Friday, April 29, 2022
সম্পাদকীয় কলাম
একসাথে দুটো কবিতার গুচ্ছতা বাংলা সাহিত্যে নতুন নয়। তবুও ত্রিপুরা সাহিত্য এপথে এক নিজস্বতা স্থাপনের প্রচেষ্টা করছে। আমরা যাদের কবিতা নিতে পারিনি, নিত্যান্তই নিয়ম নীতির কারণে। আমরা প্রতি মাসে লেখার জন্য বিজ্ঞপ্তি করি। সেটির মধ্যে বিভিন্নতা থাকে, সেটি পড়া উচিত লেখা পাঠানোর পূর্বে। যারা লিখেছন বহিঃরাজ্যের লেখকও আছেন তাঁদের মধ্যে। প্রত্যেককে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। প্রকাশের মুহূর্তে সবাইকে অভিনন্দিত করলাম।
আমাদের পাঠক ও শুভাকাঙ্খিদের শুভেচ্ছায় আমাদের পথ হোক সংস্কারমূলক। সামাজিক দায়িত্ব পালনে একটি ম্যাগাজিন যতটুকু দায়বদ্ধ, আমরা ততটুকুই সহযোগিতা কামনা করছি। সবাই ভালো থাকুন।
শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা-সহ
জয় দেবনাথ
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
মনন স্রোত
অর্ধেন্দু ভৌমিক
কবি অর্ধেন্দু ভৌমিকের জোড়া কবিতা ;
১.
মানুষের আকাশে
বৃত্তের আকাশ, আমার চাঁদ
কথা বলে চুপিসারে -
ব্যথাতুর তারা, ফারনেসের তরল
ঘাম হয় বিন্দু বিন্দু...
বাঁধন ছেঁড়া শূন্য পাগল মন
স্বাধীন কেন্দ্রবল
শুধু টানে মানুষ,
মানুষের আকাশে---
২.
হক্কি
বাবা কইত, ফাস করি
ছাখরি যদি নঅ মিলে,
হক্ত করি নাঙ্গল ধরঅ
ঢুকি যঅ চাষার দলে।
হেইদিনের কথাওন
আইজঅ বাজে কানে।
হক্কির মতন হারাদিন
খানা খোজঅ সুদু বাচনে।
(নোয়াখালি ভাষায় রচিত, অষ্টচরণ কবিতা)
দুলাল চক্রবর্তী
কবি দুলাল চক্রবর্তীর জোড়া কবিতা;
১.
তোমার ওই চোখে
তোমার ওই মায়াবী চোখে আমি
রূপের অনল দেখি,
দু'চোখ আমার রূপের পলকে
তোমায় বেঁধে রাখি।
কামনা -বাসনার চরম প্রকাশ
রাঙা ওই চোখে আঁকা,
বারে বারে মন যায় হারিয়ে
যায় নাতো ধরে রাখা।
২.
অপার মহিমা
কন্যা, জায়া ,জননী রূপে দেখি
নারী, তোমায় বিভিন্ন রূপে ডাকি।
স্নেহা -বৎসলা জননী রূপ তোমার
স্বার্থ-লোভহীন ভালোবাসা দেখি অপার।
দেবকুলেও তোমার অপার মহিমা জানি,
অসুর বধে দেবী মহামায়া রূপে মানি।
স্রষ্টার সৃষ্টিকে তুমিই করেছ ধারণ ,
সৃষ্টিকে ধরে ত্রিভুবনে, ধ্বংসকে করেছ বারণ।
পান্থ দাস
কবি পান্থ দাসের জোড়া কবিতা;
১.
খোলা বাস্তব
না জানা দিশে
হাটছি যে,
নেই উদ্বেগ
স্বপ্নের,
ভোরের আলো আছে
তবে,
কেন ঝাপসা
খোলা বাস্তবের ৷
২.
কথা
কিছু কথা যে
চিরদিনের
কিছু সময় যে
আবেগের,
সময়ের সাথে
মুছে না সত্যি,
কিছু হাসি যে
বেদনা আর অনুতাপের ৷
দিপিকা রায়
কবি দিপিকা রায়ের জোড়া কবিতা;
১.
