Wednesday, May 31, 2023
সম্পাদকীয়
কবিতার পথ গম্ভীর, বাবার মতো। কবিতা প্রেমিকার মতো অভিমানী। মায়ের মতো সরল। এ ত্রিভূজের ভেতর যে সাহিত্যসাধনা, তাদের ভেতর যারা কবি, তাঁদের এ বৈরাগ্যকে সতত নমস্কার।
এ সংখ্যাটি এ কথাই বলছে। যারা লিখেছেন তাঁদের কৃতজ্ঞতা। সংখ্যা সীমাবদ্ধতার জন্য, যাদের লেখা আমরা নিতে পারিনি তাঁদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী ও আগামীর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিনম্ন
জয় দেবনাথ
সম্পাদক, মনন স্রোত
রুপন সূত্রধর
কালবৈশাখী
বৃষ্টির সৃষ্টি ধুলো রথে ছুটিয়েছে ঘোড়া
কালবৈশাখী পাথর বরফ গোলায়।
গরমে হাঁসফাঁস জীবন শান্তির
মুষলধারা খোঁজে ক্ষণে ক্ষণে।
মেঘেরা হেসে হেসে উড়ে যায়
মুষলধারে ঝরার নাটক করে।
অগোছালো করে যায় জীবন
পৃথিবীর মহারণে বজ্রবিদ্যুৎ বাণে।
তবুও কালবৈশাখীর আহবান
মানববন্ধনে হৃদয়ের টানে।
মেঘ আর পৃথিবীর চিরপ্রেম
বৃষ্টি বহন করে আজীবন ভরে।
পৃথিবীর কৃএিম আলো বাহার ক্ষনিক
আদিম অন্ধকারে,হারিকেন জ্বলে,
কালবৈশাখী মায়াবী রাতে।
দুলাল চক্রবর্তী
প্রকৃত ভালোবাসা
ভালোবাসা দিবস বলে কিছু
নির্দিষ্ট দিন প্রয়োজন নাই,
মনের টানে প্রাণের আবেগেই
চিরদিন ভালোবেসে যাই।
মন প্রাণ যখন কাছাকাছি আসে
নীরেট আংটির মত সে ভালোবাসা,
মন প্রাণ সঁপে সঙ্গী হিসেবে
চিরকাল যেন পাবার আশা।
প্রকৃত ভালোবাসা বড় দুর্লভ বস্তু
ওকে খুঁজে নিতে হয় মনে প্রানে,
সেতো গালা ভর্তি সোনার বালা নয়
শুধু সহানুভূতি আর করুনা জানে।
কোন দাম দিয়ে কেনা তো যায় না
বাজারের কোন পণ্য নয়,
হৃদয়ে জাগে যদি ভালোবাসা
সেটা বজ্র কঠিন হয়।
ভালোবাসার মাঝে যে সম্পর্ক
পাশাপাশি চিরজীবন থাকা,
অটুট বন্ধনে জড়িয়ে থেকে
আজীবন মনে বেঁধে রাখা।
অগ্রদীপ দত্ত
সত্যের অন্বেষন
এত কাল যাহাকে খুঁজি,
সে আজ ডুব দিয়াছে নিশিথের আঁধারে,
আর ধূসর বনের মিথ্যার পাহাড়ে,
নেই কোনো বাস্তব সত্য প্রান প্রাণীর স্পন্দন আর আস্বাদন,
তবুও অন্বেষন লাঠি হাতে চড়াই ভুলে ভরা পাহাড়ে।
চারিদিকে মিথ্যা যেন ঘর বুনেছে,
আমারে ডাকে তাহারা অতিথ্য গ্রহনে,
বশ করিতে জানে আপন সাজিয়ে৷
কাহারে খুঁজি কে জানে,
বলা যায় সত্যের স্বাদ অন্বেষনে৷
রাহুল শীল
দৃশ্য
বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে দেখে যে কাঁদবে সে একজন শিশু,
একই দৃশ্য দেখে যে কবিতা লিখবে সে একজন কবি,
আর যে মিথুনের বাসনা করবে সে একজন প্রজননক্ষম পুরুষ।
এই তিনজনের মধ্যে আমি ও তুমি এক একটি পর্যায়,
আর তিনটি মুহূর্ত পরিচালনায় আছে একজন করে অদৃশ্য নারী।
সৌরভ দেবনাথ
