Wednesday, March 24, 2021
সম্পাদকীয়
দিপিকা রায়
প্রসেনজিৎ সাহা
প্রসেনজিৎ দে
স্ট্রেংথ অ্যাঙ্গেল আঁকার মতো
তোমার বর্ণনা করা সহজ হলে,
আমি সম্মানিত হতাম প্রথম পুরষ্কারে।
পশ্চাদভিমুখে গুছিয়ে রাখা চুলের
অভিমুখে, গাল জড়িয়ে ধৃষ্টতা দেখায় জুলপি।
চোখ বুঝলেই সন্ধ্যা নামবে, আলোই থাক।
একবুক কালো আকাশে তারা যেমন উঠে,
তেমনি তোমার হাসিতে ঝরে পড়ে মুক্ত।
অনন্ত অমলিন পদচিহ্ন জুড়ে উঠোন
তোমার আলতা গড়া পায়ের, আর
নূপুরের ছন্দে গুঞ্জিয়মান সারাটা বাড়ি।
তুমি ঘুমিয়ে গেলে অবচেতন মনে
এলোমেলো চুল সরিয়ে দেয়,
মেহেন্দির গন্ধে লেপে থাকা হাত।
আর এভাবেই স্পষ্ট হয়ে উঠে
দিনের প্রতিটা সূর্য;
নতুন প্রেমের গল্প নিয়ে।
সংগীতা শীল
বর্ষা দে
অতনু রায় চৌধুরী
সুপর্না কর
রামপ্রসাদ কুন্ডু
তোমাকে ভালোবাসার নামে মনের কোণে স্থান দিয়েছিলাম তা অগ্রাহ্য করার সাহস
তুমি কোথায় পেয়েছিলে?
দিতে তো পারবে না কিছুই
তবে কেন নিলেনা।
বড় আশা করে বুকে সাহস নিয়ে
তোমার হাতে দিয়েছিলাম ভালোবাসার লাল গোলাপ
ফেরানো ঠিক হয়নি ভালোবাসার ফুল
দেবীও অর্ঘ্য নিয়ে ফেরায়
দেয় মনের যত আশা, চাওয়া-পাওয়া
তুমি তো নারী,
মানুষ এত কেন হিংসুক কেন?
এত কেন বিভেদে সমাজে?
কোথায় যাই এত মান-অভিমান
যখন হও লাঞ্চিত.....
তবুও হে নারী তুমি পূজিত, ভালোবাসার।
আলমগীর কবীর
লিটন শব্দকর
এমনও ভেঙেচুরে বসন্ত আসে,
দুপেয়ে মাঠ, মায়াখেলার গলি।
সব ফোলা ফাঁপা মহল থেকে
ভেসে আসে বিকে যাওয়া মুখ-
হাসি ও সাজানো গানের কলি।
পূজা মজুমদার
সাধুবাদ
লিখ দেখ ভিতর নহে,
সেই রূপ অশেষ হয়েন নাই।
কেহ বিদ্যা ডিঙ্গা সম্প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠে,পক্ক ভুবন উদরান্ন। ভগ্ন নিরুদ্বেগে।।
যত পরিমানে প্রদর্শনার্থে বশীভূত মানব।
আরম্ভ আস্তে স্বকীয় দ্বার।
শুনিয়া আরম্ভ নতুবা পূর্বে অরণ্যদান।
সৈকত মজুমদার
টিটু বনিক
বিটু মজুমদার
তোমাকে মনে পড়ে
জীবনটা অপূর্ণতার
আঘাতে হোচট খায় বারবার ৷
বিশ্বাস করো প্রিয়তমা তোমাকে ঠিক
ততোটাই ভালবেসেছিলাম, অনেকেই এর
আগে পারেনি কেউ ।
জানি না কতটা নেশায় চূড় হয়ে আছি আমি ৷
হয়তো অ্যালকোহলেও অতটা মাদকতা নেই,
যতটা ছিল তোমার প্রেমে ৷
তুমি আসবে বলে আমার প্রতিটা প্রহর কাটে অপেক্ষায়,
প্রতীক্ষার এই দীর্ঘ লগ্নে, আজ ভীষণ ভীষণ ভাবে
মনে পড়ছে তোমাকে, শুধু
তোমাকে।
সজীব পাল
আলো দিয়েছে অন্ধকার
"দাদা ওই দেখ একটা লোক আসছে, উনাকে জিজ্ঞাসা করি শ্যামল মিত্রের বাড়ি কোনটা? "
"না! তোকে বারন করেছি না রাস্তা ঘাটে বাড়তি কথা বলবি না প্রয়োজন হলে আমি জিজ্ঞেস করব? "
" কিন্তু দাদা কাউকে জিজ্ঞেস না করলে বাড়িটা খুজেঁ পাবি কিভাবে?"