স্বার্থপর
অনুভুতি শুধু পরশ মাত্র।
অহংকারের ভিটে যখন,
স্বার্থপরতার টনক নাড়ে
মুখোশের কালিমাগুলো
ফুটন্ত মুখে স্পষ্ট হয়ে উঠে।
মেতে উঠা টাকার খেলায়,
স্বার্থপর যখন খালি পকেট।
আপন দ্বারের মেঝেটাও তখন,
অপমানের প্রতিঘাতে ছিন্ন হয়।
২.
আবেগ
কলমের তীক্ষ্ম কালিতে
এখন আর কবিতার
ছন্দ আঁকে না।
বাস্তবের গল্পগুলো
এখন আর ডায়েরির পাতায়
ভিড় করে না।
শুধু আলিঙ্গনে নিজেকে
জড়িয়ে রাখে নিজে।
গৌরব নাথ
কবি গৌরব নাথের জোড়া কবিতা;
১.
আকাশের চূড়ায় হয়তো আমি বড়ো,
এই মাটিতে বড্ড ছোটো লাগছে।
মূর্খ না অজ্ঞানী না অবুঝ
দলিল খুলে কিছুই পাওয়া গেল না, আমাকে ছাড়া।
২.
কিছু ক্লান্ত পান্ডুলিপি ভস্মীভূত হতে চাইছে
তার আর বাঁচার অভীপ্সা নেই
তবে কারিগর ক্ষমতায় যে আমৃত্যু কাল
শেষ যে কোথাও শেষ হয়নি।
কৃষ্ণ ধন শীল
কবি কৃষ্ণধন শীলের জোড়া কবিতা;
১.
পিরামিড
পিরামিড তুমি আজও সদর্পে খাড়া!
কত আশা বেদনা আর স্মৃতি লয়ে,
সর্বোচ্চে তোমার চূড়া।
কিন্তু তুমি কি জান বিধির লিখন?
কালের গোপন প্রহারে ফুটবে ফুল,
তোমার জটিল কাঠামোর হবে পতন।
পিরামিড তুমি আজও সদর্পে খাড়া!
কত আশা বেদনা আর স্মৃতি লয়ে,
সর্বোচ্চে তোমার চূড়া।
কিন্তু তুমি কি জান বিধির লিখন?
কালের গোপন প্রহারে ফুটবে ফুল,
তোমার জটিল কাঠামোর হবে পতন।
২.
চিরন্তন পথে
রাত এখনও অনেক বাকি,
ভোরে সূর্যোদয়,
চলার পথে ডাকে নিশাচর পাখি,
তবু আশাগুলি রয়,
আশার দেখানো পথে,
চলেছি কালের রথে,
নিশ্চিত সন্ধ্যায় জানি আমার ক্ষয়।
রাত এখনও অনেক বাকি,
ভোরে সূর্যোদয়,
চলার পথে ডাকে নিশাচর পাখি,
তবু আশাগুলি রয়,
আশার দেখানো পথে,
চলেছি কালের রথে,
নিশ্চিত সন্ধ্যায় জানি আমার ক্ষয়।
শর্মিষ্ঠা ঘোষ
কবি শর্মিষ্ঠা ঘোষের জোড়া কবিতা;
১.
রমণ
আলো মেখে রমণীর হাঁটি হাঁটি পা
পথে আলোড়ন সমীরণে
পতঙ্গের মৃত্যু আয়োজন
অঘোরমন্ত্রে বজ্রপাত
চেটে দিলে
ভিজেবেড়ালও দাহ্য অনায়াস
২.
বন্ধকী
সে নাকি জলের মতো স্বচ্ছ
ঢাকাচাপা নেই
ছোঁয়ানাল মাছেরা দেখেছে
অন্তরের জলদাগের বন্ধকরূপ
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী
কবি কৃষ্ণেন্দু অধিকারীর জোড়া কবিতা;
১.
কাগজ পাতার নৌকা
দুপুরের বুকে বৃষ্টি নামলে
কাক ভিজে, আমি ভিজি-
গ্রামের ছেলেপুলেরা সব কেমন
কাদা-জলে থৈথৈ হই হই রব,
বড় অগোছালো বড় তৃপ্তির এই দিন।
উঠোনের জলে ভাসিয়ে দেয়া কাগজ
পাতার নৌকা,
এক পাশে আমি আর অন্য পাশটায়
তাকে রাখতাম।
আমবাগানের পাতাঝরার জল ভিজিয়ে দিতো আলতা রাঙা পা,
মা বলতো ঠান্ডা লেগে যাবে-
জ্বর আসবে।
এখন আসে,
মন খারাপের জ্বর।
শহরটাকে ভিজতে দেখি একা নিরবে,
কেবল আমি ভিজিনা।
২.
