Friday, September 30, 2022
সম্পাদকীয়
এভাবে চলে গেলে দিন, ঘোরে ঘোরে ফুরিয়ে যাবে কাল। জীবনের প্রকৃত স্বাদ কী তা বুঝার আখাঙ্খা নিয়ে মৃত্যুর কাছে যেতে হবে। মৃত্যু এক গোপন গুরুদেব। যে গুরুগৃহের পাঠ্যক্রম কেউ জানে না। শেষের আগে শুরুর উদযাপনটি শরীরে শিহরণ জাগায় না। এভাবে আসে শারদ। শারদ শুধু আসে। যায় না। আমরা বিসর্জনের ব্যথা কমাই, আগমনীর খুশিতে। শান্ত হোক সকলে। সকলের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। নমস্কার।
জয় দেবনাথ
সম্পাদক
মনন স্রোত
ভবানী বিশ্বাস
তৃপ্তি
.........
সবার সখ ইচ্ছে থাকে,
আমারও আছে।
একটা নিজস্ব জমি হবে
জমিনে খাডি বানাব
বাবার সাথে চাষ করব
একটা পুকুর হবে।
বিকাল হলে বাবা একটা জমিনের আলে বসে থাকে।
কিছু ভাবে? জানি না।
হয়তো সেই সখের কথাই ভাবে।
ঈশ্বর সব দেখেন।
আজ এই খাডি আমার বাবার,
এ জমির মালিক বাবা নিজে।
আমি মা বাবা
আমাদের নিজস্ব জমিতে
রোয়া লাগাচ্ছি।
নীলাঞ্জনা দেবনাথ
গতি
.........
একবার পিঁছু ফিরে দেখো;
কত'টা পথ হেঁটে চলে গেছো একা!
হাঁটতে হাঁটতে বহুদূর কোনো বাঁকে দেখা হয়ে যাবে পুরোনো বন্ধুর।
যার গায়ে আজও আমার গ্রামমাটির পরিচিত গন্ধ।
দূর থেকে দেখে যাও শৈশবের অবয়ব।
জাম্বুরতলায় ফেলে গেছো জুতা;
কঠিন বর্ষায় ছাতা রেখে ভিজে গেছো ঘরে।
ঘরে তুমি কালে ডেকে এনেছো সায়হ্ন।
তবুও;
ফিরে এসো যদি পারো
এখনও রয়ে গেছে পরম যত্নে,
তোমার স্থাবরিত সব গন্ধ।
সব কোলাহল।
জয় দেবনাথ
অঞ্জলী
....................
ধরো, এখন সন্ধ্যা হলো
চাঁদ উঠবে ভেবে, মনে পড়লো অমাবস্যার কথা।
তোমার মাটিঘরে অল্প আলো।
আবছা আলোয় শুনতে পেলে;
তোমার অসুস্থ পিতার
ব্যাধিকম্পন। পাশে তোমার মাতৃরোদন।
দু'য়ে মিলে তোমার বুকব্যথা।
অনটনের ঘোরে
তোমার চোখে ভেসে উঠলো
আতপ চালের থালার পাশে একটি তুলসী গাছ।
তোমার হাত পা অবশ হয়ে যাচ্ছে।
তুমি ভাবছো শীত।
তারপরই মনে পড়লো, এখন গ্রীষ্মকাল।
অবশেষে
তুমি ঈশ্বরকে একটি দীর্ঘঃশ্বাস অঞ্জলী দিলে।
ড. সমীর ভাদুরী
মা আসার আগেই মা চলে গেলেন
................................................