আমি আর কোনো কথা বলছি না। চুপচাপ পুবে একটা চিকন পাকা রোড ধরে হাঁটছি ।জায়গাটায় কেমন যেন অদ্ভুত শান্ত স্নিগ্ধ জড়ানো ।আশি কিংবা নব্বই এর দশকের পথ এই একবিংশ শতাব্দীতে ভুলে হয়তো রয়ে গেছে।আধুনিক ধূসর বর্ণ এই পথের শরীর স্পর্শ করতে পারেনি।দুধারে কত বাহারি গাছ বাহাদুর রাজার মত টান টান শিরধারা তুলে দাড়িয়ে আছে। পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে ছবি তুললাম, প্রকৃতির যৌবনের। আহা কত শান্তি এই রূপে!
আমরা রাধানগর এসেছি। আমাদের এক দূর সম্পর্কের মাসির বাড়ি যাবো। কিন্তু বাড়ি চিনি না। ওরা এখানে আসার পর আমাদের আর আসা হয়নি। মাসির কোনো ছেলে মেয়ে নেই। মেসো চাকরির করেন জেল পুলিশের। মাসি ফোনে বলেছেন সে এখন আছেন সোনামুড়া জেলে। নয়তো মেসোই আমাদের বাস স্ট্যান্ড থেকে নিয়ে যেতেন। মেসো বড্ড হাস্য রসিক মানুষ।
মিনিট তিরিশ হাঁটার পর এক জন্য লোককে বলে মেসোর বাড়ির ঠিকানাটা জেনেছি।
মাধুবী মাসি আমাদের দেখে ভেবেছিলাম বিস্মিত হবেন। ছুটেএসে তিন্নিকে কোলে নিয়ে বিদ্যুৎ গতিতে চুমু খাবেন। কিন্তু এর কোনোটাই হলো না। মাসি বারান্দায় হাতলযুক্ত একটা সেকালের কাঠের চেয়ারে বসে পানের বাটা থেকে পান বানাচ্ছে। আমরা উঠানে এসে দাড়াঁতেই এক নজর শহরি দৃষ্টিতে দেখলেন।বললেন, " আয় ঘরে আয়। "
সেই মাসি আর এই মাসিতে হিউজ তফাৎ। বয়সের সাথে বোধহয় অন্যের প্রতি ভালোবাসাটাও ক্ষীণ হয়ে আসে। তখন মানুষ নিজেকে স্নেহ করে, ভালোবাসে। আর এইটাই হয়তো প্রকৃতির নিয়ম।
জায়গাটা সত্যিই অসাধারণ। প্রকৃত গ্রামের গন্ধ পাওয়া যায় এখানকার বাতাসে।বিকালে হাঁটতে হাঁটতে ক্যাম্পটিলা নামে একটা মাঠে এসেছি। দীর্ঘ বিস্তৃত মাঠ। একপাশে ছোটছোট ছেলেরা ক্রিকেট বল খেলছে।আর নিজেদের মধ্যে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছে। এখানকার আঞ্চলিক ভাষাটা বেশ লাগে শুনতে।একজন আরেকজনকে ক্রুদ্ধ হয়ে বলল, " কিরে কনাই গেছত গৈ? বল এমুই দিই যাগোই যে তুই দেয়র না না কিতা! "
ইচ্ছে করছে এদের সাথে কথা বলি। কিন্তু আমার চিন্তাই সার। যত বকবকানি নিজের সাথেই। মানুষের সাথে সহজে মিশতে পারি না।অপরিচিত কারোর সাথে সঙ্গে কথা বলার সময় , কোনো শব্দই মস্তিষ্কে থাকে না।নিঃসঙ্গ পাখির মতো নিঃশব্দ হয়ে যাই।
রাতে খেতে বসে আশ্চর্য হয়ে গেলাম। তিন্নিকে কোলে নিয়ে মাসি খাওয়াচ্ছে। মৃদু হেসে বললাম, " মাসি তিন্নি কি সে ছোট্টটি নাকি যে তাকে বেশ আমোদ করে কোলে বসিয়ে খাবাচ্ছ? "
আমার মাধুবী মাসির হাসিতে জ্যোৎস্নার আলো ঝরে। মাসি যৌবনে কি যে রূপবতী ছিলেন! এখন অবশ্য রূপের কিছু ভাটি পরেছে।কিন্তু সেই মালিন্যহীন স্বচ্ছ হাসিতে বার্ধক্য ছুঁতেই পারেনি। ঠোঁটগুলো অদ্ভুত ভঙ্গিতে বাঁকিয়ে হাসলো।এবং বলল, " আপনাকেও কি কম খাবাইছি বাপজান!"