মাল্যবন
মিষ্টি রোদ মেঘলা আলোয়
একটা দুটো পাতা ঝরে,
ধুলোমাখে -
শুকিয়ে যাওয়া বুকের মাঝে কেমন খেলে উঠে দক্ষিণ হাওয়ার উত্তাপ,
যেন ভেতর ভেতর ছুঁয়ে দেই তার সূক্ষ্ম দেহ-
ভুল করে।
ভুল করে ছুড়ে দেই সাজি ভরা ফুল,
মাল্যবন।
বছর ফিরে বসন্ত আসে বার বার
শুধু এলেনা কেবল তুমি!
ঐ যে সেদিন দোলের রং,
ঐ যে সেদিন ন্যাড়াপোড়া,
রং ছোঁয়ার দিন,
পেরিয়ে আসা হাজার বসন্ত প্রতীক্ষা
কেবলই যে তোমার মুখ চেয়ে-
তবু এলেনা কেবল তুমি।
অর্পিতা পূজা দাস
কবি অর্পিতা পূজা দাসের জোড়া কবিতা;
১.
অভিমান
দেখিনি কখনো তোমাকে হাসতে,
কিন্তু দেখেছি তোমার মন আর
মগজের লড়াইয়ে বাঁচতে।
কখনো করে ফেলো অনেক দেরি
সাজাতে জীবনতরী।
তোমার জমানো আবেগ
রেখেছো আড়ালে,
জড়িয়ে ধরতেও শেখোনি
প্রেমের চাদরে।
২.
অন্ধকার
দুঃখ কষ্ট মান অভিমান
সবি জমানো তোমার ডায়েরিতে।
চোখের অশ্রু কে আড়াল করে সাহস জোটাও আলোর মধ্যে হাসতে।
কিন্তু! আনন্দে উল্লাসে সবাই ভুলে যায় তোমাকে।
দেবব্রত চক্রবর্তী
কবি দেবব্রত চক্রবর্তীর জোড়া কবিতা
১.
স্বপ্ন
শার্ট টা অনেক পুরোনো
বাবা দিয়েছিলো কবেই;
শার্টের পকেটে জমা থাকে
পরিবারের স্বপ্ন সবই।
২
বাবা
বট গাছটা ছিলো বলে
বাতাস টা লাগেনি গায়ে,
ছিন্নমূল হাঁরিয়ে গেছে কবে;
বাতাস এখন প্রতিদিন আমার গায়ে লাগে।
সংগীত শীল
কবি সংগীত শীলের জোড়া কবিতা
১.
মেহগিনি রোদ্দুর;
অসীম মেদিনীর এক লম্বা প্রশান্তির কূলে তোমার স্থিতি
এই হাওয়া ছুঁয়ে যায় আমার প্রাণের উচ্ছ্বাসে,
কোন এক বসন্তে রোদ্দুর হলে
দোয়েল হয়ে সেই সজীবতা ধার দিও।
২.
আমার হৃদয়ে যখন মরুভুমির মরীচিকা পড়বে,
জানলার কার্নিশে দাঁড়িয়ে অনুরাগের আঁচড় কেটে;
অভিমানটুকু জাহির করো তুমি,
মেঘ বরিষে আমি শান্ত হবো।।
সুচরিতা পাটারী
কবি সুচরিতা পাটারীর জোড়া কবিতা
১.
আত্ম প্রকাশ
তুমি কি শুনেছো সেদিন পাখির কলরব?
যাহাতে মেশানো ছিলো ব্যাথার অনুভব!
শুধু প্রকাশের ভাষা নাই,
নীরবে সে ভাঙে তাই,
সুযোগ পাইলেই বাঁধে কিচিমিচি গান।
শেষে কেবল প্রশ্ন রাখে,"কবে পরিত্রান?”
২.
অভিমান
মেঘ ছিলো অভিমানী, থোকা থোকা সজ্জায়,
চাতকী ভাব যাচিয়া মধুস্বরে গান গায়।
কি কারণে মন তার,
হাসি খানা দিল ধার,
সুধাইল বারে বারে, প্রকাশিতে নাহি চায়।
প্রীতম শীল
কবি প্রীতম শীলের জোড়া কবিতা
১.
