Thursday, April 10, 2025

রুপন সূত্রধর

মানবতা ধিক্কার

কালো ধোয়া,  আগুনের ছয়লাপ,
আকাশে উড়ে মানুষ, চারিদিকে  লাশের গন্ধ!
.
হিংসায়  বিশ্ব রাজনীতির শিকার, 
নারী-পুরুষ আর শিশু মৃত্যু  মিছিল। 
জাতধর্মের বাহবা দিয়ে একদল শোষক,
মিসাইল, বোমা বন্দুকে,হরণ করেছে মানবতা। 
আমি মানুষ, দেখে হাসে পৃথিবীর জীবজন্তুরা, 
পৃথিবীর বড়ো পশু মানুষ, তারা কানাকানি করে। 
ক্ষমতা আর পুঁজিবাদে, বিজ্ঞান হয়েছে দোষী, 
পৃথিবী ধ্বংস করতে,তারা মেতেছে দিবারাএি। 
মানবতার  রক্ত বন্যার সমাধিতে, 
মানুষ নামী এক দল নরপশু । 
সময় বয়ে যায়, মানুষের পৃথিবী 
ধ্বংস নিধন যজ্ঞে।
দিকে দিকে বিষাক্ত বিকারে মানুষ 
ভাগাভাগির শত্রু-মিএ খেলায়।
ভালোবাসার মহান পৃথিবী  হল , 
নরকের গুলজার।
ভয়ঙ্কর দাবানলের ভারী লাভা,
রণক্ষেত্র পৃথিবী জুড়ে;
কেবল যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা।


কবি পরিচিতি : কবি রুপন সূত্রধর ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার সাব্রুমের বাসিন্দা। কবির কবিতায় সমাজ ও সভ্যতার ছবি ফুটে উঠে। আধ্যাত্মবাদী এ কবির জীবনে চৈতন্যময়ীর উপাসনার ছাপ রয়েছে। এ ছাপ তাঁর কবিতাজুড়েও পাঠক লক্ষ্য করে। পেশায় সরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সামাজিক কাজেও কবির দায়বদ্ধতার পরিচয় পাওয়া যায়।

Tuesday, April 8, 2025

অপাংশু দেবনাথ

এমন দৃশ্যের কাছে যদি নতজানু হই
.
ঘন বনপথ ধরে ছুটি,
যেতে যেতে দু'পাশে কেমন
রোগা জীর্ণ বাঁশ বেত শনে গড়া টং 
পাতাশূন্য বৃক্ষ,অতস মাটি 
অলস বুকে চেয়ে আছে আমাদের দিকে।
এক নির্বাচনী ক্ষেত্র থেকে অনন্য কোনো 
বিপদসীমা ছুঁয়ে জেনেছি 
সময় এক দুরন্ত পাখির মতো 
রোজ আমাকে নিয়ে খেলছে শুধু।

পৃথিবীতে কত রকমের যে খেলা হয় মানুষ জানে। 

সামনে মাঠ ছেলেরা খেলে,
ভুল বসত বল এলেও বলিনা কিছু, 
মনে পড়ে আমাদেরও দূরন্ত মাঠ ছিলো
দিগন্ত গতি তার,
এই গতির কাছে ফিরতে আর পারবো না বলে দেখি---
মাঠের রং বদল। 
দায়িত্ব এড়ানো অসম্ভব জেনেও
মন ছুটে যেতে চায় দূরে বড়মুড়া পাহাড়ের ঢালে,
ওখানে ঝর্ণা কুমারী নদী নামে রমনী হয়।
বারবেলা এমন দৃশ্যের কাছে যদি নতজানু হই , 
ফিরে এলে চাইবে জানতে? 
পাহাড়ি হাওয়া কেমন আছে বদল বিকেলের বুকে।
.





কবি পরিচিতি : কবি অপাংশু দেবনাথ রাজ্যের অন্যতম কবি। তাঁর কবিতায় ফুটে উঠে যাপন ও জীবনের এড়িয়ে যাওয়া দিকগুলো। কখনও কখনও চাপা পড়া সত্যের ভেতর তিনি অবাদে বিচরণ করে নিজেকে পুড়িয়ে লিখেন কবিতা। 'মৃত্তিকা ঋণ মেঘমিতাকে' কাব্যগ্রন্থটি কবির ঐতিহাসিক বই। 

শাশ্বত চক্রবর্তী

আমি মহাভারতের যুধিষ্ঠির
আমি রামায়ণের বিভীষণ
আমি দূর্গা স্তবের রক্তবীজ
আমি নৃসিংহের হাতে মৃত হিরণ্যকাশ্যপ
আমি ই আবার জয় গোস্বামীর বেণীমাধব
আমি রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি 
আমি জীবনানন্দের সেই বাংলার মুখ
আমি কাজী নজরুল এর বুলবুলি
আমি লালন সাই এর বাউল
আমি সুভাষের বন্দেমাতরম
আমি আর.জি.কর এর তিলোত্তমা
আমি দিল্লী র নির্ভয়া
আমি ইলোরার ভাষ্কর্য
আমি রাজস্থানের মরুভূমি
আমি রাস্তায় পড়া বৃষ্টির ফোঁটা
আমি গাছের পাতার শিশিরবিন্দু
আমি শহরের কোলাহল
আমি রাস্তায় নামা মিছিলের চিৎকার 
আমি হারিয়ে যাওয়া মানুষের কথা
আমি কে?
.