শিউলি বিছানো পথে এসেছে শরৎ। শরৎ মানেই মায়ের আগমনী বার্তা। প্রতি বছর এই কয়েকটা দিনের অপেক্ষায় দিন কাটে। মা আসবে আনন্দের ধারা চারিদিকে। সবাই সবার মতো করে এই কয়েকটা দিন আনন্দ উৎসবে মেতে থাকেন। আমারো প্রতিটি বছর আনন্দেই কাটতো। তবে এই প্রথম পুজো যেখানে আমার আনন্দের ছন্দপতন। আজ বিরাট শূন্যতা এক মা হারা গৃহে। গত পাঁচ মার্চ আমার অরুণাচল প্রদেশের কর্মক্ষেত্রে আমার বাবা মায়ের প্রথম পদার্পণ। আনন্দে গল্পে হাসি খুশিতে প্রমোদ ভ্রমনে সময় কি করে কেটে গেলো বুঝতেই পারলাম না!! পহেলা বৈশাখ,তারপর মায়ের জন্মদিন সব আনন্দ সময় কেটেছে আমাদের সুন্দরভাবে।শ্রী শ্রী দাদামণি ত্রিপুরা ভ্রমনে আসবেন তাই বাড়িতে আসতেই হবে। তবে মা কথা দিয়েছিলো আমরা যখন গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়ি আসবো আমাদের সঙ্গে আবার আসবে। এতোটা ঠিক ছিল,বাড়িতে আসার কয়েকদিন পর এক ভয়ঙ্কর দুর্যোগ নেমে আসে আমাদের পরিবারের উপর । গত ২৯ এপ্রিল রাত্রি বেলা মায়ের ব্রেন স্ট্রোক হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে উদয়পুর হসপিটালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসক, নার্স এবং পরিবারের সবার অনেক চেষ্টার পর ও অবস্থার কোনো পরিবর্তন নেই দেখে জি বি পি হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ও চিকিৎসক, নার্স বিশেষ করে আমাদের গুরু ভ্রাতা সঞ্জয় দার (নার্স )আপ্রাণ চেষ্টা সহযোগিতা সব ব্যর্থ করে আমার মা গত ১লা মে আমাদের চিরতরে ছেড়ে চলে গেছেন। "মা " এই পবিত্র শব্দের ব্যাখ্যা করার মতো শব্দ আমার কাছে নেই। আমার মা মানেই একটা মিষ্টি মাখা পবিত্র অমলিন প্রাণ খোলা হাসি। যেই হাসি সব ভুলিয়ে দেয়।আমার সেই ছোটবেলা থেকেই সকাল বেলা ঘুম ভাঙতো গুন গুন রবীন্দ্র গানের সুরে, কখনো বা হে মোর চিত্ত, পুন্য তীর্থে জাগোরে ধীরে আবৃত্তি আবহে, কখনো বা কান্ডারী হুশিয়ার বা কোনো ব্রতচারী গান আরো কতো কী!!গানের জগতে প্রবেশ মায়ের হাত ধরেই। কতো প্রোগ্রামে নিয়ে যেতো ছোটবেলায় গানের পরীক্ষায় নিয়ে যেতো।রান্না ঘরে রান্না করতেন আমি আর দিদি চট বিছিয়ে বসে বসে পড়তাম।ছোটবেলা থেকেই মা যখন ঠাকুর পুজো দেওয়ার সময় গীতা পাঠ করতেন মায়ের কণ্ঠে শুনে শুনে গীতার শ্লোক মুখস্থ হয়ে যেতো মায়ের সঙ্গে বসে বসে শ্লোক বলতে থাকতাম তার বিনিময়ে মায়ের স্নেহের হাত মাথা বুলিয়ে দিতো। আমার মা খুব ভালো খেলতেন চন্দ্রপুর স্কুলে পড়াকালীন অনেক খেলাতে অংশগ্রহণ করতেন একবার ন্যাশনালে খেলার সুযোগ পেয়ে ও পারিবারিক বাঁধার কারণে যেতে পারেন নি। রকমারি হাতের কাজ জানতেন। আমার আর দিদির শীতের পোশাক সব নিজের হাতে বানিয়ে আমাদের উপহার দিতেন। রাখি বন্ধনের সময় আমার রাখি কিনতে হতোনা মা নিজের হাতে উল দিয়ে রাখি বানিয়ে দিতেন।