Sunday, December 16, 2018

সুমন পাটারী

অহংকার

ধরো, আমি লিখলাম 'ম'
একটি আ-কার যোগ করতে পেরে
গর্বে ভরে উঠলো বুক
বিশ্বাস হয়নি?
ভাবো, তোমার কয়েক প্রজন্ম আগে
রোদ থেকে ফিরে আসা চাষার শুকনো গলা
যখন নিঃশ্বাসের মতো সাবলীল স্রোতে
মা বলতে চাইলো,
কিংবা আধুনিক যুগের মতো
মোবাইল পরিসেবাহীন চিঠিপত্রের সময়ে যখন
ভীন্ন শহরে পাঠরত কোনো ছাত্রকে বলা হলো
তোমার বাড়িতে চিঠি লিখতে হলে তোমার মা কে
আগে অন্য একটি ভাষা শেখাতে হবে
ভাবো সেই ছেলেগুলো চিঠি লিখতে বসে কেমন
ঘায়েল সিংহের মতো ফুঁসছিলো
দেখতে পাচ্ছো, ছেলেগুলো এখন চিঠির কাগজে
কলমের নিব ভেঙে লাফিয়ে উঠেছে,
ঘর থেকে ঝড় বেরিয়ে পড়ছে
সব চূড়মার করে দেবে
কেরোসিনের স্টোভে ডাল ফুটছে
ভাতের মার গালা হয়নি, দরজা খোলা
এসে পড়েছে রাজপথে
দলে দলে মায়ের ছেলেরা বাড়ি না গিয়ে
পায়ে পা মিলিয়েছে
লাঙল ফেলে উঠে এসেছে চাষা
মা, ভাত, প্রেম, দিক্ষা বলে তারা রাজপথে
চিৎকার করে জানান দিচ্ছিলো
মায়ের অবহেলা মানা যাবে না।
ভাবো, রাজপথ তখন কেমন গর্বে লাফিয়ে উঠেছিলো দামাল ছেলেদের পেয়ে
পাখি পাখালি চিৎকার করছে ক্রোধফাঁটা উল্লাসে
জনতার স্রোত থেমে আছে সবাই দেখছে
ছেলেগুলোর সাহস,
ঠিক তখন মুখে কালো কাপড় বাঁধা কিছু বোবা লাল চোখ, তাদের সুখ নেই শোক নেই,
রাইফেল তুলে গুলি চালাতে লাগলো
মুহূর্তে লুটিয়ে পড়লো মাটির কোলে
তাজা রক্তে ধুয়ে গেলো শুকনো পাতা
সময় ধীর হয়ে গেলো,
ছেলেগুলি আস্তে আস্তে হাতের আঙুলে
লাল কালি মেখে রাজপথে লিখে দিয়ে গেলো
মায়ের কাছে শেষ চিঠি।
আগুন লেগে উঠলো দিকে দিকে
সবাই মা মা বলে উঠলো

ভাবো, কেন গর্ব হবে না আমার!
কেন অহংকার হবে না আমার!

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...