Saturday, April 26, 2025

গৌতম মজুমদার

বধ্যভূমি - রাফা

শোনা যাবেনা আর কোনদিন
ক্ষুধার্ত শিশুর কান্না,
মা বোন থেকে বৃদ্ধ বৃদ্ধার
আর্তনাদ টুকু আর না।

শান্তি এখন রাফা শহরে
যদি পেতে শোন কান,
চির নিদ্রায় নিদ্রিত সবাই
বিশাল কবর স্থান।

হিরোশিমা আর নাগাসাকির মতো
আজও এসেছে কসাই,
প্যালেস্টাইনের বুকে আঘাত হানিয়া
দেশটা করেছে জবাই।

ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাইকে লাগিয়ে
মুখোশের আড়ালে যারা,
খসে পড়ে গেছে, সাম্রাজ্যবাদীদের
আসল নগ্ন চেহারা।

যুদ্ধের ক্ষত শেষ না হতেই
আবার বাঁধালো যুদ্ধ,
গর্জে উঠেছে সভ্য সমাজ
দিকে দিকে সবাই ক্ষুব্ধ।

মানবাধিকার আজ লুণ্ঠিত হলো
হারাতে বসেছি সভ্যতা,
আগ্রাসন নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে
রোখা হোক এই বর্বরতা।


কবি পরিচিতি : গৌতম মজুমদার। পিতা স্বর্গীয় ফণী ভূষণ মজুমদার, মাতা স্বর্গীয় অঞ্জলী মজুমদার।সিপাহিজলা জেলার নলছড় এলাকায় বগাবাসা গ্রামে বাস।১৯৭০ সালের ৩রা নভেম্বর জন্ম।ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এম এ। বর্তমানে রাবার শিল্পের সাথে যুক্ত। ছোট বেলা থেকেই কবিতা ও নাটক লেখার প্রতি তুমুল আগ্রহ। নিয়মিত লেখক মনন স্রোতের।

Thursday, April 10, 2025

রুপন সূত্রধর

মানবতা ধিক্কার

কালো ধোয়া,  আগুনের ছয়লাপ,
আকাশে উড়ে মানুষ, চারিদিকে  লাশের গন্ধ!
.
হিংসায়  বিশ্ব রাজনীতির শিকার, 
নারী-পুরুষ আর শিশু মৃত্যু  মিছিল। 
জাতধর্মের বাহবা দিয়ে একদল শোষক,
মিসাইল, বোমা বন্দুকে,হরণ করেছে মানবতা। 
আমি মানুষ, দেখে হাসে পৃথিবীর জীবজন্তুরা, 
পৃথিবীর বড়ো পশু মানুষ, তারা কানাকানি করে। 
ক্ষমতা আর পুঁজিবাদে, বিজ্ঞান হয়েছে দোষী, 
পৃথিবী ধ্বংস করতে,তারা মেতেছে দিবারাএি। 
মানবতার  রক্ত বন্যার সমাধিতে, 
মানুষ নামী এক দল নরপশু । 
সময় বয়ে যায়, মানুষের পৃথিবী 
ধ্বংস নিধন যজ্ঞে।
দিকে দিকে বিষাক্ত বিকারে মানুষ 
ভাগাভাগির শত্রু-মিএ খেলায়।
ভালোবাসার মহান পৃথিবী  হল , 
নরকের গুলজার।
ভয়ঙ্কর দাবানলের ভারী লাভা,
রণক্ষেত্র পৃথিবী জুড়ে;
কেবল যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা।


কবি পরিচিতি : কবি রুপন সূত্রধর ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার সাব্রুমের বাসিন্দা। কবির কবিতায় সমাজ ও সভ্যতার ছবি ফুটে উঠে। আধ্যাত্মবাদী এ কবির জীবনে চৈতন্যময়ীর উপাসনার ছাপ রয়েছে। এ ছাপ তাঁর কবিতাজুড়েও পাঠক লক্ষ্য করে। পেশায় সরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সামাজিক কাজেও কবির দায়বদ্ধতার পরিচয় পাওয়া যায়।

Tuesday, April 8, 2025

অপাংশু দেবনাথ

এমন দৃশ্যের কাছে যদি নতজানু হই
.
ঘন বনপথ ধরে ছুটি,
যেতে যেতে দু'পাশে কেমন
রোগা জীর্ণ বাঁশ বেত শনে গড়া টং 
পাতাশূন্য বৃক্ষ,অতস মাটি 
অলস বুকে চেয়ে আছে আমাদের দিকে।
এক নির্বাচনী ক্ষেত্র থেকে অনন্য কোনো 
বিপদসীমা ছুঁয়ে জেনেছি 
সময় এক দুরন্ত পাখির মতো 
রোজ আমাকে নিয়ে খেলছে শুধু।

পৃথিবীতে কত রকমের যে খেলা হয় মানুষ জানে। 

সামনে মাঠ ছেলেরা খেলে,
ভুল বসত বল এলেও বলিনা কিছু, 
মনে পড়ে আমাদেরও দূরন্ত মাঠ ছিলো
দিগন্ত গতি তার,
এই গতির কাছে ফিরতে আর পারবো না বলে দেখি---
মাঠের রং বদল। 
দায়িত্ব এড়ানো অসম্ভব জেনেও
মন ছুটে যেতে চায় দূরে বড়মুড়া পাহাড়ের ঢালে,
ওখানে ঝর্ণা কুমারী নদী নামে রমনী হয়।
বারবেলা এমন দৃশ্যের কাছে যদি নতজানু হই , 
ফিরে এলে চাইবে জানতে? 
পাহাড়ি হাওয়া কেমন আছে বদল বিকেলের বুকে।
.