ঘরের সাজ সজ্জা থেকে শুরু করে ডোর ম্যাট টা পর্যন্ত নিজের হাতে বানানো। সব স্মৃতি ঘরজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চারদিকে।সব কিছুতেই মায়ের ছোঁয়া।শুধু মা নেই।আমার মায়ের হাতের লেখা খুব সুন্দর ছিল। আমার সব নোট দিদির সব নোট রাত জেগে বসে বসে লিখতেন। বাংলা রচনা প্রবন্ধ খুব সুন্দর করে লিখে দিতেন।মায়ের কাছে পড়া শিখে বলা বা লেখা আমার এক অভ্যাস ছিল নয়তো মনে হতো পড়াটা ঠিক হয়নি।অনেক ছেলে মেয়েকে মা পড়িয়েছেন কখনো পারিশ্রমিক নেয়নি ।মা বলতেন ভোর বেলা উঠে পড়া খুব ভালো তাই ভোর বেলা জাগিয়ে দিতেন পড়ার জন্য।আমি যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তাম আমাদের গ্রামের সব বন্ধুরা একসঙ্গে স্কুলে যেতাম আবার ছুটি হলে একসঙ্গে আসতাম। কখনোই মা বাবারা বিশেষ দরকার বা কারণ ছাড়া যেতেন না। স্কুলের দিদিমনি স্যার রা সবসময় ই বলতেন মা যেনো একদিন স্কুলে আসেন। অনেকের মা স্কুলে যেতো কিন্তু আমার মা কখনোই যেতোনা তাই বলে আমার একটু অভিমান হতো মায়ের উপর। তখন আমি ক্লাস ফোরে পড়ি। বার্ষিক পরীক্ষাতে প্রথম হয়েছিলাম সেদিন আমার মা স্কুলে গিয়েছিলো আমি জানতাম না মা আসবে। হঠাৎ দেখে ভীষণ আনন্দে মা কে জড়িয়ে ধরি। আমার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের গ্রামের অন্যান্য ছেলে মেয়েরা ও জড়িয়ে ধরে মাকে। মা সবার মাথায় সমান ভাবে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলেন। সবাই এই দৃশ্য দেখে অভিভূত হয়েছিলেন তারা ও মায়ের কাছে পড়তো। সব দিদিমনি স্যার এই দৃশ্য দেখে মায়ের প্রতি আরো শ্রদ্ধা বেড়ে গেলো।আমার মায়ের একটা প্রতিবাদী কণ্ঠ ছিল কোথাও কখনো বিশেষ করে মেয়েদের উপর কোনো নির্যাতন দেখলে প্রতিবাদ করতেন।বাড়িতে নিজের হাতে লাগানো ফুল গাছ, লাউ গাছ, বেগুন গাছ, আরো কতো গাছ সবাই যেনো কাঁদছে মায়ের জন্য। শ্রী শ্রী বাবামনির লিখিত গ্রন্থ অখণ্ড সংহিতা প্রথম খন্ডের প্রথম পাতা থেকে চতুরবিংশ খন্ডের শেষ পাতা একবার নয় বহুবার পড়া হয়ে গেছে। রামায়ণ অনেকবার পড়া। মহাভারত ছিলোনা ঘরে আমি কলেজে পড়ার সময় ছাত্র পড়িয়ে প্রথম উপার্জনে মহাভারত কিনে দিয়েছিলাম সেই মহাভারত ও কয়েকবার পড়া হয়ে গেছে।সব সময় পুজো দেওয়ার সময় বলতেন যেনো শাঁখা সিঁদুরে মৃত্যু হয়।বাবাকে সবসময় বলতেন আমি তোমার আগেই যাবো!!সেই কথাই সত্যি হলো।খুব ভালো লুডু খেলতেন হারানো খুব কষ্ট ছিল। বাইশ কবির পদ্মপুরাণ মুখস্থ ছিল।প্রতিদিন পত্রিকা পড়তেন আর কখনো আমার আর্টিকেল প্রকাশিত হলে ফোন করে বলতেন বাবু তোমার লেখাটা খুব সুন্দর হইসে। ফেইসবুকে ও কোনো পোস্ট করলেই বলতো আজ আমি দেখেছি তোমার পোস্ট। ইউটিউবে নানা ধরনের ভিডিও দেখে কতো কিছু জিজ্ঞেস করতো!!