কত'টা বাস্তবতা
শব্দ দিয়ে গড়া কবিতার ভিড়ে,
বাস্তব কতোটা যুদ্ধ করে।
কবির কলম কি শুধুই শব্দ বুনে?
নাকি গড়া শেষে ঝরে পরে।
২.
মানের চেয়ার
যদি ভালোবাসা দিয়ে সব কিছু হতো,
টেবিলের তলায় কেন টাকা।
যদি ভদ্রতায় সবার মন জয় করা যেতো,
চেয়ারটা পেতোনা কাকা।
উর্মি সাহা
কবি উর্মি সাহার জোড়া কবিতা;
১.
শেষ পাতা
তোমার আমার নিত্তি কথা,বেড়েছিল
চারাগাছের মতো, তবুও;
শেষ বেলায়, শেষ পাতায়
লেখা আছে- ভালো থেকো।
২.
আতঙ্ক
প্রতিটা কলম প্রতিবাদ করে
তবুও পৃথিবী আগুনে জ্বলে।
প্রতিটা কলম সৈনিকও হয়
তবুও বোবা পৃথিবী আতঙ্কে মরে।
উজ্জ্বল ভট্টাচার্য্য
কবি উজ্জ্বল ভট্টাচার্য্যের জোড়া কবিতা
১.
প্রেম তুমি বদনাম
প্রেম তুমি আর মানুষের জন্য নও
তুমিও আজ মিথ্যে ভাষণের শিকার
তোমাকে দেখলে বড্ড মায়া হয়
তুমি আজকের বাজারে বদনাম এক নাম।
২.
মানুষ একটি ব্র্যান্ড
মানুষ হয়েছি বলেই
দুঃখের সাথে কান্না মিশিয়ে
হাসছি।নয়তো
হাসির থেকে গড়িয়ে পড়তো
অশ্রুর মতো রক্ত।
লিটন শব্দকর
কবি লিটন শব্দকরের জোড়া কবিতা
১.
শালুক -১
নদীটির কান্না পেলে ছেড়ে দেয় শহর,
চিরকুটে ফেলে যায় এক অনন্ত ডহর।
ঠিকানা দেয় শালুক নিভৃতির বালুচরে,
অরণ্যানী ঢালে প্রাণ জমানো শিশিরে।
২.
শালুক - ২
নদীরা আসলেই ভালোবাসে বলে
দুপেয়ে মফস্বল এখনো হরিদ্রাভ,
ঝুমকোলতার শরীর রূপকল্প হয়-
শালুকের ঢালা রঙে হই স্বপ্নপ্রভ।
মিঠুন দেবনাথ
কবি মিঠুন দেবনাথের জোড়া কবিতা
১.
বন্ধু
জীবনে চলার পথে,
কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হঠাৎ।
মন তো মানেনা তাদের মধ্যে
কোনো রকম তফাৎ।
কথা হয় বার্তা হয়,
হয় শুভেচ্ছা বিনিময়।
মনে হয় যেন সাথে তাদের
কত কত বছরের পরিচয়।।
দিন যায় রাত যায়
চলে যায় সময়ের পর সময়।
হয় না মনে তাদের সাথে সেই
দুদিন আগের ই পরিচয়।।
বন্ধু হয়ে আসে কাছে,
অচেনা সে মুখ।
অল্প সময়ে ভাগ করে চায় নিতে
মনের সকল সুখ আর দুঃখ।।
সবার উপরে এই সম্পর্ক
নাম তার বন্ধুত্ব।
থাকনা সে অনেক দূরে
মনের মাঝে হয় না তো দূরত্ব।।
বন্ধু তুমি সর্বক্ষণ থাক মনের ই মাঝে,
মন পেতে চায় তোমার সঙ্গ
সকাল বিকাল সাঝে।।
২.
মুন্নি আমার নাম
সেদিন বিকেলে...