তোমার আমি
চারিদিকে কত বাধা
আমার আর তোমার মাঝে
কবে যে তোমাকে পাবো
বাঁধাহীন ভাবে আমার কাছে
হয়তো মাঝে মাঝে আমাদের
লেগে থাকে ঝিজড়া
দিন শেষে আবার পারিনা
একজন আরেকজন কে ছাড়া
আমি চিরকাল যেতে চাই
তোমার পাশে থেকে
সারাজীবন কাটাবো একসাথে
তোমার হাতে হাত রেখে
তোমার মনের খুশিতে
ফুটে উঠে আমার মুখের হাসি
আমার মন বলে শুধু
তোমায় ভালোবাসি, তোমায় ভালোবাসি
বিশ্বজিৎ মানিক
এখানেও খুব অন্ধকার
আমি আমার হাতে কবিতাগুলি লিখছি
নির্জন একাকী একটা ঘরের ভেতর থেকে ৷
ঘরের ভেতরে খুব অন্ধকার ,
তাই অস্পষ্ট কবিতার লেখাগুলি ক্ষমা করবেন ৷
কিন্তু এই মধ্য অহে ঘরের বাইরে
আমি খুব ভীত আলোর কাছে যেতে ৷
তবুও আমি আমার চোখ খুললাম,
ঘরের বাইরে তাকালাম আলোর দিকে ৷
আমার চোখ আলোর পথ অনুসরণ করল ৷
আমি সাবধানে পা ফেললাম ঘরের বাইরে
কখনো আস্তে কখনো তাড়িয়ে হাঁটতে চাইছি
যা কিছু দেখলাম যা কিছু শুনলাম তা সব নিয়ে৷
,
কিন্তু আমি আমার হাতের উপর দাঁড়াতে পারছি না ৷
আমি তুমি ও সে-র মধ্যে,
আমি শুধু আগের আমি নেই বুঝেছি
মনের ভেতর ভয় ঢোকার পর থেকে ৷
তাই আমি দেখছি এখানেও খুব অন্ধকার ৷
সপ্তশ্রী কর্মকার
বারুদ
ছাদে যখন মাছি দেখি,
বুঝি, প্রেমিকের ঘাম মাখা শার্টটা ঝুলে আছে!
অথচ শহরের বিকেল জুড়ে শুধুই বসন্ত ,
তখন বেলী ফুল খোপায় জড়িয়ে প্রেমিককে বুকে আগলে নিই,
তার আদর মাখা ভাবনাগুলো বারুদে মিশে গিয়ে ...
সন্ধ্যার স্নানঘরে ঠেলে দেয় আমায়,
আর চৈত্রে পুড়ে খাক হওয়া কাব্যকে গান করে তোলে সে।
গৌতম মজুমদার
ঘুম বিক্রি
গভীর নিদ্রায় নিদ্রিত সবাই
চোখে মুখে থাকে ক্লান্তি,
সুখ দুখ ভূলে শিয়রে দাড়ায়ে
সারা রাত জাগে শান্তি।
সারা দেশময় ঘুমাতো সবাই
তেল দিয়ে নাকে কানে,
ভোর হলে সবার ঘুম ভেঙ্গে যেতো
পাখিদের কলতানে।
অশান্তি ভাবিল -- "মানুষের থেকে
যদি পারি ঘুম কিনতে,
সারাটি জীবন কেটে যাবে মোর
থাকবেনা আর চিন্তে।"
অশান্তি আসিল ঘুম কিনিতে
কাড়ি কাড়ি টাকা লয়ে,
ব্যবসা তাহার জমিয়া উঠিল
মানুষেরে বলে কয়ে।
মনুষ্য জাতি বড়ই যে লোভী
অশান্তির আছে জানা,
অর্থের মোহে ঘুম বিক্রিতে
করেনিকো কেউ মানা।
শান্তি কহিল-- "ওহে মনুষ্য,
রাত দিন জাগি আমি,
আমাকে তাড়াইয়া অশান্তি আজ
তোমাদের কাছেই দামী?"
চোখে জল ফেলে শান্তি যে গেল
অশান্তি আসিল দেশে,
হঠাৎ রক্তে রাঙিয়া উঠিল
অশান্তির খুন সন্ত্রাসে।
চোখের ঘুম সবাই বিক্রি করিয়া
জেগে থাকে দিনে রাতে,
কখন যে কার মুন্ডটা যাবে
অশান্তির কালো হাতে।
চোখে নেই ঘুম আজ আর কারো
চোখ খোলা রাখে সবে,
অশান্তির আগুন দাবানলের মতো
জ্বলে উঠে কখন কবে ?