আমার মা চাহিদা বিলাসিতা চাওয়া পাওয়ার উর্দ্ধে ছিলেন।এক সহজ সরল সুন্দর পবিত্র ঈশ্বরময় জীবন কাটিয়ে গেছেন।সকালে ঘুম থেকে উঠে মা বাবাকে প্রণাম করা মায়ের স্নেহের হাত আশীর্বাদের হাত মাথায় পেলে মনে হতো এ এক রক্ষা কবচ। সেই স্নেহের হাত আর মাথায় উঠবেনা। মা ছাড়া এক মুহূর্ত ভাবা অসম্ভব। মা তোমাকে ছাড়া আমরা কি করে থাকবো!! আমরা কেউ ভালো নেই মা।বিরাট শুন্যতা আজ আমাদের মনে গৃহে সব জায়গায়।আর কখনো মা মাখা গন্ধ পাবোনা,মায়ের আঁচল, মায়ের হাতের কোমল স্পর্শ,মায়ের স্নেহ আদর ভালোবাসা পাবোনা, মায়ের ফোন আসবে না আর কখনো, মায়ের হাতের রান্না, লক্ষী পুজোর স্পেশাল আল্পনা সব স্মৃতি হয়ে গেলো !!এই অভাব কখনো পূরণ হবে না।আমি আর দিদি খুব কষ্টে আছি মা!! বাবা আরো বেশী কষ্টে আছে সুখে দুঃখের জীবন সাথী একজন প্রকৃত বন্ধু হারিয়েছেন ।এইবারের দুর্গা পুজো হবে আমার সেই শৈশব থেকে মায়ের সঙ্গে কাটানো পুজো মুহূর্ত। এইবার না হয় সুন্দর স্মৃতি ভাবনায় পুজো কাটবে আমার। মা তুমি স্বরূপানন্দ ধামে ভালো থেকো। পুনর্জন্ম বলে কিছু যদি থাকে আমার একটাই প্রার্থনা আমি যেনো আবার তোমার সন্তান হিসেবেই আসি তোমাকে আবার মা রূপেই যেনো পাই। পৃথিবীর সব মায়েরা সুস্থ থাকুক ভালো থাকুক এই প্রার্থনা।
শ্রীমান দাস
উত্তরায়ণের প্রতীক্ষা
...............................
দক্ষিণী ঝঞ্জা মাতাল হতে হতে
নিজেই জানে না- লাগাম কোথায়?
একের পর এক বিধ্বংসী তান্ডব
টাক্কাতুলসীর বুকে এঁকে দিয়েছে
দুঃসহ যন্ত্রণার মানচিত্র।
যে শরীরে লেপ্টে থাকতো স্নিগ্ধতার পরশ,
সে আজ বগলদাবা বেলাগাম বেলেল্লাপনার।
মহীরুহের পতন আশাতীত !
মাটি ফুঁড়ে জন্ম নেওয়া চারাগুলো
উত্তরায়ণের প্রতীক্ষায়।
সৈকত মজুমদার
অন্ধি-সন্ধি
.................
তোমার আঁচলের উগ্র পারফিউমের গন্ধ
আমায় করে রেখেছিল একদিন অন্ধ !
এখন আমার চোখে -
মাইনাস 3.50 চশমা, দূরের সব
স্পষ্ট দেখি; তাই আর
ঠকাতে পারে না কেউ আগের মতন।
তুমি যে পাতায় চলো, আমি
তার শিরা উপশিরায় বিচরণ করি।
তোমার পারফিউম আমার চেনা তাই
আমি সব জেনেও নীরবে ঠকে যাই।
সৈকত সরকার
ও আমার মিষ্টি একটি যাতনা
-------------------------------------------
যে আছে মনের গহীন কোনে
একলা আমি লোকের বনে
দগদগে ঘা আজো বেঁচে, অতীতের ঘটনা
ও আমার মিষ্টি একটি যাতনা।
ভোলার ঔষধ ভুলেও পাইনি
হয়তো আমিই ভুলতে চাইনি
এ জীবনে যা আছে সব ভোলার মতোনা
ও আমার মিষ্টি একটি যাতনা।।
ওর ফেলে যাওয়া যত স্মৃতি
সে স্মৃতিতে শত দিবারাতি
লোনা গঙ্গা বইছে দেখো কতোনা
ও আমার মিষ্টি একটি যাতনা।।
ও যদি না থাকতো
ও যদি না ছাড়তো
এ কবিতা লেখাও হয় হতোনা
ও আমার মিষ্টি একটি যাতনা।।
অভীককুমার দে
কাঁচের ঘর
................