খাওয়া-দাওয়া শেষ করতে প্রায় দশটা বেজে গেছে। গ্রামাঞ্চলে দশটা মানে নিশি রাত।গল্প গুজব ভালোই হল। তিন্নির ঘুমে চোখ টলমল করছে দেখে মাসি তাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে আসে। তারপর বারান্দায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে বসে মাসি যে কথাগুলো বলল, সেই কথাগুলো শুনে রক্তের অদ্ভুত শীতলতায় সমস্ত শরীর অবশ হয়ে গেল।আমি যেন মাসির অন্তর্নিহিত দীর্ঘ একাকিত্ব ও অপেক্ষায় চাপা পড়া কান্নার গোপন শব্দ শুনতে পেলাম।
মাধুবী মাসি এখানে একাই থাকেন। গত বছর জৈষ্ঠ্য মাসের কথা। প্রচন্ড বৃষ্টি। আকাশের কালো মেঘ সেদিন মাসির কাল হয়ে ঝরেছিল। দুপুর আড়াইটা বাজে। হঠাৎ বৃষ্টির মধ্যে একজন অপরিচিত বৃদ্ধ মহিলা বারান্দায় এসে আশ্রয় চাইলো। বয়স ষাট কি বাষট্টি। কুচকে যাওয়া অমসৃণ ত্বক। ধবধবে চুল। ভিজে শরীর মুছার জন্য মাসি তাকে একটা গামছা এনে দেয়। মহিলাটি শরীর মুছতে মুছতে বলল, " তোর স্বামীর নাম শ্যামল মিত্র মা? "
মাসি ক্ষাণিকটা অবাক হলেন। শান্তভাবে উত্তর দিলো, " হ"
" গতকাল যে তোর সাথে ঝগড়া করে তোর স্বামী বাড়ি ছেড়ে গেল এখনও সে ফিরে নি, অথচ একটা খবর পর্যন্ত নিলি না তার! কোথায় আছে সেই এখন?
মাসি বিস্মিত হয়ে বললেন, " আপনে এই খবর কিভাবে জানলেন? কে আপনে? "
বৃদ্ধ মহিলা কোচকানো ঠোঁটে বিজ্ঞের মতো হাসল কিন্তু কিছুই বলল না। সে যেন তার পরিচয় গোপন রাখতে চায়।
মাসি এই হাসি দেখে ভয় পেয়ে গেলেন। বৃষ্টির শব্দ গুলো কি অদ্ভুত। মাসি এবার উত্তেজিত হয়ে বললেন, "চুপ করে আছেন কেন! বলুন সে কোথায়? "
মহিলাটি হাসতে হাসতে বৃষ্টির মধ্যেই চলে যাচ্ছে। আর শুধু একনাগাড়ে বলে যাচ্ছে, "সে আর আসবে না! সে আর আসবে না! সে অনেক দূর চলে গেছে। সেই ঠিকানা পাখি ছাড়া আর কেউ ছাড়া জানে না। "
তারপর কত খোঁজ কত পুলিশ কাচারী করল , কিন্তু কেউ মাসির মনের মানুষটিকে খুজে এনে দিতে পারেনি। পৃথিবীর মতন একটা নারীর শোক কতটা গভীর হলে যে এমন গোপনে কাদঁতে পারে শুধু ঈশ্বর জানেন।
আমার মাধুবী মাসি দারুণ অভীমানি নারী। এত বড় ঘটনার কথা কোনো আত্মীয় স্বজনদের কাছে জানায়নি।সে একা এই সমুদ্র যন্ত্রণা ভোগ করছে। মানুষ এমন এক নিষ্ঠুর জাতি,যে তাকে যতবেশি ভালোবাসবে তাকে সে ততই বেশি পোড়াবে। এই পোড়ানো চিতার আগুন;যেন জন্ম জন্মান্তরেও নিভে না।
সকালে আমি আর তিন্নি বাড়ি ফেরার জন্য বাসে বসে আছি। মাসি দাঁড়িয়ে আছে জানলার কাছে। মিনিট কয়েক পরে বাস ছেড়ে দিয়েছে। তিন্নি জানলা দিয়ে মাথা বের করে মাসিকে দেখলো। তারপর আমাকে বলছে. " দাদা মাসি কাঁদছে, দেখ না মাসি কাঁদছে। "