রিয়া রায়
বিষাক্ততা সর্বত্র
Toxic মানে বিষাক্ত
আমাদের সমাজ এখন এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে যেখানে খুব সহজেই কাউকে toxic বলে দেওয়া যায়। খুব সহজেই কোনো সম্পকর্কে বিষাক্ত বলে দেওয়া যায়। আর অনাহেসেই কারোর চিন্তা বা অনুভুতিগুলোকে বিষাক্ত বা so called toxic শব্দের আবরণে মুড়ে দেওয়া যায়।কখনো উল্টে সেই মানুষটার চিন্তার কারণ বা ঐ সম্পর্কের ঘুলিয়ে যাওয়ার কারন খুঁজেই দেখতে চাই না। কারন বিষাক্ত শব্দে তো আর কোনো হেয় নেই ,এটা তো আজকাল কত সাধারন তাই না? আর এই শব্দটার সাথে সাথে কিছু অনুভুতিকে এতটা নগন্য করে দিয়েছে ,কারা? জানো ?আমাদের এই সমাজ। মানে সমাজে থাকা তুমি আর আমি। কিন্তু কোনোদিন কি ভেবে দেখেছি কারোর ওরকম চিন্তার বা অনুভুতির কারন কি?
আজকাল অপসারন আর প্রতিস্থাপন করাকে যেমন খুব সহজ এক জিনিস বলে গণ্য করে সবাই। কি সহজেই বলে দেয় এটা না হলে ওটা করে নিবি। আরে ওটা চলে গেছে তো কি অন্যটা নিয়ে নিবি। নিলেই তো হয় একটু মানিয়ে, সবকিছু কি তোর মতো হওয়া চায়?
- আর যখন তুমি মানিয়ে নিতে পারবে না ঠিক তখনই চারিদিক থেকে একটা বড়সড় ধাব্বা এসে জুড়বে তোমার নামের সাথে তা হল- toxic ।
কিন্তু কি করে মানিয়ে নেবে বলো তো? সেগুলোর সাথে যা তোমার চিন্তারও বাইরে ছিল। এই যেমন তোমার কোনো প্রিয় জামা।হয়তো সেটা প্রয়োজনে এখন আর আসে না কিন্তু এইটার সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে, সেটাকে দেখলেই তোমার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে ওঠে বা নিমেশেই তুমি একটু হারিয়ে যাও মিষ্টি চিন্তার ভিড়ে , কিন্তু কিন্তু highlighted কিন্তু একটা কথায় হবে সেটা তোমার এখন আর প্রয়োজনে আসে না।তাই যার দরকার এমন কাউকে দিয়ে দাও। কিন্তু যখনই তুমি দিতে চাও না সেটা বোঝাবে ঠিক তখনই তুমি হয়ে দাঁড়াবে স্বার্থপর , হিংসুটে আর বিষাক্ত। কিন্তু কেউ এটা জানতে বা বুঝতে চাইবেই না যে হয়তো এইটার জায়গায় অন্য কোনো দামি জামাটা চাইলে দিয়েও দিতে হলে। কিন্তু তোমাকে বোঝার এতো সময় এখনকার সমাজের নেই। কারন সবাই সবার মতো ব্যস্ত আর সুযোগে তোমার একদুটো কথা শুনেই judge(বিচার) করতে সময় চলে যায়।
আজকাল তো আর এক বেশ ট্রেন্ডিং গল্প চলছে টিভির পর্দায় বলো আর সমাজে, ধরো দুই জনের সম্পর্কের মাঝে কোন নির্দিষ্ট বিষয়ক সমস্যায় সম্পর্কের তালবদল হলে আর দ্বিতীয়ক্ষণে তৃতীয়ব্যক্তির আগমন আর সেই হয়ে দাঁড়ায় গল্পের সঠিক আর প্রধান চরিত্র। আর অন্যদিকে , বাদ পড়া চরিত্র, তার না পাওয়া স্বপ্নের ভাঙ্গা টুকরো আর অনুভুতিগুলোকে নিয়ে হয়ে দাঁড়ায় ভিলেন। কেন বলতো সে ভিলেন? আধিকার তো তারই ছিলো সে কেন ছেড়ে দেবে আর এতো সহজ সব ছেড়ে দেওয়া? কিন্তু যেই সে ছেড়ে দেবে না তবেই সে হয়ে দাঁড়ায় একটা toxic personality। গল্প কী এখানেই শেষ হয় ? সে যদি ছেড়েও দেয় তবে সে হয়ে দাঁড়াবে এক দুর্বল চরিত্র হয়ে আর আমরা জানি দুর্বল চরিত্রের ভুমিকা আর কজনই মনে রাখে?
