Sunday, December 16, 2018

সৈকত মজুমদার

অনুগল্প : 'আপসোস'  



তমা। খুব ছোটবেলা থেকেই ওর প্রতি আমার একটা টান ছিল। ওর টানা চোখ, দুধে-আলতা মুখ, লালচে চিকন ঠোঁট আর ঘন কালো কোকড়ানো চুল ভীষণ আকৃষ্ট করত আমায়।  প্রায়শই বিকেল বেলায় মাঠে যাওয়ার সময় ওদের বাড়ির সামনে অমলকি গাছটার তলায় বসে গল্প করতে দেখতাম। চোখাচোখি হতেই নিজেকে  লজ্জাবতী গাছের ন্যায় গুটিয়ে নিত। কিছুটা এগিয়ে আবার ফিরে তাকাতেই চোখে চোখ পড়লে দৌড়ে পালিয়ে যেত ওখান থেকে । এভাবে চলতে চলতে তমা একদিন কৈশোর থেকে পূর্ণ যৌবনোচ্ছল । এখন আর সে কোথাও আমায় দেখলে পালিয়ে যায় না, বরং কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করে । কিন্তু কেউ কারো সঙ্গে কথা বলি না। 

তমা কলেজে ভর্তি হওয়ার কিছুদিনের মধ্যে ওর বিয়ে হয়ে যায়। আমি তখন বেকারত্ব নিয়ে বন্ধুদের সাথে কেবলই কর্মখালি বিজ্ঞাপন দেখি! এদিকে স্বামীর বদলির চাকরি হওয়ার জন্য তমা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায় আর মধুচন্দ্রিমা মানায় । 

তমা মা হয়েছে ! আমার চাকরি । ফেসবুকের দৌলতে একে অপরের আবার দেখা ।একদিন ম্যাসেন্জারে ভয়েস কল করে এবং আমার মোবাইল নম্বর চেয়ে নেয়। তারপর থেকে নিয়মিত আমায় ফোন করে। আর ফেলে-আসা দিনের স্মৃতিচারণ করে। 

একদিন তমা অকপটে জানায়, সে আমায় মনে মনে চাইত এমন কি খুউব ভালোবাসত। এমন কি আমিও অনুভব করতাম যে কেউ আমায় চায় । আমি শুধু একটা প্রস্তাবের অপেক্ষায় ছিলাম ।।


No comments:

Post a Comment

অনুপম রায়

সতেরো বছর পর সতেরো বছর পর কি অবসাদ সেটা ধারণা না থাকাই ভালো। যাদের তুমি রেখে গেছ আমাদের হয়ে, তারা এখন উন্মাদ শহরের এক কোণে বসে শ্বাস নেয়। জ...