কাঁদুক। এই কান্না তাকে বাঁচিয়ে রাখবে। আমার মস্তিষ্কের ভেতর কে যেন অনবরত আওড়াচ্ছে, " এখন হঠাৎ কান্না এলে জানলা খুলে দিও! /আমার হঠাৎ মৃত্যু হলে জন্মকেই দায় দিও? "
মিঠুন দেবনাথ
পিঁপড়ে ,পিঁপড়ে, পিঁপড়ে ,
পিঁপড়ে শিখিয়েছে দলবদ্ধভাবে কাজ করতে।
পিঁপড়ে শিখিয়েছে সংগ্রাম করে চলতে।
পাখি, পাখি, পাখি ,
পাখি শিখিয়েছে একইসঙ্গে চলতে।
পাখি ,পাখি, পাখি ,
পাখি শিখিয়েছে মন খুলে নাচতে ।
পশু ,পশু ,পশু ,
পশু শেখায় ভালোবাসা বলতে।
পশু ,পশু ,পশু ,
পশু শেখায় উদ্যম গতিতে চলতে।
ফুল, ফুল, ফুল ,
ফুল শেখায় ধীরে ধীরে ফুটতে।
ফুল, ফুল, ফুল ,
ফুল শেখায় আনন্দ ও ভালোবাসায় ছুটতে।
নদী, নদী, নদী,
নদী শেখায় অচিন দেশে ঢলতে।
নদী,নদী, নদী,
নদী শেখায় আপন বেগে চলতে।
পাহাড়, পাহাড়, পাহাড় ,
পাহাড় শেখায় উঁচু ,মহান হতে।
পাহাড়, পাহাড়, পাহাড়,
পাহাড় শেখায় নিস্তব্ধতায় থাকতে।
ঝর্ণা, ঝর্ণা, ঝর্ণা ,
ঝর্ণা শেখায় অন্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে।
ঝর্ণা,ঝর্ণা, ঝর্ণা ,
ঝর্ণা শেখায় পাহাড়ে অসহায় গাছকে বাঁচাতে।
গাছ, গাছ, গাছ,
গাছ শেখায় মাথা উঁচু করে বাঁচতে।
গাছ,গাছ, গাছ ,
গাছ শেখায় স্নিগ্ধ মধুর বাতাসে সাঁজতে ও
গাছ শেখায় প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে।
চাঁদ, চাঁদ, চাঁদ ,
চাঁদমামা শেখায় মধুর কথা বলতে।
চাঁদ, চাঁদ, চাঁদ,
চাঁদ শেখায় অন্ধকারে নিমজ্জিত আলো দিতে।
সূর্য্, সূর্য্,সূর্য্,
সূর্য্ শেখায় সময়ের মূল্য দিতে।
সূর্য্,সূর্য্ ,সূর্য্,
সূর্য শেখায় আপন তেজে জ্বলতে।
মানুষ, মানুষ, মানুষ,
মানুষ শেখায় বৃদ্ধি,সুখ,শান্তি ও ভালোবাসা।
মানুষ, মানুষ, মানুষ ,
মানুষ শেখায় পৃথিবীর বুকে মানিয়ে চলতে হয়,
মানুষ শেখায় কিভাবে শান্তি ও মুক্তি পেতে হয় ও
মানুষ শেখায় কিভাবে একতা ও সমতা আনতে হয়।
কবিতা সাহা
রূপন মজুমদার
নীলাঞ্জনা দেবনাথ
দেবাশিস চৌধুরী
দীপক দাস
অভীককুমার দে
উর্মি সাহা
মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...
-
আজ আশ্বিনের শেষ কার্তিকের শুরু এই দিনটা বিশেষ ভাবে বিশেষ, বাংলার এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে। জানি না বাংলার বাইরেও এইভাবে বিশেষ হয়ে উঠেছে কিন...
-
মূক ফেনীর মুখর পাঁচালি একটি বহুল প্রচারিত বাংলা প্রবাদ ‘ভাগের মা গঙ্গা পায়না’ ৷ প্রবাদটির মধ্য দিয়ে মায়ের অসহায়ত্বের যন্ত্রণাটিই ব্যক্ত হয়ে...