কবি গোপাল দে'র জোড়া কবিতা
১. চেনা ছন্দে
সেদিন মধ্যরাত্রিতে ও নির্ঘুম ছিল
চোখের দুটি পাতা।
স্বপ্নবিভোর দুই চোখে ক্রমশ
দুঃস্বপ্নরা বাঁধছিল হতাশার ডানা।
মধ্যরাত্রির নিস্তব্ধতায় শিয়রে এসে দাঁড়িয়েছিল তীব্র আকাঙ্ক্ষা।
কুয়াশার চাদর ভেদ করে
অন্ধকারের বীভৎসতার মাঝে
রঙিন আলো নিয়ে হঠাৎ তোমার উপস্থিতি।
মনোবীণার তারে হঠাৎ ঝংকৃত হলো
লক্ষ-কোটি সুরের তান।
বিরহের তানপুরাটা শক্তি হারালো
আর বেজে উঠল সুরেলা এক বাঁশি।
যে সুরে খুঁজে পেলাম আমার সব চাওয়া, আবদার আর তৃপ্তির স্বাদ।
চেনা ছন্দে আবার গতিময় হলো
ছোট্ট একটি জীবন।
২. শৈশবের হাতছানি
আলো-আঁধারি পথে
জীবনের সন্ধানে
একটু একটু করে মনের অজান্তে
শৈশব নিল চিরবিদায়।
কারো দায়িত্ব হয়ে থাকার
সেই সময় আজ অস্তিত্বহীন।
দায়িত্বভারপূর্ণ চারপাশ থেকে
ভেসে আসে শত আবদার আর অধিকার।
প্রতিদিন নতুনত্বের চাহিদায়
দুর্বিষহ প্রতিটি ক্ষণ।
আপন খেয়ালে সেইক্ষণে
মনের গহীনে ডানা মেলে ধরে শৈশব।
রোমান্টিকতায় জল ঢেলে
বাস্তবতার কাঁটা তখন বিঁধে যায়
শরীরের প্রতিটি শিরা-উপশিরায়।
শৈশবের সেই হাতছানি
এখন শুধুই মরুভূমির মরীচিকা।
শান্ত স্নিগ্ধ আলোক ঝলমল
শৈশবের সেই শহরে
এখন অন্ধকারের তীব্রতা।
সময় যুদ্ধে এখন জয়ী
শুধু বাস্তবতা।
No comments:
Post a Comment