কবি পরিচিতি : কবি শাশ্বত চক্রবর্তীর জন্ম ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার কৈলাশহরে। কবিতা লেখার পাশাপাশি ছবি তোলা কবির শখ। 

সঞ্জয় দত্ত

ছাপ
.
যারা চলে গেছে বহুদূর,
তাদের,
একটা করে ছবি এঁকে রেখে দিতে পারি চোখে।
যা আমি চোখ বন্ধ করলে দেখি!
.
এমনও ছিলে বুঝি!



কবি পরিচিতি : সঞ্জয় দত্তের পিতার নাম সুজিত দত্ত। জননী হলেন শ্রীমতি সীমা দত্ত।জন্ম দক্ষিণ জেলার সাব্রুমের মনু বাজার এলাকায়। তাঁর ধারণা যা বলা হয়নি কখনো মুখে,কবিতা হয়ে বেরিয়ে আসবে একদিন। কবিতার পাশাপাশি লোকগানেও কবির সমান আশীর্বাদ প্রাপ্ত। 

Monday, April 7, 2025

অতনু রায় চৌধুরী

বঞ্চিত 
.
জীবন জুড়ে লেগে থাকে অতীতের ক্ষত
ক্লান্ত শরীর বিশ্রাম খুঁজে প্রতিনিয়ত।
বাবার বয়স বাড়ে, বেকারত্বের ছাপ হয় দীর্ঘ
প্রেমিকার অপেক্ষা এভাবেই চলে মধ্যবিত্ত।

মধ্যবিত্ত জানে মানিয়ে নিয়ে ভালো থাকার কৌশল
এই শহরের তীব্র রৌদ্রে লড়াই চলে কেবল।
তবুও নেই অভিযোগ, নেই কোনো অভিমান
মধ্যবিত্তের দামি জিনিস সন্মান।

কতশত মধ্যবিত্ত বঞ্চিত মেধা থাকা সত্ত্বেও 
তবুও নেই কোনো প্রতিবাদ, সব যেন শান্ত।
তবুও জীবন সুন্দর সীমিত চাহিদায়
এই জীবনে মানুষ কতকিছুই হারায়।
.
কবির পরিচয় : অতনু রায় চৌধুরী। পিতা অজিত রায় চৌধুরী ও মাতা গৌরী মজুমদার রায় চৌধুরী।রানীর বাজার পশ্চিম ত্রিপুরার বাসিন্দা। জীবনে বিভিন্ন পর্যায় প্রকাশ করার সুন্দর মাধ্যম লেখা আর সেই লেখা থেকেই কবিতার প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা। কবিতা ভালো রাখে হৃদয়কে এ ধারণা থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতা হিসাবেও এ মাধ্যমকে গুরুত্ব দেন কবি অতনু।

Sunday, September 24, 2023

উর্মি সাহা

মন ব্যাথা
.
বক্রের মত বেঁকে গেছে আমার জিহ্বা৷
আর কথা আসে না!
শুনি শেষ প্রার্থনা নয়তো
বেজে ওঠা গির্জা ঘণ্টা।
তবু দেখি যন্ত্রণা...
যদি কোনো হস্তরেখাবিদ-
বলে দিত সত্য।
আমি ব্যোমকেশ হয়ে
খুঁজে নিতাম মৃত্যু।
প্রেমিকের দেওয়া লাল ওড়না
যার বিঁধেছে গলায়,
ছিড়ে গেছে যার শ্বাসনালী,
তাকে বলে দিতাম সত্য।
হয়তো, হাতের রেখায় মিলে যেত শব্দ।
মা-র দাঁতে ছিড়ে দেওয়া লাল সুতোয়
বুনেছি যে রুমাল-
তাতে মুছে নিতাম রক্ত দাগ, আর
উড়িয়ে দিতাম আদরে।
মেঘের পিঠে চাবুক পিটিয়ে
প্রার্থনা পৌঁছে যেত ঈশ্বরের ঘরে।
 
                                            