এইভাবে কেনাবেচা হলে
সব পথেই গজিয়ে উঠবে বাজার,
বাজার মানেই দর কষাকষি
যে যেমন মূল্য দিতে পারে জীবনের;
ক্রেতা আসে
ক্রেতা যায়
বিক্রেতার মুখে স্বাধীনতার
হাসি।
সামগ্রীর মতো মানুষগুলো
হাতের পর হাত হলে
মালিক তিনি,
নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়েন
পরিকল্পিত কাঁচের ঘরে।
আলমগীর কবীর
আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন
..........................
সেদিনও কেউ পাশে এসে দাড়ায়নি
আজও কেউ পাশে নেই;
ঐ একই ব্যক্তি একটা পুরোনো বট বৃক্ষের ন্যায় নিঃস্বার্থভাবে জীবনের সমস্তটা জুড়ে পাশে দাড়িয়ে রয়েছেন।
হাতেগোনা দু-একজন ছাড়া জীবনে তেমন কারো কাছ থেকে উৎসাহ বা অনুপ্রেরণা পাইনি।
কখনো নিজে সীদ্ধান্তকে সঠিক বলে আখ্যা পাইনি।
যিনি অন্ধের মত বিশ্বাস করতেন,
আশা রাখতেন, ভালবাসতেন,
অন্ধের মত সব সীদ্ধান্তকে সঠিক বলে আখ্যা দিতেন; তিনি আমার জীবনের সমস্তটা জুড়ে পাশে থাকা আমার বাবা।
এই মানুষটার মুখে কখনো হাসি ফোটাতে পারিনি
কিন্তুু মানুষটা আমার জন্য অনেক চোখের পানি ফেলেছেন!
জীবনে কখনো দূরে থাকতে দেননি,
সবসময় পাশে পাশে রেখেছেন।
একা নিজ পায়ে আকাশটা নাগাল পাইনি বলে
তিনি আমায় কাঁধে তুলে মেঘটাকে ছুঁতে সাহায্য করেছেন;
আকাশ ছুঁয়া স্বপ্নটা না হয় আমার পরবর্তী প্রজন্মের হাতে রেখে গেলাম।
তারফিনা শাহানাজ রজব
শেষ প্রশ্ন!
...................
ভালোবাসা হয় কি দু'বার?
এইটা না হোক শেষবার।
চপল মেয়েটা একতরফা ভালোবেসে-
সয্য করে এই আমাকে হেসে হেসে।
তারারা আজ করছে দেখো আবদার।
তার তরেতে বৃষ্টি বিলাস হোক না আবার।
শিশিরের গল্প দাও মুছে
যার পড়বে মনে- সে গোপনে
ভুলে আছে।
এমনি করে ভালোবেসে
কেউ কি বাচে?
কবির মন খারাপের গল্পগুলির
হোক অবসান।
নিথর দেহে জাগিয়ে তুলুক
আবার প্রান।
ভালোবাসা হবে নাকি দু'বার -
মনকে বুঝাও এইটা না হোক
শেষবার!
মেঘের ছোয়ায় পড়ে থেকে কি যে পাও!
বৃষ্টি ছুয়ে কাকে আবার ফেরত চাও?
ফিরার জন্য হারায়নি কেউ ধরায়,
খুজছো যাকে দূরের তারায় তারায়।
যে তোমার কষ্টে ভাসবে,
তার তরেতে হাসবে-
আকাশ সমান প্রেম এনে
তাকে ভালোবাসবে।
আজ কবির মনে ভালোবাসা
আসুক দু'বার।
কথা দিলাম প্রিয়
এইটাই হবে শেষবার।
হ্যাঁ শেষবার।
অভিজিৎ দাস
বেকার ছেলে
...................
