Saturday, March 28, 2020

সজীব পাল

গ্রাম ও মায়া 

একটা পুরুষ তার প্রিয়তমার দেহ ও মনের মাঝে সমস্ত সুখ খুঁজে পায় কিংবা একটা সন্তান দীর্ঘ বছর নিখোঁজ হওয়ার পর যখন অকস্মাত্ ফিরে আসে তখন 'মা'য়ের অনুভূতির মাঝে যে একটা সুপ্ত ভালোবাসা ফুটে ওঠে সন্তানের আগমনে অথবা একটা ছেলের মুখে মাকে পাওয়ার যে সন্তোষের ছবি ,আমি সেই সুখ খোঁজে পাই গ্রামের চেনা বৃক্ষের পাতায় পাতায় ।
কেন জানি বসন্ত বিকালে সবুজ প্রান্তরে বসলে, মনে নতুন শক্তি ,প্রবল উদ্দীপনা এবং ফুরফুরে বাতাসে নিজেকে মিশিয়ে এক জীবন্ত প্রাণ বলে অনুভব হয় ।
কি আছে গ্রামের পথ-ঘাট, নদী ,খেত ও মাটির মানুষের মাঝে? কেন তার এত মায়া! এমন নিবিড় মায়া বুকের বাপাশটায় স্পর্শ করে যায় যে তার কোনো বিকল্প হয় না ।

আমি ত সেই জীবনানন্দ যুগের আকাশ ও সবুজ শ্যামল রূপ দেখি নাই ! আমি দেখেছি একবিংশ শতাব্দীতে রোদের অনলে পোড়া ঘাসের মাঠ ,আমি দেখেছি জানলা দিয়ে, অশোকদের পুবের উঠানে বসানো বিদ্যুতের আলোয় রাতের অর্ধ কিবা পূর্ণ চাঁদ ।আমি শুনেছি বৃষ্টিতে মা তার আট বছরের সন্তানকে বলতে ," সোনা বৃষ্টিতে ভিজতে নেই ,অসুখ পড়বে ।" 
এই যে এত তুমুল পরিবর্তন গ্রাম,তবুও যেন মায়া এবং মাটির গন্ধ আজও লেগে আছে ।
আজও ঋতু পরিবর্তন হলে বুঝি,বসন্তের কোকিল আজও সুভাষ দার রান্নার ঘরের পেছনের সেই আম গাছের ডালে বসে বলে যায়,"দেখো আমি বসন্ত নিয়ে এসেছি ।"

ঘরের বারান্দায় পান চিবুতে চিবুতে ঠাকুরমার সেই রাজারানির কেচ্ছা আওড়াতে শুনি ।আজো তার মুখে সেই সরল সহজ বাংলার মানুষের জীবনকথা শুনি । এমনকি ক্ষীণ হলেও মানুষ আজও অন্যের দুখ কিবা সুখের ডাকে সামিল হয় ।
তাই আমিও আজ জীবনানন্দের মতো বলতে চাই ,"আমি বাংলার মুখ দেখিয়াছি, তাই পৃথিবী রূপ আর খুঁজিতে চাই না ।"

No comments:

Post a Comment

অনুপম রায়

সতেরো বছর পর সতেরো বছর পর কি অবসাদ সেটা ধারণা না থাকাই ভালো। যাদের তুমি রেখে গেছ আমাদের হয়ে, তারা এখন উন্মাদ শহরের এক কোণে বসে শ্বাস নেয়। জ...