তাই আমার মনে হয় এই সমাজে নিজের আধিকার আর নিজেকে হারিয়ে যেতে না দিতে হয় ,তবে এই toxicity ভার নিয়ে রাখায় ভালো নিজের কাধে কারন অম্নিতেও কেউ তোমার গুন গায়বে আর তম্নিতেও কেউ তোমার দিক বুঝবে না। এরচেয়ে toxic হয়ে নিজের ভালোলাগা নিজের কাছে রাখা ঢেড় ভালো।
মৌসুমী গোয়ালা
সব পারি না
আমি নারী, আমি সব পারি না।
পারি না, ভিড় ঠাসা বাসে ট্রেনে অপ্রত্যাশিতভাবে শরীর ছুঁতে।
লোক সমারোহে কোন স্ত্রীলোককে কেন্দ্র করে ভিড়ের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে।
পারি না, মধ্যরাতে মানসিক ভারসাম্যহীনাকে অঙ্কশায়িনী করতে।
বস্তি কিংবা ফুটপাত থেকে তুলে এনে লোভ, রিরংসা উগড়ে দিতে।
পারি না, পণপ্রথার ছোঁবলে তাজা প্রাণ কেড়ে নিতে।
আপাদমস্তক গ্লানীতে ডুবিয়ে জীবন্তলাশ বানাতে।
পারি না, সমাজের দোহাই দিয়ে প্রাণচাঞ্চল্যকে নিশ্চল হতে দেখতে।
তন্বীর রঙিন স্বপ্নগুলোকে ধূসর কালোয় ঢাকতে।
পারি না, পৃথিবীর আলো দেখা সদ্যজাতকে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলতে।
নিমেষে দেহাবয়বের সৌন্দর্যকে অ্যাসিডে ঝলসাতে।
আমি , এসবের কিছুই করতে পারি না।
আর পারি না, নারী বলেই।
অচিন পাখি
পা
পৃথিবী প্রতিদিন হাঁটছে
মায়ের কাঁধের উপর।
সংসারের সব সুখ নিয়ে আসেন বাবা।
বাবার পা দেখে ভাবি,
এখনো কতো পথ আমার অতিক্রম করা বাকি!
অভিজিৎ রায়
হায়রে সমাজ
আর কেউ নাইট ক্লাবে কাটাচ্ছে রাত
কত না দেখছি নাটক এখানে
বুঝে না কেউ একদিন তো যাবে স্বশানে
কেউ বা ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে খায়
আর কেউ গরীবদের চুষে বেড়ায়
টাকা তো কামায় করে সবাই
কতজনই বা গরীবের পাশে দাঁড়ায়
কত বাবা-মা না খেয়ে পড়ে আছে রাস্তায়
আবার কত শিশু ছোট বেলায় মা বাবা হারায়
মানুষ কোটিপতি হয় গরীবের কাঁধে চড়ে
সেই কোটিপতিই গরীবের সব নিচ্ছে কেড়ে
সততার নেই কোন দাম না আছে সন্মান
সৎ মানুষ হলে সহ্য করতে হয় অপমান।
দেবাশিস দাস
ব্রহ্মপুত্র
পাটাতন সরিয়ে দিলে উঁকি দেয়
অবশিষ্ট ব্রহ্মপুত্র নদ।
সমান্তরাল। নিষিদ্ধ এক যাত্রা।।
আজীবন অভিশাপ বয়ে বেড়ায় যে নদ
তার নির্জন বুকে- তীব্র হাহাকার!
