Friday, December 24, 2021

সজীব কুমার পাল

স্মৃতির চিঠি

এখন আমার মৃত্যুর মাস চলছে
দীর্ঘ বছর হয় কোনো রোদ্দুরের গন্ধ পাইনি! 
বাতাসের সাথে মিশে যাচ্ছে জীবন, যে জীবন ছিল আমার। 
নীল, তুই কি জানিস 
এখন আমি ক্ষুধা তৃষ্ণাহীন প্রাণী মাত্র? 
বন্ধু, মনে আছে 
আজ থেকে পনেরো বছর আগে আমরা শিশু ছিলাম? 
আমাদের উঠুন জুড়ে ছিল দোয়েল পাখি , 
সেগুন পাতার ঘর, 
ঠাকুরমার শেখানো কাঠাল পাতার কাফ, 
এবং মায়ের নামে আমাদের সেই ছোট্ট পুতুল? 
মনে আছে তোর নীল, 
সেই পতুলটা একদিন খুঁজে না পেয়ে
তুই আর আমি কেমন দিশেহারা হয়েছিলাম? 
নীল, 
জীবন আমাকে যা দিয়েছে তার ঢের নিয়েছে, 
নয়তো আজ দেখ
পতুলটার মতো মা যে কোথায় হারিয়ে গেল!
আমার এখন নিষ্ঠুর মৃত্যুর মাস চলছে নীল, মৃত্যুর মাস। 
কৈশোরে শুকনো পাতা সিক্ত করে 
যে বসন্ত এসেছিল আমাদের জীবনে, 
যে বসন্ত দিয়েছিল উন্মাদনা এবং অশান্তি! 
তখন আমরা পেয়েছিলাম তীব্র জঘন্য সুখ। 
হ্যাঁ নীল, আমি সেই চঞ্চল বর্ষার কথাই বলছি। 
প্রথম তাকে তুই দেখেছিলি মাধবীলতার আড়ালে, 
এবং বলেছিলি, 'মেয়েটাকে বেশ মানাবে আমাদের সাথে! '
হ্যাঁ নীল, হ্যাঁ! আমরা এইভাবেই একের ভেতর দুই হারাতাম! 
সহজ সরল বালিকাটিও একদিন নিরুদ্দেশ হয়ে গেল, 
তাকে আমরা আর কেউই খুঁজিনি। 
এইভাবেই হারাতে হারাতে আমরা বড়ো হলাম , 
বড়ো হতে হতে সব হারালাম। 
কিন্তু নীল, 
তুই কেন হারালি? 
আমার ভাই হারালো, আমার মা হারালো, আমার বাবা হারালো, 
শৈশব, কৈশোর সব সব হারালো। 
কিন্তু তুই কেন হারালি? 
বন্ধু! বন্ধু সে তো আজন্ম সাথী , 
আজ তোর কাছে আমি নেই 
কিন্তু আমার কাছে তুই আছিস। 
তাইতো গোপনে-নির্জনে লিখছি স্মৃতির চিঠি, স্মৃতির চিঠি। 

No comments:

Post a Comment

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা . বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷ আর কথা আসে না! শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা। তবু দেখি যন্ত্রণা... যদি কোনো হ...