Monday, September 27, 2021

দুলাল চক্রবর্তী

 জাগাও

সকাল বেলা বাইরে টুলে বসে ছোট
একটা চা দোকানে বসে বিনয়বাবু চা
খাচ্ছিলেন। এমন সময় একটা পথশিশু সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল--বাবু আমাকে পাঁচটা টাকা দেন না! আমি কালকে সারারাত কিছু খাইনি আজও কিছু খাইনি । আমার খুব খিদে পেয়েছে। বিনয় বাবু চোখ বড় বড় করে ওর দিকে তাকালো।
ছেলেটার বয়স বড়জোর ৭/৮ বছর।
পথশিশু টা আবার হাত পাতলে তিনি
কটমটিয়ে ওকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিল। পথশিশু টা এবার একটু পাশে থাকা আর একজন লোকের কাছে হাত পাতল। লোকটা ওকে ঠেলা দিয়ে দুরে সরিয়ে দিল। তার পাশে আরেকজন বসে চা খাচ্ছিল। শিশুটি এবার তার কাছে পাঁচটা টাকা ভিক্ষা চাইল কিছু খাবার জন্য। লোকটা তার পকেট থেকে 5 টাকা বের করে শিশুটিকে দিল। শিশুটি দোকানিকে এই পাঁচ টাকা দিয়ে একটা ছোট পাউরুটি দিতে বলল। দোকানি ওকে পাউরুটি দিলে ও সেটা নিয়ে এক টুকরা ছিড়ে মুখে দেবে, পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখে তার আরো চারজন পথশিশু বন্ধু হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছে। সে পাউরুটিটাকে ৫ টুকরা করল।
চার পথশিশু বন্ধুকে দেওয়ার পর পাশে বসে থাকা কুকুরটির দিকে তার নজর গেল। কুকুরটিও ওর দিকে তাকিয়ে রইলো। হয়তো একটা টুকরা পাওয়ার আশায়। সে তার অংশের টুকরাটা কুকুরটিকে দিয়ে দিল। নিজের খুদা নিবৃত্তির আর কিছু রইল না। বিনয় বাবু বিষয়টা খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করলো।
নিজের মানিব্যাগটা বের করে দেখল ওতে প্রায় হাজার খানেক টাকা আছে।
তখন মনে খুব অনুতাপ হল। ছোট্ট ছেলেটির বিবেক দেখে তার নিজের মনে নিজের প্রতি খুব ধিক্কার এল। শিশুটাকে আমি আমার এত টাকা থেকে ৫ টাকা কিছু কিনে খেয়ে তার ক্ষুধা নিবৃতির
জন্য দিতে পারতাম। আমি কত বড় অমানুষ! আজকে এই শিশুটির কাছ থেকে আমি বিরাট বড় মনের পরিচয় পেলাম যা আমাকে সারা জীবন শিক্ষা দেবে। এই ভেবে বিনয় বাবু মনে খুব আক্ষেপ নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন।

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...