মানুষের অভাব।
আত্মমুখী এই পুরুষটিকে
আমি তাই , মা' বলে ডাকি…
সংগীত শীল
দিবাকর
বৈশাখের সোনালী আভায়,
বহির্বিশ্বে আনন্দের ঢেউ ভেসে আসে।
রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত সাড়ম্বরের কথা
উদিত সূর্য জানান দিয়ে যায় প্রকৃতিকে।
মনের দৌড় গোড়ায় বিপুল উচ্ছাস আছড়ে পড়ে,
প্রকৃতির বাঁধা ভাঙ্গা দৃশ্য দেখে হৃদয়ে কল্লোল বাজে।
উত্তরণের পথে ধাবিত হয় স্বপ্ন,
রবির শালীন রূপ অসীমতার দিকে নিয়ে যায়,
জীবন মঞ্চে আমি ভিত্তিভূমি রচনা করি।
প্রণব দাস
একমুঠো_স্বপ্ন
নিশাচরীরা গর্তের সন্ধানে অনুতাপ মেটায়,
গবেটগিরি আজও চলে ফেইক প্রোমিস এর বন্যায়।
রাস্তার বুকে হাজার ওয়ারিয়র,পদধূলিতে কাঁপছে ভূধর,
যৌবনের আগুনে ছাই তাই,আজকের এই প্রহর।
বিশ্বাসটা আজও আছে,তবে সকালটা চাই,
বেম্বো স্টিকটা কাঁধে নড়ে,সেই বসন্তের আশায়।
রাকেশ দেবনাথ
বাকি ইতিহাস
ইতিহাস থেকে কল্লোল শুনে
স্মৃতির পাতা উগরে দেখি ।
হাজার বছর ধরে
জমতে থাকা অভিমানগুলি
আজ ভিড় করেছে
মনের জাতীয়সড়কে।
স্মৃতিগুলি মিছিল করে জানতে চায়
তোমার আমার শরীর ছোঁয়ার
বাকি ইতিহাস।
আমার মনে জমিয়ে রাখা
সব সরকারি নথি
ধূলির সাথে খেলা করে
পাল্টে গেছে এক পলকে।
মনের মাঝে পূর্ণচাঁদ
আধখানা হয়ে লটকে আছে
সিলিং আর সেফটিফিনে।
আমার মনের আঁতুড়ঘরের
অপুষ্ট স্মৃতিগুলি আজও
মরুভূমির ধুধু বালুর চড়ে
ফণীমনসার ভিড়ে
তোমায় খুঁজে।
জনপ্রিয়তার আড়ালে থাকা
তোমার কাছে জানতে চায়
হাজার বছর আগের
তোমার আমার শরীর ছোঁয়ার
বাকি ইতিহাস।
সায়ন পাল
মুক্ততা
মনের গহীনে অস্পষ্ট মুখের আভা,
পরিচিত তবে খানিকটা পুরোনো।
সেই কবে দুরন্ত বিকেলে উড়ন্ত আঁচল,
শেষ চিহ্ন রেখে গিয়েছিল তারপর কি রেখেছে খোঁজ কখনো!
না, মনের অতল হতে কোন অতীত ভেসে আসে না।
বাস্তবতার মোড়ক অতীতের উপর ঢাকনা ফেলেছে,
মুছে নিয়েছে চোখের জল।
তবুও মিলনমুখি বসন্তের সমীরণে,
বাতাসে উদাসীনতার গন্ধ আসে।
কিন্তু ওই যে বললাম বাস্তবতা,
ভয়ংকরী রূপে যেন তাকে দূরে ঠেলে দেয়।
বিষাদের বিষে অমৃত ভাব আনে।
একলা মন আর ওই নীলাভ আকাশ মুখোমুখি,
শত পক্ষী উড়ে গেলেও একাকীত্বে ডুবে আছে ওই আকাশ,
তবুও বিষাদ নেই আছে মুক্ততার আশ্বাস।
ভবানী বিশ্বাস
তোমারে পাইবার পর
তোমারে পাইবার আগে
শেষ কবে কানছিলাম
মনে নাই।
মাইনসে আঘাত দিলে
কান্দা আইয়ে না।
দুইদিন উপাস থাকলেও
খবর কয় না পেট।
চলতে না পারলেও
কেমন দিব্যি চইলা যায় দিন।
তবুও, চোখ দিয়া বাইরয়না জল।
অথচ তোমার ভালবাসা পাইবার পর
মাজরাইতে বুক চাইপ্যা ধইরা কেমন
বন্যা ভাসাই...
পান্থ দাস
একলা
তারা মাখা রাতে
মায়াবী মন
চায় যে তোমাকে,
দিগন্ত স্বপ্ন
খুঁজতে গিয়ে
হারিয়েছি যে তোমাতে।
খুঁজি
একলা দিনে তোমায়
প্রহর যে শেষে,
অপেক্ষায়
মন ডুবে
চাঁদের পাহাড়ে যে মিশে।
Subscribe to:
Posts (Atom)
উর্মি সাহা
মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...
-
আজ আশ্বিনের শেষ কার্তিকের শুরু এই দিনটা বিশেষ ভাবে বিশেষ, বাংলার এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে। জানি না বাংলার বাইরেও এইভাবে বিশেষ হয়ে উঠেছে কিন...
-
মূক ফেনীর মুখর পাঁচালি একটি বহুল প্রচারিত বাংলা প্রবাদ ‘ভাগের মা গঙ্গা পায়না’ ৷ প্রবাদটির মধ্য দিয়ে মায়ের অসহায়ত্বের যন্ত্রণাটিই ব্যক্ত হয়ে...