অফিস থেকে ফেরার পথে,
দেখলাম অল্প বয়সী একটা মেয়ে।
দাড়িয়ে আছে রাস্তার মোরের দোকান টার সাথে।
একটা জীর্ন শীর্ন জামা পরনে তার,
মুখখনা খুব শুকনো চোখে যেন হাহাকার ।
ডাকদিয়ে জিজ্ঞাসিলাম কি নাম তোমার,
সে উত্তর দিয়ে বলল মুন্নি নাম আমার।।
জিজ্ঞাসিলাম কেন দাড়িয়ে আছ এখানে,
বলল সারাদিন না খেয়ে আছি একটু খাবারের টানে।
কথা শুনে ধুপ ধুপ করে বুক যে উঠল কেপে।
অনেক কষ্টে চোখের জল ধরে রাখলাম চেপে।।
জিজ্ঞাসিলাম কোথায় বাড়ি
কোথায় তোমার ঘর,
বলল সে,এক মা বাদে কেহ ছিল না তার।।
দুনিয়ায় এখন সকলেই যে পর।
মুন্নি বলে মা তাকে ডাকত আদর করে।
কখনো লাগতে দেয়নি ব্যাথা,
গুছিয়ে রাখত যতন করে।
এই কিছু দিন হল,
আমাকে একাকি করে মা ও চলে গেল।
কোন এক অজানা মরন ব্যাধি হয়ে,
দুনিয়ায় একা হয়ে আমি গেলাম রয়ে।
বলেছিলাম তার সাথে আমাকে ও নিয়ে যেতে,
আমাকে একা রেখে গেলে কেহ দেবেনা খেতে ।
সকলের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি কত।
রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে বাবু কত শত।।
কেহই দেয়নি একটু খাবার,
কারো মনে জাগেনি একটু দয়ার।
শরীরে বেড়েগেল অস্থিরতা শুনে তার কথা।
চোখের জলে ভাঙ্গল যে বাঁধ,
মন ওঠল কেঁদে কোন এক অজানা ব্যাথা।
জড়িয়ে ধরে বুকে টেনে নিলাম তাকে।
বললাম তোর মত হাজার হাজার মুন্নি,
এদেশেতে রাতের পর রাত অভূক্ত থাকে।।
মনচলি চক্রবর্তী
কবি মনচলি চক্রর্বতীর জোড়া কবিতা
১.
কৃষক
গরীব কৃষকদের শরীরের ঘামে, রক্তে
সযত্নে ফসল সোনার ফলায় মাঠে।
প্রতিদিন আমাদের আহারের যোগান দেয়,
নিত্য যাদের দিন কষ্টে কাটে।
বাঁচতে আমাদের কৃষকদের বেঁচেথাকা অপরিহার্য।
২.
জীবন সংগ্রাম
দু-মুঠো গ্রাসের জন্য শ্রম
দিবা রাত্রি, সংগ্রামে কত শত নারী,
রোগ, বিপদ, ঝড়ের প্রতিকূলতায়
সাহসে বুক বেঁধে পথে দেয় পাড়ি।
সৈকত মজুমদার
কবি সৈকত মজুমদারের জোড়া কবিতা
১.
বিষকন্যা
বিষকন্যা তুমি
মুখে অনিচ্ছাকৃত হাসি,
তবু বলি -
তোমাকেই আমি ভালোবাসি।
এটাই রীতি
পরমানন্দে কেউ অসুখী,
আর আমি -
শয্যাশায়ী অবস্থায়ও সুখী।
২.
গৃহবাসী
তোমার মায়ায় আমি
অথচ ছায়ায় অন্য কেউ।
তোমার হৃদয়ে আমি
চোখের তারায় হাজারজন!
তোমার উড়ন্ত মন
বে-খেয়ালে জীবন আমার।
ঠোঁটের কোণে তোমার
নরম হাসি, আমি গৃহবাসী!
অতনু রায় চৌধুরী
কবি অতনু রায় চৌধুরীর জোড়া কবিতা
১.
ভাঙ্গা ঘর
ভাঙ্গাচুরা জড়িয়ে থাকে
আমাদের আশ্রয়।
ভেঙ্গে যাওয়া ঘড়টাতে
প্রতিদিনই জীবন যুদ্ধ হয়।
২.
শেষ যাত্রা
হারিয়ে গেলেই জড়িয়ে ধরে
নীরব স্মৃতির ভাঁজে।
শূন্য আকাশে সবই ফাঁকা
থাকে না কিছুই শেষ যাত্রাতে।
অরিজিৎ মজুমদার
কবি অরিজিৎ মজুমদারের জোড়া কবিতা;
১.
