ফিটাস
আজকাল ল্যাব এর কোণের দিকে গেলেই একটা ডাক শুনতে পান ডাক্তার অরিন্দম।
বউ এর সঙ্গে অরিন্দমের সম্পর্ক টা নেহাৎই পৃথিবীর আহ্নিক গতির মতো। আবর্তিত হয়ে চলেছে শুধু অভ্যাস কে কেন্দ্র করে। নিজে ডাক্তার হওয়াতে অরিন্দম দেহ বলতে নিছক অ্যানাটমি বোঝে। আর তার বৌ আরাত্রিকার কাছে দেহ অজন্তার গুহাচিত্র কিংবা কোনার্ক এর বাৎস্যায়ন কিংবা ,খাজুরাহের মন্দির । যেখানে দেবতার অর্ঘ্য সাজানো হয়। দৈহিক মিলন তার কাছে পুজোর অর্ঘ্য । আর অরিন্দমের কাছে শুধু অ্যানাটমির প্র্যাক্টিকাল ক্লাস। কিন্তু এর মাঝেই কেমনকরে সব হয়ে গেলো , টের পেলো না অরিন্দম। সব প্রজাপিতার ইচ্ছা।
মা হতে চললো আরাত্রিকা। অরিন্দমের ডাক্তারি চোখ এড়ালো না। বুঝলো সবই । বোঝালো আর ও বিস্তর। বাচ্চা মানেই এক্সট্রা দায়িত্ব। কিন্তু নারাজ আরাত্রিকা । সে মা হবেই। মাস কয়েক গেলো । তারপর একদিন আশ্বাসের মিথ্যে আশ্রয়ে সে আরাত্রিকা কে নিয়ে এলো নিজের নার্সিং হোম এ। আরাত্রিকা জানলো না তার গর্ভপাত হলো। ভ্রুণ তখন ফিটাস হয়ে গেছে | কেটে বার করতে হলো। ডাক্তার অরিন্দম সেটা ফরমালিনে চুবিয়ে রাখলেন ল্যাবে। ছাত্র ছাত্রীদের জন্য।
তিনি যে ডাক্তার আর বৌ যে সত্যি দখিনা বাতাস , ভুলে গেলেন।
আজকাল কাজে মন দিতে পারেন না অরিন্দম। ল্যাবের কোনের দিকে গেলেই ডাক শুনতে পান , বাবা এস , বাবা এস।
No comments:
Post a Comment