Tuesday, September 19, 2023

বিনয় শীল

চন্দ্রযান-৩

২০২৩-এর
মধ্যিখানে।
১৪ই জুলাই
আকাশ পানে।

এ ভারতের 
গৌরব গাঁথা
চন্দ্রযানের 
গমন কথা।

২৩শে আগস্ট 
সন্ধ্যা ছয়।
বিক্রম' করল 
চন্দ্র জয়।

যাচাই করবে
চাঁদের মাটি।
আরো যত 
খুঁটিনাটি।

বেজায় খুশি 
ভারত মিত্র।
শত্রু বলছে- 
গ্রাফিক্স চিত্র।

যে যা ভাবুক, 
সত্য অটুট্।
ভারত মাথে 
চন্দ্র মুকুট।

ভারত মেধা*
সফল, পূর্ণ।
অহংকারীর 
দর্প চূর্ণ।

বিশ্বটিকে 
অবাক করে। 
ভারত 'প্রজ্ঞান'
চাঁদের ঘরে।

ভারত গলায় 
বিজয়মালা।
এতেই কারোর
গাত্র জ্বালা।

ধন্য মোদের 
'ইসরো'
ভারত মাতার 
জয় হো।

Saturday, September 2, 2023

সুমন কান্তি সাহা

শৈশব


সুমন কান্তি সাহা


একদিন মনে হয় সেই শৈশবকালে চলে যাই!
.
শৈশবই আনন্দের।
এ নিষ্ঠুর সমাজে কিছুই পাই না
সে যেন বুঝেই না পৃথিবী কি দিতে চলেছে তাকে।
.
পিতামাতার কাছ থেকেই শিখে
জগত দেখা
.
হুট করে ফিরে যেতে ইচ্ছা করে সে শৈশবে।
আনন্দ আর আদর পেতে ইচ্ছা করে বড়।
.
শিশু দেখলেই অনুভূতি জেগে উঠে আজ। 
তখন মনে হয় চলে যাই সে অবুঝের দুনিয়ায়।
যেখানে থাকবে না, লোভ ভয়, হিংসা।
র'বে শুধুই ভালোবাসা আর স্নেহ।

উর্মি সাহা

অবিশ্বাস্য

আমি মৃত্যুর মুখোমুখি বসে
কথা শুনেছি এক সজোর যাত্রার।
ভরা বাজারে নারীর মুখে, সুখের বদলে-
দেখেছি পূর্নগ্রাস সূর্যগ্রহণ।
দেখেছি শরীরের ভেজা চোখ,
রোমকূপের লাল রেণু,
আর টিপ পড়া গোলাপি মুখ।
বেলা ফুরিয়ে গেলে-
ফকির বেশে মায়া আসে
পাশে বসে, কথা বলে-
দেখে যায় আমার লাল কালো মুখ।
আমার পাথর শরীর ভেঙে ফেলে,
মূর্তি গড়ে, নিয়ে যায়।
ঠিক হয় দিনক্ষণ-
শুরু হয় নবজন্ম।
অবিশ্বাস্য! অবিশ্বাস্য! অবিশ্বাস্য!
আবারও এক নতুন জন্ম-
শুরু হয় ভাঙ্গা গড়ার কাজ;
মুক আর বধিরের মত আমি আবার দেখি-
ডাক দেই নতুবা জড়িয়ে ধরি!
                                       

Thursday, June 29, 2023

মনন স্রোতে আপনাকে স্বাগতম

সম্পাদকীয়

কবিতার গোপনকথা সংসাররূপ জলাশয়ে মেশা এক ক্ষরস্রোতা নদী। চোরাবালির মতো প্রতিটি লাইন। কোথায় কে কতটুকু ডুবতে পারে, তা নির্ভর করছে ওজনের উপর। আমি উপরেই হেঁটে আসি হালকা বলে। বিনম্র বলছি এ সংখ্যাটি অতি স্বল্প এবং কিছু সংখ্যক নতুনমুখ। মার্জনাপূর্বক পাঠের আমন্ত্রণ জানাই। সারা রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার বাছাইকৃত তরুণ প্রজন্মের কবি। স্কুল পড়ুয়া প্রতিভা প্রকাশের এক অনু উদ্যোগ রয়েছে এতে। যারা লিখেছেন, তাঁরা আরও লিখবেন আজীবন লিখবেন - এ আশাটুকু বুকে রাখি। সবাইকে কৃতজ্ঞতা। প্রণতি।

শ্রদ্ধা-সহ
জয় দেবনাথ
সম্পাদক
মনন স্রোত 


রুপন সূত্রধর

মানবতা ধিক্কার কালো ধোয়া,  আগুনের ছয়লাপ, আকাশে উড়ে মানুষ, চারিদিকে  লাশের গন্ধ! . হিংসায়  বিশ্ব রাজনীতির শিকার,  নারী-পুরুষ আর শিশু মৃত্যু...