গাছের মায়া
....................
বিশাল এক হাট বাজার
যেটি ছিল গ্রামের মনি,
তারই মাঝে চির প্রহরী
অশ্বত্থ গাছ খানি।
সুখ দুঃখের সে সঙ্গী সাথী
বিশাল ছায়ার আধার,
শান্ত হাওয়ায় শান্ত করে
ভরায় মনের দুয়ার।
হাটের দিনে সব্জিওয়ালা
তারই নিচে বসে,
সকল পসরা বেচার পর
টাকার হিসেব কষে।
২৫শে বৈশাখে তারই নিচে
হয়,কবিগুরুর আহ্বান,
ভোটের আগে সেই হলো
সব মিটিং মিছিলের স্থান।
পূর্ণ করে সকল চাওয়া
গ্রামবাসী যা চায়,
ওর ছায়াতে শুয়েই মানুষ
স্বপ্নসুখে হারায়।
একদিন গ্রামে হঠাৎ এলো
সরকারি পরোয়ানা
কাঁচা রাস্তা পাকা হবে
তাতে নেই কারো মানা।
রাস্তা মেপে দেখা গেল
সড়ক নকশা ধরে,
রাস্তার ঠিক মধ্যিখানে
অশ্বত্থ গাছ পড়ে।
গ্রামবাসীরা দোটানায়
এবার হবে কি?
অশ্বত্থ গাছ কাটা হবে
নাকি সড়ক থাকবে বাকি।
হঠাৎ কিছু মানুষ বলল
গাছই কাটা হোক,
তার কারণে বাড়ছে এখন
বন-বাদাড় আর ঝোপ।
গাছ কাটার বড় যন্ত্র এল
এল অনেক কাঠুরে
টুকরো করে কাটা হবে
সমূলে উপরে।
কাটার কাজ শুরু হল
কোপ পড়লো গাছে,
একবারো কেউ ভাবলোনা হায়
গাছেরও যে প্রাণ আছে।
নিজের ভেতর কাঁদতে থাকে
গাছের অন্তকায়া,
এই তাহলে গ্রামবাসীদের
আমার প্রতি মায়া।
২.
করোনার করুণা
চারিদিকে আজ হাহাকারসাইরেন দিনে রাতে,কিন্তু সে যুদ্ধে আজসব দেশ একসাথে।যুদ্ধটা নয় মানুষে মানুষেবিপক্ষ এক ভাইরাস,আজ মনে হয় সৃষ্টিকর্তানিজের সৃষ্টিতেই নিরাশ।দেবদূত আজ সকল ডাক্তারমন্দির হাসপাতাল,,সকলে আজ ভাই ভাই সেভদ্র হোক আর মাতাল।তাই আজ বুঝিনা আমিকি এই করোনা,ঈশ্বরের কোনো অভিশাপনাকি তার করুণা।কিন্তু এই করুনাতেবলি যে শত শত,দয়াময় তুমি নাও একেকষ্ট দেবে আর কত।।
মোঃ রুবেল
কবি মোঃ রুবেলের জোড়া কবিতা
১.
তুমিও কষ্ট লুকাও,
আমিও কষ্ট লুকাই।
অশ্রু ঝড়ে রোজ নিয়ম করে।
তোমার - আমার অঘোষিত
এক বিদ্রোহে।
২.
তোমরা কেন বন্দুক হাতে
ঘৃণা ছড়াও গোলাবারুদে!
আমরা চাই --
ভালোবাসার মিছিল সুদীর্ঘ হোক।
দুহাত ভরুক লাল গোলাপে।
Subscribe to:
Posts (Atom)
উর্মি সাহা
মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...
-
আজ আশ্বিনের শেষ কার্তিকের শুরু এই দিনটা বিশেষ ভাবে বিশেষ, বাংলার এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে। জানি না বাংলার বাইরেও এইভাবে বিশেষ হয়ে উঠেছে কিন...
-
মূক ফেনীর মুখর পাঁচালি একটি বহুল প্রচারিত বাংলা প্রবাদ ‘ভাগের মা গঙ্গা পায়না’ ৷ প্রবাদটির মধ্য দিয়ে মায়ের অসহায়ত্বের যন্ত্রণাটিই ব্যক্ত হয়ে...