আমরা হলাম বেকার ছেলে
বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখি
হিংসা বিভেদ ভুলে।
সমাজের চুখে আমরা নাকি নিষ্কর্মা
কিন্তু আমরা জানি
আমরা এক একটা বিশ্বকর্মা।
চাকরি পেলেই নাকি স্ব-রোজগারি
আমরা নাকি বাবা মায়ের
কোষাগার খালি করি।
আমরা পারি না কোন ভালো কাপড় পড়তে
পড়তে হয় ছিড়া জামা কাপড়
মানুষের নানাহ অজুহাতে।
ভালো কাজ করলেও
সবাই বলে এটা আমরাও পারি
খারাপ কাজেও আমাদের নাকি
অনেক পাল্লা ভারি।
বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ালে
বলে সবাই এসব নমুনা
দুর্দিনে পাশ কাটিয়ে গেলে
সবাই বলে ওদের থেকে এটাই পাওনা।
আগে গেলেও সমস্যা মোদের
পিছনে নেই কোন ঠাই
বেকার বলে নেই কোন দাম
কপালটা মোদের পুড়ে ছাই।
লিটন শব্দকর
কুয়োতলা
................
তাকে দেখা গেছে শেষবার
কপিকলের সহজ মরচে থেকে
কাঠগোলাপের ছাপ মুছে দিয়ে
পাতায় নীলরঙা রুল টেনে যেতে
নিজেকে নিজেই
লক্ষ আলপিন উপহার
জিজ্ঞেস করি কতবার
পুড়ে যাওয়া জ্বরে
বোতামগুলো একটি একটি করে
বুক পালটায়
কুয়োতলায়
পাশফেরানো ঘড়ির সকল কাটা
খুলে পড়ে
কুয়াশার মায়ায় তাকে
দেখা যায়নি আর...
সজীব কুমার পাল
সমুদ্র এবং সংসার
............................
বৃষ্টির শেষ বিন্দু পরেছে
সদ্য প্রেম ভেঙে যাওয়া প্রেমিকার বুকে।
তাদের দুঃখের সংসার গড়ে ওঠলো
উপমহাদেশের এক নির্জন বালুচরে,
কিন্তু-
তাদের এমন সংসারের পাশে একটি
মৃত্যুর ধ্বনি উৎপন্ন হতে লাগলো!
মহাসাগর ছড়ায় এবং মহানদী ,
'আর্নেস্ট হেমিংওয়ে' এর মতো
আমিও লিখে ফেলি 'সমুদ্র এবং সংসার'।
শর্মিষ্ঠা ঘোষ
বিংশ সংখ্যা
নায়িকার নৃত্যনাট্য
শর্মিষ্ঠা ঘোষ
উঃ২৪ পরগণা
......................
মেঘলা রাতের জলে চাঁদ নেই,
আঁধারের দহনে জলজ প্রাণায়াম
ছায়ার দমকে ঘেমে ওঠে পাতারা
ব্যাঙের ভীত গানে থেমেছে ক্যাওস নায়িকার নৃত্যনাট্য
ভুলেছ নিজের নাম
ভুলেছ অস্থির কানা ইঁদুর দৌড়
ভুলেছ নশ্বর চেতনা
জীবিত বলতে,
বেহুঁশ আর কিছু অশরীরীর শ্বাসকষ্ট ...
সহিদুল ইসলাম
শাসনের মুষ্টি
....................
আজকাল সে খুব খুশি,
খুব খুশি।
আল্লাকে দেওয়া স্পর্ধা-কথা,
রাখতে পেরেছে শয়তানটা।
সে খুব খুশি।
ভগবান সম গর্বিত দেশের শিড়ঁদাড়াতে
ঘুনে ধরাতে পেরেছে শত্রুটা।
সে খুব খুশি।
শুনেছি,
মহামান্য আদালতেও নাকি
উৎকোচ চলে তাঁর।
এক পেয়ালায় চুমুকে মাতাল হওয়া
বন্ধুদের মাঝেও, গড়লো সে কঠিন পাহাড়।
দেখেছি,
কবিদের কবিতার মস্তিষ্কেও
সফল তাঁর অভিযান।
মানুষ পোড়ানো আগুন শিখায় বসে
গিলছে সে সংবিধান।
বেনিয়াদের জন্য সে ই ছিল
শোষনের যষ্ঠী।
সাম্প্রদায়িকতা
তুমি আজকেও কি
আছো শাসনের মুষ্টি?
চন্দন পাল
নবোন্মেষ (২)
.....................