কবি পরিচিতি : কবি অপাংশু দেবনাথ রাজ্যের অন্যতম কবি। তাঁর কবিতায় ফুটে উঠে যাপন ও জীবনের এড়িয়ে যাওয়া দিকগুলো। কখনও কখনও চাপা পড়া সত্যের ভেতর তিনি অবাদে বিচরণ করে নিজেকে পুড়িয়ে লিখেন কবিতা। 'মৃত্তিকা ঋণ মেঘমিতাকে' কাব্যগ্রন্থটি কবির ঐতিহাসিক বই। 

শাশ্বত চক্রবর্তী

আমি মহাভারতের যুধিষ্ঠির
আমি রামায়ণের বিভীষণ
আমি দূর্গা স্তবের রক্তবীজ
আমি নৃসিংহের হাতে মৃত হিরণ্যকাশ্যপ
আমি ই আবার জয় গোস্বামীর বেণীমাধব
আমি রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি 
আমি জীবনানন্দের সেই বাংলার মুখ
আমি কাজী নজরুল এর বুলবুলি
আমি লালন সাই এর বাউল
আমি সুভাষের বন্দেমাতরম
আমি আর.জি.কর এর তিলোত্তমা
আমি দিল্লী র নির্ভয়া
আমি ইলোরার ভাষ্কর্য
আমি রাজস্থানের মরুভূমি
আমি রাস্তায় পড়া বৃষ্টির ফোঁটা
আমি গাছের পাতার শিশিরবিন্দু
আমি শহরের কোলাহল
আমি রাস্তায় নামা মিছিলের চিৎকার 
আমি হারিয়ে যাওয়া মানুষের কথা
আমি কে?
.

কবি পরিচিতি : কবি শাশ্বত চক্রবর্তীর জন্ম ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার কৈলাশহরে। কবিতা লেখার পাশাপাশি ছবি তোলা কবির শখ। 

সঞ্জয় দত্ত

ছাপ
.
যারা চলে গেছে বহুদূর,
তাদের,
একটা করে ছবি এঁকে রেখে দিতে পারি চোখে।
যা আমি চোখ বন্ধ করলে দেখি!
.
এমনও ছিলে বুঝি!



কবি পরিচিতি : সঞ্জয় দত্তের পিতার নাম সুজিত দত্ত। জননী হলেন শ্রীমতি সীমা দত্ত।জন্ম দক্ষিণ জেলার সাব্রুমের মনু বাজার এলাকায়। তাঁর ধারণা যা বলা হয়নি কখনো মুখে,কবিতা হয়ে বেরিয়ে আসবে একদিন। কবিতার পাশাপাশি লোকগানেও কবির সমান আশীর্বাদ প্রাপ্ত। 

Monday, April 7, 2025

অতনু রায় চৌধুরী

বঞ্চিত 
.
জীবন জুড়ে লেগে থাকে অতীতের ক্ষত
ক্লান্ত শরীর বিশ্রাম খুঁজে প্রতিনিয়ত।
বাবার বয়স বাড়ে, বেকারত্বের ছাপ হয় দীর্ঘ
প্রেমিকার অপেক্ষা এভাবেই চলে মধ্যবিত্ত।

মধ্যবিত্ত জানে মানিয়ে নিয়ে ভালো থাকার কৌশল
এই শহরের তীব্র রৌদ্রে লড়াই চলে কেবল।
তবুও নেই অভিযোগ, নেই কোনো অভিমান
মধ্যবিত্তের দামি জিনিস সন্মান।

কতশত মধ্যবিত্ত বঞ্চিত মেধা থাকা সত্ত্বেও 
তবুও নেই কোনো প্রতিবাদ, সব যেন শান্ত।
তবুও জীবন সুন্দর সীমিত চাহিদায়
এই জীবনে মানুষ কতকিছুই হারায়।
.
কবির পরিচয় : অতনু রায় চৌধুরী। পিতা অজিত রায় চৌধুরী ও মাতা গৌরী মজুমদার রায় চৌধুরী।রানীর বাজার পশ্চিম ত্রিপুরার বাসিন্দা। জীবনে বিভিন্ন পর্যায় প্রকাশ করার সুন্দর মাধ্যম লেখা আর সেই লেখা থেকেই কবিতার প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা। কবিতা ভালো রাখে হৃদয়কে এ ধারণা থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতা হিসাবেও এ মাধ্যমকে গুরুত্ব দেন কবি অতনু।

গৌতম মজুমদার

বধ্যভূমি - রাফা শোনা যাবেনা আর কোনদিন ক্ষুধার্ত শিশুর কান্না, মা বোন থেকে বৃদ্ধ বৃদ্ধার আর্তনাদ টুকু আর না। শান্তি এখন রাফা শহরে যদি পেতে শো...