Sunday, October 10, 2021

দুলাল চক্রবর্তী

আগমনীর সুর
      
" মাতার কন্ঠে শেফালী মাল্য
        গন্ধে ভরিছে অবনী,
   জলহারা মেঘ আঁচলে খচিত
        শুভ্র যেন সে নবনী।"
শিউলি ফোটার মধ্য দিয়ে প্রকৃতি জানান দেয় শরৎকাল এসে গেছে। সুনীল আকাশ টা সাদা সাদা স্তূপাকারে মেঘ
ধেয়ে চলে এদিক ওদিকে। নদীর ধারে ধারে সাদা সাদা কাশফুল অনাবিল আনন্দে যেন এদিক থেকে ওদিকে ঢলে পড়ে। মাদকতা এনে দেয় ওদের গায়ে গায়ে। গাভী দল প্রাণ খুলে ঘুরে ঘুরে খাবার খায়। যেন একান্ত মুক্তমনা, রাখালিয়ার প্রাণ কারা সুরে বাজে বাঁশি।
প্রকৃতির রূপে আসে ঋতু রানী শরতের 
মোহময়ী ছাপ। প্রতিটি বাঙালির মনে 
আনন্দে ভর ধরে না। মা আসছেন! বাংলার ঘরে ঘরে উৎসবের সারা। শরতের রাতের মোহময়ী নীল আকাশ।
রাতে যখন পূর্ণিমা চাঁদের রূপালী আলো পড়ে--আকাশটা যেন নীলের ছটা ছিটকে ছিটকে ছাড়ে । মাঝে মাঝে সাদা তুলার পানশী যেন এদিকে ওদিকে ঘুরে বেড়ায়।
শরতের পূর্ণিমার চাঁদের দুর্লভ আলো বড় মন কেড়ে নেয়। রাতে শিশির সিক্ত হয় শেফালী গুলো প্রাণভরা মনকাড়া গন্ধ ছড়ায়। আহ, কি দারুণ প্রাণ কারা সুগন্ধ দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ভোর হতেই ঝরে পড়ে নিচে। চলে যায় দেবতার পায়ে। সযতনে ফুলগুলি তুলেনিই।
দূর দেশের প্রবাসীরা ছুটে আসে আপনজনের কাছে মায়ের রাতুল চরণে ভক্তি অর্ঘ্য নিবেদনের জন্য। বাংলার বুকে দুর্গাপূজার অনুভূতি ও আনন্দই আলাদা। সারাবাংলা বুকে যেন মনে হয়--
" স্থলে- জলে আর গগনে গগনে,
বাঁশি বাজে যেন মধুর লগনে। " এই পুণ্য লগনে বেজে ওঠে মায়ের মঙ্গল শঙ্খ। অপরূপা জননী যেন দুহাত ভরে আশীর্বাদের ডালি নিয়ে আসে বাংলার বুকে! প্রাণের আবেগে, উৎসবের আনন্দে বাংলার ঘরে ঘরে মহাসমারোহ চলে । পূজার কটা দিন যেন কোনো বিধিনিষেধ মানে না। আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায় আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার মন। সারাটা বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে বাঙালিরা মাতৃ বন্দনার জন্য।

No comments:

Post a Comment

অনুপম রায়

সতেরো বছর পর সতেরো বছর পর কি অবসাদ সেটা ধারণা না থাকাই ভালো। যাদের তুমি রেখে গেছ আমাদের হয়ে, তারা এখন উন্মাদ শহরের এক কোণে বসে শ্বাস নেয়। জ...