পুবে কিসের 'পাখি সব করে রব'! পাখসাট ছুটাছুটি।
না, ভূকম্প নয় । দৈনালী।
আলো আসছে আলো। ফুল চোখ খুলবে,
যার লাগি, কারও দশ ঘন্টা আঁধার কাটার অপেক্ষা।
বিবর্তনে শুরু হবে চষা বা চর্চা বা দূর্গত উদ্ধার ।
কারও দশ মাস, কারওবা আঠারোশটা দিন ।
পথ দেখতে, দেখাতে, ভরসা পেতে
শত অষ্টচরণে, দেবদীপ হাতে, চলেছে মননস্রোত ।
সত্য সুন্দর আদর্শের প্রতিবিম্ব সৃষ্টিতে
নেতাজি না ক্ষুদি না রাম !।
সমভূমে বাজে পাঞ্চজন্য,
ত্রিধারায়, প্রবাহ ধায়, মনু থেকে ফেনী।
নবোন্মেষে বিধান।
রুপন সৃত্রধর
গুজব
.............
গুজবে গুজব ছয়লাপ ভাই
চারিদিকে সত্যের যাচাই নাই।
মাঝে মাঝে, মানুষ গুলো সব
কেমন যেন অমানুষ বনে যায়!
ছেলেধরার নামে অসহায় মানুষ
অযথা জনতার মার খায়।
শ্রমিক, গরীব, রাস্তার পাগল যত,
কেউ আজ ছাড় না পায়।
ব্যথায় কাতরায় ভবঘুরে
কে বা তার খবর রাখে!
ভগবান হাসে কলির মান-হুশের
পাগলামির নামান্তর দেখে।
মেয়ে যখন বলে,বাবা আজ
স্কুল যাবনা, সত্যি ভয় জাগে!
ফোন নাম্বার দিয়ে, প্রশ্নোওরে
বাবা সত্যের যাচাই করে।
চলছে মানুষ ভুল ঠিকানায়
প্রশাসন ফেট্টি চোখে গান্ধারী সাজে।
মাঝে মাঝে ভাবি, মানুষের দুখে
আমি লজ্জা কেন এত পাই!
গুজব শব্দ কত মারাত্মক
হায়নারা খেলে নিধন যজ্ঞে
সত্যতা ভুলে,মানুষ আজ
কত অসহায়, বিকার বাতিকে ভোগে।
গুন্ডার গুন্ডামি গুজব প্রতিরোধে,
জেগে উঠুক শুভচেতনা প্রতিটি ঘরে।
মানুষের তরে আমরা মানুষ,
হইব কখন,বিবেক প্রশ্ন করে।
দুলাল চক্রবর্তী
১. প্রকৃত বন্ধন
..................
জীবনে পথ চলতে গেলে
সাথী মিলে অনেক, কিন্তু বন্ধু ক'জন?
ছলনার ছয়লাপে আসল -নকল
হয়তো চেনে না স্বজন।
ছলনা আর প্রতারণার আগুনে
জ্বলে পুড়ে নকল বন্ধন,
বন্ধুত্বের অঙ্গীকারে আবদ্ধ যে
পাশে এসে দাঁড়ায় তখন।
২. হৃদয় জুড়ে
...........
তোমার মায়ায় জড়িয়ে আছি আমি,
তোমারা মায়াবী দুটি আঁখির ফাঁদে,
প্রেমের পসরা সাজিয়ে রেখেছে মনে
কোন গোপন বাসনা অনাদরে কাঁদে।
ভোরের আলোর ঝটা জড়িয়ে মনে
ইচ্ছে করে পাখি ,তোমায় বেঁধে রাখি।
হারানোর ভয়ে বুকে বাজে ব্যথা সদা
তৃষিত নয়ন জুড়াতে কাছেই থাকি।
Subscribe to:
Posts (Atom)
উর্মি সাহা
মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...
-
আজ আশ্বিনের শেষ কার্তিকের শুরু এই দিনটা বিশেষ ভাবে বিশেষ, বাংলার এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে। জানি না বাংলার বাইরেও এইভাবে বিশেষ হয়ে উঠেছে কিন...
-
মূক ফেনীর মুখর পাঁচালি একটি বহুল প্রচারিত বাংলা প্রবাদ ‘ভাগের মা গঙ্গা পায়না’ ৷ প্রবাদটির মধ্য দিয়ে মায়ের অসহায়ত্বের যন্ত্রণাটিই ব্যক্ত হয়ে...