট্ট নীড়ে।।
অভিশপ্ত জীবন আমার চৌদিকেতে কালো।
পড়ন্ত বিকেলেও খুঁজে পাইনি একফালি আলো।।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো, বাগানে জোনাকি।
বোলতা দেখে আমি, ভাবি মনে মক্ষী।।
অঙ্গিরা ভেবে পিছু, ছুটি আঁকাবাঁকা।
তন্দ্রাভঙ্গ হয়ে দেখি, ছিল পিপীলিকা।।
যতই অবহেলা আর করো যে উপেক্ষা।
সায়াহ্নেও তোমার তরে করবো প্রতিক্ষা।।
বিনিদ্র রাত্রি, চোখে তোমার প্রতিচ্ছবি।
সাহিত্য সমাজে আমার তুমিই প্রিয় কবি।।
২. নবান্ন
সোনালী আলোয় সোনালী সকাল,
সোনালী ধানের ছোঁয়া।
হৃদয় আহ্নিকে জেগে উঠলো,
কৃষকের চাওয়া পাওয়া।
কাস্তে দড়ি নিয়ে হাতে
মাঠের পানে ধায়
দাঁড়িয়ে আলে দৃষ্টি পলকে
সফলতা খুঁজে পায়
রাতের পরে রাত জেগে
স্বপ্ন বুনেছিল
আকুলিত হৃদয় খানি
উচ্ছ্বাস খুঁজে পেল
ঝাড়াই মাড়াই সব সারিয়ে
শস্য আসলো ঘরে
চাষী বউয়ের খুশির হাওয়া
ওষ্ঠে ঝরে পড়ে।
আল্পনাতে ভরা উনুন
তার উপরে সরা
বেস্ত সকল মা বোনেরা
হচ্ছে পিঠে গড়া।
সুপক্ক সুমিষ্ট ফল
বিবিধ উপাচার
পিঠে পুলি মিষ্টান্নাদি
নানাবিধ ফলার
বটবৃক্ষ তলে আজ
উপাচারে সজ্জিত
পুরোহিত বসে সেথায়
করছেন অর্চিত
রংবাহারী পুষ্পঢালি
সজ্জিত সিংহাসন
বিল্বপত্র ঘৃত মধু
যজ্ঞাহুতির দহন।
উলুধ্বনি শঙ্খধ্বনি
হৈ-হুল্লোড়ে ভরা
গীত নৃত্য চলছে সেথায়
সবাই আপনহারা
আরাধিল লক্ষীদেবী
সবাই মত্ত হয়ে
থাকে যেন দুধে ভাতে
ছেলেপুলে নিয়ে
উপাচার দিল তাতে
থালা ভরা অন্ন
গ্রামবাসীরা ব্রতী হলো
আজ যে নবান্ন।
No comments:
Post a Comment